◾একটি বাক্যে উত্তর দাও:
1. বৈদিক যুগ বলতে কী বোঝায় ?
উত্তর: বৈদিক সাহিত্য থেকে যে সময়ের ইতিহাস জানা যায় তাকে বৈদিক যুগ বলে |
2. আদি বৈদিক যুগ কোন্ সময়কে বলে ?
উত্তর: যে সময়ের ইতিহাস ঋগবেদ থেকে জানা যায় তাকেআদি বৈদিক যুগ বলে ।
3. বৈদিক যুগ কয় ভাগে বিভক্ত ?
উত্তর: বৈদিক যুগ দুই ভাগে বিভক্ত ।
4. বৈদিক যুগের দুটি ভাগ কী কী?
উত্তর: বৈদিক যুগের দুটি ভাগ হল আদি বৈদিক যুগ ও পরবর্তী বৈদিক যুগ।
5. ঋগ্ বেদে কোন্ পর্বতের উল্লেখ নেই?
উত্তর: ঋগবেদে বিন্ধ্যপর্বতের উল্লেখ নেই ।
6. ‘সপ্তসিন্ধু' অঞ্চল বলতে কোন্ অঞ্চলকে বোঝায় ?
উত্তর: সিন্ধু ও তার পূর্বদিকের উপনদীবেষ্টিত অঞ্চলই ছিল। সপ্তসিন্ধু অঞ্চল ।
7. বৈদিক সাহিত্য কয় ভাগে বিভক্ত ?
উত্তর: বৈদিক সাহিত্য চারভাগে বিভক্ত ।
৪. রাজা কথার আক্ষরিক অর্থ কী?
উত্তর: রাজা কথার আক্ষরিক অর্থ হল নেতা।
9. বৈদিক যুগে মানুষের প্রধান খাদ্যশস্য কী ছিল ?
উত্তর: বৈদিক যুগে মানুষের প্রধান খাদ্যশস্য ছিল যব, গম ও ধান
10. মহাকাব্য কোন্ সাহিত্যের অংশ?
উত্তর: মহাকাব্য পরবর্তী বৈদিক সাহিত্যের অংশ।
11. বৈদিক শিক্ষাব্যবস্থায় প্রধান কে ছিলেন?
উত্তর: বৈদিক শিক্ষাব্যবস্থায় প্রধান ছিলেন গুরু।
12. সুদাস কোন্ গোষ্ঠীর রাজা ছিলেন ?
উত্তর: সুদাস ভরত গোষ্ঠীর রাজা ছিলেন।
13. দেবতারা কাকে প্রথম রাজা নির্বাচন করেন?
উত্তর: দেবতারা ইন্দ্রকে প্রথম রাজা নির্বাচন করেন।
14. বৈদিক যুগে কীসের মাধ্যমে গুরুদক্ষিণা দেওয়া হত ?
উত্তর: বৈদিক যুগে গোরু দানের মাধ্যমে গুরুদক্ষিণা দেওয়াহত।
15. ভারতের একটি বিখ্যাত মেগালিথ কেন্দ্রের নাম লেখো।
উত্তর: ভারতের একটি বিখ্যাত মেগালিথ কেন্দ্রের নাম রাজস্থানের ভরতপুর।
16. মেগালিথের সঙ্গে কীসের সম্পর্ক খুঁজে পাওয়া যায়?
উত্তর: মেগালিথের সঙ্গে লোহা ব্যবহারের সম্পর্ক খুঁজে পাওয়া যায়।
◾সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তর
দু/তিনটি বাক্যে উত্তর দাও
1. বেশিরভাগ ঐতিহাসিকের মতে ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষায় কথা বলা মানুষ কোথায় কোথায় বাস করত ?
উত্তর: বেশিরভাগ ঐতিহাসিক মনে করেন যে, ইন্দো ইউরোপীয় ভাষায় কথা বলা মানুষ প্রথমে মধ্য এশিয়ার তৃণভূমি এলাকার যাযাবর মানুষ ছিল। পরে খাদ্যের অভাব দেখা দিলে তারা ইউরোপের বিভিন্ন অঞ্চলে, ইরানে ও ভারতে ছড়িয়ে পড়ে।
2. বৈদিক সাহিত্য কী ?
উত্তর: সংহিতা, ব্রাহ্মণ, আরণ্যক ও উপনিষদ—এই চারটি একসঙ্গে বৈদিক সাহিত্য নামে পরিচিত। আবার সংহিতা চার প্রকারের—ঋক্, সাম, যজুঃ ও অথর্ব |
3. বৈদিক যুগের ভাগগুলি কী কী ?
উত্তর: বৈদিক যুগের দুটি ভাগ—আদি বৈদিক যুগ ও পরবর্তী বৈদিক যুগ। সবথেকে পুরোনো বৈদিক সংহিতা ঋগ্বেদ থেকে আদি বৈদিক যুগের কথা এবং অন্যান্য পরবর্তী বৈদিক সাহিত্য থেকে পরবর্তী বৈদিক যুগের কথা জানা যায়।
4. বৈদিক সাহিত্য কোন্ সময় রচিত হয়েছিল ?
উত্তর: আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ১৫০০ থেকে ৬০০ অব্দের মধ্যে বৈদিক সাহিত্য রচিত হয়েছিল। এর মধ্যে খ্রিস্টপূর্ব ১৫০০ থেকে ১০০০ অব্দকে বলা হয় আদি বৈদিক যুগ | এরপর খ্রিস্টপূর্ব ৬০০ অব্দ পর্যন্ত সময়কালকে বলা হয় পরবর্তী বৈদিক যুগ ।
5. ঋগবেদে কোন্ কোন্ পর্বতের উল্লেখ আছে ?
উত্তর: ঋগবেদে হিমালয় (হিমবৎ) ও কাশ্মীরের মুজবন্ত শৃঙ্গের উল্লেখ আছে। তবে বিন্ধ্যপর্বতের কোনো উল্লেখ নেই ।
6. ঋগবেদে কোন্ কোন্ নদীর উল্লেখ আছে ?
উত্তর: ঋগবেদে গুরুত্বপূর্ণ নদীরূপে সিন্ধুর উল্লেখ আছে। এ ছাড়াও সরস্বতী নামের নদীর উল্লেখ থাকলেও বর্তমানে নদীটি আর খুঁজে পাওয়া যায় না। ঋগবেদের একেবারে শেষের দিকে মাত্র একবার গঙ্গা ও যমুনা নদীর উল্লেখ আছে ।
7. পরবর্তী বৈদিক যুগে বৈদিক সভ্যতার বিস্তার কেমন ঘটেছিল ?
উত্তর: গঙ্গা-যমুনা-দোয়াব অঞ্চলের বেশি উল্লেখ পাওয়া যায় পরবর্তী বৈদিক সাহিত্যে।
এই কারণে মনে করা হয় যে, পরবর্তী বৈদিক যুগে বৈদিক-বসতি পাঞ্জাব থেকে পূর্বদিকে হরিয়ানায় সরে যায়। এসময় বৈদিক সভ্যতা পূর্বদিকে মিথিলা থেকে গাঙ্গেয় সমভূমি অঞ্চলে বিস্তারলাভ করে।
8. কোন্ অঞ্চল পরবর্তী বৈদিক সাহিত্যে মূল ভৌগোলিক এলাকারূপে পরিচিত ছিল?
উত্তর: পরবর্তী বৈদিক সাহিত্যে মূল ভৌগোলিক এলাকারূপে সিন্ধু ও গঙ্গানদীর মাঝামাঝি এলাকাকে বোঝাত। এ ছাড়া গঙ্গা উপত্যকার উত্তরভাগ এবং গঙ্গা যমুনা-দোয়াব অঞ্চলও এর মধ্যে ধরা হত।
9. চিত্রিত ধূসর মাটির পাত্র কী ?
উত্তর: পরবর্তী বৈদিক যুগে ভারতীয় উপমহাদেশে এক বিশেষ ধরনের মাটির পাত্র বানানো হত। এই পাত্রগুলি ছিল ধূসর রঙের এবং এইসব পাত্রের গায়ে আঁকা হত নানা ছবি। এই পাত্রগুলিকে বলা হয় চিত্রিত ধূসর মাটির পাত্র।
10. ঋগবেদের যুগে গ্রামের চেহারা কেমন ছিল?
উত্তর: ঋগবেদের বর্ণনায় দেখা যায় যে, গ্রাম বলতে শুধু গ্রামীণ বসতি বোঝাত না। এযুগের ছোটো ছোটো জনবসতিগুলিও পরিচিত হত গ্রাম নামে। আবার ঋগবেদে জন, গণ ও বিশ শব্দ দিয়ে গ্রামের থেকে বড়ো জনগোষ্ঠীগুলিকে বোঝানো হয়েছে।
11. ঋগবেদে ‘রাজা বলতে কাকে বোঝানো হয়েছে?
উত্তর: ঋগ্বেদে 'রাজা' শব্দের নানা ব্যবহার দেখা যায়। 'রাজা' শব্দটির আক্ষরিক অর্থ নেতা। দায়িত্ব পালনের ভিত্তিতে তিনি কখনও ‘বিশপতি' অর্থাৎ 'বিশ' বা গোষ্ঠীর প্রধানরূপে আবার কখনও গোপতি বা গবাদিপশুর প্রভু বলে পরিচিত হতেন।
12. পরবর্তী বৈদিক যুগে প্রজাদের অবস্থা কেমন ছিল?
উত্তর: পরবর্তী বৈদিক যুগে প্রজারা বাস করতেন রাজার শাসন করা এলাকায়। প্রজা না থাকলে রাজার শাসনের কোনো মূল্য থাকত না। রাজা প্রজাদের নানা সমস্যার সমাধান করতেন এবং প্রজারাও রাজাকে মেনে চলতেন।
13. বৈদিক যুগের রাজারা কী ধরনের যজ্ঞ করতেন?
উত্তর: বৈদিক যুগের রাজারা অনেক সময় পুরোহিতদের পরামর্শে নানান ধরনের যজ্ঞ করতেন। যেমন—অশ্বমেধ যজ্ঞ, রাজসূয় যজ্ঞ, বাজপেয় যজ্ঞ ইত্যাদি। রাজারা সাধারণত যুদ্ধে যাওয়ার আগে বা যুদ্ধে জয়ী হওয়ার পর যজ্ঞ করতেন। এইসব যজ্ঞের মাধ্যমে তারা নিজেদের ক্ষমতা প্রকাশ করতেন।
14. সভা ও সমিতি কী?
উত্তর: বৈদিক যুগে সভা ও সমিতি ছিল বিশেষ দুটি প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠান দুটি শাসনকার্যে রাজাকে সাহায্য করত। সভা-তে বয়স্ক ব্যক্তিরা যোগ দিতেন আর সমিতি-তে যোগ দিতেন গোষ্ঠীর সবাই ।
15. আদি বৈদিক সমাজে কারিগরি শিল্পের কেমন চল ছিল ?
উত্তর: আদি বৈদিক সমাজে কারিগরি শিল্পের চল ছিল কম। এই সমাজে কাঠের কারিগরি শিল্প, চামড়ার শিল্প, বস্ত্রবয়ন শিল্প এবং ধাতুশিল্প প্রচলিত ছিল।
16. বৈদিক যুগের সমাজকে পিতৃতান্ত্রিক সমাজ বলা হয় কেন ?
উত্তর: বৈদিক যুগে সমাজের প্রতিটি পরিবারে পিতাই ছিলেন প্রধান। হরপ্পার সমাজের মতো মায়ের ক্ষমতা ঋগ্বৈদিক সমাজে ছিল না। তাই বৈদিক যুগের সমাজকে পিতৃতান্ত্রিক সমাজ বলা হয়।
17. পরবর্তী বৈদিক সমাজে মানুষ কোন্ কোন্ পেশার মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করত ?
উত্তর: পরবর্তী বৈদিক সমাজে মানুষ যে সকল পেশার মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করত সেগুলি হল কামার, কুমোর, জেলে, রাখাল, চিকিৎসক, কারিগর প্রভৃতি।
18. স্নাতক কথাটা কীভাবে এসেছে?
উত্তর: বৈদিক যুগে ছাত্রদের পড়াশোনা বারো বছর ধরে চলার পর ‘সমাবর্তন' অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে শেষ হত। সেই অনুষ্ঠানে তাদের এক বিশেষ স্নান করতে হত। তার থেকেই ‘স্নাতক' কথাটি এসেছে।
19. কতকগুলি মেগালিথ কেন্দ্রের উল্লেখ করো ।
উত্তর: মেগালিথ অর্থাৎ বড়ো ধরনের পাথরের সমাধি ভারতের যে সমস্ত অঞ্চলে পাওয়া গেছে, সেগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল কাশ্মীরের বুরজাহোম, রাজস্থানের ভরতপুর, মহারাষ্ট্রের ইনামগাঁও প্রভৃতি।
20. রোমিং ও রাম—উভয় শব্দের মধ্যে মিল কোথায়?
উত্তর: ইংরেজি রোমি শব্দের অর্থে ঘোরা | আবার সংস্কৃত রাম শব্দের অর্থ যিনি ঘুরে বেড়ান। সুতরাং, দুটি শব্দের মধ্যে অর্থগত একটা মিল রয়েছে।
21. ঋগবেদ ও জেন্দ আবেস্তায় কী কী মিল ও অমিল দেখা যায় ?
উত্তর: ঋগবেদ ও জেন্দ আবেস্তার ভাষায় ও বর্ণনায় মিল দেখা যায়। তবে, ঋগবেদে যারা দেব অর্থাৎ সম্মানিত ব্যক্তি, জেন্দ আবেস্তায় তারা দয়েব বা ঘৃণার পাত্র । আবার, D জেন্দ আবেস্তায় শ্রেষ্ঠ দেবতা অঙ্কুর ভালো হলেও বৈদিক 可 সাহিত্যে তা অসুর বা খারাপ বলে পরিচিত ।
◾সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তর
চার/পাঁচটি বাক্যে উত্তর দাও
1. ভারতে আর্যদের বসতি বিস্তারের পর্যায়গুলি সংক্ষেপে লেখো ।
উত্তর: ভূমিকা: ভারতে নানা পর্যায়ে আর্যদের বসতি বিস্তার ঘটেছিল | যা নিম্নরূপ—
[a] সপ্তসিন্ধু অঞ্চলে: আর্যরা সিন্ধু ও তার পূর্বদিকের উপনদীগুলি দিয়ে ঘেরা সপ্তসিন্ধু অঞ্চলে তাদের আদি বসতি গড়ে তোলে।
[b] গঙ্গা-যমুনা-দোয়াব অঞ্চলে: সপ্তসিন্ধু অঞ্চলের পর আর্যরা গঙ্গা-যমুনা-দোয়াব অঞ্চলে বসতি স্থাপন করে।
[c] পূর্বভারতে: পরবর্তী বৈদিক যুগে আর্য বসতি সরযূ নদী ছাড়িয়ে আরও পূর্বদিকে বিস্তারলাভ করে । [d] দাক্ষিণাত্যে: পরবর্তী বৈদিক যুগে দক্ষিণ ভারতেও আর্যসভ্যতা বিস্তারলাভ করে।
2. ঋগবেদের ভূগোল থেকে আদি বৈদিক সভ্যতা কতদূর বিস্তারলাভ করেছিল বলে জানা যায় ?
উত্তর: ঋগবেদের ভূগোল থেকে আদি বৈদিক সভ্যতার বিস্তার সম্পর্কে জানা যায়। আজকের আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত জুড়ে এই সভ্যতার বিস্তার ঘটেছিল। নদীর বর্ণনা থেকে মনে হয় যে, সপ্তসিন্ধু অঞ্চলে অর্থাৎ সিন্ধু ও তার পূর্বদিকের উপনদীগুলি দিয়ে ঘেরা অঞ্চলে আদি বৈদিক সভ্যতার বিস্তার ঘটেছিল। এই অঞ্চল সপ্তসিন্ধু অঞ্চল নামে পরিচিত।
3. বৈদিক সাহিত্য থেকে রাজনীতি সম্পর্কিত তথ্য কেমনভাবে পাওয়া যায়?
উত্তর: বৈদিক সাহিত্য মূলত ধর্মীয় সাহিত্য হলেও, এ থেকে নানা রাজনৈতিক তথ্য পাওয়া যায় ।
রাজা ও সংশ্লিষ্ট বিষয়: বৈদিক সাহিত্যে বিভিন্ন প্রসঙ্গে রাজা, তাঁদের যুদ্ধ-কাহিনি, শাসনব্যবস্থা প্রভৃতি বিষয়ে নানা তথ্য জানা যায়। পুরোহিতের পরামর্শে রাজারা রাজসূয়, অশ্বমেধ, বাজপেয় প্রভৃতি যজ্ঞ করতেন। শাসনব্যবস্থা: বৈদিক সাহিত্যে শাসনকার্যে রাজার ভূমিকা, তাঁকে সাহায্যকারীরূপে ‘রত্নিন' নামক কর্মচারী এবং ‘সভা' ও ‘সমিতি' নামক প্রতিষ্ঠানের উল্লেখ আছে।
4. ঋগবেদের যুগের কৃষিকাজের সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও।
উত্তর: ঋগবেদে গবাদিপশু প্রধান সম্পদ হওয়ায় কৃষির তুলনায় পশুপালনের ওপর বেশি জোর দেওয়া হয়েছে। পশুপালনের ওপর সমাজ বেশি নির্ভরশীল হওয়ায় জমির গুরুত্ব বিশেষ ছিল না।
কৃষি: একথা ঠিক যে ঋগ্বৈদিক যুগে কৃষির ভূমিকা কম ছিল। এসময়ের উৎপন্ন শস্যের মধ্যে যব ছিল প্রধান । তবে পরবর্তীকালে কৃষির গুরুত্ব বাড়তে থাকে।
5. পরবর্তী বৈদিক যুগে লোহা ব্যবহারের ফলে কী সুবিধা হয়েছিল?
উত্তর: পরবর্তী বৈদিক সমাজে নিশ্চিতভাবেই লোহার ব্যবহার ছিল। এসময় অস্ত্রশস্ত্রগুলি লোহা দিয়েই তৈরি হত। এগুলির মাধ্যমে বনজঙ্গল সাফ করে সেগুলিকে চাষের জমিতে পরিণত করা হত। এভাবেই লোহার কুড়ুল ও কুঠার দিয়ে গঙ্গা উপত্যকার জঙ্গল সাফ করা সহজ হয়েছিল। তাই লোহার ব্যবহারের ফলে একদিকে কৃষিজমির পরিমাণ বেড়েছিল এবং শাসকগোষ্ঠীরও সুবিধা হয়েছিল। অন্যদিকে
6. ঋগ্বৈদিক যুগের চতুর্বর্ণপ্রথার বর্ণনা করো ।
উত্তর: ঋগবেদ অনুযায়ী এই সমাজে প্রথম দিকে চতুর্বর্ণপ্রথা বিশেষভাবে প্রচলিত ছিল এমনটা বলা যায় না। সম্ভবত, ঋগবেদে বর্ণ বলতে মানুষের গায়ের রংকেই বোঝানো হত।
চতুর্বর্ণপ্রথা: ঋগবেদের শেষের দিকে সমাজে ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য ও শূদ্র শ্রেণির অস্তিত্বের কথা বলা হয়। ব্রাহ্মণরা যাগযজ্ঞ, পড়াশোনা ও শিক্ষাদানের কাজ করত। ক্ষত্রিয়রা রাজ্যশাসন এবং প্রজাদের নিরাপত্তার দায়িত্ব নিত। বৈশ্যরা কৃষিকাজ, পশুপালন ও ব্যাবসাবাণিজ্যের কাজে যুক্ত থাকত এবং শূদ্ররা ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয় ও বৈশ্যদের সেবায় নিযুক্ত থাকত।
7. পরবর্তী বৈদিক সমাজে বৈশ্য ও শূদ্রদের অবস্থা কেমন ছিল ?
উত্তর: পরবর্তী বৈদিক সমাজে বৈশ্য ও শূদ্রদের অবস্থা অত্যন্ত খারাপ ছিল । কেননা এযুগের সাহিত্যে তাদের হেয় করে দেখানো হয়েছে। তা ছাড়া বর্ণ-ব্যবস্থার সবচেয়ে খারাপ প্রভাব পড়েছিল শূদ্রদের ওপর। তারা প্রায় কোনো সামাজিক সুযোগসুবিধা পেত না।
8. পরবর্তী বৈদিক সমাজে নারীদের অবস্থা কেমন ছিল?
উত্তর: আদি বৈদিক যুগে নারীরা শিক্ষালাভ ও সম্মানের অধিকারী হলেও পরবর্তী বৈদিক সমাজে নারীদের অবস্থা বিশেষভাবে খারাপ হয়েছিল। কোনো পরিবারে মেয়ে জন্মালে পরিবারের সবাই দুঃখ পেত। এই সমাজে কম বয়সে মেয়েদের বিয়ে দেওয়া হত। যুদ্ধ বা সমিতির কাজেও মেয়েরা যোগ দিতে পারত না।
9. পরবর্তী বৈদিক যুগে শিক্ষার সঙ্গে উপনয়নের কী সম্পর্ক দেখা যায় ?
উত্তর: পরবর্তী বৈদিক যুগে শিক্ষার সঙ্গে উপনয়নের সরাসরি সম্পর্ক ছিল। কোনো ছাত্র শিক্ষাগ্রহণের ক্ষেত্রে প্রথমে গুরুর কাছে আবেদন করত। এরপর গুরু উপযুক্ত মনে করলে উপনয়নের মাধ্যমে সেই ছাত্রকে শিষ্য হিসেবে স্বীকৃতি দিতেন। অনেক ক্ষেত্রে মেয়েদেরও উপনয়ন হত।
10. চতুরাশ্রম কী?
উত্তর: পরবর্তী বৈদিক যুগে মানুষের জীবনযাপনের চারটি ভাগ ছিল—ব্রহ্মচর্য, গার্হস্থ্য, বানপ্রস্থ এবং সন্ন্যাস। এগুলিকে একসঙ্গে বলা হত চতুরাশ্রম ।ব্রহ্মচর্য : ছাত্রজীবনে গুরুগৃহে থেকে এই পর্বে পড়াশোনাকরতে হত।
গার্হস্থ্য: পড়াশোনার শেষে এই পর্বে বিয়ে করে সংসার জীবন পালন করতে হত।বানপ্রস্থ: এই পর্বে সংসার জীবন থেকে দূরে বনে ঘর তৈরি করে ধর্মচর্চা করতে হত। সন্ন্যাস: এই পর্বে সবকিছু ত্যাগ করে ঈশ্বরের চিন্তায় শেষজীবন কাটাতে হত।
11. বৈদিক সমাজে বিনোদনের মাধ্যমগুলি কী ছিল ?
উত্তর: বৈদিক সাহিত্য থেকে আর্যদের বিনোদনের মাধ্যমগুলি সম্পর্কেও নানা তথ্য জানা যায়। পাশাখেলা: বৈদিক সমাজে পাশাখেলা ছিল অত্যন্ত জনপ্রিয়। এসময় 'সভা' ও 'সমিতি' নামে পরিচিত প্রতিষ্ঠানগুলিতেও পাশাখেলার আয়োজন করা হত । রথ ও ঘোড়দৌড়: বৈদিক যুগের মানুষের বিনোদনের অন্যতম মাধ্যম ছিল রথ ও ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতা। গানবাজনা: বৈদিক যুগে গানবাজনার মাধ্যমেও মানুষজন নিজেদের অবসর সময় কাটাত।
12. বৈদিক যুগের শিক্ষার ধারাগুলি কী ছিল?
উত্তর: বৈদিক যুগে শিক্ষার ধারা ছিল বিচিত্র ও বহুমুখী।বেদপাঠ: সাধারণভাবে বৈদিকশিক্ষা শুরু হত বেদপাঠের মধ্য দিয়ে।
অন্যান্য বিষয়: বৈদিক যুগে বেদের পাশাপাশি গণিত, ব্যাকরণ ও ভাষাশিক্ষার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হত।
হাতেকলমে শিক্ষা: বৈদিক যুগে হাতেকলমে শিক্ষার ওপরও বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হত। যেমন, এইসময় অন্যান্য বিষয়ের পাশাপাশি অস্ত্রচালানোও শিখতে হত। ব্রাক্ষ্মণরাও এই বিদ্যায় বিশেষ পারদর্শী হতেন।
13. মেগালিথ সমাধিক্ষেত্রে কী ধরনের নিদর্শন পাওয়া গেছে?
উত্তর: মেগালিথ ও মেগালিথ কেন্দ্র : মেগালিথ বলতে বড়ো পাথরের সমাধি বোঝায়। ভারতে এই ধরনের সমাধিক্ষেত্রের নিদর্শন পাওয়া গেছে কাশ্মীরের বুরজাহোম, রাজস্থানের ভরতপুর এবং মহারাষ্ট্রের ইনামগাঁওতে।
প্রাপ্ত নিদর্শন: মেগালিথ সমাধিক্ষেত্রগুলিতে কালো বা লাল মাটির বাসন, পাথর, পোড়ামাটির জিনিসপত্র প্রভৃতি পাওয়া গেছে। এ ছাড়া পাওয়া গেছে সোনা, লোহা, রুপো ও ব্রোঞ্জের নানা জিনিসপত্র; ঘোড়া ও অন্যান্য জীবজন্তুর হাড়; মাছের কাটা প্রভৃতিও |
14. বৈদিক যুগে অন্যান্য সমাজের বিবরণ দাও ।
উত্তর: ভারতীয় উপমহাদেশে বৈদিক সভ্যতা কেবলমাত্র সিন্ধু ও গঙ্গা নদীর উপত্যকা অঞ্চলেই সীমাবদ্ধ ছিল। উপমহাদেশের পূর্ব, উত্তর-পূর্ব ও দক্ষিণ অংশে বৈদিক সভ্যতা ছিল না। এইসব অঞ্চলে প্রত্নতাত্ত্বিকরা ওই সময়ের অন্যরকম সংস্কৃতির খোঁজ পেয়েছেন। সেখানকার মানুষ পাথর ও তামার অস্ত্রশস্ত্র ব্যবহার করত। এ ছাড়া তারা কালো ও লাল রঙের মাটির পাত্র ব্যবহার করত। এই সময়ের মাটির তৈরি ভাঙা ঘরবাড়িরও সন্ধান পেয়েছেন প্রত্নতাত্ত্বিকরা। এইরকম একটি সংস্কৃতির খোঁজ পাওয়া গেছে পশ্চিমবঙ্গের মহিষদলে।
◾ দীর্ঘ উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তর
আট/দশটি বাক্যে উত্তর দাও
1. ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষা পরিবারের সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও।
→ ভূমিকা: ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষা পরিবার হল পৃথিবীর ভাষা পরিবারগুলির মধ্যে অন্যতম। এর থেকে বিভিন্ন
প্রাচীন ভাষার জন্ম হয়। ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষা পরিবারের বিভিন্ন সদস্য হল—
[a] ইন্দো-ইরানীয় ভাষা : ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষা পরিবারের সদস্য হল ইন্দো-ইরানীয় ভাষা। এই ভাষা থেকে ভারতীয় উপমহাদেশের বিভিন্ন ভাষার সৃষ্টি হয়েছে, যেমন—সংস্কৃত ভাষা। ঋগবেদ ও জেন্দ আবেস্তায় এই ভাষার প্রভাব দেখা যায়।
[b] ইন্দো-আর্য ভাষা: মনে করা হয় যে, কোনো-এক সময় ইন্দো-ইরানীয় ভাষাগোষ্ঠীর মানুষদের মধ্যে বিবাদ শুরু হয়। ফলে এদের একটি শাখা উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত দিয়ে ভারতীয় উপমহাদেশে চলে আসে। এদের ভাষাকেই বলা হয় ইন্দো-আর্য ভাষা। ইন্দো-আর্য - ভাষার প্রাচীনতম সাহিত্য হল ঋগবেদ । বৈদিক সাহিত্য থেকে এই ইন্দো-আর্যদের বসতি ও জীবনযাত্রা সম্পর্কে জানা যায় ।
2. টীকা লেখো: বৈদিক যুগ ও প্রত্নতত্ত্ব ।
উত্তর: ভূমিকা: বৈদিক যুগের প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনগুলি থেকে সেসময়ের সমাজ-সভ্যতার নানা কথা জানা যায় |
[a] ধাতুর ব্যবহার: বৈদিক সাহিত্য এবং প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনগুলির ভিত্তিতে মনে করা হয় যে, এসময় নানা ধাতু ব্যবহারের চল ছিল। বৈদিক সাহিত্যে স্পষ্টভাবে তামা ও ব্রোঞ্জ ব্যবহারের কথা বলা হয়েছে। তবে শেষদিকের বৈদিক সাহিত্য থেকে লোহা ব্যবহারের কথাও জানা যায়। তেমনই নানা প্রত্নস্থানেও পাওয়া যায় লোহা ব্যবহারের নিদর্শন। বিভিন্ন প্রত্নস্থানে লোহার তৈরি তিরের ফলা, বর্ণার ফলা, আংটি, পেরেক, ছোরা, বড়শি এবং তামা ও ব্রোঞ্জের গয়না পাওয়া গেছে।
[b] মাটির পাত্র: পরবর্তী বৈদিক যুগে ভারতীয় উপমহাদেশে ধূসর রঙের একরকমের মাটির পাত্র বানানো হত। এগুলির গায়ে আঁকা হত নানা ছবি | তাই এগুলি চিত্রিত ধূসর মাটির পাত্র নামে পরিচিত। হরিয়ানার ভগবানপুরা, অত্রঞ্জিখেরা, হস্তিনাপুর, নোহ প্রভৃতি স্থানে এইসব মাটির পাত্র পাওয়া গেছে।
3. বৈদিক যুগের রাজার অবস্থা সম্পর্কে আলোচনা করো।
উত্তর: ঋগ্বৈদিক যুগের রাজা: ঋগ্ বেদে 'রাজা' শব্দটি নানা ভাবে ব্যবহার করা হয়েছে। 'রাজা' কথার আক্ষরিক অর্থ নেতা। ঋগবেদে রাজা কখনও 'বিশপতি' অর্থাৎ গোষ্ঠী বা বিশ্বের প্রধান আবার কখনও-বা তিনি গবাদিপশুর প্রভু অর্থাৎ 'গোপতি' নামেও পরিচিত হয়েছেন। পণ্ডিতদের অনুমান ঋগবেদের যুগের রাজা মানুষ ও জমির অধিকার পাননি। তবে "বিদথ' নামে পরিচিত একটি প্রতিষ্ঠান রাজাকে শাসনকার্যে সহায়তা করতেন।"
পরবর্তী বৈদিক যুগের রাজা: পরবর্তী বৈদিক যুগে রাজা যথার্থ শাসকে পরিণত হন। এই সময় তিনি হয়ে ওঠেন ভূপতি বা মহীপতি | ভূপতির অর্থ জমির মালিক এবং মহীপতির অর্থ পৃথিবীর রাজা। তবে এই যুগে রাজারা বিশেষ খ্যাতি অর্জন করেছিলেন নৃপতি বা নরপতিরূপে, যার অর্থ মানুষের রক্ষাকারী । এর ফলে জনগণ পরিণত হয় তাঁর অনুগত প্রজায়।
4. ঋগ্বৈদিক যুগের সমাজব্যবস্থা কেমন ছিল?
উত্তর: ভূমিকা: বৈদিক যুগে সমাজের ভিত্তি ছিল পরিবার। এ যুগের সমাজব্যবস্থার নানা তথ্য পাওয়া যায় সেকালের সাহিত্যিক উপাদান থেকে।
[a] পরিবারের প্রধান: ঋগ্বৈদিক সমাজের সবথেকে ছোটো অংশ অর্থাৎ পরিবারের প্রধান ছিলেন ঘরের সবথেকে বয়স্ক পুরুষ। অর্থাৎ সমাজব্যবস্থা ছিল পিতৃতান্ত্রিক |
[b] বর্ণাশ্রম বা চতুর্বর্ণপ্রথা: ঋগ্বেদে বর্ণ বলতে গায়ের রংকেই বোঝাত। তবে ঋগবেদের শেষের দিকে বর্ণাশ্রমপ্রথা বোঝাতে বর্ণ শব্দের ব্যবহার শুরু হয়। এই সমাজে ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য ও শূদ্র শ্রেণির অস্তিত্ব ছিল। এই চার বর্ণকে জন্মভিত্তিক করে পেশা নির্ধারণ শুরু হয়।
[c] সমাজে নারীর স্থান: ঋগ্বৈদিক সমাজে নারীরা বিশেষ সম্মানের অধিকারিণী ছিলেন। তাঁরা নানা সামাজিক উৎসব-অনুষ্ঠান, এমনকি যুদ্ধ এবং শাসনকার্যেও অংশ নিতেন।
5. পরবর্তী বৈদিক যুগের সমাজব্যবস্থা কেমন ছিল?
উত্তর: ভূমিকা: ব্রাহ্মণদের লেখা পরবর্তী বৈদিক সাহিত্যগুলি থেকে এই যুগের নানা তথ্য পাওয়া যায়।
[a] পরিবার: পরবর্তী বৈদিক যুগের সমাজও ছিল পিতৃতান্ত্রিক। কিন্তু এই সমাজে নারীর অধিকার আরও সংকুচিত হয়েছিল।
[b] বর্ণপ্রথার কঠোরতা: এ যুগে বর্ণপ্রথার কঠোরতা বাড়ে এবং তা জন্মভিত্তিক ও পেশাভিত্তিক হয়ে পড়ে।
[c] চতুরাশ্রম: পরবর্তী বৈদিক যুগে ব্রহ্মচর্য, গার্হস্থ্য, বানপ্রস্থ এবং সন্ন্যাস—এই চতুরাশ্রম প্রথার গুরুত্ব বিশেষভাবে বেড়েছিল। তবে শূদ্রদের এইরূপ জীবনযাপনের অধিকার ছিল না।
[d] সমাজে নতুন শ্রেণির উদ্ভব: যারা পশুপালন ও খাদ্যসংগ্রহের মাধ্যমে জীবিকানির্বাহ করত তারা সমাজে নতুন শ্রেণি রূপে পরিচিত হয়।
[e] বৈশ্য ও শূদ্রদের অবনতি: পরবর্তী বৈদিক সমাজে বৈশ্য ও শূদ্রদের অবস্থার অবনতি ঘটে। সমাজে তাদের কোনো অধিকার ও সুযোগসুবিধা ছিল না।
[f] নারীদের: এসময় নারীদের অবস্থারও যথেষ্ট অবনতি ঘটেছিল। মেয়ে জন্মালে পরিবারের সবাই দুঃখ পেত।
6. বৈদিক যুগের শিক্ষাব্যবস্থা সম্পর্কে সংক্ষেপে লেখো।
উত্তর: ভূমিকা: বৈদিক সাহিত্য থেকে সে যুগের শিক্ষা সম্পর্কে নানা তথ্য পাওয়া যায়।
[a] গুরুর ভূমিকা: বৈদিক শিক্ষাব্যবস্থায় প্রধান ছিলেন গুরু। তিনি একটা অংশ পড়িয়ে বুঝিয়ে দিতেন, আর ছাত্ররা তা শুনে পুরো আবৃত্তি করত ও মনে রাখত। গুরুই ছাত্রের থাকা-খাওয়ার সমস্ত দায়িত্ব নিতেন ।
[b] উপনয়ন: পরবর্তী বৈদিক যুগে শিক্ষাক্ষেত্রে উপনয়নের গুরুত্ব দেখা যায়। উপনয়নের মাধ্যমেই গুরুগৃহে ছাত্রের শিক্ষারম্ভ হত এবং তাকে পড়াশোনা ছাড়াও অন্যান্য কাজকর্ম করতে হত।
[c] পাঠ্যবিষয়: সাধারণত বেদপাঠের মধ্য দিয়েই শিক্ষাদান শুরু হলেও গণিত, ব্যাকরণ ও ভাষাশিক্ষার ওপর জোর দেওয়া হত। এ ছাড়া হাতেকলমেও নানা ধরনের শিক্ষা নিতে হত। এই সময় অস্ত্রচালানো এবং চিকিৎসা বিষয়ে শিক্ষা ছিল বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। এমনকি ব্রাহ্মণরাও অস্ত্রশিক্ষা গ্রহণ করত।
[d] সমাবর্তন ও গুরুদক্ষিণা : সাধারণত বারো বছর ধরে বৈদিক শিক্ষাগ্রহণ চলত। অনেকে আবার সারাজীবন শিক্ষা নিয়ে ব্যস্ত থাকতেন। বারো বছর শিক্ষাগ্রহণের পর অনুষ্ঠিত হত ‘সমাবর্তন' অনুষ্ঠান, যেখানে ছাত্রকে ‘স্নাতক' বলে অভিহিত করা হত। গুরুগৃহ থেকে বিদায়ের সময় ছাত্ররা গুরুকে সাধ্যমতো গুরুদক্ষিণাও দিত।
7. মেগালিথ সম্পর্কে সংক্ষেপে লেখো ।
উত্তর: ভূমিকা: মেগালিথ বলতে বড়ো পাথরের সমাধিকে বোঝায় | মেগালিথ ভারতীয় উপমহাদেশে লোহা ব্যবহারের সঙ্গে বিশেষভাবে সম্পর্কিত।
[a] মেগালিথের বিভিন্ন ধরন: মেগালিথ বা পাথরের সমাধির নানা রকমফের দেখা যায়। কোনো স্থানে মেগালিথকে আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকা বড়ো পাথর মনে হয়, আবার কোথাও-বা অনেকগুলি পাথর বৃত্তাকারে ঘিরে সমাধি চিহ্নিত করা হত। আবার কোথাও একটি বড়ো পাথর দিয়ে ঢেকে দেওয়া হত অনেকগুলি ছোটো ছোটো পাথর। কোথাও-বা গুহার ভেতর এই সমাধি দেখা যায় ।
[b] মেগালিথ কেন্দ্র: ভারতীয় উপমহাদেশে যে সকল মেগালিথ কেন্দ্র আবিষ্কৃত হয়েছে, সেগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল কাশ্মীরের বুরজাহোম, রাজস্থানের ভরতপুর এবং মহারাষ্ট্রের ইনামগাঁও |
[c] প্রাপ্ত নিদর্শনসমূহ: এই মেগালিথ সমাধিগুলির মধ্য থেকে মানুষের কঙ্কাল ও তাদের ব্যবহারের জিনিসপত্র পাওয়া গেছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল কালো বা লাল মাটির বাসন, পাথর, পোড়া মাটির তৈরি জিনিসপত্র, লোহা, সোনা, রুপো ও ব্রোঞ্জের জিনিসপত্র। এ ছাড়া পাওয়া গেছে ঘোড়া ও অন্যান্য জীবজন্তুর হাড়, মাছের কাঁটা প্রভৃতি ।
This is very important and helpful.
ReplyDeleteHelpful
ReplyDeleteHelpfull
ReplyDeleteThis is very helpful.
ReplyDeleteIt's so so much helpful for me. Because I am not good at history.l don't like history.
ReplyDeleteIt is very beauteyful
ReplyDeleteHelpful
ReplyDeleteVery nice
ReplyDeleteVery nice
ReplyDeleteSo fantastic
ReplyDelete