সপ্তম শ্রেণীর ভূগোল প্রথম অধ্যায় পৃথিবীর পরিক্রমণ প্রশ্ন উত্তর (MCQ, SAQ, LAQ)/Class 7 Geography first chapter questions and Answers (MCQ, SAQ, LAQ) - Psycho Principal

Fresh Topics

Wednesday, 2 February 2022

সপ্তম শ্রেণীর ভূগোল প্রথম অধ্যায় পৃথিবীর পরিক্রমণ প্রশ্ন উত্তর (MCQ, SAQ, LAQ)/Class 7 Geography first chapter questions and Answers (MCQ, SAQ, LAQ)

 

প্রথম অধ্যায়
প্রশ্ন উত্তর


দ্বিতীয় অধ্যায় "ভূপৃষ্ঠের কোনো স্থানের অবস্থান নির্ণয়"  প্রশ্ন উত্তর পড়তে নিচের লিংকে ক্লিক করো

👉 ( দ্বিতীয় অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর )


MCQ........ ..............Mark-1


১.  21 মার্চ ও 23 সেপ্টেম্বর / 21 জুন / 22 ডিসেম্বর / 3 জানুয়ারি – পৃথিবীর সর্বত্র দিন - রাত্রি সমান ।
উঃ21 মার্চ ও 23 সেপ্টেম্বর

২.দক্ষিণ গোলার্ধে ক্ষুদ্রতম রাত্রি হয় – 21 মার্চ / 23 সেপ্টেম্বর / 22 ডিসেম্বর / 23 ডিসেম্বর ।
উঃ22 ডিসেম্বর

৩.  রকেটের মাধ্যমে কৃত্রিম উপগ্রহ উৎক্ষেপণ করা হয় যে বেগের দ্বারা তা হল – মুক্তিবেগ / পরিক্রমণ বেগ / আলোর বেগ
উঃমুক্তিবেগ

৪. দক্ষিণ অয়নান্ত দিবস হল – 21 মাৰ্চ / 21 জুন / 22 ডিসেম্বর / 23 জুন ।
উঃ22 ডিসেম্বর

৫.নিরক্ষরেখায় দুপুর 12 টার সময় সবচেয়ে ছোটো ছায়া হয় – 21 জুন / 22 ডিসেম্বর / 21 মাৰ্চ / 23 সেপ্টেম্বর ।
উঃ21 মাৰ্চ

৬.পৃথিবীর অপসূর ও অনুসূর অবস্থানের দূরত্বের পার্থক্য হল – 15 কোটি কিমি / 50 লক্ষ কিমি / 15 লক্ষ কিমি / 14 লক্ষ কিমি
উঃ50 লক্ষ কিমি

৭. কক্ষপথ মহাশূন্যে যে কাল্পনিক সমতলে অবস্থিত , সেটাই – নিরক্ষীয়তল / কক্ষতল / অবতল / কক্ষপথ ।
উঃকক্ষতল

৮. কর্কটক্রান্তি ও মকরক্রান্তির মধ্যবর্তী অঞ্চলে বায়ুর উন্নতা বেশি , তাই এই অঞ্চলকে বলে – হিমমণ্ডল / উয়ুমণ্ডল / ক্রান্তীয়মণ্ডল / নাতিশীতোয় মণ্ডল ।
উঃ উষ্ণমণ্ডল

৯.কুমেরু বৃত্তে 24 ঘণ্টাই অন্ধকার থাকে – 21 জুন / 22 ডিসেম্বর / 21 মাৰ্চ / 23 জুন ।
উঃ 21 জুন

১০. 22 ডিসেম্বর রাত্রি সবচেয়ে বড়ো – পূর্ব গোলার্ধে / উত্তর গোলার্ধে / দক্ষিণ গোলার্ধে / উভয় গোলার্ধে ।
উঃ উত্তর গোলার্ধে

১১.অপসূর অবস্থান উত্তর গোলার্ধে – গ্রীষ্ম / শীত / শরৎ / বসন্ত ঋতুতে হয় ।
উঃগ্রীষ্ম

১২.শরৎকালীন বিষুব হয় – 21 মাৰ্চ / 21 জুন / 23 সেপ্টেম্বর / 4 জুলাই ।
উঃ  23 সেপ্টেম্বর

১৩. সূর্যে প্রতি মুহূর্তে হাইড্রোজেন গ্যাস রূপান্তরিত হচ্ছে – হাইড্রোজেন / অক্সিজেন / হিলিয়াম / কার্বন ডাইঅক্সাইড গ্যাসে ।
উঃ হিলিয়াম

১৪.পৃথিবী ঘোরে উত্তর থেকে দক্ষিণে / পূর্ব থেকে পশ্চিমে / পশ্চিম থেকে পূর্বে / দক্ষিণ থেকে উত্তরে ।
উঃ পশ্চিম থেকে পূর্বে

১৫.21 জুন তারিখ সূর্যের লম্বরশ্মি পড়ে – নিরক্ষরেখায় / কর্কটক্রান্তি রেখায় / মকরক্রান্তি রেখায় / সুমেরুবৃত্ত প্রদেশীয় রেখায় ।
উঃ কর্কটক্রান্তি রেখায়

১৬. উত্তর গোলার্ধে যখন গ্রীষ্মকাল , দক্ষিণ গোলার্ধে তখন – শীতকাল / গ্রীষ্মকাল / বসন্তকাল / শরৎকাল ।
উঃ শীতকাল

১৭.অনুসূর অবস্থানে উত্তর গোলার্ধে – গ্রীষ্ম / শীত / শরৎ / বসন্ত ঋতু হয় ।
উঃ শীত

১৮. 21 জুন থেকে 22 ডিসেম্বর পর্যন্ত সূর্যের আপাতগতিকে বলা হয় – উত্তরায়ণ / দক্ষিণায়ন / রবিমার্গ /  অপসূর ।
উঃ দক্ষিণায়ন

১৯.পৃথিবীর ,  নিরক্ষীয় ও মেরু / ক্রান্তীয় / মরু / উপক্রান্তীয় অঞ্চলে ঋতু পরিবর্তন হয় না ।
উঃ নিরক্ষীয় ও মেরু

২০. উত্তর অয়নান্ত দিবস বলা হয় – 21 মাৰ্চ / 21 জুন / 23 সেপ্টেম্বর / 22 ডিসেম্বর ।
উঃ 21 জুন

২১. 21 মার্চ সূর্যরশ্মি লম্বভাবে পড়ে-    নিরক্ষরেখায় / কর্কটক্রান্তিরেখায় / মকরক্রান্তিরেখায় / মূলমধ্যরেখায় ।
উঃ নিরক্ষরেখায়

২২.অনুসূর অবস্থান উত্তর গোলার্ধে – গ্রীষ্ম / শীত / শরৎ / বসন্ত ঋতুতে হয় ।
উঃ শীত

২৩. দিনের যে সময়টা বেশি গরম লাগে -- সকালে সূর্য ওঠার সময় / দুপুরে যখন সূর্য মাথার ওপরে থাকে / সন্ধ্যায় সূর্যাস্তের সময় / রাতে সূর্যাস্তের পর ।
উঃ দুপুরে যখন সূর্য মাথার ওপরে থাকে

২৪.সূর্যের বার্ষিক আপাত গতি , দিন - রাতের ছোটো - বড়ো হওয়া ও ঋতু পরিবর্তন যে কারণে হয় – পথিবীর উপবৃত্তাকার কক্ষপথ / পৃথিবীর হেলানো কক্ষ / আবর্তন ও পরিক্রমণগতি / সবকটি ঠিক।
উঃ সবকটি ঠিক।

২৫ হ্যামারফেস্ট বন্দরে যে সময় মধ্যরাতে আকাশে সূর্য দেখা যায় - মে থেকে জুলাই / জানুয়ারি থেকে এপ্রিল / ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি / জুন থেকে আগস্ট ।
উঃ মে থেকে জুলাই


সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তরপ্রতিটি প্রশ্নের মান 2


১. ভেবে দেখেছো , পৃথিবীও তো একটি ভারী গোলক । পৃথিবীও যদি ওই বলটার মতো পড়ে যায় , তাহলে আমাদের কী হবে ?
উত্তরঃ স্যার আইজাক নিউটনের মহাকর্ষ সূত্রানুসারে , মহাবিশ্বের প্রতিটি বস্তুই পরস্পর পরস্পরকে আকর্ষণ করে । পৃথিবী যদি বলটার মতো পড়ে যায় তাহলে তা মহাকর্ষ বলের কারণে সূর্যের ওপর গিয়ে আছড়ে পড়বে । ফলে এই সুন্দর পৃথিবীর সঙ্গে আমরাও পুড়ে ছাই হয়ে যাব । তবে এমনটি সম্ভব নয় । কারণ পৃথিবী তার কক্ষপথে অনবরত সূর্যের চারদিকে পরিক্রমণ করে চলেছে । এই পরিক্রমণের ফলে পৃথিবীতে অপকেন্দ্র বলের সৃষ্টি হয় । এই বল কক্ষপথের বাইরের দিকে ক্রিয়াশীল হওয়ায় কক্ষপথের ভিতরে নাভিতে অবস্থিত সূর্যের আকর্ষণ বলের বিরুদ্ধে কাজ করে । এই দুই বিপরীতমুখী বলের সমতায় পৃথিবী নিজের কক্ষপথ থেকে ছিটকে যায় না এবং সূর্যের ওপরে গিয়েও পড়ে না ।

২. ভেবে দ্যাখো , ভারি , হালকা সব জিনিসই ‘ নীচের দিকে ' পড়ে , তাইতো ? কিন্তু ‘ নীচের দিক ’ কোন্‌টা ?
উত্তরঃ পৃথিবী মাধ্যাকর্ষণ শক্তির দ্বারা তার উপরিস্থিত ভারী , হালকা সমস্ত জিনিসকেই নিজের কেন্দ্রের দিকে আকর্ষণ করে । তাই যেহেতু আমরা পৃথিবীপৃষ্ঠের উপরে থাকি এক্ষেত্রে ‘ নীচের দিক ' বলতে যে - কোনো দিক থেকে ভূপৃষ্ঠকেই বোঝায় । ভারী , হালকা সব জিনিসই মাধ্যাকর্ষণ শক্তির টানে ভূপৃষ্ঠে এসে পড়ে ।

৩.মাধ্যাকর্ষণ শক্তি কাকে বলে ?
উত্তরঃ যে আকর্ষণ বলের দ্বারা পৃথিবী তার উপরিস্থিত সমস্ত বস্তু বা পদার্থকে নিজের কেন্দ্রের দিকে আকর্ষণ করে , তাকে মাধ্যাকর্ষণ শক্তি বলে । একারণেই কোনো বস্তুকে ওপরের দিকে ছুঁড়লে তা পুনরায় পৃথিবীতে ফিরে আসে ।

৪. মহাকর্ষ কী ?
উত্তরঃ এই মহাবিশ্বে প্রতিটি বস্তুই পরস্পর পরস্পরকে আকর্ষণ করে বা নিজের দিকে টানতে থাকে , একেই মহাকর্ষ বলে । 1687 খ্রিস্টাব্দে বিজ্ঞানী স্যার আইজাক নিউটন মহাকর্ষ সূত্রটি আবিষ্কার করেন ।

৫. মুক্তিবেগ কাকে বলে ?
অথবা , কোনো বস্তুকে প্রতি সেকেন্ডে 11.2 কিমি বেগে ওপরের দিকে ছুঁড়লে সেটা আর নীচে পড়ে না কেনো?
উত্তরঃ কোনো বস্তু প্রতি সেকেন্ডে 11.2 কিমি গতিবেগে ওপরের দিকে ধাবমান হলে তা পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ কাটিয়ে মহাশূন্যে চলে যেতে পারে , একে মুক্তিবেগ ( Escape Velocity ) বলে । ওই বস্তু পৃথিবীতে ফিরে না এসে মহাকাশে পৃথিবীর চারপাশে ঘুরতে থাকবে । যেমন – কৃত্রিম উপগ্রহ , মহাকাশযান , রকেট এই মুক্তিবেগের সাহায্যে মহাকাশে পৌঁছায় ।

৬. সৌরদিন ( Solar Day ) কী ?
উত্তরঃ পৃথিবী নিজের মেরুদণ্ডের ওপর একবার পশ্চিম থেকে পূর্বে আবর্তন করতে সময় নেয় 23 ঘণ্টা 56 মিনিট 4 সেকেন্ড বা প্রায় 24 ঘণ্টা বা 1 দিন । একে সৌরদিন বলে ।

৭. সৌরবছর ( Solar Year ) কী ?
উত্তরঃ পৃথিবী সূর্যের সামনে নিজ মেরুরেখার ওপর আবর্তন করতে করতে ঘড়ির কাঁটার বিপরীতক্রমে উপবৃত্তাকার কক্ষপথে সূর্যকে একবার পূর্ণ পরিক্রমণ করতে সময় নেয় 365 দিন 5 ঘণ্টা 48 মিনিট 46 সেকেন্ড বা 365 দিন 6 ঘণ্টা বা প্রায় 1 বছর , একে এক সৌরবছর ( Solar Year ) বলে ।

৮. সূর্যকে একবার প্রদক্ষিণ করতে পৃথিবী কতবার নিজের অক্ষের ওপর আবর্তন করে ?
উত্তরঃ পৃথিবী নিজের অক্ষের ওপর আবর্তন করতে সময় নেয় 23 ঘণ্টা 56 মিনিট 4 সেকেন্ড বা 24 ঘণ্টা বা 1 দিন এবং পৃথিবী সূর্যকে 365 দিনে একবার প্রদক্ষিণ করে । অর্থাৎ , সূর্যকে একবার প্রদক্ষিণ করতে পৃথিবী 366 বার নিজের অক্ষের ওপর আবর্তন করে ।

৯. 4 জুলাই , 25 জানুয়ারি , 20 সেপ্টেম্বর বিষুবরেখার যে - কোনো জায়গায় কটার সময় সূর্য উঠবে ?
উত্তরঃ সকাল 6 টার সময় , কারণ বিষুবরেখায় সূর্য সারাবছর লম্বভাবে কিরণ দেয় এবং ছায়াবৃত্ত বিষুবরেখাকে সর্বদা সমদ্বিখণ্ডিত করে বলে বিষুবরেখায় প্রতিদিনই 12 ঘণ্টা দিন ও 12 ঘণ্টা রাত্রি হয় ।

১০. সূর্যঘড়ি কী ?
উত্তরঃ আকাশে সূর্যের আপেক্ষিক অবস্থান অনুসারে যে বিশেষ যন্ত্রের সাহায্যে সূর্যালোকের পতন কোণের ওপর ভিত্তি করে সময়ের হিসাব করা হয় , সেই বিশেষ যন্ত্রই হল সূর্যঘড়ি । সূর্যঘড়ির সাহায্যে সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সারাদিনে সূর্যের আলোর ছায়ার দৈর্ঘ্যের বাড়াকমা লক্ষ করে দিনের সময় জানতে পারা যায় ।

১১. পৃথিবীর পরিক্রমণের বেগ কখন ও কেন কমে ?
অথবা , গ্রীষ্মকালে সূর্যকে একটু ছোটো দেখায় কেন ?
উত্তরঃ জুলাই মাসে পৃথিবীর অপসূর অবস্থানের সময় পৃথিবী থেকে সূর্যের দূরত্ব বেড়ে যায় ( 15 কোটি 20 লক্ষ কিমি ) । এই সময় সূর্য থেকে পৃথিবীর দূরত্ব বেশি থাকায় পৃথিবীর পরিক্রমণ বেগ সামান্য হ্রাস পায় এবং উত্তর গোলার্ধে গ্রীষ্মকালে সূর্যকে একটু ছোটো দেখায় ।

১২. পৃথিবীর পরিক্রমণের বেগ কখন ও কেন বাড়ে ?
অথবা , শীতকালে সূর্যকে একটু বড়ো দেখায় কেন ?
উত্তরঃ জানুয়ারি মাসে পৃথিবীর অনুসূর অবস্থানের সময় পৃথিবী থেকে সূর্যের দূরত্ব কমে যায় ( 14 কোটি 70 লক্ষ কিমি ) । এই সময় সূর্য পৃথিবীর কাছে চলে আসায় পরিক্রমণের বেগ সামান্য বৃদ্ধি পায় এবং উত্তর গোলার্ধে শীতকালে সূর্যকে একটু বড়ো দেখায় ।

১৩. চান্দ্রমাস কাকে বলে ?
উত্তরঃ পৃথিবীকে একবার প্রদক্ষিণ করতে পৃথিবীর একমাত্র উপগ্রহ চাঁদের সময় লাগে প্রায় 28 দিন । এই সময়কে চান্দ্রমাস বলে ।

১৪. বার্ষিক গতি ( Revolution ) কাকে বলে ?
উত্তরঃ আপন মেরুদণ্ডের চারদিকে আবর্তন করতে করতে পৃথিবী উপবৃত্তাকার কক্ষপথে , পশ্চিম থেকে পূর্বে 365 দিন 5 ঘণ্টা 48 মিনিট 46 সেকেন্ডে সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে । সূর্যকে প্রদক্ষিণ করার এই গতিকে পরিক্রমণ গতি বা বার্ষিক গতি বলে ।

১৫. ঋতুপরিবর্তন কাকে বলে ?
উত্তরঃ পৃথিবীর পরিক্রমণ গতির জন্য আকাশে সূর্যের উত্তরায়ণ ও দক্ষিণায়ন লক্ষ করা যায় এবং ভূপৃষ্ঠে দিন - রাত্রির দৈর্ঘ্যের হ্রাস - বৃদ্ধি ও সৌরতাপের তারতম্য হয় । এর ফলে ভূপৃষ্ঠের বিভিন্ন অংশে বছরের বিভিন্ন সময়ে উন্নতার যে তারতম্য ঘটে তারই জন্য জলবায়ুর পরিবর্তন ঘটে । জলবায়ুর এই পরিবর্তনকে ঋতুপরিবর্তন বলে ।

১৬.  পৃথিবীর কোন্ কোন্ অঞ্চলে ঋতু পরিবর্তন হয় না ?
উউত্তঃ পৃথিবীর ● নিরক্ষীয় অঞ্চল এবং ও মেরু অঞ্চলে ঋতুপরিবর্তন হয় না । কারণ – ( i ) নিরক্ষরেখা ও তার নিকটবর্তী অঞ্চলে সূর্যরশ্মি প্রায় সারাবছরই লম্বভাবে পড়ায় এখানে চিরকালই গ্রীষ্মঋতু থাকে । ( ii ) অন্যদিকে , মেরু অঞ্চলে সূর্যরশ্মি সারাবছরই তির্যকভাবে পড়ায় এখানে সর্বদাই শীতকাল থাকে ।

১৭. ঋতুচক্র বলতে কী বোঝো ?
উত্তরঃ পৃথিবীর পরিক্রমণ গতির জন্য আমরা বছরের বিভিন্ন সময়ে উয়তার পরিবর্তন লক্ষ করি । উন্নতার তারতম্যের ওপর ভিত্তি করে বছরকে প্রধান চারটি ( গ্রীষ্ম , শরৎ , শীত , বসন্ত ) ভাগে ভাগ করা হয় , এক - একটি ভাগকে বলে ঋতু । ঋতুর এইপ্রকার পর্যায়ক্রমে এবং চক্রাকারে পরিবর্তনকে ঋতুচক্র বলে ।

১৮. পৃথিবীর অক্ষ কক্ষপথের সঙ্গে 66½ °  কোণে হেলানো কেন ?
উত্তরঃ সৃষ্টির আদিলগ্নে কোনো বৃহৎ মহাজাগতিক বস্তুর সঙ্গে পৃথিবীর সংঘর্ষ ঘটার কারণেই পৃথিবীর অক্ষ তার কক্ষপথের সঙ্গে 66½ ° কোণে হেলে অবস্থান করছে বলে বিজ্ঞানীরা মনে করেন ।

১৯. উত্তর গোলার্ধে ' বড়োদিন ' কি আসলে বড়োদিন ?
উত্তরঃ আমরা প্রতিবছর 25 ডিসেম্বর যিশুখ্রিস্টের জন্মদিনে ‘ বড়োদিন ' পালন করে থাকি । ওই দিন আসলে কোনো বড়োদিন নয় । কারণ 25 ডিসেম্বর উত্তর গোলার্ধে দিন ছোটো ( প্রায় 10 ঘণ্টা ) এবং রাত্রি বড়ো ( প্রায় 14 ঘণ্টা ) । তবে 22 ডিসেম্বর মকরসংক্রান্তিতে দক্ষিণ গোলার্ধে সবচেয়ে বড়ো দিন ( 14 ঘণ্টা ) এবং সবচেয়ে ছোটো রাত ( 10 ঘণ্টা ) অনুভূত হয় । অর্থাৎ , তখন দক্ষিণ গোলার্ধে গ্রীষ্মকাল বিরাজ করে । তাই দক্ষিণ গোলার্ধে ‘ বড়োদিন ’ উত্তর গোলার্ধের মতো শীতল না হয়ে উয় হয় ।

২০.মানুষের জীবনে ঋতুর প্রভাব লেখো
উত্তরঃ মানুষের জীবনে ঋতুর প্রভাব গুরুত্বপূর্ণ । কারণ— সময় গণনা থেকে শুরু করে কৃষি - শিল্প - অন্যান্য জীবিকা , পোশাক - পরিচ্ছদ , খাদ্যাভ্যাস , সামাজিক উৎসব সবই ঋতুভিত্তিক পরিবর্তনশীল । এ ছাড়া উদ্ভিদ ও প্রাণীর জন্ম , বৃদ্ধি , বংশবিস্তারও ঋতু নিয়ন্ত্রিত । তা ছাড়া বিভিন্ন ঋতু আমাদের জীবনে বৈচিত্র্য আনে ।

২১. সূর্যরশ্মি কোনো স্থানে লম্বভাবে পড়লে কী হবে ?
উত্তরঃ লম্বভাবে পতিত সূর্যরশ্মি বায়ুস্তরকে সোজাসুজি ভেদ করে পৃথিবীর ওপর খুব কম স্থানে ছড়িয়ে পড়ে । তাই কোনো স্থানে সূর্যরশ্মি লম্বভাবে পড়লে স্বাভাবিকভাবেই সেই স্থানের উয়তা বেশি হবে এবং সেখানে গ্রীষ্মকাল বিরাজমান হবে ।

২২. শীতকালে তোমার বাড়ির কোন্‌দিকে বেশি রোদ্দুর পড়ে ? কেন ?
উত্তরঃ শীতকালে বাড়ির দক্ষিণ - পূর্ব এবং দক্ষিণ - পশ্চিম দিকেই সবচেয়ে বেশি রোদ্দুর পড়ে । কারণ : আমরা উত্তর গোলার্ধে বাস করি । আমাদের এখানে ডিসেম্বর - জানুয়ারি মাসে শীত ঋতু বিরাজ করে । শীতকালে দক্ষিণ মেরু সূর্যের দিকে হেলে অবস্থান করে । ফলে এই সময়ে সূর্য 23½ ° দক্ষিণ অক্ষরেখা বা মকরক্রান্তি রেখার কাছাকাছি লম্বভাবে কিরণ দেয় । যেহেতু এই সময় সূর্যের আপাত বার্ষিক গতির দক্ষিণায়ন ঘটে তাই এই সময় সূর্য দক্ষিণ দিকে হেলে পূর্বদিকে উদীত হয় এবং দক্ষিণ দিকে হেলে পশ্চিমদিকে অস্ত যায় । তাই দক্ষিণ - পূর্ব ও দক্ষিণ - পশ্চিম দিকে রোদ্দুর বেশি পড়ে ।

২৩. গরমকালে স্কুল থেকে ফিরে অনেকক্ষণ খেলা গেলেও শীতকালে তাড়াতাড়ি সন্ধে হয়ে যায় । এমন কেন হয় ?
উত্তরঃ গরমকালে উত্তর গোলার্ধ সূর্যের দিকে হেলে অবস্থান করায় কর্কটক্রান্তিরেখার ওপর লম্ব সূর্যরশ্মি পড়ে । ফলে এই সময় দিন বড়ো ও রাত ছোটো হয় । তাই স্কুল থেকে ফিরে অনেকক্ষণ খেলার সময় পাওয়া যায় । শীতকালে সূর্য দক্ষিণ গোলার্ধে মকরক্রান্তি রেখার উপর বেশি কিরণ দেয় , ফলে এই সময় উত্তর গোলার্ধে দিন ছোটো ও রাত বড়ো হয় । তাই শীতকালে সূর্য তাড়াতাড়ি অস্ত যায় বলে স্কুল থেকে ফিরে খেলার সময় পাওয়া যায় না ।

২৪. মধ্যাহ্ন সূর্য বলতে কী বোঝায় ?
উত্তরঃ অভিগত গোলাকৃতি পৃথিবীর কোনো দ্রাঘিমারেখার সর্বোচ্চ বিন্দুতে লম্বভাবে সূর্য অবস্থান করলে সেই স্থান সব থেকে বেশি । সূর্যালোক পায় । সূর্যের এরূপ অবস্থানকে বলে মধ্যাহ্ন সূর্য । এই সময়কালকে বেলা 12 টা ধরা হয় অর্থাৎ দুপুর 12 টার সময় মধ্যাহ্ন সূর্য দেখা যায় ।

২৯. ‘ সংক্রান্তি ' বলতে কী বোঝো ?
উত্তরঃ ‘ সংক্রান্তি ’ শব্দের অর্থ ‘ শেষ দিন ' । সূর্যের আপাত গতির সমাপ্তিতে দুটি সংক্রান্তি ঘটে । যথা— উত্তরায়ণের শেষ দিন বা কর্কটসংক্রান্তি এবং দক্ষিণায়নের শেষ দিন বা মকরসংক্রান্তি । সংক্রান্তির দিনে বিভিন্ন দেশে , বিভিন্ন ধর্মে বিভিন্ন প্রকার ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয় । যেমন – আমাদের দেশে মকরসংক্রান্তিতে গঙ্গাসাগরের মেলা হয় । এই মেলায় দেশ - বিদেশ থেকে আগত পর্যটকদের মধ্যে ধর্মীয় অনুষ্ঠানসহ সাংস্কৃতিক মেলবন্ধন ঘটে ।

৩০. গ্রীষ্ম কেন শীতের থেকে গরম ?
অথবা , গ্রীষ্মকালে 4 আবহাওয়া উম্ন থাকে কেন ?
উত্তরঃ গ্রীষ্মকালে আবহাওয়া উয় থাকে কারণ ● গ্রীষ্মকালে সূর্যরশ্মি লম্বভাবে পতিত হয় এবং উয়তা বেশি হয় । পৃথিবীর অক্ষ 66½ ° কোণে হেলে থাকায় গ্রীষ্মকালে পৃথিবী সূর্যের দিকে ঝুঁকে থাকে বলে এইরূপ ঘটনা ঘটে । ও শীতকালের তুলনায় গ্রীষ্মকালে দিনের দৈর্ঘ্য রাতের দৈর্ঘ্যের থেকে বেশি । ফলে দিনেরবেলায় ভূপৃষ্ঠে যে পরিমাণ তাপ সঞ্চিত হয় ছোটো রাতে সেই তাপ পুরোটা বিকিরিত হতে পারে না । কিছুটা তাপ ভূপৃষ্ঠে সঞ্চিত থেকে যায় । ফলে উন্নতা ক্রমশ বাড়তে থাকায় গ্রীষ্মকালের আবহাওয়া উয় থাকে ।

৩১. শীতকালে আবহাওয়া শীতল থাকে কেন ?
উত্তরঃ শীতকালে আবহাওয়া শীতল থাকে কারণ – ও পৃথিবীর অক্ষ 66½ ° কোণে হেলে থাকায় যে গোলার্ধ সূর্যের বিপরীত দিকে ঝুঁকে পড়ে , ফলে সেই গোলার্ধে শীতকাল হয় । শীতকালে সূর্যরশ্মি , অত্যন্ত তির্যকভাবে পড়ায় উন্নতা কম হয় এবং আবহাওয়া শীতল থাকে । ও শীতকালের দিনের দৈর্ঘ্য রাতের দৈর্ঘ্যের থেকে কম । ফলে দিনেরবেলায় ভূপৃষ্ঠ যে পরিমাণ তাপ গ্রহণ করে দীর্ঘ রাতে তার সবটাই বিকিরিত হয়ে যায় এবং ভূপৃষ্ঠ ক্রমশ শীতল হতে থাকে বলে শীতকালে আবহাওয়া শীতল থাকে ।


টিকা
প্রতিটি প্রশ্নের মান ৩/৪

১. আহ্নিক গতি ( Rotation )
উত্তরঃ সূর্যকে সামনে রেখে পৃথিবী নিজ মেরুরেখাকে বেষ্টন করে একটি নির্দিষ্ট গতিতে পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে ঘুরে চলেছে । পৃথিবীর এই গতিকে আবর্তন গতি বা আহ্নিক গতি বলা হয় ।
নামকরণের তাৎপর্য : ' অহ্ন ' শব্দটির অর্থ ‘ দিন ' । নিজের অক্ষের চারদিকে একবার পূর্ণ আবর্তন করতে পৃথিবীর সময় লাগে 23 ঘণ্টা 56 মিনিট 4 সেকেন্ড বা প্রায় 24 ঘণ্টা বা 1 দিন । তাই পৃথিবীর আবর্তন গতির অপর নাম আহ্নিত গতি বা দৈনিক গতি ।
আবর্তন বেগ : পৃথিবীর নিরক্ষরেখা বরাবর পরিধি সর্বাধিক ( 40,077 কিমি ) হওয়ায় নিরক্ষরেখায় আবর্তন বেগ সবচেয়ে বেশি ( প্রায় 1,674 কিমি / ঘণ্টা ) । নিরক্ষরেখা থেকে উভয় গোলার্ধের দিকে এই আবর্তন বেগ কমতে কমতে উভয় মেরুবিন্দুতে তা শূন্য হয়ে যায় ।

২. ছায়াবৃত্ত ( Shadow Circle )
উত্তরঃ পৃথিবীর আলোকিত অর্ধাংশ এবং অন্ধকারাচ্ছন্ন অর্ধাংশ বরাবর বিস্তৃত বৃত্তাকার সীমারেখাকে ছায়াবৃত্ত বলে ।
ব্যাখ্যা : পৃথিবীর গোলীয় আকৃতির জন্য ছায়াবৃত্ত বৃত্তাকার । পৃথিবী আবর্তন করছে বলে ছায়াবৃত্ত সর্বদা পরিবর্তনশীল ।
প্রভাব : নিরক্ষরেখাকে সারাবছর ছায়াবৃত্ত সমদ্বিখণ্ডিত করায় নিরক্ষরেখায় সারা বছর দিন - রাত্রির দৈর্ঘ্য সমান ( 12 ঘণ্টা দিন ও 12 ঘণ্টা রাত ) হয় । পৃথিবীর যে অংশ ছায়াবৃত্ত অতিক্রম করে আলোকিত অংশে আসে , সেখানে প্রভাত হয় । আবার যে অংশ ছায়াবৃত্ত অতিক্রম করে অন্ধকার অংশে এসে পৌঁছায় , সেখানে সন্ধ্যা হয় ।

৩. বার্ষিক গতি ( Revolution )
উত্তরঃ সংজ্ঞা : যে গতিতে পৃথিবী নিজ মেরুদণ্ডের চারদিকে আবর্তন করতে করতে একটি নির্দিষ্ট দিকে ( পশ্চিম থেকে পূর্বে ) , একটি নির্দিষ্ট পথে ( উপবৃত্তাকার কক্ষপথে ) ও একটি নির্দিষ্ট সময়ে
( 365 দিন 5 ঘণ্টা 48 মিনিট 46 সেকেন্ড ) সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে , তাকে পৃথিবীর বার্ষিক গতি বা পরিক্রমণ গতি বলে ।
পৃথিবীর সূর্যকে প্রদক্ষিণ করার দিক : পৃথিবী সূর্যকে ঘড়ির কাঁটার বিপরীত দিক দিয়ে প্রদক্ষিণ করে ।
পৃথিবীর সূর্যকে একবার প্রদক্ষিণ করার সময়কাল : 365 দিন 5 ঘণ্টা 48 মিনিট 46 সেকেন্ড ।
পৃথিবীর পরিক্রমণের গতিবেগ : 30 কিমি / সেকেন্ড ।
পৃথিবীর পরিক্রমণ গতির ফলাফল : দিন - রাত্রির হ্রাস - বৃদ্ধি , ও ঋতু পরিবর্তন ।
পরিক্রমণ গতিকে বার্ষিক গতি বলার কারণ : সূর্যকে একবার প্রদক্ষিণ করতে পৃথিবীর যে সময় লাগে তাকে এক বছর বলা হয় বলে এই গতিকে বার্ষিক গতিও বলে ।

৪. বিষুব ( Equinox )
উত্তরঃ অর্থ : ' বিষুব ’ কথার আক্ষরিক অর্থ সমান ।
সংজ্ঞা : পৃথিবীর উভয় গোলার্ধে যে বিশেষ দিনটিতে দিন - রাত্রি সমান হয় , তাকে বিষুব বলে । ( Equi = equal , nox = night )
সৃষ্টি : পৃথিবীর মেরুরেখা তার কক্ষতলের সঙ্গে 66½ ° কোণে হেলে অবস্থান করায় শুধুমাত্র 21 মার্চ ও 23 সেপ্টেম্বর সূর্য নিরক্ষরেখায় লম্বভাবে কিরণ দেওয়ায় ‘ বিষুব ’ সৃষ্টি হয় ।
বৈশিষ্ট্য : ↑ এই দিন পৃথিবীর উত্তর ও দক্ষিণ মেরু সূর্য থেকে সমদূরত্বে থাকে , ও ছায়াবৃত্ত সবকটি অক্ষরেখাকে সমকোণে ছেদ করায় পৃথিবীর উভয় গোলার্ধে 12 ঘণ্টা দিন ও 12 ঘণ্টা রাত্রির সৃষ্টি হয় ।
নামকরণ : পৃথিবীতে 21 মার্চ দিনটিকে মহাবিষুব এবং 23 সেপ্টেম্বর দিনটিকে জলবিষুব বলে ।

৫. মহাবিষুব ( Vernal Equinox )
উত্তরঃ 21 মার্চ উত্তর গোলার্ধে বসন্তকাল এবং দিন - রাত্রির দৈর্ঘ্য সমান হওয়ায় , এই দিনটিকে বলা হয় মহাবিষুব বা বসন্তকালীন বিষুব ( Vernal Equinox ) ।
অবস্থা : সূর্যকে পরিক্রমণরত অবস্থায় পৃথিবী তার আপন কক্ষপথে 21 মাৰ্চ এমন এক স্থানে থাকে , যেখানে – ও মধ্যাহ্নে সূর্য নিরক্ষরেখায় লম্বভাবে পড়ে । ও ছায়াবৃত্ত প্রতিটি সমাক্ষরেখাকে সমান দুটি ভাগে ভাগ করে । ও উত্তর ও দক্ষিণ গোলার্ধ সূর্য থেকে সমান দূরে অবস্থান করে । উত্তর ও দক্ষিণ মেরু একইসঙ্গে সূর্যালোক পায় ।
ফলাফল : 021 মার্চ সূর্য পৃথিবীর ঠিক পূর্ব আকাশে ওঠে ও পশ্চিম আকাশে অস্ত যায় । ও সারা পৃথিবীতে এই দিন 12 ঘণ্টা দিন ও 12 ঘণ্টা রাত্রি হয় । ও মধ্যাহ্নে সূর্য নিরক্ষরেখায় লম্বভাবে পড়ে ।

৬. জলবিষুব ( Autumnal Equinox )
উত্তরঃ 23 সেপ্টেম্বর উত্তর গোলার্ধে শরৎকাল এবং দিনরাত্রির দৈর্ঘ্য সমান হওয়ায় , এই দিনটিকে বলা হয় জলবিষুব বা শরৎকালীন বিষুব ( Autumnal Equinox )
অবস্থা : সূর্যকে পরিক্রমণরত অবস্থায় পৃথিবী তার আপন কক্ষপথে 23 সেপ্টেম্বর এমন এক স্থানে থাকে , যেখানে -
মধ্যাহ্নে সূর্য নিরক্ষরেখায় লম্বভাবে পড়ে । ও ছায়াবৃত্ত প্রতিটি সমাক্ষরেখাকে সমান দুটি ভাগে ভাগ করে । উত্তর ও দক্ষিণ গোলার্ধ সূর্য থেকে সমান দূরে অবস্থান করে । উত্তর ও দক্ষিণ মেরু একই সঙ্গে সূর্যালোক পায় ।
ফলাফল : 23 সেপ্টেম্বর সূর্য পৃথিবীর ঠিক পূর্ব আকাশে ওঠে ও পশ্চিম আকাশে অস্ত যায় । ও সারা পৃথিবীতে এই দিন 12 ঘণ্টা দিন ও 12 ঘণ্টা রাত্রি হয় । ও মধ্যাহ্নে সূর্য নিরক্ষরেখায় লম্বভাবে পড়ে ।

৭.কর্কটসংক্রান্তি ( Summer Solstice )
উত্তরঃ সূর্যে উত্তরায়ণের শেষ দিন অর্থাৎ , 21 জুন সূর্যরশ্মি উত্তর গোলার্ধে কর্কটক্রান্তি রেখার ( 23½ ° উত্তর ) ওপর লম্বভাবে কিরণ দেয় । ফলে এই দিন উত্তর গোলার্ধে দিন সব থেকে বড়ো ও রাত সব থেকে ছোটো ( 14 ঘণ্টা দিন ও 10 ঘণ্টা রাত ) হয় । এই দিনটিকে বলা হয় কর্কটসংক্রান্তি ( Summer Solstice ) বা গ্রীষ্মকালীন সৌরস্থিতি ।
অবস্থা : 21 জুন এই দিনটিতে কর্কটক্রান্তি রেখায় লম্বভাবে কিরণ দেয় । ছায়াবৃত্ত প্রতিটি সমাক্ষরেখাকে মধ্যাহ্ন সূর্যরশ্মি ( নিরক্ষরেখা ছাড়া ) অসমানভাবে ভাগ করে । উত্তর গোলার্ধ সূর্যের দিকে ঝুঁকে অবস্থান করে ।
ফলাফল : কর্কটক্রান্তির দিন উত্তর গোলার্ধে দীর্ঘতম দিন ও ক্ষুদ্রতম রাত্রি এবং দক্ষিণ গোলার্ধে এর বিপরীত অবস্থার সৃষ্টি হয় ।

৮. মর্করসংক্রান্তি ( Winter Solstice )
উত্তরঃ সূর্যের দক্ষিণায়নের শেষ দিন অর্থাৎ , 22 ডিসেম্বর সূর্যরশ্মি দক্ষিণ গোলার্ধের মকরক্রান্তি রেখার ( 23½ ° দক্ষিণ ) ওপর লম্বভাবে কিরণ দেয় । ফলে এই দিন দক্ষিণ গোলার্ধে দিন সব থেকে বড়ো ও রাত সব থেকে ছোটো ( 14 ঘণ্টা দিন ও 10 ঘণ্টা রাত ) হয় । এই দিনটিকে বলা হয় মকরসংক্রান্তি ( Winter Solstice ) বা শীতকালীন সৌরস্থিতি ।
অবস্থা : 22 ডিসেম্বর এই দিনটিতে – মধ্যাহ্নে সূর্যরশ্মি মকরক্রান্তি রেখায় লম্বভাবে পতিত হয় । ও দক্ষিণ গোলার্ধ সূর্যের দিকে ঝুঁকে অবস্থান করে । ও ছায়াবৃত্ত প্রতিটি সমাক্ষরেখাকে ( নিরক্ষরেখা ছাড়া ) অসমানভাবে ভাগ করে ।
ফলাফল : মকরসংক্রান্তির দিন দক্ষিণ গোলার্ধে দীর্ঘতম দিন ও ক্ষুদ্রতম রাত্রি এবং উত্তর গোলার্ধে এর বিপরীত অবস্থার সৃষ্টি হয় ।

৯.অধিবর্ষ বা লিপ ইয়ার ( Leap Year ) কাকে বলে ?
অথবা , অধিবর্ষ কীভাবে নির্ণয় করা হয় ?  কী করে বুঝবে কোন্ কোন্ বছর লিপ ইয়ার হবে ?
উত্তর সংজ্ঞা : ইংরেজি ক্যালেন্ডার অনুসারে যে বছরে ফেব্রুয়ারি মাসে 28 দিনের সঙ্গে 1 দিন যোগ করে বছরটিকে 366 দিনের করা হয় , সেই বছরটিকে অধিবর্ষ ( Leap year ) বলা হয় । মিশরীয়রা প্রথম এই অধিবর্ষের হিসাব আবিষ্কার করে ।
নির্ণয়ের পদ্ধতি : উপবৃত্তাকার কক্ষপথে সূর্যকে একবার প্রদক্ষিণ করতে পৃথিবীর সময় লাগে 365 দিন 5 ঘণ্টা 48 মিনিট 46 সেকেন্ড । কিন্তু আমরা হিসাবের সুবিধার জন্য 365 দিনে একবছর ধরি । এর ফলে , প্রতি বছর 5 ঘণ্টা 48 মিনিট 46 সেকেন্ড বা 6 ঘণ্টা সময় অতিরিক্ত থেকে যায় । তাই প্রতি চার বছর অন্তর ফেব্রুয়ারি মাসে 1 দিন বাড়িয়ে ( 4 বছর × 6 ঘণ্টা = 24 ঘণ্টা বা 1 দিন ) বাড়তি সময়ের সমতা বজায় রাখা হয় এবং বছরটিকে 366 দিনের করা হয় । তবে 4 বছর অন্তর 1 দিন বাড়িয়েও সমস্যার সমাধান করা যায়নি , কারণ 4 বছরে 448 মিনিট 56 সেকেন্ড ( 11 মিনিট 14 সেকেন্ড × 4 ) অতিরিক্ত সময় ধরা হচ্ছে । এই সমস্যা সমাধানের জন্য শতাব্দীর বছরগুলির মধ্যে 400 দ্বারা বিভাজ্য বছরগুলিকে অধিবর্ষ ধরা হয় । যেমন— ' 1600 , 2000 প্রভৃতি খ্রিস্টাব্দে অধিবর্ষ ছিল , কিন্তু 1800 , 1900 খ্রিস্টাব্দে অধিবর্ষ ছিল না ।

১০. সূর্যের আপাত বার্ষিক গতি কাকে বলে ?
অথবা , রবিমার্গ ( Ecliptic ) কী ?
অথবা , সূর্যের বার্ষিক আপাত গতি কী কারণে হয় ?
উত্তর পৃথিবী তার উপবৃত্তাকার কক্ষপথে 66½ ° কোণে হেলে সূর্যকে প্রদক্ষিণ করায় সূর্যরশ্মি কখনও নিরক্ষরেখায় , কখনও কর্কটক্রান্তি রেখায় বা কখনও মকরক্রান্তি রেখার ওপর লম্বভাবে কিরণ দেয় । সূর্যের উত্তরায়ণের সময় 21 জুন সূর্য কর্কটক্রান্তি রেখার ওপর লম্বভাবে কিরণ দেয় এবং 23 সেপ্টেম্বর সূর্য নিরক্ষরেখায় লম্বভাবে কিরণ দিয়ে পুনরায় দক্ষিণায়নের ফলে 22 ডিসেম্বর মকরক্রান্তি রেখার ওপর লম্বভাবে কিরণ দেয় । এরপর আবার 21 মাৰ্চ নিরক্ষরেখায় লম্বভাবে কিরণ দেয় । অর্থাৎ , উত্তর গোলার্ধে কর্কটক্রান্তি রেখা ( 23½ ° উত্তর ) থেকে দক্ষিণ গোলার্ধের মকরক্রান্তি রেখার ( 23½ ° দক্ষিণ ) মধ্যে সূর্যের একটি আপাত সঞরণ গতি পাওয়া যায় , একেই সূর্যের আপাত বার্ষিক গতি বলে । একে রবিমার্গ বা বার্ষিক রবি সঞ্চরণ বলে । ‘ রবি ’ কথার অর্থ ‘ সূর্য ’ এবং ‘ মার্গ ’ কথার অর্থ ‘ পথ ’ । সূর্যের এই আপাত গতিপথকেই রবিমার্গ ( Ecliptic ) বলে ।

LAQ..................Marks -5


1. চিত্রসহ ঋঋতুপরিবর্তন বর্ণনা করো ।
উত্তর বসন্ত , গ্রীষ্ম , শরৎ ও শীত এই চারটি ঋতু পৃথিবীতে পর্যায়ক্রমে ও চক্রাকারে আবর্তিত হচ্ছে , একে ঋতুচক্র বলে ।
বসন্তকাল : 21 মার্চ পৃথিবী তার কক্ষপথের এমন অবস্থানে আসে যে , পৃথিবীর উভয় গোলার্ধ সূর্য থেকে সমদূরত্বে অবস্থান করে এবং সূর্যরশ্মি নিরক্ষরেখার ওপর লম্বভাবে পতিত হয় । এই দিন উভয় গোলার্ধের সর্বত্র দিন - রাত্রির দৈর্ঘ্য সমান হয় । এই সময় উত্তর গোলার্ধে বসন্তকাল ও দক্ষিণ গোলার্ধে শরৎকাল হয় ।
গ্রীষ্মকাল : 21 মার্চের পর থেকে পৃথিবী ধীরে ধীরে এমন অবস্থায় আসে যে সূর্যরশ্মি ক্রমশ উত্তর গোলার্ধে লম্বভাবে পড়তে থাকে এবং উত্তর গোলার্ধে ক্রমশ দিন বড়ো ও রাত্রি ছোটো হতে থাকে । এরপর 21 জুন সূর্যকিরণ কর্কটক্রান্তি রেখার ( উত্তরায়ণের শেষ সীমা ) ওপর লম্বভাবে পড়ে বলে উত্তর গোলার্ধে 14 ঘণ্টা দিন ও 10 ঘণ্টা রাত্রি সংঘটিত হয় । একে বলা হয় সূর্যের উত্তর অয়নান্ত দিবস বা কর্কটসংক্রান্তি । দক্ষিণ গোলার্ধে ঠিক এর বিপরীত অবস্থা ঘটে , এই সময়টাতে উত্তর গোলার্ধে গ্রীষ্মকাল ও দক্ষিণ গোলার্ধে শীতকাল অনুভূত হয় ।
শরৎকাল : 21 জুনের পর থেকে সূর্যের দক্ষিণায়ন শুরু হয় এবং পৃথিবী নিজস্ব কক্ষপথে এগিয়ে যাওয়ার ফলে উত্তর গোলার্ধ



ক্রমশ সূর্যের দূরবর্তী ও দক্ষিণ গোলার্ধ ক্রমশ সূর্যের নিকটবর্তী হতে থাকে । এইভাবে 23 সেপ্টেম্বর পৃথিবীর উভয় গোলার্ধ আবার সূর্য থেকে সমান দূরত্বে অবস্থান করে এবং সূর্যরশ্মি নিরক্ষরেখার ওপর লম্বভাবে পতিত হয় । এই দিন পৃথিবীর সর্বত্র দিন - রাত্রির দৈর্ঘ্য সমান হয় । এই সময় উত্তর গোলার্ধে শরৎকাল এবং দক্ষিণ গোলার্ধে বসন্তকাল দেখা যায় ।
শীতকাল : 23 সেপ্টেম্বরের পর থেকে পৃথিবী ধীরে ধীরে কক্ষপথের এমন অবস্থায় আসে যখন সূর্যরশ্মি ক্রমশ দক্ষিণ গোলার্ধে লম্বভাবে পড়তে থাকে এবং দক্ষিণ গোলার্ধে ক্রমশ দিন বড়ো ও রাত্রি ছোটো হতে থাকে । এভাবে চলতে চলতে 22 ডিসেম্বর সূর্যকিরণ মকরক্রান্তি রেখার ( দক্ষিণায়নের শেষসীমা ) ওপর লম্বভাবে কিরণ দেয় বলে দক্ষিণ গোলার্ধে দিন সবচেয়ে বড়ো এবং রাত্রি সবচেয়ে ছোটো হয়ে থাকে ( 14 ঘণ্টা দিন ও 10 ঘণ্টা রাত্রি ) । তাই 22 ডিসেম্বরকে বলা হয় দক্ষিণ অয়নান্ত দিবস বা মকরসংক্রান্তি । উত্তর গোলার্ধের অবস্থা হয় ঠিক এর বিপরীত । এই সময়টাতে উত্তর গোলার্ধে শীতকাল এবং দক্ষিণ গোলার্ধে গ্রীষ্মকাল অনুভূত হয় । তারপর থেকেই আবার পৃথিবীর উত্তর গোলার্ধ সূর্যের নিকটবর্তী হয় এবং দক্ষিণ গোলার্ধ সূর্য থেকে দূরে সরে যেতে থাকে । 21 মার্চ আবার পৃথিবীর সর্বত্র দিন - রাত্রি সমান হয়ে যায় । এভাবে একটি ঋতুচক্র সম্পন্ন হয় ।


No comments:

Post a Comment