MCQ..1
1.পরিণমন হলো –
( a ) স্বাভাবিক প্রক্রিয়া
( b ) আদেশ নির্ভর প্রক্রিয়া
( c ) গুণগত প্রক্রিয়া
( d ) শর্ত নির্ভর প্রক্রিয়া
2.শিখন কী ধরনের প্রক্রিয়া ?
( a ) কৃত্রিম
( b ) স্বাভাবিক
( c ) সহজাত
( d ) স্বতঃপ্রণোদিত ।
3. ম্যাকডুগাল মনে করেন হলো সুপ্ত মনোযোগ
( a ) তাড়না
( b ) আগ্রহ
( c ) প্রেষণা
( d ) শিখন
4. শিখনের প্রথম স্তর–
( a ) গ্রহণ
( b ) ধারণ বা সংরক্ষণ
( c ) পুনরুদ্রেক
( d ) অনুশীলন ।
5.থাস্টোনের মতে প্রাথমিক উপাদান হলো
( a ) ৫ টি
( b ) ৭ টি
( c ) ৯ টি
( d ) ৪ টি
6.ক্ষমতার দলগত উপাদান তত্ত্বের প্রবক্তা হলেন
( a ) স্পিয়ারম্যান
( b ) থর্নডাইক
( c ) থার্স্টোর্ন
( d ) স্কিনার
7.শিখনের মৌলিক উপাদানের সংখ্যা –
( a ) সাত
( b ) তিন
( c ) চার
( d ) পাঁচ
8.প্রত্যভিজ্ঞা ' কথাটির আক্ষরিক অর্থ কী ?
( a ) দেখা
( b ) শোনা
( c ) মনে করা
( d ) চিনে নেওয়া
9.যে মানসিক প্রক্রিয়ার সাহায্যে মানুষ পূর্ব অভিজ্ঞতাকে সঞ্চয় করে রাখে , সেটি হলো-
( a ) গ্রহণ
( b ) পুনরুদ্রেক
( c ) সংরক্ষণ
( d ) পুনঃপরিজ্ঞান
10.প্রেষণার উদ্ভব হয়—
( a ) মনোযোগ থেকে
( b ) দুঃখ থেকে
( c ) অভাববোধ থেকে
( d ) শৃঙ্খলাবোধ থেকে
11.শিখনের দ্বিতীয় স্তর
( a ) গ্রহণ
( b ) ধারণ
( c ) পুনরুদ্রেক
( d ) প্রত্যভিজ্ঞা
12.যে প্রক্রিয়ায় শিশুরা নতুন নতুন আচরণ করে , তাকে বলে
( a ) পরিণমন
( b ) সঞ্চালন
( c ) শিখন
( d ) অভিভাবন
13.সহগতির সহগাঙ্ককে যে ইংরেজি অক্ষরের মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়-
( a ) b
( b ) s
( c ) r
( d ) qu
14.দ্বি - উপাদান তত্ত্বের প্রবক্তা –
( a ) ফ্রয়েড
( b ) স্পিয়ারম্যান
( c ) থার্স্টোন
( d ) থর্নডাইক
15.' পুনরুদ্রেক ' কথাটির অর্থ
( a ) দেখা
( b ) শোনা
( c ) মনে করা
( d ) চিনে নেওয়া
16.অতীত অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে নতুন অভিজ্ঞতার অনুশীলনকে বলে–
( a ) পরিণমন
( b ) শিখন
( c ) মনোযোগ
( d ) প্রেষণা
17.শিখন , স্মৃতি , প্রত্যক্ষণ এগুলি আসলে কী ?
( a ) দৈহিক প্রক্রিয়া
( b ) মানসিক প্রক্রিয়া
( c ) দীর্ঘস্থায়ী প্রক্রিয়া
( d ) প্রাক্ষোভিক প্রক্রিয়া
উত্তরঃ
1.a 2.a 3.b 4.b 5.b 6.c 7.c 8.d 9.c 10.b 11.c 12.c 13.c 14.c 15.b 16.c 17.b 18.b
SAQ..1
1.মনোযোগের একটি অভ্যন্তরীণ উদ্দীপকের উল্লেখ করো ।
উত্তরঃ মনোযোগের একটি অভ্যন্তরীণ উদ্দীপকের নাম দুশ্চিন্তা ।
2.শিখনের কার্যকরী বিষয়গুলির যেকোনো দু'টি উল্লেখ করো ।
উঃ শিখনের প্রধান দু'টি কার্যকরী বিষয় হলো— i. উপযুক্ত পরিবেশ।
ii. উপযুক্ত পদ্ধতি ।
3.শিখন প্রক্রিয়ার পর্যায়গুলি কী ?
উঃ শিখন প্রক্রিয়ার স্তরগুলি এইরূপ —
i.অভিজ্ঞতা অর্জন ,
ii.সংরক্ষণ বা ধারণ
iii.পুনরুদ্রেক বা মনে করা ,
iv প্রত্যভিজ্ঞা বা চেনা ধারণ ,
4.শিখনের দু'টি বৈশিষ্ট্য লেখো ৷
উঃ শিখনের দু'টি বৈশিষ্ট্য : i.শিখন আচরণের পরিবর্তন আনে ।
ii.শিখন অনুশীলন ভিত্তিক ।
5.পরিণমন কী ?
উঃ এর পরিণমন এমন একটি চর্চা যা অনুশীলন ও শিখন নিরপেক্ষ স্বাভাবিক স্বতঃস্ফূর্ত প্রক্রিয়া , এটি আপনা - আপনি ব্যক্তির মধ্যে সঞ্চারিত হয়ে তার অভ্যন্তরীণ বৃদ্ধিতে সহায়তা করে ।
6.SMA এর পুরো কথাটি কী ?
উঃ পুরো নাম : Special Mental Ability .
7.GMA- এর পুরো কথাটি কী ?
উঃ পুরো শব্দটি হলো : General Mental Ability .
8.শিখন ও পরিণমনের একটি সাদৃশ্য লেখো ।
উঃ প্রথমত : দু’টিই ব্যক্তির জীবনবিকাশের প্রক্রিয়া বা বিকাশমূলক প্রক্রিয়া ।
দ্বিতীয়ত : দু’টি প্রক্রিয়ার ফলশ্রুতিতেই ব্যক্তির আচরণের পরিবর্তন লক্ষণীয় ।
9.গ্যাগনির মতে সব থেকে উচ্চ পর্যায়ের শিখন কোনটি ?
উঃ গ্যাগনিনের মত অনুসারে সব থেকে উচ্চ পর্যায়ের শিখন হলো ‘ সমস্যা সমাধানমূলক শিখন ' ।
10.থার্স্টোনের তত্ত্ব অনুসারে যেকোনো দু’টি প্রাথমিক মানসিক ক্ষমতার উল্লেখ করো ।
উঃ থাস্টোনের তত্ত্ব অনুসারে দু'টি প্রাথমিক মানসিক ক্ষমতা হলো সংখ্যাগত উপাদান N এবং বাচনিক উপাদান V।
11.সাধারণ মানসিক ক্ষমতা কাকে বলে ?
উঃ এটি এমন একটি ক্ষমতা যা যে কোনো বৌদ্ধিক কাজে অল্পবিস্তর প্রয়োজন হয় । শিশু জিনগতসূত্রে এই ক্ষমতা অর্জন করে অর্থাৎ এটা সহজাত ও জন্মগত । স্পিয়ারম্যান এটাকেই বলেছেন ‘ G -ক্ষমতা ’ ।
12.মনোযোগের দু'টি বস্তুগত নির্ধারক কী ?
উঃ মনোযোগের দু’টি বস্তুগত নির্ধারকের নাম হলো তীব্রতা ও রং ।
13.বিশেষ মানসিক ক্ষমতা বলতে কী বোঝো ?
উঃ কোনো বিশেষ কাজের জন্য সাধারণ ক্ষমতার পাশাপাশি একটি বিশেষ ক্ষমতার প্রয়োজন হয় এবং ক্ষমতা ওই কাজটি ব্যতীত অন্য কোনো কাজে দরকার হয় না , তাকেই বলে বিশেষ ক্ষমতা । স্পিয়ারম্যান এই ক্ষমতাকে বলেছেন ‘ S ’ ক্ষমতা ।
LAQ..8
1.পরিণমন কাকে বলে ? শিক্ষাক্ষেত্রে পরিণমনের ভূমিকা আলোচনা করো ।
অথবা , পরিণমন বলতে কী বোঝো ? শিখন ও পরিণমন কীভাবে সম্পর্কিত লেখো ।
অথবা , শিখন ও পরিণমনের মধ্যে সম্পর্ক কী তা সংক্ষেপে আলোচনা করো । শিক্ষার ক্ষেত্রে পরিণমনের গুরুত্ব লেখো ।
উঃ পরিণমনঃ পরিণমন একটি চর্চা যা অনুশীলন ও শিখন নিরপেক্ষ স্বাভাবিক স্বতঃস্ফূর্ত প্রক্রিয়া , এটি আপনা - আপনি ব্যক্তির মধ্যে সঞ্চারিত হয়ে তার অভ্যন্তরীণ বৃদ্ধিতে সহায়তা করে ।
শিখন ও পরিণমনের সম্পর্কঃ শিখন ও পরিণমন উভয়েই বিকাশমূলক প্রক্রিয়া । মানুষের জীবন বিকাশে উভয় প্রক্রিয়ার গুরুত্ব রয়েছে । তবুও এদের মধ্যে কিছু সাদৃশ্য ও বৈসাদৃশ্য দেখা যায় ।
◽পরিণমন একটি স্বতঃস্ফূর্ত , স্বাভাবিক জৈবিক প্রক্রিয়া । এই প্রক্রিয়া সহজাত ও অভ্যন্তরীণ বলে বাহ্যিক পরিবেশ একে বিশেষ প্রভাবিত করতে পারে না ।
◽শিখন এক ধরনের শর্তসাপেক্ষ বিকাশমূলক মানসিক প্রক্রিয়া । শিখনের সাহায্যে শিশুরা জ্ঞান ও দক্ষতা অর্জন করে ।
শিখন ও পরিণমন উভয়েই পরস্পরের উপর নির্ভরশীল । সঠিক পরিণমন ছাড়া শিখন সম্ভব হয় না । এটি শিখনের সীমারেখা নির্ধারণ করে । কোনো কোনো ক্ষেত্রে শিখনও পরিণমনকে তরান্বিত করে । ফলে উভয়ের মধ্যে ঘনিষ্ট সম্পর্ক রয়েছে এবং উভয়েই শিশুর বিকাশের সহায়ক ।
শিক্ষাক্ষেত্রে পরিণমনের ভূমিকা / গুরুত্বঃ শিক্ষাক্ষেত্রে পরিণমনের গুরুত্ব নিম্নরূপ—
পরিশীলিত আচরণঃ পরিণমনের মাধ্যমে পরিবর্তিত আচরণগুলিকে যথাযথ শিখনের দ্বারা পরিশীলিত করা যায় ।
শিক্ষা পরিকল্পনায় পরিণমনঃ যথাযথ পরিণমনের অভাবে শিশু সঠিকভাবে পাঠ গ্রহণ করতে পারে না । ফলে শিশুর শারীরিক ও মানসিক পরিণমনের দিকে খেয়াল রেখে নানা স্তরে শিক্ষা পরিকল্পনা করতে হয় ।
পরিণমন অনুযায়ী শিক্ষা ব্যবস্থাঃ মানবজীবনে শৈশব ও কৈশোরে পরিণমনের প্রভাব খুব বেশি দেখা যায় । তখন পরিণমন অনুযায়ী শিক্ষার ব্যবস্থা করা জরুরি । কারণ এইসময় শিশুর জীবনে সঠিকভাবে পরিণমন খুবই প্রয়োজন ।
2.মনে যোগ বলতে কী বোঝো ? শিক্ষাক্ষেত্রে মনোযোগের ভূমিকার মূল্যায়ন করো ।
অথবা , মনোযোগ কাকে বলে ? শিক্ষায় মনোযোগের ভূমিকা লেখো ।
উঃ মনোযোগঃ শিখন প্রক্রিয়ার একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো মনোযোগ । বিভিন্ন মনোবিদ নিজস্ব ভঙ্গিতে মনোযোগের সংজ্ঞা দিয়েছেন । রস বলেছেন , এমন একটি প্রক্রিয়া যেটি চিন্তার বিষয়কে স্পষ্টভাবে মনের সম্মুখে এনে দেয় , তাকেই বলে মনোযোগ ৷ ম্যাকডুগালের মতে , মনের যে সক্রিয়তা জ্ঞানমূলক প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করে তা - ই মনোযোগ । উডওয়ার্থ - এর ভাষায়— পাশাপাশি অবস্থিত অসংখ্য উদ্দীপকের মধ্য থেকে কোনো একটিকে বেছে নেওয়ার পদ্ধতিই মনোযোগ । এককথায় , যে কোনো বিষয় সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট জ্ঞান অর্জনের জন্য মনকে নিবেশিত করার দৈহিক ও মানসিক প্রক্রিয়াকে বলা হয় মনোযোগ ৷
শিক্ষায় মনোযোগের ভূমিকাঃ শিক্ষার সঙ্গে মনোযোগের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে । শিখন প্রক্রিয়ায় শিক্ষার্থীদের মনোযোগ আকর্ষণ করা জরুরি ।
◽মনোযোগ আকর্ষণের এই কৌশলগুলি নিম্নরূপ : •
মনোযোগ আকর্ষী কৌশল : জীবনবিকাশের নানা স্তরে মনোযোগের রূপভেদ ঘটে । শৈশবে ব্যক্তিনিরপেক্ষ মনোযোগের প্রাধান্য থাকে বলে তখন বস্তুর বৈশিষ্ট্য মনোযোগ নির্ধারণ করে ।
শৈশবে শিশু খেলাধুলার প্রতি স্বত : স্ফূর্তভাবে মনোযোগী হয় । তাই এইসময়ে শিশুর পাঠক্রম হবে খেলাভিত্তিক । ফলে তার মনোযোগ বাড়বে পাঠক্রমে ।
ইচ্ছাসাপেক্ষ কৌশল : শৈশব পেরিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে দেখা যায় ইচ্ছাসাপেক্ষ মনোযোগ । এইসময় শিক্ষার্থীর মনোযোগ আকর্ষণের ক্ষেত্রে শিখনের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে অবহিত করা , উপদেশ প্রদান , লঘু শাসন ইত্যাদির প্রয়োগ করতে হয় ।
পরিসর অতিক্রম না করা : শিক্ষার্থীদের পঠনপাঠনের ক্ষেত্রে শিক্ষককে খেয়াল রাখতে হবে বিষয়বস্তু যেন তাদের মনোযোগের পরিসরকে ছাপিয়ে না যায় । এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের সামনে বিষয়বস্তু সহজ ও বোধগম্য করে উপস্থাপন করতে হবে ।
নির্ধারক প্রয়োগ : তীব্রতা , স্পষ্টতা , নতুনত্ব ইত্যাদি নির্ধারক প্রয়োগের ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীর প্রয়োজনের বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে । বিষয় - বৈচিত্র্য প্রয়োগ : মনোযোগ সদা চঞ্চল । কোমলমতি শিশুদের কোনো বিষয়ে দীর্ঘক্ষণ মনোযোগী করা যায় না । ফলে শিক্ষককে একটি বিষয় ছেড়ে অন্য বিষয়ে গিয়ে শিক্ষার্থীদের পঠনপাঠনে মনোযোগী করে তুলতে হবে । সবশেষে , পঠনপাঠনের ক্ষেত্রে মনোযোগ প্রধান শর্ত বলে শিক্ষার্থীদের মনোযোগ আকর্ষণের বিষয়ে শিক্ষককে সচেতন হতেই হবে ।
3.গ্যাগনির মত অনুসারে শিখনের প্রকারভেদ করো ।
উঃ শিক্ষামনোবিদ গ্যাগনি ব্যক্তির মানসিক প্রক্রিয়াগুলির জটিলতার স্তর অনুসারে শিখনের প্রকারভেদ সম্পর্কে তাঁর মতবাদ প্রকাশ করেন । শিখনের আটটি প্রকার তিনি চিহ্নিত করেন । একটি বিশেষ সজ্জাক্রম অনুযায়ী তিনি সেগুলিকে বিন্যস্তও করেছেন । গ্যাগনির মত অনুসারে শিখনের প্রকারভেদ নিম্নরূপ — -
সংকেত শিখন : সর্বাধিক সরল প্রকৃতির এই শিখনের প্রথম বর্ণনা করেন মনোবিদ প্যাভলভ । এটি প্রাচীন অনুবর্তনজনিত শিখন । বর্ণ , শব্দ , নামতার মতো শিখনে সংকেত শিখনের প্রভাব লক্ষ করা যায় । ও উদ্দীপক - প্রতিক্রিয়া শিখন : সক্রিয় অনুবর্তন নামে পরিচিত এই শিখন কৌশল আসলে একটি উন্নত শিখন । এখানে প্রাণীর প্রতিক্রিয়ার পর শক্তিদায়ী উদ্দীপকের ব্যবহার হয় । এখানে প্রেষণা ও পুরস্কারের গুরুত্ব বেশি ।
শৃঙ্খলিতকরণ শিখন : শৃঙ্খলিতকরণ উন্নত মানের শিখন কৌশল । এতে অতি জটিল চিন্তন কর্মসমন্বয় দক্ষতা অর্জিত হয় ।
বাচনিক সংযোগসাধনমূলক শিখন : প্রকৃতপক্ষে এটিও একপ্রকার শৃঙ্খলিতকরণ । এখানে নানা উপাদানের মধ্যে সংযোগসাধন করা হয় বিনিশ্চয় শিখন : এটি খুবই জটিল ও কঠিন শিখন প্রক্রিয়া । এর দ্বারা শিক্ষার্থীদের সেই সব দক্ষতা গড়ে তোলা হয় , যার দ্বারা তারা একইরকম একগুচ্ছ উদ্দীপকের ক্ষেত্রে ভিন্ন ভিন্ন প্রতিক্রিয়া জানাতে পারে ।
ধারণা শিখন ধারণা শিখনে কোনো বস্তু বা বিষয় সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের সামগ্রিক জ্ঞান অর্জনের লক্ষ্যে শিক্ষক সেগুলির সাধারণ বৈশিষ্ট্যের উপর গুরুত্ব দেন । নিয়ম শিখন নিয়ম শিখন আসলে খুব উচ্চমানের প্রজ্ঞামূলক শিখন । শিক্ষার্থীরা এর মাধ্যমে বিভিন্ন ধারণার মধ্যে নিবিড় সম্পর্ক খুঁজে পায় এবং সাধারণ নিয়মাবলি সম্পর্কে অবহিত হয় ।
সমস্যা সমাধানমূলক শিখন এটি বিশেষ এক ধরনের শিখন প্রক্রিয়া । এর দ্বারা শিক্ষার্থীরা প্রয়োজন মতো প্রতিক্রিয়া জানানোর ধরন আবিষ্কার করে । প্রকৃতপক্ষে এটি সবচেয়ে জটিল শিখন কৌশল ।
4.বুদ্ধি কী ? এর বৈশিষ্ট্য লেখো । শিখনের ক্ষেত্রে মানসিক ক্ষমতার ভূমিকা আলোচনা করো ।
উঃ বুদ্ধির সংজ্ঞা : এটি শিখনের অন্যতম উপাদান । যেকোনো বিষয়ে জ্ঞান অর্জন এবং কার্যকরী প্রয়োগের ক্ষমতাকেই বলে বুদ্ধি । মনোবিদগণ বিভিন্নভাবে বুদ্ধিকে বিশ্লেষণ করেছেন । তার ভিত্তিতে বলা যায়—— “ বুদ্ধি হলো ব্যক্তির একটি জৈব - মানসিক কৌশল যার মাধ্যমে চটজলদি জীবনের যে কোনো পরিস্থিতি বা সমস্যার মোকাবিলায় ব্যক্তি সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারে এবং সমাধানসূত্র নিরূপণে নিজস্ব শক্তি প্রয়োগ করতে পারে ।
বুদ্ধির বৈশিষ্ট্য : বুদ্ধির বিচ্ছুরণ বিভিন্নভাবে ঘটতে পারে । এর উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হলো—
i.নিত্যনতুন সমস্যা / পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে চলতে সাহায্য করে বুদ্ধি ও অনেক জটিল , বিমূর্ত বিষয় নিয়ে ব্যক্তিকে ভাবতে শেখায় বুদ্ধি ।
ii.পুরনো অভিজ্ঞতার মাধ্যমে বর্তমান সমস্যার মোকাবিলা করতে শেখায় বুদ্ধি ৷ তাৎক্ষণিক সমস্যা সমাধানে সহায়তা করে বুদ্ধি ।
iii. সমস্যার চুলচেরা বিশ্লেষণে বুদ্ধির ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ ।
iv. যেকোনো নতুন জিনিস শেখার ক্ষেত্রে বুদ্ধি সহায়তা করে ।
শিখনে মানসিক ক্ষমতার ভূমিকা : শিখনের কার্যকারিতা অনেকাংশে শিক্ষার্থীর মানসিক ক্ষমতার উপর নির্ভর করে । শিক্ষার্থীর আই কিউ ( বুদ্ধ্যঙ্ক ) অনুযায়ী তার শিক্ষাগ্রহণ সম্পন্ন হয় । বুদ্ধির অভাব থাকলে পড়াশোনায় অগ্রগতি অসম্ভব ।
বুদ্ধির ভিত্তিতে শিক্ষার্থীকে পৃথকভাবে বিদ্যাদান করলে পাঠদান গতি পায় ৷ ও শিক্ষার্থীর বুদ্ধি ও মেধা অনুযায়ী পাঠক্রম বাছাই করা উচিত । এতে সফলতা আসা সম্ভব ।
শিক্ষার্থী ভবিষ্যতে কোন পেশা বেছে নেবে সেটাও বুদ্ধির উপর নির্ভরশীল ।
5.আগ্রহের সংজ্ঞ দাও । শিক্ষায় আগ্রহের গুরুত্ব সম্পর্কে আলোচনা করো ।
উঃ আগ্রহ একটি মানসিক প্রক্রিয়া । একে ব্যাখ্যা করতে গিয়ে মনোবিজ্ঞানী জোন্স বলেছেন , “ আগ্রহ বলতে আমরা বুঝি বাস্তব বা কাল্পনিক কোনো বস্তু বা অবস্থার প্রতি আনন্দের অনুভূতি , যা ব্যক্তিকে কিছু করতে উদ্বুদ্ধ করে । ” মনোবিদ ম্যাকডুগাল – এর মতে , “ আগ্রহ হলো সুপ্ত মনোযোগ । ” মনোবিজ্ঞানী ড্রেভার এর মতে , “ আগ্রহ হলো গতিশীল মনোভাব । ” সব মিলিয়ে , “ আগ্রহ হলো একটি মানসিক সংগঠন , যা ব্যক্তিকে কোনো বিশেষ ধরনের কাজের প্রতি মনোনিবেশ করতে এবং তা সম্পাদন করতে প্রেরণা জোগায় । ” শিক্ষায় আগ্রহের গুরুত্ব : শিক্ষাক্ষেত্রে শিশুর আগ্রহ বা অনুরাগ ( interest ) বিশেষভাবে প্রয়োজনীয় । শ্রেণি শিক্ষক যদি শিক্ষার্থীর মধ্যে ভবিষ্যৎ জীবনের উপযোগী বিষয় সম্পর্কে আগ্রহ সঞ্চার করতে পারেন তা শিক্ষার্থীর পক্ষে মঙ্গলজনক হয় । শিক্ষায় শিশুর আগ্রহের কয়েকটি প্রয়োজনীয় দিক হলো— প্রথমত , শিক্ষণীয় বিষয়ে শিশু যদি আগ্রহ বোধ করে , সেক্ষেত্রে শিশুর আনন্দদায়ক অনুভূতি আসে । তাই বস্তু বা কর্মকেন্দ্রিক এই অনুভূতি শিক্ষাকে কার্যকর করে । দ্বিতীয়ত , আগ্রহ কোনো নিষ্ক্রিয় মানসিক সংগঠন নয় । এর সঙ্গে যুক্ত প্রাক্ষোভিক অনুভূতি কোনো কাজের শক্তি জোগায় । অর্থাৎ আগ্রহ প্রেষণা সৃষ্টিতে সাহায্য করে । এই প্রেষণা শিখনের অন্যতম প্রধান শর্ত । তৃতীয়ত , আগ্রহ শিশুকে সক্রিয় করে তোলে । সক্রিয়তা শিক্ষার ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ । চতুর্থত , শিশুর আগ্রহ বা অনুরাগ তার সেন্টিমেন্ট দ্বারাও প্রভাবিত হয় । সেন্টিমেন্ট হলো শিশুর প্রাক্ষোভিক প্রবণতা । এটাও অভিজ্ঞতার প্রভাবে গড়ে ওঠে । পঞ্চমত , শিশুর আগ্রহ অনেক সময় তাকে নতুন কিছু সৃষ্টিতে অনুপ্রাণিত করে । সৃজনশীল ব্যক্তির অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো নতুন সৃষ্টির প্রতি আগ্রহ । ষষ্ঠত , শিশুর আগ্রহ সমাজ পরিবেশের দ্বারাও প্রভাবিত হয় । সামাজিক পরিবেশে বাস করতে গিয়ে শিশু সামাজিক আচরণগুলি আয়ত্ত করে । সপ্ততম , শিশুর আগ্রহের যথাযথ অনুশীলনই তাকে ভবিষ্যৎ জীবনে সফল হতে সাহায্য করে । মন্তব্য : আগ্রহের বৈশিষ্ট্যগুলি শিক্ষার পক্ষে তাৎপর্যপূর্ণ । বিদ্যালয়ে বিভিন্ন অভিজ্ঞতার মাধ্যমে শিশুর মনে জ্ঞান আহরণের প্রতি আগ্রহ সঞ্চার করতে পারলে তা সারাজীবন স্থায়ী হবে । এভাবেই শিক্ষা জীবনে পূর্ণতা আনতে পারে । তাই শিক্ষা ও আগ্রহ পারস্পরিক সম্পর্কে আবদ্ধ ।
6.সাধারণ মানসিক ক্ষমতা কাকে বলে ? সাধারণ মানসিক ক্ষমতার বৈশিষ্ট্যগুলি লেখো ।
অথবা , বিশেষ মানসিক ক্ষমতা কাকে বলে ? বিশেষ মানসিক ক্ষমতার বৈশিষ্ট্যগুলি লেখো ।
উঃ সাধারণ মানসিক ক্ষমতা : স্পিয়ারম্যান শিক্ষার্থীদের পারদর্শিতার উপর সমীক্ষা করে সিদ্ধান্তে এসেছেন , এক ধরনের ক্ষমতা আছে যা সবরকম বৌদ্ধিক কাজে কম - বেশি ব্যবহৃত হয় । তাদের বলা হয় সাধারণ মানসিক ক্ষমতা বা ' G ' ।
সাধারণ মানসিক ক্ষমতার বৈশিষ্ট্য :
সহজাত : প্রত্যেক শিশুই জন্মসূত্রে বা জিনগত সূত্রে সাধারণ মানসিক ক্ষমতার অধিকারী । একটি নির্দিষ্ট বয়স পর্যন্ত এই ক্ষমতা বিকশিত হয় ।
সর্বজনীন : সব ব্যক্তিই কম বেশি সাধারণ মানসিক ক্ষমতার অধিকারী ।
বিকাশপ্রবণতা : প্রত্যেক শিশুর জন্ম থেকে কৈশোর পর্যন্ত সাধারণ মানসিক ক্ষমতা বিকশিত হতে পারে ।
সৃজনধর্মী : যেকোনো নতুন সমস্যায় মূলত অভিনব উপাদান খুঁজে বের করতে সাধারণ মানসিক ক্ষমতা সাহায্য করে ।
জীবনে সাফল্যের চাবিকাঠি : যে ব্যক্তি যত বেশি সাধারণ মানসিক ক্ষমতার অধিকারী হবে সে জীবনে তত বেশি সাফল্যের স্বাদ পাবে । বিশেষ মানসিক ক্ষমতা : স্পিয়ারম্যানের মতে , যে মানসিক উপাদানটি বিশেষ বিশেষ কাজের ক্ষেত্রে দেখা যায় তাদের বলা হয় বিশেষ মানসিক ক্ষমতা বা ‘ S ’ । • বিশেষধর্মী : বিশেষ মানসিক ক্ষমতা হলো বিশেষধর্মী । কোনো বিশেষ কাজ সম্পন্ন করার সময় বিশেষধর্মী ক্ষমতা ব্যবহৃত হয় ।
পেশাগত ক্ষমতায় সহায়তাকারী : বিশেষ মানসিক ক্ষমতা কোনো ব্যক্তিকে কর্মক্ষেত্রে দক্ষতা প্রদর্শনে সাহায্য করে ।
যূথবদ্ধ : বিশেষ বিশেষ ধরনের কাজ সম্পাদনের ক্ষেত্রে বিশেষ বিশেষ ধরনের মানসিক ক্ষমতা দরকার হয় । এটি যেকোনো জটিল কাজ সম্পন্ন করতে সাহায্য করে ।
ব্যক্তিভেদে পৃথক ক্ষমতা : বিশেষ মানসিক ক্ষমতা কোনো একজন ব্যক্তির মধ্যে নয় , ব্যক্তিভেদে বিভিন্ন ধরনের বিশেষ মানসিক ক্ষমতা দেখা যায় ।
No comments:
Post a Comment