"রাস্তায় ক্রিকেট খেলা" প্রশ্ন উত্তর পড়তে নিচের লিংকে ক্লিক করো
▦ লেখক পরিচিতি :
লেখক অজিতকৃষ্ণ বসু সংগীত, সাহিত্য ও জাদুবিদ্যা এই তিন ক্ষেত্রেই পারদর্শী ছিলেন। ১৯২২ সালে তাঁর জন্ম হয়। তিনি অ.কৃ.ব. নামে পরিচিত। সাহিত্য ক্ষেত্রে বিশেষত ব্যঙ্গ ও কৌতুকরসের কবিতার জন্য তিনি প্রসিদ্ধ ছিলেন। শনিবারের চিঠি'তে তাঁর লেখা 'পাগল' গারদের কবিতা বা শঙ্করস উইকলি'তে মুদ্রিত তাঁর বহু কৌতুক রচনা তাঁকে স্মরণীয় করে রেখেছে। ইংরেজি ভাষায় তাঁর লেখা উদ্ভট, খাপছাড়া কবিতাগুলি ‘Lunarics' নামে পরিচিত। ছোটোদের জন্য তাঁর লেখা 'খামখেয়ালি ছড়া', 'আজব ছড়া' ‘ছড়ার মিছিল' প্রভৃতি বই সুপরিচিত। নিজের সংগীত জীবনের নানা কথা ও কাহিনি তিনি বর্ণনা করেছেন 'ওস্তাদ কাহিনি' গ্রন্থে। মঞ্চে কখনও জাদু প্রদর্শন না করলেও তাঁর বন্ধু জাদুসম্রাট পি. সি. সরকারের সঙ্গে সমান্তরালভাবে দীর্ঘদিন তিনি জাদুচর্চা করেছেন। জাদুকরদের বিচিত্র জীবন ও নানা ঘটনা নিয়ে তাঁর জাদুকাহিনি' বইটি ১৯৪৬ সালে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে 'নরসিংহ দাস পুরস্কার' পায়। ১৯৯৩ সালে তাঁর জীবনাবসান হয়।
▦ রচনা পরিচয় :
বিশ্বের দুই প্রান্তের দুই জাদুকর। একজন বিখ্যাত এবং একজন অখ্যাত। দুজনেই হাওয়া থেকে টাকা বার করার খেলা দেখান। এই খেলা দেখাতে গিয়ে একদিন বিপদে পড়েন ও পরে মুক্তি পান। এই দুই জাদুকরের খেলা দেখানোর কথা এখানে বলা হয়েছে। তাই রচনাটির নাম 'জাদুকাহিনি' সঠিক।
▦ সারসংক্ষেপ :
বিখ্যাত জাদুকর ডেভান্ট তিনি, হাতের কারসাজিতে আকাশ থেকে টাকা বার করতে পারেন। সেই খেলা দেখিয়েই তিনি একদিন বিপদে পড়েন। এক আধপাগল লোক তাকে পাকড়াও করে হাওয়া থেকে টাকা বার করে তার টুপি ভরে দেবার জন্য। এই পরিস্থিতি থেকে ডেভান্ট কোনোক্রমে মুক্তি পান। বাংলাদেশের এক অখ্যাত জাদুকর চাঁদমিয়া। তিনি লেখকদের স্কুলে খেলা দেখিয়ে সাকুল্যে দশ টাকা পেয়েছিলেন। তিনি হাওয়ার থেকে টাকা বার করে খেলা দেখিয়েছিলেন। তাকে যখন লেখকরা প্রশ্ন করে যে কেন তিনি তাঁর নিজের জন্য হাওয়া থেকে টাকা বার করে বড়োলোক হচ্ছেন না, তখন তিনি বলেছিলেন যে হাওয়ার টাকা নিতে নেই, তা হাওয়াতেই ফিরিয়ে দিতে হয়। নইলে আর জাদু কাজ করে না।
⬛অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর : প্রতিটা প্রশ্নের মান -1
১. লেখক কোন্ স্কুলে পড়তেন?
উঃ। লেখক ঢাকা কলেজিয়েট স্কুলে পড়তেন।
২. সেখানে কে জাদুর খেলা দেখিয়েছিলেন?
উঃ। সেখানে চাঁদ মিয়া জাদুর খেলা দেখিয়েছিলেন।
৩. ডেভান্ট কোথাকার লোক ছিলেন?
উঃ। ডেভান্ট ইংল্যান্ডের লোক ছিলেন।
৪. ডেভান্ট কোন্ সময় বাড়ি ফিরছিলেন?
উঃ। তিনি সন্ধ্যার সময় বাড়ি ফিরছিলেন।
৫. ডেভান্টের কাছে মোট কত শিলিং ছিল?
উঃ। ডেভান্টের কাছে মোট ছয় শিলিং ছিল।
৬. চাঁদ মিয়া সাকুল্যে কত টাকা দক্ষিণা পেয়েছিলেন?
উঃ। চাঁদ মিয়া সাকুল্যে দশ টাকা দক্ষিণা পেরেছিলেন।
৭. ডেভান্টের হাওয়া থেকে টাকা ধরার খেলাটির নাম কী ছিল ?
উঃ। এই খেলাটির নাম ছিল কৃপণের স্বপ্ন (Miser's Dream) অথবা হাওয়াই টাকশাল।
৮. ডেভান্ট লোকটিকে বোঝাতে গেলে লোকটি ডেভান্টকে কী বলেছিল?
উঃ। লোকটি খেপে উঠে ডেভান্টকে বেয়াড়া, বে-আক্কেল, বে-দরদী লোক বলেছিল।
৯. লেখক চাঁদ মিয়াকে দেখে কী ভেবেছিলেন?
উঃ। লেখক ভেবেছিলেন যে এভাবে হাওয়া থেকে খুশিমতো টাকা ধরার বিদ্যা জানা থাকলে খুবই ভালো হতো।
১০. জাদুকরের দক্ষিণার জন্য কীভাবে লেখক টাকা সংগ্রহ করেছিলেন?
উঃ। লেখক ও তাঁর সহপাঠী ছাত্ররা এক আনা করে টিকিট কিনেছিলেন এবং প্রধান শিক্ষক মহাশর কিছু চাঁদা দিয়েছিলেন। এভাবেই জাদুকরের দক্ষিণার টাকা সংগ্রহ করা হয়েছিল।
⬛ সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর : প্রতিটা প্রশ্নের মান -2/3
১. ‘ডেভান্ট হাঁফ ছেড়ে বাঁচলেন – কোন বিপদ থেকে ডেভান্ট বেঁচেছিলেন তার বিবরণ দাও।
উঃ। ইংল্যান্ডের বিখ্যাত জাদুকর ডেভান্ট সন্ধেবেলা এক নির্জন পথ দিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। এমন সময় একজন ধূর্ত লোক তাকে পাকড়াও করে দাবি করে তার টুপিটা পয়সা দিয়ে ভরিয়ে দেবার জন্য। ডেভান্ট তাঁকে বোঝাতেও পারে না যে এটি একটি জাদুর খেলা, যেটি নির্ভর করে হাতের গুপ্তস্থানে টাকা লুকিয়ে ও বের করার কৌশলের ওপর। ডেভান্টের কাছে মাত্র ছয় শিলিং ছিল, তিনি হাওয়া থেকে চার শিলিং ধরে লোকটিকে দিয়েছিলেন এমন সময় বরাতজোরে চার-পাঁচজন লোক যারা এই মাথা খারাপ লোকটিকে খুঁজতে বেরিয়েছিল। তার হাজির হওয়ায় সে যাত্রায় ডেভান্ট বেঁচে গেল।
২. টাকার কথা বলাতে চাঁদ মিয়া কী বলেছিলেন?
উঃ টাকার কথা বলাতে জাদুকর চাঁদ মিয়া বলেছিলেন হাওয়া থেকে পাওয়া টাকা কোনো কাজে লাগাতে নেই। তাতে জাদুবিদ্যে নষ্ট হয়ে যায়। তাই হাওয়ার টাকা হাওয়াতেই ফিরিয়ে দিতে হয়।
৩. ব্যাপারটাই কেমন যেন খাপছাড়া লেগেছিল' – কোন ব্যাপারটা খাপছাড়া লেগেছিল?
উঃ। লেখকের স্কুলে জাদুকর চাঁদ মিয়াকে মোট দশ টাকা দক্ষিণা দেওয়া হয়েছিল। তাতেই তিনি এত খুশি হয়েছিলেন যে পাঁচ টাকা পেলেও বোধ হয় অখুশি হতেন না। কিছু লেখকে খাপছাড়া লেগেছিল এই কারণে যে যিনি হাওয়া থেকে খুশিমতো টাকা ধরবার জাদু জানেন সেই হাওয়ার টাকায় কোটিপতি না হয়ে তিনি এরকম দীনহীনের মতো সামান্য টাকার জন্য কেন ঘুরে বেড়ান।
৪. হাওয়া থেকে টাকা ধরার খেলা কীসের উপর নির্ভর করে?
উঃ। এই খেলাটি নির্ভর করে প্রধানত পামিং বা হাতের তালুতে এক বা একাধিক টাকা লুকিয়ে রাখা এবং গুপ্তস্থান থেকে টাকা নেওয়ার কৌশলের উপর।
৫. ‘শেষটায় কি ঐ জোয়ানের হাতে মার খেয়ে মরতে হবে?'—কাকে কেন মার খেয়ে মরতে হবে?
উঃ। ইংলন্ডের বিখ্যাত জাদুকর ডেভিড ডেভান্টকে মার খেয়ে মরতে হবে। তিনি সন্ধ্যাবেলা এক জনবিরল পথ দিয়ে যাওয়ার সময় জোয়ান চেহারার একজন লোক তাঁকে জাদুর দ্বারা নিজের টুপিটি ভরিয়ে দিতে বলেন। ডেভাই অনেক ছোটো বড়ো আসরে জাদুর খেলা দেখিয়েছেন কিন্তু তিনি কোনোদিনই কল্পনা করেননি যে কোনো নির্জন পথে দাঁড়িয়ে একজন দর্শকের সামনে অসহায়ভাবে তাকে জাদু দেখাতে হবে। কারণ তাঁর কাছে মাত্র ছয় শিলিং ছিল কিন্তু জাদুর মাধ্যমেও ছয় শিলিং দিয়ে ওই লোকটির টুপিও ভরবে না আর মনও ভরবে না। তাই জাদুকর ডেডান্ট ভয় পাচ্ছিলেন যে শেষ পর্যন্ত কি ওই জোয়ান চেহারার লোকটির হাতে তাকে মার খেতে হবে।
No comments:
Post a Comment