Class 12th bengoli suggestions chapter shikar (SAQ) | শিকার কবিতার গুরুত্ব পূর্ণ শর্ট প্রশ্ন উত্তর (SAQ) WBCHSE - Psycho Principal

Fresh Topics

Tuesday, 4 October 2022

Class 12th bengoli suggestions chapter shikar (SAQ) | শিকার কবিতার গুরুত্ব পূর্ণ শর্ট প্রশ্ন উত্তর (SAQ) WBCHSE

 

প্রশ্ন উত্তর
শিকার কবিতা


মহুয়ার দেশ কবিতার প্রশ্ন উত্তর পড়তে নিচের লিঙ্ক এ ক্লিক করো

👉(মহুয়ার দেশ প্রশ্ন উত্তর)

১.‘ শিকার ’ কবিতায় ভােরবেলার আকাশ ও গাছপালা দেখে কবির অথবা , শিশিরভেজা সকালে বন ও আকাশের রূপ কেমন ? কেমন মনে হয়েছিল ? 
উত্তরঃ ‘ শিকার ' কবিতায় কবির ভােরের আকাশকে ঘাসফড়িঙের দেহের মতাে কোমল নীল এবং গাছপালাকে টিয়ার পালকের মতাে সবুজ মনে হয়েছিল ।


২ .ঘাসফড়িঙের দেহের মতাে কোমল নীল ... ” — কে বা কী ‘ ঘাসফড়িঙের দেহের মতাে কোমল নীল ’ ?
অথবা
, কার সঙ্গে কবি এ তুলনা করেছেন ?
উত্তরঃ জীবনানন্দ দাশের ‘ শিকার কবিতায় ভােরবেলার আকাশের রং ‘ ঘাসফড়িঙের দেহের মতাে কোমল নীল ।


৩. শিকার ’ কবিতায় প্রদত্ত দুটি গাছের নাম লেখাে ।
উত্তরঃ ‘ শিকার ’ কবিতায় উল্লিখিত গাছগুলির অন্যতম হল পেয়ারা ও নােনার গাছ ।


৪. “ চারিদিকে পেয়ারা ও নােনার গাছ ” —পেয়ারা ও নােনার গাছের রংকে কবি কার সঙ্গে তুলনা করেছেন ?
উত্তরঃ পেয়ারা ও নােনার গাছের রংকে কবি টিয়াপাখির পালকের সবুজ রঙের সঙ্গে তুলনা করেছেন ।


৫. ‘ শিকার ’ কবিতায় “ .টিয়ার পালকের মতাে সবুজ । ” কী ?
উত্তরঃ  জীবনানন্দ দাশের ‘ শিকার ’ কবিতায় ভােরবেলায় চারদিকের পেয়ারা ও নােনার গাছকে টিয়ার পালকের মতাে সবুজ লেগেছে ।


৬.“ একটি তারা এখনও আকাশে রয়েছে ... ” কবি কোন্ তারার কথা বলেছেন ?
উত্তরঃ ভােরের আকাশে একটি তারা বলতে কবি শুকতারার কথা বলতে চেয়েছেন ।


৭. “ একটি তারা এখনও আকাশে রয়েছে ... ” — এখনও ’ বলতে কোন্ সময়কে বােঝানাে হয়েছে ?
উত্তরঃ  জীবনানন্দ দাশের ‘ শিকার ’ কবিতায় ‘ এখনও ’ বলতে রাতশেষের ভােরকে বােঝানাে হয়েছে ।


৮. “ একটি তারা এখনও আকাশে রয়েছে । ” — আকাশের তারাকে কেন্দ্র করে কবির কোন্ ভাবনা এখানে প্রকাশিত হয়েছে ?
উত্তরঃ ভােরের আকাশে তারাটির উপস্থিতিকে কবি তুলনা করেছেন পাড়াগাঁর বাসরঘরের গােধূলিমদির মেয়েটির সঙ্গে কিংবা হাজার বছর আগের মিশরের মানুষীর বুকের থেকে কবির নীল মদের গেলাসে রাখা মুক্তার সঙ্গে ।


৯. “ একটি তারা এখনও আকাশে রয়েছে : ” — তারাটিকে কবি কীসের সঙ্গে তুলনা করেছেন ?
উত্তরঃ  কবি জীবনানন্দ দাশ ‘ শিকার ’ কবিতায় রাতজাগা তারাটিকে প্রথমে পাড়াগাঁর বাসরঘরের সবথেকে গােধূলিমদির মেয়েটির সঙ্গে এবং পরে মিশরের মানুষীর বুকের মুক্তার সঙ্গে তুলনা করেছেন ।


১০. “ তেমনি একটি তারা আকাশে জ্বলছে এখনও ” —তারাটিকে দেখে কবির কী কী মনে হয়েছে ?
উত্তরঃ  তারাটিকে দেখে কবির পাড়াগাঁয়ের বাসরঘরের লজ্জাশীলা মেয়ে এবং মিশরের মানুষীর বুকের থেকে নীল মদের গেলাসে রাখা মুক্তো মনে হয়েছিল ।


১১. “ ... গােধূলিমদির মেয়েটির মতাে ... ” কার / কীসের কথা বলা হয়েছে ?
উত্তরঃ  জীবনানন্দ দাশের ‘ শিকার ’ কবিতায় ‘ গােধূলিমদির মেয়েটির মতাে ’ ভােরের আকাশে জেগে থাকা তারার কথা বলা হয়েছে ।


১২. “ ... গােধূলিমদির মেয়েটির মতাে ; ” — মেয়েটিকে কোথায় দেখতে পাওয়া যায় ?
উত্তরঃ  গােধূলিমদির মেয়েটিকে পাড়াগাঁর বাসরঘরে দেখতে পাওয়া যায় ।


১৩. জীবনানন্দ দাশের ‘ শিকার ’ কবিতায় কবে মিশরের 

মানুষীর সঙ্গে কবির সাক্ষাৎ হয়েছিল ?
উত্তরঃ জীবনানন্দ দাশের ‘ শিকার ’ কবিতায় মিশরের মানুষীর সঙ্গে কবির সাক্ষাৎ হয়েছিল হাজার হাজার বছর আগের এক রাতে । .


১৪." ..তার বুকের থেকে যে মুক .. " — কার বুকের মুক্তার কথা বলা হয়েছে ?
উত্তরঃ  জীবনানন্দ দাশের ‘ শিকার ’ কবিতা মিশরের মানুশীর বুকে মুঞ্চার কথা এনে না হয়েছে ।


১১. " ..তার বুকের থেকে যে মুকা । " ~ -মুকাটি কোথায় রেখেছিল ?
উত্তরঃ জীবনানন্দ দাশের ‘ শিকারি ’ কবিতায় মিশরের মানুশী তার বুকের মুকাটি কবির নীল মদের গেলাসে রেখেছিল ।


'১৬ .“ .আমার নীল মদের গেলাসে রেখেছিল ... " কবে , কখন , কী রেখেছি ?
উত্তরঃ জীবনানন্দ দাশের ‘ শিকার ’ কবিতায় হাজার হাজার বছর আগের এক রাতে মিশরের মানুষী তার বুকের মুক্তা কবির নীল মদের গেলাসে রেখেছিল ।


১৭.হাজার হাজার বছর আগে এক রাতে কী হয়েছিল ?
উত্তরঃ  হাজার হাজার বছর আগে এক রাতে মিশরের মানুষী তার বুকের থেকে এক মুক্তা তুলে কবির নীল মদের গেলাসে রেখেছিল ।


১৮. , “ তেমনি একটি তারা আকাশে জলছে এখনও । ” — কী বােঝাতে ‘ তেমনি ’ শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে ?
উত্তরঃ ‘ শিকার ’ কবিতায় মিশরের মানুষীর বুকের থেকে কবির নীল মদের গেলাসে রাখা মুক্তাকে বােঝাতে তেমনি ’ শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে ।


১৯. “ তেমনি একটি তারা আকাশে জ্বলেছে এখনও । ” — ‘ এখনও ’ বলতে কী বােঝানাে হয়েছে ?
উত্তরঃ ভােরের আলাে ফুটলে অন্য তারাগুলি অস্ত গেলেও আকাশে একটা তারা জ্বলতে থাকে । তাই কবি ‘ এখনও ’ শব্দের মাধ্যমে বলেছেন যে , ভাের হওয়া সত্ত্বেও একটি তারা আকাশে জ্বলছে ।


২০. ‘ শিকার ’ কবিতায় দেশােয়ালিরা সারারাত মাঠে আগুন জ্বালে কেন ? অথবা , “ মাঠে আগুন জ্বেলেছে ” —কেন মাঠে আগুন জ্বেলেছে ? -
উত্তরঃ  জীবনানন্দ দাশের ‘ শিকার ’ কবিতায় দেশােয়ালিরা সারারাত মাঠে আগুন জ্বালে শীতের রাতে শরীরকে গরম রাখার জন্য ।


২১. , হিমের রাতে শরীর উম্ রাখার জন্য কী করা হচ্ছে ?
উত্তরঃ  হিমের রাতে শরীর উম্ অর্থাৎ গরম রাখার জন্য সারারাত ধরে মাঠে দেশােয়ালিরা আগুন জ্বেলেছে ।


২২.“ ... সারারাত মাঠে আগুন জ্বেলেছে ” —সেই আগুন দেখতে কেমন ?
উত্তরঃ  জীবনানন্দ দাশের ‘ শিকার ’ কবিতায় সারারাত মাঠে যে আগুন জ্বলেছিল তা দেখতে ছিল মােরগফুলের মতাে লাল ।


২৩. ..সারারাত মাঠে আগুন জ্বেলেছে ” —সেই আগুনে ভরে কী পুড়ছিল ?
উত্তরঃ  জীবনানন্দ দাশের ‘ শিকার ’ কবিতায় সারারাত মাঠে যে আগুন জ্বালা হয় তাতে ভােরবেলায় শুকনাে অশ্বথপাতা পুড়ছিল ।


২৪. , “ মােরগফুলের মতাে .. ” — মােরগফুলের সঙ্গে কীসের তুলনা করা হয়েছে ?
উত্তরঃ  জীবনানন্দ দাশের ' শিকার ’ কবিতায় মােরগফুলের সঙ্গে সারারাত জ্বলতে থাকা লাল আগুনের তুলনা করা হয়েছে । |


২৫. , “ মােরগফুলের মতাে লাল আগুন ” —কখন , কেন এই আগুন দেশােয়ালিরা জ্বালিয়েছিল ?
উত্তরঃ  ‘ শিকার ' কবিতায় দেশােয়ালি মানুষেরা হিমের রাতে নিজেদের শরীর গরম রাখার জন্য মােরগফুলের মতো লাল আগুন জ্বালিয়েছিল ।


২৬. ‘ মােরগফুলের মতাে লাল আগুন ’ — এখানে কোন আগুনের কথা বলা হয়েছে ?
উত্তরঃ  এখানে হিমের রাতে শরীর গরম রাখার জন্য দেশােয়ালিদের জ্বালানো লাল আগুনের কথা বলা হয়েছে ।


২৭. “ শুকনাে অশ্বথপাতা দুমড়ে এখনও আগুন জ্বলছে তাদের ; ” — কারা , কখন , কেন আগুন জ্বালিয়েছে ?


২৮. “ এখনও আগুন জ্বলেছে তাদেরকেন এখনও ’ আগুন জ্বলছে ?
উত্তরঃ দেশােয়ালিরা শরীরকে গরম রাখার জন্য রাতে যে আগুন জ্বালিয়েছিল , দোমড়ানাে , শুকনাে অশ্বখপাতা সেই আগুনকে ভাের অবধি জ্বালিয়ে রেখেছিল ।


২৯. “ সূর্যের আলােয় তার রং . ” কীসের কথা বলা হয়েছে ? উত্তরঃ  জীবনানন্দ দাশের ‘ শিকার ’ কবিতায় তার রং ’ বলতে দেশােয়ালিদের জ্বালানাে আগুনের রঙের কথা বলা হয়েছে ।


৩০.“ সূর্যের আলােয় তার রং .. ” — তার রং এখন কেমন ?
অথবা , সূর্যের আলােয় দেশােয়ালিদের জ্বালা আগুনের রং কেমন ছিল ?
উত্তরঃ  জীবনানন্দ দাশের ‘ শিকার ’ কবিতায় দেশােয়ালিদের জ্বালানাে আগুনের রং সূর্যের আলােয় রােগা শালিকের ইচ্ছার মতাে বিবর্ণ ছিল ।


৩১.“ সূর্যের আলােয় তার রং ... ” — তার রং আগে কেমন ছিল ?
উত্তরঃ   জীবনানন্দ দাশের ‘ শিকার ’ কবিতায় সূর্যের আলােয় বিবর্ণ আগুনের রং আগে ছিল কুকুমের মতাে এবং মােরগফুলের মতাে লাল ।


৩৯. ‘ শিকার’কবিতায় উল্লিখিত কুঙ্কুম কী ?
উত্তরঃ  কুঙ্কুম হল মেয়েদের কপালে টিপ পরার এক প্রসাধনসামগ্রী ।


৩০., “ ..কুকুমের মতাে নেই আর ; ” — কেন / কী কারণে কুকুমের মতাে নেই আর ?
উত্তরঃ  জীবনানন্দ দাশের ‘ শিকার ’ কবিতায় সারারাত জ্বলতে থাকা আগুনের রং সুর্যের আলাের কারণে আর কুকুমের মতাে নেই ।


৩৪ .“ কুল্লুমের মতাে নেই আর ; " কীসের মতাে হয়ে গেছে ?
উত্তরঃ আগুনের রং রােগা শালিকের বিবর্ণ ইচ্ছার মতাে হয়ে গেছে ।


৩৫. “ ..শালিকের হৃদয়ের বিবর্ণ ইচ্ছার মতাে । ” কীসের কথা বলা হয়েছে ?
উত্তরঃ  জীবনানন্দ দাশের ‘ শিকার ’ কবিতায় সারারাত জ্বলতে থাকা আগুনের রং সূর্যের আলােয় ম্লান হয়ে যে বিবর্ণ রূপ ধারণ করেছে , তার কথাই এখানে বলা হয়েছে ।


৩৬. “ সকালের আলােয় টলমল শিশিরে ... ঝিলমিল করছে । ” কী , কীভাবে ঝিলমিল করছে ?
উত্তরঃ  জীবনানন্দ দাশের ‘ শিকার ’ কবিতায় সকালের আলােয় টলমল শিশিরে চারদিকের বন ও আকাশ ময়ূরের সবুজ - নীল ডানার মতাে ঝিলমিল করছে ।


৩৭. শিকার’কবিতায় সকালের আলােয় বন ও আকাশকে দেখে কবির কী মনে হয়েছিল ?
উত্তরঃ  ‘ শিকার ’ কবিতায় সকালের আলােয় টলমল করা শিশিরে , বন ও আকাশকে দেখে কবির মনে হয়েছিল তা ময়ূরের সবুজ নীল ডানার মতাে ঝিলমিল করছে ।


৩৮. ‘ শিকার’কবিতায় ময়ূরের ডানার রং কী ছিল ?
উত্তরঃ  জীবনানন্দ দাশের ‘ শিকার ’ কবিতায় ময়ূরের ডানার রং ছিল সবুজ - নীল ।


৩৯. “ সবুজ নীল ডানার মতাে .. ” — তুলনাটি উল্লেখ করাে ।
উত্তরঃ জীবনানন্দ দাশের ‘ শিকার ’ কবিতায় সকালের আলােয় টলমল করা শিশিরে চারদিকের বন ও আকাশকে ময়ূরের সবুজ - নীল ডানার মতাে ঝিলমিল করতে দেখেছেন কবি ।



1. " নাগরিক লালসায় নীল অমলিন প্রকৃতির মাঝে পবিত্র জীবন হারিয়ে যায় হিমশীতল মৃত্যুর আঁধারে" - শিকার কবিতার আলোকে এই লাইনটি কতখানি যুক্তিযুক্ত তা আলোচনা করো।


    মগ্নচৈতন্য বাদী কবি জীবনানন্দ দাশ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী মানুষের জীবনের নিষ্ঠুরতাকে শিকার কবিতায় তুলে ধরেছেন। কবিতাটি রূপকের আড়ালে মানুষকে নির্দেশ করেছে বারবার। কবিতার পটভূমি টিকে শান্ত মলিন করে তোলার জন্য তিনি সবুজ ভোরকে অবলম্বন করেছেন,। যেখানে ঘাসফড়িঙের রং, টিয়ার সবুজ পালক, আর গাছের কচি পাতা রূপকের মত প্রকৃতিকে শান্ত করেছে।

    সকালবেলার আলো তে যখন চারিদিকে শান্ত ঠিক তখন হিংস্র বন্যের হাত থেকে প্রাণ বাঁচালো এক হরিণ রাতের সব ক্লান্তিকে দূর করার জন্য নদীতে নামে। সে চেয়েছিল জীবনের এক দন্ড শান্তি আর বেঁচে থাকার জন্য একটুখানি নিরাপদ পৃথিবী ।

    ভোর বেলায় হরিণটি বাতাবি লেবুর মত কচি ঘাস ছিড়ে খাচ্ছিল, তারপর শরীরকে একটু আবেশ দেওয়ার জন্য সে নদীর তীক্ষ্ণ শীতল ঢেউয়ে নামে। হরিণটি যখন নদীর তীক্ষ্ণ শীতল ঢেউয়ে স্নানে মগ্ন ঠিক তখন কবি শুনতে পান বন্দুকের আওয়াজ। নিভে যাই হরিণের জীবনের সমস্ত উল্লাস, স্নিগ্ধ নদী হয়ে যায় মচকা ফুলের মতো ।

    কবি জীবনানন্দ নাগরিক লালসা কে কোনদিন বড় করে দেখেননি। তার কাছে হরিণটি এক জীবন্ত প্রকৃতি, কিন্তু নাগরিক টেরিকাটা মানুষের লালসার কাছে সে শিশিরভেজা গল্প আর সিগারেটের ধোঁয়ার মাঝে ভোগ্যপণ্যে পরিণত হয়েছে।


   কবিতায় সত্যি যেন প্রকৃতি নাগরিক সমাজের কাছে এক পরাধীন বস্তু। মানুষের লালসার কাছে প্রকৃতি মূল্যহীন, যেকোনো সময় তাকে জীবন দিতে হয় সভ্যের কাছে। প্রশ্নে উদ্ধৃত বক্তব্যটি আমরা শিকার কবিতার একটি স্তবক হিসেবেই ধরতে পারি, কারণ কবিতার বিষয়ের সঙ্গে আলোচ্য মন্তব্য টি যথার্থভাবে তাৎপর্যপূর্ণ।


2. " রোগা শালিকের হৃদয়ের বিবর্ণ ইচ্ছার মতো" -  উপমাটি কোন প্রসঙ্গে বলা হয়েছে ? কবিতার নিরিখে উপমাটি কতখানি গুরুত্বপূর্ণ তা লেখ ।


    চিত্ররূপময় কবি জীবনানন্দ দাশ শিকার কবিতায় শরীর গরম রাখার জন্য জালানো আগুনের প্রসঙ্গে উক্ত উপমাটি ব্যবহার করেছেন। প্রখর রুদ্র দেবের তেজে টকটকে লাল আগুন ও ফ্যাকাসে হয়ে পড়ে, এই কথা বোঝাতে গিয়ে কবি রোগা শালিকের কথা উল্লেখ করেছেন।

    যখন ভোরের আলোয় সমস্ত শান্ত প্রকৃতি চারিদিক ঝলমল করে ওঠে তখন শরীর গরম রাখার গনগনে আগুন ধীরে ধীরে ফ্যাকাশে হয়ে যায়, ঠিক যেন আগুন তার জীবনের সমস্ত রং কে হারিয়ে ফেলে। যে আগুন সমস্ত কিছুকে এক মুহূর্তে বিলীন করতে পারে তার জীবনও যে অন্য কোন তেজের কাছে বিলীন হতে পারে কবি এই কথায় বোঝাতে চেয়েছেন।

    হরিণের মাংস কে পোড়ানো যার উদ্দেশ্য সেই আগুন কোন এক রোগা শালিকের সমস্ত শেষ হয়ে যাওয়া ভালোবাসার মতো বিবর্ণ হয়ে গেছে শিকার কবিতায়। কবি শান্ত প্রকৃতিকে আরও শান্ত করতে প্রখর আগুন কে নিস্তেজ করে দিয়েছেন রুদ্রদেব কে দিয়ে।


     কবিতায় চির সবুজ প্রকৃতির প্রাণ হরিণকে পোড়ানোর জন্য যে আগুন তাকে প্রকৃতি রক্ষার জন্য খানিক নিস্তেজ করে তুলেছেন কবি। কিন্তু কবিতায় তাকে আবার জ্বলতে হয়েছে নাগরিক স্বার্থের কারণে। প্রকৃতিপ্রেমী কবি শিকার কবিতায় শিকার ঘটনাটিকে আকর্ষণীয় করে তুলতে এই বৈপরীত্য উপমা ব্যবহার করেছেন।



3. " আগুন জ্বলল আবার ..."  -  আবার শব্দটির প্রয়োগ এর তাৎপর্য কি ? দ্বিতীয়বার আগুন জ্বলার কারণ কি ছিল ?

 ৩+২ = ৫


     চিত্ররূপময় কবি জীবনানন্দ দাশের শিকার কবিতা তে আমরা আগুন জ্বলার ঘটনাকে দুইবার প্রত্যক্ষ করেছি। কবিতায় প্রথমবার আগুন জ্বলেছিল দেশোয়ালি দের শরীরকে উষ্ণ রাখার জন্য। রাতের এই গনগনে আগুন ভোর হওয়ার সাথে সাথে রুদ্র দেবের তাদের কাছে নিস্তেজ হয়ে পড়ে ও কিছুটা ফ্যাকাশে রূপ ধারণ করে। 

    দিনের আলো শুরু হওয়ার কারণে কবির ধারণা ছিল হয়তো এই আগুন টি আর এখন কোন প্রয়োজন নেই, কারণ শীতের শীতলতা কে কাটিয়ে রোদের উষ্ণতা মানুষের শরীরকে উষ্ণ রাখার জন্য যথেষ্ট। কিন্তু অন্যদিকে প্রকৃতির জীবন্ত প্রতীক সারারাত চিতাবাঘের হাত থেকে নিজের জীবনকে বাঁচিয়ে যে হরিণটি সদ্য শীতলতার জন্য নদীর জলে নেমেছে তাকে নির্মমভাবে বন্দুকের গুলি দিয়ে হত্যা করা হয়েছে।

    সভ্যতার বর্বর লোভ শান্ত প্রকৃতিকে হত্যা করতে দ্বিধাবোধ করেনি। তাই রাতের জালানো আগুন ফ্যাকাসে হয়ে গেলেও সেই মৃত হরিণের লাল মাংস কে পড়ানোর জন্য দ্বিতীয়বার কবিতায় থাকে জ্বলে উঠতে হয়েছে। এই কারণে কবি কবিতায় আগুন জ্বালানোর জন্য আবার শব্দটি ব্যবহার করেছেন।


 কবিতায় দ্বিতীয় বার আগুন জ্বলেছিল সভ্যতার লোভী মানুষের স্বার্থপরতার দিকটিকে উন্মোচন করার জন্য । নাগরিক লালসা যেভাবে প্রকৃতিকে ধ্বংস করে তার নিসংসতা কে দেখানোর জন্য কবি শিকার কবিতায় দ্বিতীয় বার আগুন জ্বালিয়ে ছিলেন।



4.শিকার কবিতায় যে দুটি ভোরের চিত্র কবি বর্ণনা করেছে তার তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো।



     ভোর কথাটি আর ভোর বিষয়টি আমাদের কাছে এক শান্ত ভাব বিরাজ করে। প্রকৃতির অপার সৃষ্টি রাত দিন এর দুই মিলনক্ষণ ভোর ও গোধূলি। এই দুটি সময় যেন পৃথিবীতে এক অপার শান্তভাব বিরাজ করার জন্য সৃষ্টি হয়েছে। জীবনানন্দ দাশের শিকার কবিতাটি তে মানুষের নিশংসতা উন্মোচন করে দেখানোর জন্য কবিতাটিতে তিনি ভোরবেলার প্রেক্ষাপট অবলম্বন করেছেন। এই কারণে কবিতাটিতে ভোর শব্দটি গভীর তাৎপর্যপূর্ণ।

    কবিতাটিতে আমরা এই ভোর বেলার দুটি রূপ দেখতে পায় - প্রথম রূপটি তে ধরা পড়েছে প্রকৃতির এক মলিন রূপ, যেখানে কবি বর্ণনা করেছেন প্রকৃতি যেন ঘাসফড়িঙের দেহের মতো কোমল নীল, আর চারিদিকের পেয়ারা ও নোনা গাছের রং যেন টিয়ার পালকের মতো সবুজ। এরকম শান্ত পরিবেশে যে বিপরীত কোন ভাবনা মনে আসতে পারে তা তিনি ভাবেন নি, এই কারণে দেশ ওয়ালিদের জালানো আগুন কেউ তিনি নিস্তেজ রূপে তুলে ধরেছেন।


    কবিতায় ভোর শব্দটির দ্বিতীয় তাৎপর্য টি হলো প্রথম তাৎপর্যের বিপরীত রূপ । যেখানে সমস্ত রাত হিংস্র বাঘিনীর হাত থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখা একটি হরিণ তার জীবনের নতুন আনন্দ নিয়ে নদীর তীক্ষ্ণ জলে স্নান করতে নামে। ঠিক তখনই এই শান্ত প্রকৃতির বুকে স্বার্থপর লোভী এক বন্দুকের আওয়াজ যেন সমস্ত প্রকৃতিকে চেতনাহীন করে তুলেছে।


    কবিতায় ভোর শব্দটির দুটি চিত্রকল্প কবি কবিতার মধ্যে বর্ণনা করেছেন। প্রথম বর্ণনাটি দ্বিতীয় বর্ণনার প্রতিরূপ, যেখানে সুন্দর সবুজ প্রকৃতি কে লালসার কাছে রক্তের রং লাল হয়ে যেতে বেশি সময় প্রয়োজন হয়নি। তাই কবিতার মধ্যে এই ভোর শব্দটি লোভী মানুষের লালোসার সাক্ষী।














No comments:

Post a Comment