◼️কবি পরিচিতি;
১৯৬১ সালের ৭মে কলকাতায় জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়িতে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জন্মগ্রহণ করেন। তিনি নাটক, কবিতা, গান, গল্প, প্রবন্ধ, উপন্যাস— সবই লিখেছেন। তিনি ছবিও আঁকতেন। তাঁর প্রথম প্রকাশিত কবিতা হল ‘হিন্দুমেলার উপহার'। গীতাঞ্জলি গ্রন্থের ইংরেজি অনুবাদ Song Offerings-এর জন্য ১৯১৩ সালে রবীন্দ্রনাথ নোবেল পুরস্কার পান | আমাদের জাতীয় সংগীত ‘জনগণমন' তাঁরই রচনা। তাঁর কয়েকটি উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ হল— কথা ও কাহিনী, মানসী, সোনার তরী, বলাকা ইত্যাদি। ১৯৪১ সালের ৭ আগস্ট তাঁর মৃত্যু হয় ।
◼️নামকরণ;
‘আকাশভরা সূর্য-তারা' গানটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘প্রকৃতি’ পর্যায়ের একটি গান। গানের ক্ষেত্রে সাধারণত গানের প্রথম পঙ্ক্তি ধরেই গানের নামকরণ হয়। এই গানটির ক্ষেত্রেও সেই একই পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়েছে। আকাশে, বাতাসে, জলে, মাটিতে—সর্বত্র যেভাবে প্রাণের সাড়া লুকিয়ে থাকে, তা কবিকে মুগ্ধ করেছে। তিনি আশ্চর্য হয়ে ভেবেছেন, এই যে আকাশে এত তারা রয়েছে, সূর্য রয়েছে, তার মাঝখানে এক সাধারণ মানুষমাত্র হয়ে তিনি কীভাবে স্থান পেলেন। তাঁর এই ভাবনাই ছড়িয়ে রয়েছে গোটা গানটি জুড়ে। তাই গানটির এই ‘আকাশভরা সূর্য-তারা' নামকরণটি সার্থক।
◼️সারমর্ম;
‘আকাশভরা সূর্য-তারা' গানটিতে বিশাল প্রকৃতির এই রহস্য দেখে কবি মুগ্ধ হয়েছেন, অবাকও হয়েছেন। বিশ্বপ্রকৃতির মধ্যে স্থান পেয়ে তিনি আনন্দিত। জোয়ার- ভাটা যেভাবে প্রকৃতির নিয়মে বাঁধা রয়েছে, তা দেখে তিনি আশ্চর্য হয়েছেন। বনের পথে যেতে যেতে পায়ের তলায় ঘাসের নরম ছোঁয়া, ফুলের গন্ধ তাঁর মনকে আনন্দিত করে তুলেছে | তাঁর দেখার জগৎ, শোনার জগৎ সবই তাঁর কাছে আনন্দময় হয়ে উঠেছে। তাই তাঁর প্রাণে জেগে উঠেছে গান।
◼️নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর দাও:
১. কবি কীসের টান নাড়িতে অনুভব করেন ?
উত্তর: কালের নিয়মে যেভাবে জোয়ার ও ভাটা হয়, প্রকৃতি আপন নিয়মে এগিয়ে চলে, কবি সেই টান নিজের নাড়িতে অনুভব করেন।
২. কবির মন কীসে মেতে উঠেছে?
উত্তর: বনের ঘাসে পা ফেলে পথ চলতে চলতে ফুলের গন্ধে কবির মন মেতে উঠেছে।
৩. আকাশে কী রয়েছে?
উত্তর: আকাশ ভরে সূর্য এবং তারা রয়েছে |
৪. কবি কী সন্ধান করেছেন ?
উত্তর : কবি জানার মাঝে অজানাকে সন্ধান করেছেন।
৫. কবি কোথায় পা ফেলেছেন ?
উত্তর: কবি বনে যাওয়ার পথে ঘাসের ওপরে পা ফেলেছেন।
৬. কবির চারপাশে কী ছড়িয়ে আছে?
উত্তর: কবির চারপাশে আনন্দের দান ছড়িয়ে আছে।
৭. কবির গান কেন জেগে ওঠে?
উত্তর: কবির গান বিস্ময়ে জেগে ওঠে।
৮. ‘আকাশভরা সূর্য-তারা' গানটি কার লেখা ?
উত্তর : ‘আকাশভরা সূর্য-তারা' গানটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা।
◼️নীচের সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যাভিত্তিক প্রশ্নগুলির উত্তর দাও:
১. কবির গান কীভাবে জেগে উঠেছে ?
উত্তর: এই বিশ্বপ্রকৃতির বিশালতা দেখে কবি যেমন অবাক, তেমনই মুগ্ধ। তিনি আশ্চর্য হয়ে যান যে, কীভাবে এই আকাশভরা সূর্য, তারা, এই বিশাল পৃথিবীর মধ্যে তিনি স্থান পেয়েছেন। অবাক হয়ে ভাবেন, এই পৃথিবীতে জোয়ার-ভাটা থেকে শুরু করে সবই কেমন নিয়মের শিকলে বাঁধা। আর নিজের নাড়িতে যেন তিনি সেই টানই অনুভব করেন। ঘাসের ছোঁয়ায়, ফুলের গন্ধে তাঁর মন ভরে ওঠে।
তিনি ভাবেন, এত আনন্দের দান প্রকৃতি কী সুন্দরভাবে ছড়িয়ে রেখেছে। চোখের দেখায়, কানের শোনায়, জানার মধ্যে অজানাকে সন্ধান করার মধ্যে তাঁর এই বিস্ময়টিই ফুটে ওঠে। সেই বিস্ময় থেকেই তাঁর গান জেগে উঠেছে।
No comments:
Post a Comment