ষষ্ঠ শ্রেণির ইতিহাস দ্বিতীয় অধ্যায় ভারতীয় উপমহাদেশে আদিম মানুষ প্রশ্ন উত্তর (MCQ, SAQ, LAQ)/Class 6th history second chapter questions and Answers (MCQ, SAQ, LAQ) - Psycho Principal

Fresh Topics

Thursday, 3 February 2022

ষষ্ঠ শ্রেণির ইতিহাস দ্বিতীয় অধ্যায় ভারতীয় উপমহাদেশে আদিম মানুষ প্রশ্ন উত্তর (MCQ, SAQ, LAQ)/Class 6th history second chapter questions and Answers (MCQ, SAQ, LAQ)

Class 6th
History


 


শূন্যস্থান পূরণ করো
প্রতিটি প্রশ্নের মান -1

1. মানুষ ও তার কাজকর্ম নিয়েই মানুষের➖➖➖ ( ইতিহাস / ভূগোল / পরিবেশ ) ।
উঃ ইতিহাস
2. আফ্রিকার জঙ্গলে পাওয়া এক ধরনের বড়ো বানরের লেজ ছিল না । তাদের বলা হয়➖➖➖ ( বানর / এপ / হোমিনিড ) ।
উঃ এপ
3. পাথরের যুগকে➖➖➖( দুটি / তিনটি / চারটি ) পর্যায়ে ভাগ করা হয় ।
উঃ তিনটি
4. হুন্সগি➖➖➖( কেরলে / মহারাষ্ট্রে / কর্ণাটকে ) অবস্থিত ।
উঃ কর্ণাটকে
5. ভীমবেটকা ➖➖➖   ( পশ্চিমবঙ্গে / মধ্যপ্রদেশে / মহারাষ্ট্রে ) অবস্থিত ।
উঃ মধ্যপ্রদেশে
6. ভীমবেটকা গুহায় পাওয়া যায়➖➖➖  (শিকারের / যুদ্ধের / খেলার ) ছবি |
উঃ শিকারের
7. ‘ ট্যরো ’ কথার অর্থ➖➖➖ ( ঘোড়া / ষাঁড় / ভেড়া ) ।
উঃ ষাঁড়
৪. উত্তরপ্রদেশের মহাদহা থেকে➖➖➖ ( পুরোনো / মাঝের / নতুন ) পাথরের যুগের মানুষের হাতিয়ার  পাওয়া গেছে ।
উঃ মাঝের
9.➖➖➖ ( নতুন / পুরোনো / মাঝের ) পাথরের যুগের মানুষ দলবেঁধে পশুশিকার করত ।
উঃ পুরোনো
10. কুমোরের ঢাকা ব্যবহার শুরু হয়➖➖➖ ( পুরোনো / মাঝের / নতুন ) পাথরের যুগে
উঃ নতুন
11. রাজস্থানের➖➖➖ ( মহাদহাতে / ছুন্সগিতে / বাগোড়ে ) আদিম মানুষের বসতির চিহ্ন পাওয়া গেছে ।
উঃ বাগোড়ে
12. নতুন পাথরের যুগে মানুষ কৃষি সমৃদ্ধ অঞ্চলেই➖➖➖( স্থায়ী বসতি / পশুচারণভূমি / খামার ) প্রতিষ্ঠা করে ।
উঃ স্থায়ী বসতি
13. মূলত➖➖➖ ( হাতের / পায়ের / মস্তিষ্কের ) আকার থেকেই মানুষের নানা ভাগ করা হয় ।
উঃ মস্তিষ্কের
14. নতুন পাথরের যুগের উল্লেখযোগ্য আবিষ্কার হল➖➖➖ ( পাথরের হারপুন / কুমোরের চাকা / বড়শি ) ।
উঃ কুমোরের চাকা
15. হোমো হাবিলিস বলতে যাদের বোঝায় তারা হল ➖➖➖ ( বুদ্ধিমান মানুষ / দক্ষ মানুষ / শক্তিশালী | মানুষ ) ।
উঃ দক্ষ মানুষ


◽সত্য/ মিথ্যা নির্বাচন করো
প্রতিটি প্রশ্নের মান-1
1. মানুষ একটি বিশেষ প্রাণী ।
উঃ সত্য
2. মানুষের প্রধান বৈশিষ্ট্য হল তার লেজ ।
উঃ মিথ্যা
3. লক্ষ লক্ষ বছর আগে পৃথিবীর স্থলভাগ ছিল ঘন জঙ্গলে ঢাকা ।
উঃ সত্য
4. অস্ট্রালোপিথেকাস মানুষই বুদ্ধিমান মানুষ |
উঃ মিথ্যা
5. লক্ষ লক্ষ বছর আগে মানুষ পাথর দিয়ে হাতিয়ার বানাত ।
উঃ সত্য
6. মানুষ পাথরে পাথরে ঠোকাঠুকি করে আগুন জ্বালিয়েছিল ।
উঃ মিথ্যা
7. আগুনের ব্যবহার শেখার ফলে আদিম মানুষের শরীরে জোর কমল , কিন্তু বুদ্ধির বিকাশ হল
উঃ মিথ্যা
৪. মধ্যপ্রদেশের নর্মদা উপত্যকায় এক লক্ষ তিরিশ হাজার বছরেরও বেশি আগের মানুষের মাথার খুলি পাওয়া গেছে ।
উঃ সত্য
9. পুরোনো পাথরের যুগে আদিম মানুষের জীবন ছিল বেশ কঠিন ও কঠোর ।
উঃ সত্য
10. উত্তরপ্রদেশের সরাইনহর রাইতে হাতকুঠার পাওয়া গেছে |
উঃ মিথ্যা
11.নতুন পাথরের যুগে পাথরের হাতিয়ার তৈরির কৌশল আরও উন্নত হয়েছিল।
উঃ সত্য


◽বিবৃতির সঙ্গে ব্যাখ্যা মেলাও
প্রতিটি প্রশ্নের মান-1

1. বিবৃতি ; মানুষকে অন্যান্য জীবের থেকে আলাদা করে চেনা যায় ।
ব্যাখ্যা -১ : মানুষ অন্যান্য জীবের থেকে বুদ্ধিমান ।
ব্যাখ্যা -২ : মানুষ অন্যান্য জীবের থেকে বুদ্ধিমান ও তার শারীরিক গঠন আলাদা ।
ব্যাখ্যা -৩ : মানুষের শারীরিক গঠন আলাদা ।
উঃ ব্যাখ্যা -২ : মানুষ অন্যান্য জীবের থেকে বুদ্ধিমান ও তার শারীরিক গঠন আলাদা ।

2. বিবৃতি নতুন পাথরের যুগে মাটির পাত্র বানানো শুরু হয়েছিল ।
ব্যাখ্যা -১ : নতুন পাথরের যুগে মানুষের দক্ষতা বাড়ে ।
ব্যাখ্যা ২ : নতুন পাথরের যুগে মানুষ সহজেই মাটি পেত ।
ব্যাখ্যা -৩ : নতুন পাথরের যুগে কুমোরের চাকা আবিষ্কৃত হয় ।
উঃ ব্যাখ্যা -৩ : নতুন পাথরের যুগে কুমোরের চাকা আবিষ্কৃত হয় ।

3. বিবৃতি : ধীরে ধীরে আদিম মানুষের চোয়াল সরু হয়ে গেল ।
ব্যাখ্যা -১ : আগুনে ঝলসানো নরম মাংস খেতে চোয়ালের জোর কম লাগত ।
ব্যাখ্যা -২ : মানুষ ফলাহারী হয়ে পড়ে ।
ব্যাখ্যা -৩ : মানুষের চেহারার ওপর প্রাকৃতিক প্রভাব পড়েছিল ।
উঃ ব্যাখ্যা -১ : আগুনে ঝলসানো নরম মাংস খেতে চোয়ালের জোর কম লাগত ।

4. বিবৃতি : সরাইনহর রাইতে মাঝের পাথরের যুগের ভেড়া বা ছাগলজাতীয় কোনো পশুর হাড় পাওয়া যায়নি |
ব্যাখ্যা -১ : এই সময় ভেড়া বা ছাগল ছিল না ।
ব্যাখ্যা -২ : এই সময় মানুষ পশুপালন করত না ।
ব্যাখ্যা -৩ : এই সময় মানুষ শিকার করত ।
উঃ ব্যাখ্যা -৩ : এই সময় মানুষ শিকার করত ।

5. বিবৃতি : নর্মদা উপত্যকার আদমগড়ে আট হাজার বছরের পুরোনো বন্য পশুর হাড় পাওয়া গেছে । কিন্তু তাতে আঘাতের চিহ্ন নেই ।
ব্যাখ্যা -১ : আদমগড়ের মানুষ পশু শিকার করত ।
ব্যাখ্যা -২ : আদমগড়ের মানুষ পশুপালন করত ।
ব্যাখ্যা -৩ : আদমগড়ের মানুষ যাযাবর ছিল ।
উঃ ব্যাখ্যা -২ : আদমগড়ের মানুষ পশুপালন করত ।

6. বিবৃতি : নতুন পাথরের যুগে শিকার ও পশুপালন করে যা পাওয়া যেত , তা গোষ্ঠীর সবাই ভাগ করে নিত ।
ব্যাখ্যা -১ : এই সময় মানুষ জোট বেঁধে বাস করত ।
ব্যাখ্যা -২ : এই সময় মানুষ শিকারে ব্যস্ত ছিল ।
ব্যাখ্যা -৩ : এই সময় সমাজে বিশেষ ভেদাভেদ ছিল না ।
উঃ ব্যাখ্যা -৩ : এই সময় সমাজে বিশেষ ভেদাভেদ ছিল না ।

7. বিবৃতি : মাঝের পাথরের যুগের হাতিয়ারগুলিকে ছোটো পাথরের হাতিয়ার বলা হয় ।
ব্যাখ্যা -১ : এগুলি ছিল আগের তুলনায় আকারে ছোটো এবং অনেক বেশি ধারালো ।
ব্যাখ্যা -২ : এগুলি আগের তুলনায় ছোটো ও ভারী ছিল ।
ব্যাখ্যা -৩ : এগুলি আগের তুলনায় ছোটো ও ভোঁতা ছিল ।
উঃ ব্যাখ্যা -১ : এগুলি ছিল আগের তুলনায় আকারে ছোটো এবং অনেক বেশি ধারালো ।

8. বিবৃতি : এক সময় মানুষ ছাল চামড়া দিয়ে গা ঢাকার উপায় বের করল ।
ব্যাখ্যা -১ : মানুষের কোনো পোশাক ছিল না ।
ব্যাখ্যা -২ : মানুষ ঠান্ডার হাত থেকে বাঁচতে চেয়েছিল ।
ব্যাখ্যা -৩ : এসময় ছাল - চামড়া সহজে পাওয়া যেত ।
উঃ ব্যাখ্যা -২ : মানুষ ঠান্ডার হাত থেকে বাঁচতে চেয়েছিল ।


একটি বাক্যে উত্তর দাও
প্রতিটি প্রশ্নের মান-1

1.ইতিহাস কী?
উঃ এক কথায় ইতিহাস হলো মানুষ ও তার কাজকর্মের ধরাবাহিক পরিবর্তনের কাহিনী।

2. আদিম মানুষের পরিবার কী নামে পরিচিত ?
উঃ আদিম মানুষের পরিবার হোমিনিড নামে পরিচিত ।

3. এপ কাদের বলা হয় ?
উলেজহীন বড়ো বাঁদরদের এপ বলা হয় ।

4. কীসের সন্ধানে এপের দল গভীর জঙ্গলের খোঁজে | বেরিয়ে পড়ল ?
উঃ ফলমূলের সন্ধানে এপের দল গভীর জঙ্গলের খোঁজে বেরিয়ে পড়ল ।

5. আজ থেকে কত বছর আগে এপদের থেকে । হোমিনিডরা আলাদা হয়ে যায় ?
উঃ আজ থেকে প্রায় তিরিশ - চল্লিশ লক্ষ বছর আগে এপদের থেকে হোমিনিডরা আলাদা হয়ে যায় ।

6. ভারতীয় উপমহাদেশের সব থেকে পুরোনো পাথরের অস্ত্র কোথায় পাওয়া গেছে ?
উঃ ভারতীয় উপমহাদেশের সব থেকে পুরোনো পাথরের অস্ত্র পাওয়া গেছে কাশ্মীরের সোয়ান উপত্যকায় ।

7. দাবানল কাকে বলে ?
উঃ বনে লাগা আগুনকে দাবানল বলে ।

৪. আট হাজার বছরের পুরোনো বন্যপশুর হাড় কোথায় পাওয়া গেছে ?
উঃ আট হাজার বছরের পুরোনো বন্যপশুর হাড় নর্মদা উপত্যকার আদমগড়ে পাওয়া গেছে ।

9. কত বছর আগে পুরোনো পাথরের যুগ শুরু হয়েছিল ?
উঃ আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ২০ লক্ষ থেকে খ্রিস্টপূর্ব ১০ হাজার বছর আগে পুরোনো পাথরের যুগ শুরু হয়েছিল ।

10. পুরোনো পাথরের যুগে মানুষ কোথায় বাস করত ?
উঃ পুরোনো পাথরের যুগে মানুষ খোলা আকাশের নীচে বা গুহায় বাস করত ।

11. আদিম মানুষ হাতিয়ার ব্যবহার করত কেন ?
উঃ আদিম মানুষ হিংস্র জন্তু - জানোয়ারের হাত থেকে নিজেকে রক্ষা করার জন্য এবং খাদ্যসংগ্রহ করার জন্য হাতিয়ার ব্যবহার করত ।

12. নতুন পাথরের যুগে মানুষ কোথায় বাস করত ?
উঃ নতুন পাথরের যুগে মানুষ জমির কাছে বা জমিতে বা জলাশয়ের কাছে কুটির বা বাড়ি তৈরি করে স্থায়ীভাবে বাস করত ।

13. কোন্ যুগে মানুষ ছোটো ছোটো বসতি বানাতে শুরু করে ?
উঃ মাঝের পাথরের যুগে মানুষ ছোটো ছোটো বসতি বানাতে শুরু করে ।

14. মাটির পাত্র বানানো কোন্ যুগে শুরু হয় ?
উঃ নতুন পাথরের যুগে মাটির পাত্র বানানো শুরু হয় ।

15. লুসির কঙ্কাল কত বছরের পুরোনো ?
উঃ লুসির কঙ্কাল ৩২ লক্ষ বছরের পুরোনো ।

16. কত খ্রিস্টাব্দে ভীমবেটকা গুহার খোঁজ পাওয়া যায় ?
উঃ ১৯৫৭ খ্রিস্টাব্দে ভীমবেটকা গুহার খোঁজ পাওয়া যায় ।

17. বাগোড়ের মানুষ কীসের গুরুত্ব বুঝতে পেরেছিল ?
উঃ বাগোড়ের মানুষ গৃহপালিত পশুর গুরুত্ব বুঝতে পেরেছিল ।

18. নতুন পাথরের যুগে মেয়েরা কী করত ?
উঃ নতুন পাথরের যুগে মেয়েরা গৃহস্থালির কাজ ও শস্য উৎপাদনের কাজ করত ।

19. জাঁতার মতো যন্ত্র কোথায় পাওয়া গেছে ?
উঃ জাতার মতো যন্ত্র পাওয়া গেছে উত্তরপ্রদেশের সরাই নহর রাইতে ।

20. ঠান্ডা থেকে বাঁচার জন্য মানুষ কীসের সাহায্য নিয়েছিল ?
উঃ ঠান্ডা থেকে বাঁচার জন্য মানুষ আগুনের উত্তাপ এবং পোশাক হিসেবে পশুর চামড়া ও গাছের ছাল ব্যবহার করত ।

21 . কোন্ যুগে মানুষ গোষ্ঠীবদ্ধ হয়েছিল ?
উঃ নতুন পাথরের যুগে মানুষ গোষ্ঠীবদ্ধ হয়েছিল ।

22. মানুষ কোন্ কারণে যে - কোনো পরিবেশে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারে ?
উঃ মানুষ তার সংস্কৃতির জন্যই যে - কোনো পরিবেশে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারে ।


◽সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মি প্রশ্ন উত্তর
প্রতিটি প্রশ্নের মান-2/3

1. কোন্ কোন্ এলাকায় আদিম মানুষের সন্ধান পাওয়া গেছে ?
উঃ  আফ্রিকা , চিন ও জাভায় আদিম মানুষের কঙ্কাল ও হাড়ের সন্ধান পাওয়া গেছে । সম্ভবত আফ্রিকা থেকে আদিম মানুষ ভারতীয় উপমহাদেশে এসেছিল । তাই উপমহাদেশে আদিম মানুষের নমুনা পাওয়া গেলেও তার পরিমাণ অল্প ৷

2. কারা আদিম মানুষ নামে পরিচিত ?
উঃ আদিম কথার অর্থ হল খুব পুরোনো বা শুরুর দিকের । তাই খুব পুরোনো সময়ের মানুষদের আদিম মানুষ বলা হয় ।

3. লুসি কী ?
উঃ ১৯৭৪ সালে আফ্রিকা মহাদেশের ইথিওপিয়ার হাদার নামক জায়গায় অস্ট্রালোপিথেকাস মানুষের একটি কঙ্কালের কিছুটা অংশ পাওয়া গেছে । ৩২ লক্ষ বছর আগের এই কঙ্কালটি আসলে একটি ছোটো মেয়ের , যার নাম রাখা হয় লুসি । সেই থেকে প্রত্নতত্ত্বের ইতিহাসে লুসি অত্যন্ত পরিচিত নাম হয়ে ওঠে ।

4. নতুন পাথরের যুগে মানুষের হাতিয়ার কেমন ছিল ?
উঃ নতুন পাথরের যুগে মানুষ মসৃণ , ধারালো এবং হালকা পাথরের হাতিয়ার ব্যবহার করত । এইসব হাতিয়ার আগের যুগের তুলনায় যথেষ্ট উন্নত ছিল ।

5. হুন্সগি কীজন্য বিখ্যাত ?
উঃ হুন্সগি কর্ণাটকের গুলবর্গা জেলার একটি প্রত্নস্থল । এখানে পুরোনো পাথরের যুগের নানা ধরনের হাতিয়ার পাওয়া গেছে । যেগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল — হাতকুড়ুল , ছোরা , চাঁছুনি প্রভৃতি ।

6. ভীমবেটকা সম্পর্কে সংক্ষেপে লেখো ।
উঃ ভীমবেটকা হল মধ্যপ্রদেশের একটি প্রত্নস্থল । এখানে ১৯৫৭ সালে বেশ কয়েকটি গুহার সন্ধান পাওয়া যায় । এই গুহাগুলির দেয়ালে পুরোনো পাথরের যুগের আদিম মানুষের হাতে আঁকা নানা ছবি পাওয়া গেছে । এগুলির প্রায় সবই হল শিকারের দৃশ্য ।

7. ভীমবেটকা গুহার ছবি সম্পর্কে সংক্ষেপে লেখো ।
উঃ ভীমবেটকা গুহায় আদিম মানুষের আঁকা নানা জীবজন্তু ও শিকারের ছবি পাওয়া গেছে । জীবজন্তুর ছবির মধ্যে পাখি , মাছ , কাঠবেড়ালি প্রভৃতি বিশেষ উল্লেখযোগ্য । এ ছাড়া কতকগুলো ছবিতে মানুষের সঙ্গে কুকুরকেও দেখা যায় । ছবিগুলিতে সবুজ ও হলুদ রং ব্যবহার করা হলেও , সাদা ও লাল রং বেশি দেখা যায় ।

8. নতুন পাথরের যুগে মানুষের জীবনযাত্রার ক্ষেত্রে কী কী পরিবর্তন এল ?
উঃ আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ৮ হাজার থেকে খ্রিস্টপূর্ব ৪ হাজার বছর আগে নতুন পাথরের যুগের সূচনা হয় । এসময় মানুষ হালকা ও ধারালো হাতিয়ার বানানো শুরু করে । এই যুগেই মানুষ প্রথম কৃষিকাজ শেখে এবং নিজেরাই খাদ্য উৎপাদনে সক্ষম হয় । কৃষিকাজ শুরু হওয়ার ফলে যাযাবর মানুষের স্থায়ী জীবনযাত্রার সূচনা হয় । শিকার ও পশুপালন থেকে যা পাওয়া যেত তা গোষ্ঠীবদ্ধ মানুষের সকলেই সমানভাবে ভাগ করে নিত । এই যুগের সমাজে নানা কারিগর শ্রেণির উদ্ভব ঘটে , যার ফলে সমাজ ও সভ্যতা উন্নত হয়ে ওঠে ।

9. ছুন্সগি উপত্যকা থেকে কী ধরনের হাতিয়ার পাওয়া গেছে ?
উঃ  কর্ণাটকের গুলবর্গা জেলার উত্তর - পশ্চিমে হুন্সগি উপত্যকা অবস্থিত । ১৯৮৩ খ্রিস্টাব্দে মাটি খুঁড়ে সেখানে পুরোনো পাথরের যুগের হাতকুড়ুল , ছোরা বা ছুরি এবং চাঁছুনি জাতীয় হাতিয়ার পাওয়া গেছে । অনুমান করা হয় যে , এইসব হাতিয়ার তৈরি হয়েছিল আজ থেকে পাঁচ - ছয় লক্ষ বছর আগে । অনেকে মনে করেন যে , হুন্সগিতে পাথরের হাতিয়ার তৈরি করা হত । নানা ধরনের বন্যপশু , গাছপালা ও খালের জল থাকার কারণেই সম্ভবত এই জায়গাটা আদিম মানুষরা বেছে ছিল ।

10. বাগোড় এলাকার সংস্কৃতি সম্পর্কে লেখো ।
উঃ রাজস্থানের বাগোড় অঞ্চল একটি বিশিষ্ট প্রত্নক্ষেত্র । এখানে আদিম মানুষের বসতির চিহ্ন এবং পশুর হাড় পাওয়া গেছে , যা থেকে বোঝা যায় যে বাগোড়ের বাসিন্দারা পশুপালন করত । পরে অবশ্য গৃহপালিত পশুর সংখ্যা বাড়ার পাশাপাশি শিকার করা পশুর সংখ্যা ক্রমশ কমতে থাকে । তাই মনে করা হয় বাগোড়ের অধিবাসীরা গৃহপালিত পশুর গুরুত্ব বুঝতে পেরেছিল । তারা একদিকে শিকার এবং অন্যদিকে পশুপালন উভয়েই অভ্যস্থ ছিল ।

11. নতুন পাথরের যুগে মানুষের কৃষিকাজ শেখার ফলে কী হয়েছিল ?
উঃ নতুন পাথরের যুগে কৃষিকাজ শেখার ফলে মানুষের জীবনযাত্রায় নানান পরিবর্তন দেখা দেয় । এগুলি হল—
[ 1 ] কৃষি অঞ্চলেই মানুষ স্থায়ী বসতি বানিয়ে থাকতে শুরু করে । ফলে তাদের যাযাবর জীবন শেষ হয়ে যায় ।
[ 2 ] তাদের খাবার নিয়ে কোনো অনিশ্চয়তা থাকে না । কেন না কৃষিকাজ খাদ্য উৎপাদন সুনিশ্চিত করে ।
[ 3 ] পশুপালনও সহজ হয়ে গেল । কারণ গবাদিপশুর খাবার জন্য অঢেল খড় , বিচালি প্রভৃতি পাওয়া সহজ হল ।
[ 4 ] খাদ্য ও বাসস্থান সুনিশ্চিত হওয়ার ফলে তারা জোট বেঁধে থাকতে শুরু করে যা পরে সমাজের জন্ম দেয় ।

12. নতুন পাথরের যুগকে ‘ নতুন ’ বলা হয় কেন ?
উঃ মানবসভ্যতার অগ্রগতির ক্ষেত্রে নতুন পাথরের যুগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ , কেননা এসময় মানবসভ্যতার ক্ষেত্রে কতকগুলি বিশেষ পরিবর্তন এসেছিল । যেমন—
[ 1 ] আগের তুলনায় মানুষের হাতিয়ার বানানোর কৌশল আরও উন্নত হয়েছিল ।
[ 2 ] এসময় মানুষ কৃষিকাজ শেখার ফলে খাদ্য উৎপাদন করতে শিখেছিল ।
[ 3 ] মানুষ স্থায়ী বসতি নির্মাণ করতে শিখেছিল । এইসব কারণের জন্যই নতুন পাথরের যুগকে ‘ নতুন ’ বলা হয় ।

13. উত্তরপ্রদেশের সরাইনহর রাইতে যে ধরনের হাতিয়ার ও যন্ত্রপাতি পাওয়া গেছে তার উদাহরণ দাও ।
উঃ উত্তরপ্রদেশের সরাইনহর রাইতে নানা ধরনের হাতিয়ার ও যন্ত্রপাতি পাওয়া গিয়েছিল । এখানে পাওয়া হাতিয়ারগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল — দু - দিকে ধারওয়ালা ছুরি , হাড়ের তৈরি তিরের ফলা প্রভৃতি । এখানে জাঁতার মতো যন্ত্র পাওয়া গেছে । এইসব জাঁতা সম্ভবত দানাশস্য পেষাই করার কাজে ব্যবহার করা হত ।

14. ' সংস্কৃতি ' কী ?
উঃ সাধারণভাবে সংস্কৃতি কথাটির মাধ্যমে নাচ - গান , শিল্প সাহিত্য , পোশাক - পরিচ্ছদ , মানুষের খাওয়া - দাওয়া , রুচি , অবসরবিনোদন সহ নানা কাজকর্মকে বোঝায় । সুপ্রাচীনকাল থেকে বর্তমান যুগ পর্যন্ত মানবসভ্যতার অগ্রগতির অন্যতম অঙ্গ হল এই সংস্কৃতি । মানুষের সংস্কৃতিই তার পরিচয় ।


◽দীর্ঘ উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তর
প্রতিটি প্রশ্নের মান-৫

1. এপরা কীভাবে নানা অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ল ?
ভূমিকা : একসময় আফ্রিকা মহাদেশের পূর্বাঞ্চলে ছিল ঘন জঙ্গল । সেই জঙ্গলে ছিল বিশাল আকারের ভয়ানক সব প্রাণী । আর ছিল লেজহীন বানর , যাদের বলা হত এপ ।
এপদের ছড়িয়ে পড়া : ধীরে ধীরে আবহাওয়া বদলাতে থাকে এবং গাছের সংখ্যাও কমে যায় । ফলে এপদের গাছে গাছে ঘুরে বেড়ানো কঠিন হয়ে পড়ে । খাদ্যের জন্য ফলমূলেরও অভাব দেখা দেয় । তখন এপদের একদল গভীর
জঙ্গলের খোঁজে বেরিয়ে পড়ল । এদের অন্যদলটি আবার খাবারের সন্ধানে গাছ থেকে মাটিতে নেমে এল । তারা দু - পায়ে ভর দিয়ে দাঁড়ানোর চেষ্টা করল , খুঁজতে থাকল খাবার । ধীরে ধীরে এপ থেকে আলাদা হয়ে গেল মানুষ পরিবার বা হোমিনিড ।

2. হোমো হাবিলিস মানুষ সম্পর্কে কী জান লেখো ।
উত্তরঃ পুরোনো বা মানবসভ্যতার গোড়ার দিকের মানুষকে বলা হয় আদিম মানুষ । মস্তিষ্কের আকারের বিচারে আদিম মানুষকে নানাভাবে ভাগ করা হয় । এই ভাগের একটি অন্যতম হল হোমো হাবিলিস । এই শ্রেণির মানুষ মানবসভ্যতার ইতিহাসে দক্ষ মানুষ নামে পরিচিত । আনুমানিক ২৬ লক্ষ থেকে ১৭ লক্ষ বছর আগে এই শ্রেণির মানুষের আবির্ভাব ঘটেছিল । এরা দলবদ্ধভাবে বাস করত । সাবলীলভাবে হাঁটতে পারত । এদের খাদ্য ছিল ফলমূল ও কাঁচা মাংস ।
এরাই প্রথম পাথরকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে । এরা একটা পাথরের সাহায্যে অন্য পাথরকে জোরে আঘাত করে পাথরের অস্ত্র বানাতে শুরু করে ।

3. মানবসভ্যতার ক্ষেত্রে আগুনের ব্যবহার অত্যন্ত জরুরি বিষয় কেন ?
ভূমিকা : পৃথিবীর সমস্ত প্রাণীদের মধ্যে একমাত্র মানুষই আগুন জ্বালাতে ও ব্যবহার করতে পারে । নানা কারণে মানবসভ্যতার ক্ষেত্রে আগুনের ব্যবহার ছিল একটি অত্যন্ত জরুরি বিষয় । যেমন—
[ 1 ] ঠান্ডার হাত থেকে রেহাই : আদিম মানুষ প্রথমদিকে খোলা আকাশের নীচে বা গুহায় বসবাস করত । তাই ঠান্ডার সময় তাদের প্রচণ্ড কষ্ট হত । আগুন জ্বালাতে শেখার পরে তারা আগুনের উত্তাপের সাহায্যে প্রচণ্ড ঠান্ডা থেকে রেহাই পেল ।
[ 2 ] হিংস্ৰ বন্যপশু থেকে আত্মরক্ষা : আগুনের ব্যবহার মানুষকে হিংস্র বন্যপশুর আক্রমণ থেকে বাঁচতে আলাদা শক্তি জোগায় । বন্যপশুরা আগুনকে ভয় পেত , তাই খুব সহজেই আগুন ব্যবহার করে মানুষ এই পশুদের আক্রমণ থেকে নিজেদের রক্ষা করতে পেরেছিল ।
[ 3 ] খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন : দাবানলের সময় মৃত পশুদের পোড়া মাংস খেয়ে মানুষ তার আলাদা স্বাদ বুঝতে পারে । তাই পরে আগুনের ব্যবহার শেখার ফলে তারা মাংস পুড়িয়ে খেতে শুরু করে ।
[ 4 ] শারীরিক গঠনের পরিবর্তন : আগুনে ঝলসানো মাংস খাওয়ার ফলে মানুষের চোয়াল ও দাঁতের জোর কম লাগত । তাই ধীরে ধীরে চোয়াল সরু হয়ে এল এবং সামনের ধারালো উঁচু দাঁতও ছোটো হয়ে গেল । তাই সার্বিকভাবে বলা যায় , আগুনের ব্যবহারের ফলে মানুষ উন্নতির দিকে আরও একধাপ এগিয়ে যায় ।

No comments:

Post a Comment