Class 6th History Questions And Answers Chapter -7 || ইতিহাস প্রশ্ন উত্তর সপ্তম অধ্যায় ষষ্ঠ শ্রেণী সহায়িকা - Psycho Principal

Fresh Topics

Thursday, 15 September 2022

Class 6th History Questions And Answers Chapter -7 || ইতিহাস প্রশ্ন উত্তর সপ্তম অধ্যায় ষষ্ঠ শ্রেণী সহায়িকা

 

ইতিহাস 
প্রশ্ন উত্তর



অষ্টম অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর পড়তে নিচের লিঙ্ক এ ক্লিক করো

👉 ( অষ্টম অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর )


একটি বাক্যে উত্তর লেখ: 

1. ভারতে দাসপ্রথা ছিল না'- '—এ কথা কে বলেছিলেন ?

 উত্তর: ‘ভারতে দাসপ্রথা ছিল না'—এ কথা বলেছিলেন মেগাস্থিনিস।


 2. কোথায় নিয়মিত তুলোর চাষ হত ?

 উত্তর: দাক্ষিণাত্যে নিয়মিত তুলোর চাষ হত ।


 3. কোন্ বংশের শাসকদের নামের সঙ্গে মায়ের নাম যুক্ত হত ?

 উত্তর: সাতবাহন বংশের শাসকদের নামের সঙ্গে মায়ের নাম যুক্ত হত ।


 4. ফাসিয়ানের বর্ণনায় দুষ্ট প্রকৃতির লোকদের কী বলা হত ?

 উত্তর: ফাসিয়ানের বর্ণনায় দুষ্ট প্রকৃতির লোকদের চণ্ডাল বলা হত।


 5. ষোড়শ মহাজনপদের সময় বণিকরা কীসে চেপে বাণিজ্যে যেতেন?

 উত্তর: ষোড়শ মহাজনপদের সময় বণিকরা গোরুর গাড়ি চেপে বাণিজ্যে যেতেন।


 6. কোন্ বংশের সম্রাটরা কোনো মুদ্রার প্রচলন করেননি?

 উত্তর: বাকাটক বংশের সম্রাটরা কোনো মুদ্রার প্রচলন করেননি।


 7. গুপ্ত আমলে আবাদি জমিকে কী হিসেবে চিহ্নিত করা হত ?

 উত্তর: গুপ্ত আমলে আবাদি জমিকে বাস্তুজমি ও অরণ্য থেকে আলাদা করে চিহ্নিত করা হত ।


 ৪. গুপ্ত আমলে দক্ষিণ ভারতের কোন্ বন্দরের সঙ্গে নিয়মিত দূরপাল্লার বাণিজ্য হত ?

 উত্তর: গুপ্ত আমলে তামিলনাড়ুর কাবেরীপট্টিনম বন্দরের সঙ্গে নিয়মিত দূরপাল্লার বাণিজ্য হত ।


9. সুয়ান জাং-এর রচনায় ভারতবর্ষ কী নামে পরিচিত ছিল?

 উত্তর: সুয়ান জাং-এর রচনায় ভারতবর্ষ 'ইন-তু' নামে পরিচিত ছিল।


 10. মেগাস্থিনিসের মতে একমাত্র কে ভারতবর্ষ আক্রমণ করেন ?

 উত্তর: মেগাস্থিনিসের মতে একমাত্র আলেকজান্ডারই ভারতবর্ষ আক্রমণ করেন।


 11. প্রাচীন ভারতীয় উপমহাদেশে সেতু কাকে বলা হত ? 

উত্তর: প্রাচীন ভারতীয় উপমহাদেশে জলসেচ প্রকল্পগুলিকে সেতু বলা হত ।


 12. কোন্ শকশাসক সুদর্শন হ্রদের সংস্কার করান?

 উত্তর: শকশাসক রুদ্রদামন সুদর্শন হ্রদের সংস্কার করান | 


13. কোন্ অঞ্চলের দখল নিয়ে কুষাণ, সাতবাহন ও শক-ক্ষত্রপদের মধ্যে লড়াই হয়েছিল?

 উত্তর: নর্মদা নদীর উত্তরের হিরের খনি অঞ্চলের দখল নিয়ে কুষাণ, সাতবাহন ও শক ক্ষত্রপদের লড়াই হয়েছিল। 


14. সুয়ান জাং-এর মতে ইন-তু-তে কতগুলি রাজ্য ছিল ?

উত্তর: সুয়ান জাং-এর মতে ইন-তু-তে ৮০টি রাজ্য ছিল।


 সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তর

 দু/তিনটি বাক্যে উত্তর দাও : মান 2


 1. মহাজনপদগুলির আমলে কৃষির গুরুত্ব কেমন ছিল? 

উত্তর: জনপদ বলতে কৃষিভিত্তিক গ্রামীণ অঞ্চলকেও ছাড়া মহাজনপদগুলিতে রাজকর্মচারী ও যোদ্ধাদের ভরণ বোঝাত | ফলে জনপদ ও মহাজনপদে কৃষিজীবী জনবসতি ছিল এবং কৃষিকাজ ছিল সেই সময়ের প্রধান জীবিকা। এ পোষণের সমস্ত খরচ কৃষি থেকে আসত। তাই বলা যেতে পারে যে, মহাজনপদগুলির আমলে কৃষির গুরুত্ব ছিল অপরিসীম ।


 2. ষোড়শ মহাজনপদের আমলে জমিতে অধিকার কাদের ছিল?

 উত্তর: ষোড়শ মহাজনপদের আমলে জমিতে সবার সমান অধিকার ছিল না। এসময় কিছু সংখ্যক মানুষের হাতে অনেক জমির অধিকার ছিল। আবার কিছু জমির ক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় অধিকারও বলবৎ ছিল।


 3. মৌর্য সমাজে নারীদের অবস্থা কেমন ছিল? 

উত্তর: মৌর্য আমলেও নারীদের অবস্থা আগের মতোই ছিল। তবে এইসময় গৃহস্থালির কাজকর্মের বাইরেও নারীরা নানা পেশায় ও কাজে যুক্ত ছিলেন। উদাহরণস্বরূপ, তাঁরা সুতো তৈরি এবং গুপ্তচর ও রাজকর্মচারীর কাজও করতেন।


 4. মৌর্য আমলে কোন্ কোন্ ক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় তদারকি ছিল ?

 উত্তর: মৌর্য আমলে কারিগর ও বণিকদের কাজের তদারকি করত রাষ্ট্র । এ ছাড়া খনি ও খনিজ সম্পদ দেখভাল করার জন্য নানা কর্মচারী নিয়োগ করা হত। লবণকেও খনিজ সম্পদ বলে মনে করা হত এবং সুতো ও মুদ্রা তৈরির ক্ষেত্রেও রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণ ছিল।


 5. মৌর্য আমলে যোগাযোগ ব্যবস্থা কেমন ছিল? 

উত্তর: মৌর্য আমলে সাম্রাজ্যের রাজধানীর সঙ্গে নানা এলাকার যোগাযোগ উন্নত হয়েছিল। এসময় রাজপথগুলি দেখাশোনা করার জন্য নানা রাজকর্মচারী নিয়োগ করা হত। পথগুলি চিহ্নিত করার জন্য এবং দিক বোঝানোর জন্য ফলক লাগানো হত, যেগুলি বর্তমানকালের মাইল ফলকের মতো ছিল।


 6. কুষাণ আমলে মানুষের অবসরবিনোদনের মাধ্যম কী ছিল ?

 উত্তর: কুষাণ আমলে মানুষের অবসরবিনোদনের নানা মাধ্যম ছিল, যেমন—নাচ, গান ও অভিনয়। এর পাশাপাশি জাদু খেলা, নানারকম দড়ির কসরত, পাশা খেলা, শিকার, রথের দৌড়, কুস্তি প্রভৃতিরও প্রচলন ছিল। 


7. ‘অগ্রহার' ব্যবস্থা কী?

 উত্তর: গুপ্ত ও গুপ্তোত্তরকালে বৌদ্ধ বিহার বা অন্যান্য মন্দির বা ব্রাহ্মণকে যে নিষ্কর জমিদান করা হত, তা অগ্রহার ব্যবস্থা নামে পরিচিত। এই ব্যবস্থায় বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই জমি অর্থের বিনিময়ে কেনা হত এবং পরে তা দান করা হত। এই ধরনের জমি হস্তান্তর করা যেত না, কিন্তু বংশপরম্পরায় ভোগ করা যেত । 


8. 'স্ত্রীধন' কী ?

 উত্তর: গুপ্ত ও গুপ্তোত্তরকালে মেয়েদের কম বয়সে বিয়ে দেওয়ার রীতি ছিল। বিয়ের সময় মেয়েরা যৌতুক হিসেবে কিছু সম্পদ পেতেন, যেগুলিতে কেবল তাদেরই অধিকার ছিল । এই সম্পদকে বলা হত স্ত্রীধন।


 9. গুপ্ত ও গুপ্তোত্তরকালে মেয়েদের অবস্থা কেমন ছিল? 

উত্তর: গুপ্ত ও গুপ্তোত্তরকালে মেয়েদের অল্পবয়সে বিয়ে দেওয়া হত। তাঁরা বিয়ের সময় পাওয়া উপহার বা স্ত্রীধন নিজেদের মতো করে ব্যবহার করতে পারতেন। তবে এসময় পরিবারের প্রধান ছিলেন বাবা।


10. গুপ্ত ও গুপ্তোত্তরকালে কোন্ কোন্ এলাকার সঙ্গে বাণিজ্য চলত?

 উত্তর: গুপ্ত ও গুপ্তোত্তরকালে এশিয়া মহাদেশের নানা এলাকার সঙ্গে ভারতীয় উপমহাদেশের বাণিজ্য চলত। এসময় পূর্ব উপকূলের তাম্রলিপ্ত বন্দরের খ্যাতি বেড়ে যায় । এ ছাড়া তামিলনাড়ুর কাবেরীপট্টিনম বন্দরের গুরুত্বও এসময় ছিল।


 11. কারিগর ও ব্যবসায়ীদের সংঘগুলির কাজ কী ছিল ?

 উত্তর: খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতকে তৈরি হওয়া কারিগর ও ব্যবসায়ীদের সংঘগুলি পেশাগত নিরাপত্তার দিকে খেয়াল রাখত। সংঘগুলি কারিগরি ও ব্যাবসা-সংক্রান্ত বিবাদ মেটাত। তা ছাড়া জিনিসের গুণমান ও দাম ঠিক করাও তাদের কাজ ছিল।


 সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তর

 চার/পাঁচটি বাক্যে উত্তর দাও:


 1. নগরগুলি গ্রামীণ এলাকার কাছাকাছি গড়ে উঠত কেন ?

 উত্তর: ষোড়শ মহাজনপদের আমলে শাসন ও ব্যাবসার সঙ্গে যুক্ত লোকেরা প্রধানত নগরে বাস করত । কিন্তু এরা কেউই নিজেদের খাদ্য উৎপাদন করত না। ফলে এদের জন্য নিয়মিত খাদ্য আসত গ্রাম থেকে । তাই নগরগুলি গ্রামীণ এলাকার কাছাকাছি অঞ্চলে গড়ে উঠত |


 2. ষোড়শ মহাজনপদের আমলে নগরগুলির অবস্থা কেমন ছিল?

 উত্তর: ষোড়শ মহাজনপদের আমলে নগরগুলি আকারে গ্রামীণ বসতির তুলনায় বড়ো ছিল। প্রধানত শাসন ও ব্যাবসার সঙ্গে যুক্ত লোকেরা নগরে বাস করতেন। তবে এরা নিজেদের খাদ্য নিজেরা উৎপাদন করতে পারতেন না । তাই খাদ্যের জন্য তাঁদের গ্রামের ওপর নির্ভরশীল থাকতে হত।


 3. ষোড়শ মহাজনপদের আমলে কৃষিকাজ কেমন ছিল ?

 উত্তর: ষোড়শ মহাজনপদের আমলে কৃষিকাজ ছিল মানুষের প্রধান জীবিকা। জমির উর্বরতা অনুযায়ী এসময় জমিগুলিকে নানাভাগে ভাগ করা হত। নানা ঋতুতে নানা ধরনের ফসল ফলানো হলেও এইসব ফসলের মধ্যে ধানই ছিল প্রধান । মগধ অঞ্চলে শালিধানের ব্যাপক চাষ হত । অন্যান্য ফসলের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল গম, যব ও আখ ।

 

4. ষোড়শ মহাজনপদের আমলে মুদ্রাব্যবস্থা কেমন ছিল?

 উত্তর: ষোড়শ মহাজনপদের আমলে বিনিময়ের মাধ্যম ছিল ধাতব মুদ্রা। নানা গিল্ড বা সংঘ মুদ্রার প্রচলন করেছিল। এসময় কার্যাপণ ছিল বহুল প্রচলিত একধরনের মুদ্রা। এই আমলে রুপোর তৈরি বহু মুদ্রাও পাওয়া গেছে। উন্নত মুদ্রাব্যবস্থা দেখে মনে হয় যে, এ সময়ে বাণিজ্যে উন্নতি ঘটেছিল।


 5. মৌর্য আমলের ঘরবাড়িগুলি কেমন ছিল?

 উত্তর: মৌর্য আমলের ঘরবাড়িগুলি তৈরি করা হত মাটি, পাথর, ইট বা কাঠ দিয়ে। প্রতিটি ঘরের ভিতরে ও বাইরে পলেস্তারা করা হত। অনেকে ঘরের দেয়ালে নানা রঙের ছবি এঁকে সুসজ্জিত করতেন। প্রতিটি বাড়িতে আসবাবপত্ররূপে রাখা হত চৌকি বা খাট, মাদুর, তোশক, চাদর, বালিশ প্রভৃতি।


 6. মৌর্য আমলের পোশাক-পরিচ্ছদ কেমন ছিল ?

 উত্তর: মৌর্য আমলে নারী ও পুরুষদের পোশাকের মধ্যে নানা বৈচিত্র্য দেখা যায়। পুরুষরা ধুতি ও চাদরের মতো পোশাক পরতেন এবং নারীরা পোশাকের ওপর চাদর বা ওড়না ব্যবহার করতেন। ধনী ও রাজপরিবারের নারী পুরুষ দামি পোশাক পরতেন। সাধারণ মানুষ সুতির কাপড়ই বেশি পছন্দ করতেন। পশম ও রেশমের কাপড়েরও চল ছিল। আবার পুরুষরা মাথায় পাগড়ি পরতেন এবং ধনী ব্যক্তিরা পরতেন দামি পাথর ও সোনার অলংকার।


 7. কুষাণ আমলে কৃষি কেমন ছিল?

 উত্তর: কুষাণ আমলে কেবলমাত্র আর্যাবর্তে নয়, বিন্ধ্যপর্বতের দক্ষিণাঞ্চলেও কৃষিকাজ ছড়িয়ে পড়েছিল। আর্যাবর্ত বা উত্তর ভারতে কৃষিই ছিল মানুষের প্রধান জীবিকা। এসময়ের প্রধান ফসল ছিল ধান, গম, যব, আখ, কার্পাস প্রভৃতি। এ ছাড়া দক্ষিণ ভারতে তুলো ও গোলমরিচের চাষ হত। কুষাণ আমলে কৃষিকাজে ব্যবহৃত লোহার লাঙল, কোদাল, কুঠার, দা প্রভৃতির নিদর্শন পাওয়া গেছে।


 ৪. কুষাণ আমলের অর্থনীতি ও জীবনযাত্রার বিষয়গুলি আলোচনা করো।

 উত্তর: কুষাণ আমলের অর্থনীতি ও জীবনযাত্রার বহুমুখী দিক ছিল। অর্থনীতি: কুষাণ আমলের অর্থনীতি ছিল কৃষিভিত্তিক । | এ উৎপন্ন ফসল ছিল ধান, যব, গম, আখ ও কার্পাস। জমির ওপর রাষ্ট্রীয় মালিকানা ছিল না।

 জীবনযাত্রা : কুষাণ আমলে মানুষের জীবনযাত্রার ক্ষেত্রে বর্ণাশ্রম ও চতুরাশ্রম প্রথার প্রভাব ছিল । সমাজের শীর্ষস্থানে ছিল পুরুষরা এবং পুরুষের নীচে ছিল নারীর স্থান। পরিবারে মেয়েদের অবস্থা ভলো ছিল না।


 9. গুপ্ত ও গুপ্তোত্তর আমলে বর্ণাশ্রম প্রথার অবস্থা কেমন ছিল ?

 উত্তর: গুপ্ত ও গুপ্তোত্তর আমলের সমাজে বর্ণাশ্রম প্রথা চালু ছিল। তবে সবাই কঠোরভাবে বর্ণাশ্রম প্রথার অনুশাসন মানত না। কিন্তু সমাজের নীচুতলার মানুষদের প্রতি ব্রাহ্মণদের মনোভাব এসময় বিশেষ বদলায়নি। কেন-না একই অপরাধের কারণে ব্রাহ্মণ ও শূদ্রদের আলাদা শাস্তি হত। তবে এসময় শূদ্ররা কৃষি, পশুপালন ও বাণিজ্য করতে পারত। এ ছাড়া সমাজে সবচেয়ে খারাপ অবস্থা ছিল চণ্ডালদের।


 10. গুপ্ত আমলের মুদ্রাব্যবস্থা কেমন ছিল?

 উত্তর: গুপ্ত আমলে সোনা ও রুপোর মুদ্রার ব্যাপক প্রচলন ছিল। এসময় সোনার মুদ্রাকে বলা হত দিনার ও সুবর্ণ আর রুপোর মুদ্রাকে বলা হত রূপক। গুপ্ত সম্রাট দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্ত প্রথম রুপোর মুদ্রার প্রচলন করেন। এই সময় তামার মুদ্রারও প্রচলন ছিল।


 11. সুয়ান জাং ভারতীয় উপমহাদেশের আবহাওয়া সম্পর্কে কী বলেছেন ?

 উত্তর: সুয়ান জাং-এর রচনায় ভারতবর্ষ ইন-তু নামে পরিচিত। তিনি ইন-তুকে মূলত গরমের দেশ বলেছেন। তাঁর মতে এখানে নিয়মিত বৃষ্টিপাত হত। এখানকার উত্তর ও পূর্বাঞ্চলের মাটি ছিল উর্বর এবং দক্ষিণাঞ্চল ছিল বনে ঢাকা। আবার পশ্চিমাঞ্চলের মাটি ছিল পাথুরে ও অনুর্বর।



 দীর্ঘ উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তর

 আট/দশটি বাক্যে উত্তর দাও:  মান 5


 1. ষোড়শ মহাজনপদের আমলে কৃষিকাজ কেমন ছিল?

 উত্তর: ভূমিকা: ষোড়শ মহাজনপদের আমলে কৃষিকাজের গুরুত্ব ছিল অপরিসীম। সেযুগের বিভিন্ন লেখায় চাষের কাজের খুঁটিনাটি বিবরণ পাওয়া যায় ।এই সময়ের কৃষিকাজ সম্বন্ধে যা জানা যায়, তা হল

 [a] কৃষিকাজের জন্য অনুকূল অবস্থান: বেশিরভাগ মহাজনপদ গঙ্গা উপত্যকায় অবস্থিত ছিল। এই অঞ্চলে পরিমিত জলের জোগান এবং উর্বর মাটি কৃষিকাজের জন্য উপযুক্ত ছিল।

 [b] কৃষিজীবী জনবসতি: জনপদ বলতে কৃষিভিত্তিক গ্রামীণ অঞ্চলকেও বোঝাত। তাই স্বাভাবিকভাবেই জনপদ ও মহাজনপদে কৃষিজীবী জনবসতি ছিল। প্রসঙ্গত, মহাজনপদগুলিতে রাজকর্মচারী ও যোদ্ধাদের ভরণপোষণের প্রয়োজনীয় সম্পদ কৃষি থেকেই আসত।

 [c] কৃষিজ ফসল: কৃষির ক্ষেত্রে ধানই ছিল প্রধান ফসল এবং ধানের মধ্যে সেরা ছিল শালিধান । মগধে এই ধান প্রচুর পরিমাণে চাষ হত। এ ছাড়া অন্যান্য কৃষিজ ফসল ছিল গম, যব ও আখ ।

 [d] জমিতে অধিকার: ষোড়শ মহাজনপদের আমলে খুব কম সংখ্যক মানুষের হাতে অনেক জমির অধিকার ছিল। এর পাশাপাশি সমাজে ভূমিহীন কৃষকদের সংখ্যা ছিল অনেক বেশি ।


 2. প্রাচীন ভারতে নগরায়ণের পর্যায়গুলি সংক্ষেপে আলোচনা করো।

 উত্তর: ভূমিকা: নগরায়ণ বলতে নগর গড়ে ওঠার  প্রক্রিয়াকে বোঝায়। ভারতীয় উপমহাদেশে অন্তত দুটি পর্যায়ে নগরায়ণ হয়েছিল।

[a] প্রথম নগরায়ণ: ভারতীয় উপমহাদেশে হরপ্পা সভ্যতায় প্রথম নগর গড়ে উঠেছিল। তাই একে বলা হয় প্রথম নগরায়ণ । এই সভ্যতায় হরপ্পা, মহেনজোদাড়ো, লোখাল, কালিবঙ্গান প্রভৃতি নগরের অস্তিত্ব পাওয়া যায়। এই নগরায়ণ মূলত সিন্ধু উপত্যকায় হয়েছিল ।

 [b] দ্বিতীয় নগরায়ণ: হরপ্পা সভ্যতার পরবর্তীকালে খ্রিস্টপূর্ব ৬০০ অব্দ নাগাদ ষোড়শ মহাজনপদের আমলে ভারতীয় উপমহাদেশে শুরু হয়েছিল দ্বিতীয় নগরায়ণ।

 এই পর্বে ষোলোটি মহা নপদের নগরগুলি বিখ্যাত হয়ে উঠেছিল। এসময়ের নগরগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল কোশল, পাটলিপুত্র, রাজগৃহ, মগধ ও বৈশালী।

দ্বিতীয় নগরায়ণ ঘটেছিল গঙ্গা উপত্যকায়। এসময়ের নগরগুলি মাটি, পাথর বা ইট দিয়ে বানানো প্রাচীর দিয়ে ঘেরা ছিল।


 3. মৌর্য আমলের অর্থনীতি ও জীবনযাত্রা কেমন ছিল? 

উত্তর: অর্থনীতি: মৌর্য আমলের অর্থনীতি মূলত কৃষিনির্ভর হলেও মানুষ নানা পেশার কাজ ও ব্যাবসাবাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত ছিল।

 [a] কৃষিজীবী: মৌর্য আমলে উর্বর জমিতে নানারকম ফসল ফলানো হত। তাই সমাজের বেশিরভাগ মানুষ কৃষিকাজের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।

 [b] কারিগর ও বণিক: মৌর্য আমলে কারিগর ও বণিকদের তদারকি করত রাষ্ট্র। খনি ও খনিজ সম্পদের ওপর রাষ্ট্রের একচেটিয়া অধিকার ছিল।

 [c] নারীশ্রমিক ও কর্মচারী: গৃহস্থালির কাজের বাইরে নারীরাও সুতো উৎপাদনের কাজে, গুপ্তচর ও রাজকর্মচারী হিসেবে যুক্ত হত । জীবনযাত্রা: মৌর্য আমলের পিতৃতান্ত্রিক সমাজে ধনী দরিদ্র ভেদাভেদ ছিল। এই সময়ের জীবনযাত্রার কয়েকটি দিক হল—

 [a] পোশাক-পরিচ্ছদ: সমাজের ধনী ও রাজপরিবারের নারী-পুরুষ দামি পোশাক ও অলংকার পরতেন এবং সাধারণ মানুষরা পরতেন সুতিবস্ত্র। এসময় পশম ও রেশমের কাপড় ব্যবহার করা হত। এছাড়া ব্যবহার করা হত দামি পাথর ও সোনার অলংকারও।

 [b] ঘরবাড়ি: এ সময় মাটি, পাথর, ইট বা কাঠ দিয়ে ঘরবাড়ি তৈরি করা হত। ঘরের ভিতরে ও বাইরে লাগানো হত পলেস্তারা। অনেকে ঘরের দেয়ালে ছবি আঁকতেন। বাড়ির আসবাবপত্রের মধ্যে খাট বা চৌকি, মাদুর, তোশক, চাদর, বালিশ প্রভৃতি ছিল প্রধান।


 4. কুষাণ আমলের অর্থনীতি কেমন ছিল লেখো । 

উত্তর: ভূমিকা: অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে ভারতীয় উপমহাদেশে কুষাণ আমলে বেশকিছু পরিবর্তন দেখা যায় । কুষাণ আমলের অর্থনীতি ছিল নিম্নরূপ—

 [a] কৃষিকাজ: এসময় উত্তর ভারতে কৃষিকাজই ছিল মানুষের প্রধান জীবিকা। তবে এই পর্বে দক্ষিণ ভারতে কৃষিকাজ ছড়িয়ে পড়ে। দাক্ষিণাত্যের কালো মাটি কার্পাস চাষের ক্ষেত্রে বিশেষ উপযোগী ছিল, তেমনই কেরালায় গোলমরিচের ফলন হত। উৎপন্ন ফসলের মধ্যে ধান, গম, যব, আখ, কার্পাস প্রভৃতি ছিল উল্লেখযোগ্য।

 [b] বাণিজ্য: কুষাণ আমলে ভারতীয় উপমহাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মধ্যে এবং বাইরে বাণিজ্যিক ক্রিয়াকলাপ চলত। বাণিজ্যের ক্ষেত্রে জলপথ ও স্থলপথের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। বিদেশের বাজারে ভারতীয় উপমহাদেশের মসলিন ও অন্যান্য কাপড়ের চাহিদা ছিল। তা ছাড়া ভারতের হিরে, বৈদূর্য, মুক্তো ও মশলার কদর বিদেশের বাজারে ছিল। চিন থেকে আমদানি করা হত রেশম। এ ছাড়া বিদেশ থেকে কাচের জিনিসপত্রও আমদানি করা হত। বিদেশের বাজারে বাংলার মসলিনের বিশেষ চাহিদা ছিল।


 5. টীকা লেখো: এলাহাবাদ প্রশস্তি ।

 উত্তর: ভূমিকা: গুপ্ত সম্রাট সমুদ্রগুপ্তের সময়কালের একটি শিলালেখ হল এলাহাবাদ প্রশস্তি ।

[a] প্রাপ্তিস্থান: এলাবাদের কৌশাম্বী গ্রামে এই শিলালেখটি ছিল। পরে মুঘল সম্রাট আকবর সেটিকে তুলে নিয়ে এলাহাবাদ দুর্গের মধ্যে রাখেন। বর্তমানে সেখানেই শিলালেখটি রয়েছে।

 [b] লেখক: এলাহাবাদ প্রশস্তিটি সম্রাট সমুদ্রগুপ্তের সভাকবি হরিষেণের লেখা ।

 [c] বিষয়বস্তু: লেখটিতে আদতে সমুদ্রগুপ্তের গুণগান করা হয়েছে। সম্রাট হিসেবে সমুদ্রগুপ্তের যুদ্ধ, রাজ্যজয় প্রভৃতির কথা লেখটিতে রয়েছে। 

[d] লিখনশৈলী: পদ্য ও গদ্য উভয় পদ্ধতিতেই শিলালেখটি লেখা হয়েছে। যদিও শিলালেখটিতে সমুদ্রগুপ্তের প্রসঙ্গে শুধুমাত্র ভালো ভালো কথাই লেখা রয়েছে, তবুও ওই সময়ের ইতিহাস জানার ক্ষেত্রে লেখটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক উপাদান হিসেবে বিবেচ্য।


 6. ফাসিয়ানের লেখায় ভারতীয় উপমহাদেশের সমাজ সম্পর্কে কী জানা যায় ?

 উত্তর: ভূমিকা: গুপ্ত সম্রাট দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্তের আমলে ফাসিয়ান নামক একজন চিনা পর্যটক ভারতে এসেছিলেন। তাঁর লেখায় ভারতীয় উপমহাদেশের মানুষ ও তার সমাজ সম্পর্কে নানা তথ্য পাওয়া গেলেও দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্তের কোনো উল্লেখ নেই। ফাসিয়ানের লেখা থেকে ভারতীয় উপমহাদেশের সম্পর্কে যা জানা যায়, তা হল

 [a] নগর: ফাসিয়ান লিখেছেন ভারতীয় উপমহাদেশে অনেকগুলি নগর ছিল, যেগুলির মধ্যে মধ্যদেশের নগরগুলি ছিল উন্নত।

 [b] জীবনযাত্রা: তাঁর মতে ভারতীয় নগরগুলিতে জনগণ সুখে বাস করত। তবে চণ্ডালরা বাস করত নগরের বাইরে।

 [c] ভারতীয়দের অতিথি-আপ্যায়ন: ফাসিয়ানের মতে, বিদেশিদের যাতে কোনোভাবেই কষ্ট না হয় সেদিকে ভারতীয়রা অতিথিদের তারা নজর রাখত। খাতির-যত্নকরত।

 [d] ফাসিয়ানের চোখে পাটলিপুত্র: ফাসিয়ান এদেশের নগরগুলির মধ্যে অন্যতম শ্রেষ্ঠ নগর বলেছেন পাটলিপুত্রকে | তাঁর মতে, পাটলিপুত্রের লোকেরা ছিল সুখী ও সম্পদশালী।

 [e] পরিষেবা: ফাসিয়ানের মতে, ধনী বৈশ্যরা নগরের বিভিন্ন স্থানে বিনামূল্যে ওষুধ ও দাতব্য চিকিৎসার ব্যবস্থা করে দিতেন। সেখানে গরিব মানুষদের থাকা খাওয়ারও ব্যবস্থা ছিল।

 7. সুয়ান জাং-এর লেখায় ভারতীয় সমাজ কেমন ছিল? 

উত্তর: ভূমিকা: পুষ্যভূতি বংশের রাজা হর্ষবর্ধনের রাজত্বকালে চিনা পর্যটক সুয়ান জাং ভারতীয় উপমহাদেশে আসেন। তাঁর লেখায় ভারতীয় সমাজের নানা তথ্য জানা যায় | তাঁর লেখা থেকে যা জানা যায়

 [a] ইন-তু: সুয়ান জাং-এর লেখায় ভারতবর্ষ ইন-তু নামে পরিচিত। তিনি মনে করেছেন যে, ইন-তু-র লোকেরা তাদের দেশকে বিভিন্ন নামে ডাকে। সেইসময় দেশের পাঁচটি ভাগ ছিল, যথা—উত্তর, দক্ষিণ, পূর্ব, পশ্চিম ও মধ্য। এ ছাড়া ইন-তু-তে ৮০টি রাজ্য ছিল এবং প্রতিটি রাজ্যের নিজস্ব রাজা থাকলেও তারা বড়ো সম্রাটের অনুগত ছিল।

 [b] ইন-তু-র কৃষিজ ফসল: ধান ও গম ছিল ইন-তু-র কৃষিজ ফসল |

 [c] জাতিভদ: ইন-তু-র সমাজে জনগণের মধ্যে জাতিভেদ ছিল।

 [d] বাড়িঘর: শহরের বাড়িগুলি ইট ও টালি দিয়ে তৈরি করা হত। বাড়ির বারান্দা তৈরি হত কাঠ দিয়ে। গ্রামাঞ্চলে বাড়িগুলির দেয়াল ও মেঝে মাটি দিয়ে তৈরি হত।

 [e] ব্যাবসাবাণিজ্য: ইন-তু-তে দামি ধাতু ও পাথরের ব্যাবসা চলত।


7 comments: