দ্বিতীয় অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর পড়তে নিচের লিংকে ক্লিক করো
👉 ( দ্বিতীয় অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর পার্ট -২ )
পার্ট -১
⬛অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর : প্রতিটা প্রশ্নের মান -1
1. ফ্রান্সে ডাইরেক্টরি শাসনে কতজন ডাইরেক্টর ছিলেন?
উঃ ফ্রান্সে ডাইরেক্টরি শাসনে ৫ জন ডাইরেক্টর ছিলেন।
2. ফ্রান্সের প্রথম কনসাল কে ছিলেন?
উঃ ফ্রান্সের প্রথম কনসাল ছিলেন নেপোলিয়ন বোনাপার্ট।
3. কনসুলেটের সংবিধানের রচয়িতা কে?
উঃ নেপোলিয়নের নির্দেশে সংবিধান বিশারদ আবে সিয়েস কনসুলেটের সংবিধান রচনা করেন। এটি অষ্টম বছরের সংবিধান নামেও পরিচিত।
4. কবে, কাদের মধ্যে পিরামিডের যুদ্ধ হয়?
উঃ ১৭৯৮ খ্রিস্টাব্দে ফ্রান্স ও ইংল্যান্ডের মধ্যে পিরামিডের যুদ্ধ হয়।
5. নেপোলিয়নের সেনাদল কী নামে পরিচিত ছিলেন ?
উঃ নেপোলিয়নের সেনাদল ‘গ্রাদ আর্মি' নামে পরিচিত ছিলেন।
6. কে, কবে ইউনিভার্সিটি অব ফ্রান্স' প্রতিষ্ঠা করেন?
উঃ নেপোলিয়ন ১৮০৮ খ্রিস্টাব্দে ইউনিভার্সিটি অব ফ্রান্স' প্রতিষ্ঠা করেন ৷
7. কে, কবে ও কোথায় নেপোলিয়নের অভিষেক সম্পন্ন করেন?
উঃ পোপ সপ্তম পায়াস ১৮০৪ খ্রিস্টাব্দের ২ ডিসেম্বর নতোরদাম গির্জায় নেপোলিয়নের অভিষেক সম্পন্ন করেন ৷
৪. কে, কবে স্কলান-এর সন্ধি স্বাক্ষরে বাধ্য হয় ?
উঃ জেনা ও আওয়ারস্টার্ট-এর যুদ্ধে ফ্রান্সের কাছে পরাজিত হয়ে প্রাশিয়া ১৮০৬ খ্রিস্টাব্দে স্কলব্রান-এর সন্ধি স্বাক্ষরে বাধ্য হয়।
9. তালির কে ছিলেন ?
উঃ তালির ছিলেন ফরাসি বিপ্লবের যুগের উল্লেখযোগ্য বিপ্লবী নেতা। যিনি নেপোলিয়নের শাসনকালে ফ্রান্সের বিদেশ দফতরের দায়িত্ব সামলান।
10. ফ্রান্সে ডাইরেক্টরির শাসনকালের সময়সীমা উল্লেখ করো।
উঃ ফ্রান্সে ডাইরেক্টরির শাসনকালের সময়সীমা হল ১৭৯৫ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৭৯৯ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত।
11. কবে, কাদের মধ্যে ক্যাম্পো-ফর্মিও-এর সন্ধি স্বাক্ষরিত হয়?
উঃ ১৭৯৭ খ্রিস্টাব্দে (১৭ অক্টোবর) ফ্রান্স ও অস্ট্রিয়ার মধ্যে ক্যাম্পো-ফর্মিও-এর সন্ধি স্বাক্ষরিত হয়।
12. পিরামিডের যুদ্ধ এবং নীলনদের যুদ্ধে কারা জয় লাভ করে ?
উঃ পিরামিডের যুদ্ধে ফ্রান্স এবং নীলনদের যুদ্ধে ইংল্যান্ড জয় লাভ করে।
13. নেপোলিয়ন কত খ্রিস্টাব্দে প্রথম কনসাল নিযুক্ত হন ?
উঃ নেপোলিয়ন ১৭৯৯ খ্রিস্টাব্দে প্রথম কনসাল নিযুক্ত হন।
14. কবে নেপোলিয়ন নিজেকে আজীবন কনসাল হিসেবে ঘোষণা করেন ?
উঃ ১৮০২ খ্রিস্টাব্দে সংবিধান সংশোধন করে নেপোলিয়ন নিজেকে আজীবন কনসাল হিসেবে ঘোষণা করেন।
15. ১৮০১ খ্রিস্টাব্দ ও ১৮০২ খ্রিস্টাব্দ অস্ট্রিয়া ও ব্রিটেনের সঙ্গে কীভাবে যুক্ত লেখো।
উঃ ১৮০১ খ্রিস্টাব্দে অস্ট্রিয়া ফ্রান্সের কাছে পরাজিত হয়ে লুনভিলের সন্ধি স্বাক্ষরে বাধ্য হয় এবং ১৮০২ খ্রিস্টাব্দে অ্যামিয়েন্সের সন্ধি স্বাক্ষর করে ফ্রান্সের সঙ্গে ইংল্যান্ড তার বিরোধ মিটিয়ে নেয়।
16. নেপোলিয়ন কবে নিজেকে সম্রাট হিসেবে ঘোষণা করেন?
উঃ নেপোলিয়ন ১৮০৪ খ্রিস্টাব্দে নিজেকে সম্রাট হিসেবে ঘোষণা করেন।
17. নেপোলিয়নের আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থের নাম কী ?
উঃ নেপোলিয়নের আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থের নাম Napoleon on Napoleon।
18. নেপোলিয়ন কত খ্রিস্টাব্দে ফ্রান্সের আইনসংহিতার সংকলন করেন ?
উঃ নেপোলিয়ন ১৮০৭ খ্রিস্টাব্দে ফ্রান্সের আইনসংহিতার সংকলন করেন।
19. করে কোড নেপোলিয়ন প্রচলিত হয় ?
উঃ ১৮০৪ খ্রিস্টাব্দে ‘কোড নেপোলিয়ন' প্রচলিত হয়।
20. ১৮০৪ খ্রিস্টাব্দে ফ্রান্সে আইনসংহিতা সংকলন করেন কে?
উঃ ১৮০৪ খ্রিস্টাব্দে ফ্রান্সে আইনসংহিতা সংকলন করেন সম্রাট নেপোলিয়ন বোনাপার্ট ।
21. কাদের মধ্যে কনকর্ডাট/ধর্মবিষয়ক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় ?
উঃ ফরাসি সম্রাট নেপোলিয়ন এবং পোপ সপ্তম পায়াসের মধ্যে (১৮০১ খ্রি.) কনকর্ডাট বা ধর্মবিষয়ক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
22. 'ফরাসি সমাজের বাইবেল' কাকে বলা হয় ?
উঃ ফরাসি সম্রাট নেপোলিয়ন ১৮০৪ খ্রিস্টাব্দে নতুন আইনবিধির প্রবর্তন করেন। ‘কোড নেপোলিয়ন' নামে পরিচিত এই আইনবিধি ‘ফরাসি সমাজের বাইবেল' নামে পরিচিত।
23. নেপোলিয়ন প্রতিষ্ঠিত রাষ্ট্রীয় মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলি কী নামে পরিচিত?
উঃ নেপোলিয়ন প্রতিষ্ঠিত রাষ্ট্রীয় মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলি লাইসি নামে পরিচিত।
24. কে 'ব্যাংক অব ফ্রান্স' প্রতিষ্ঠা করেন ? অথবা, ব্যাংক অব ফ্রান্স কে গঠন করেন
উঃ নেপোলিয়ন বোনাপার্ট (১৮০০ খ্রি.) 'ব্যাংক অব ফ্রান্স’ প্রতিষ্ঠা করেন।
25. নেপোলিয়নকে কেন দ্বিতীয় জাস্টিনিয়ন বলা হয় ?
উঃ মধ্যযুগে রোমান সাম্রাজ্যের যুগে সম্রাট জাস্টিনিয়ান প্রথম বিভিন্ন আইন সংকলিত করে খ্যাতি অর্জন করেন। আধুনিক যুগে ফরাসি সম্রাট নেপোলিয়নও তাঁর ‘কোড নেপোলিয়ন’ প্রবর্তনের মাধ্যমে কৃতিত্বের পরিচয় দেন। এজন্য তাঁকে দ্বিতীয় জাস্টিনিয়ান বলা হয় ৷
26. লিজিয়ন অব অনার' কে চালু করেন ?
উঃ ‘লিজিয়ন অব অনার' চালু করেন ফরাসি সম্রাট নেপোলিয়ন।
27. 'লিজিয়ন অব অনার' কাকে বলে? অথবা, 'লিজিয়ন অব অনার' কী ?
উঃ ‘লিজিয়ন অব অনার' হল নেপোলিয়ন কর্তৃক প্রবর্তিত ফ্রান্সের একটি বিশেষ রাষ্ট্রীয় সম্মান।
28. ফ্রান্সে ‘বিপ্লবের প্রতীক' কাকে বলা হয়েছে ?
উঃ ফ্রান্সে নেপোলিয়ন বোনাপার্টকে বিপ্লবের প্রতীক' বলা হয়েছে।
29. “আমিই বিপ্লব, আবার আমিই বিপ্লবকে ধ্বংস করেছি”–এটি কার উক্তি?
উঃ “আমিই বিপ্লব, আবার আমিই বিপ্লবকে ধ্বংস করেছি”– এই উক্তিটি হল নেপোলিয়নের।
30. নেপোলিয়নের যুগের মূল বৈশিষ্ট্য কী ছিল ?
উঃ নেপোলিয়নের যুগের মূল বৈশিষ্ট্য ছিল বিপ্লবী ভাবধারা ও রাজতান্ত্রিক আদর্শের সহাবস্থান।
31. 'বিপ্লবের তরবারি' রূপে কে পরিচিত?
উঃ ‘বিপ্লবের তরবারি' রূপে পরিচিত ফরাসি সম্রাট নেপোলিয়ন।
32. নেপোলিয়ন ইউরোপের কোন তিনটি বৃহৎ শক্তিকে পরাজিত করেন ?
উঃ নেপোলিয়ন ইউরোপের তিনটি বৃহৎ শক্তি অস্ট্রিয়া, প্রাশিয়া ও রাশিয়াকে পরাজিত করেন।
33. নেপোলিয়ন নিজ ভগ্নীপতি মিউরাকে কোন্ দেশের সিংহাসনে বসান ?
উঃ নেপোলিয়ন নিজ ভগ্নীপতি মিউরাকে নেপলস্-এর সিংহাসনে বসান।
⬛ সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর : প্রতিটা প্রশ্নের মান -2/3
1. ১৮ ব্লুমেয়ার' বলতে কী বোঝ ?
উঃ ফরাসি সেনাপতি নেপোলিয়ন বোনাপার্ট ডাইরেক্টরির শাসনের অবসান ঘটিয়ে ফ্রান্সে 'কনসুলেট' নামে নতুন শাসনব্যবস্থা চালু করেন এবং নিজে প্রথম কনসাল হিসেবে ফ্রান্সের শাসনক্ষমতা হস্তগত করেন। বিভিন্ন ঐতিহাসিক এই ঘটনাকে ফরাসি বিপ্লবের সমাপ্তি বলে মনে করেন। এই ঘটনা ঘটেছিল ১৭৯৯ খ্রিস্টাব্দের ৯ নভেম্বর অর্থাৎ প্রজাতন্ত্রী ফ্রান্সের ক্যালেন্ডার অনুসারে ১৮ রুমেয়ার তারিখে, এজন্য এই ঘটনাকে ‘১৮ ব্রুমেয়ার’ বলা হয় ।
2. নেপোলিয়ন কীভাবে ফ্রান্সের ক্ষমতা দখল করেন ?
উঃ নেপোলিয়ন প্রথম জীবনে একজন সাধারণ সৈনিক থেকে যোগ্যতার প্রমাণ দিয়ে মেজর জেনারেল পদে উন্নীত হন। তিনি অদক্ষ ডাইরেক্টরির শাসনকালে (১৭৯৫-৯৯ খ্রি.) বিভিন্ন যুদ্ধক্ষেত্রে চমকপ্রদ সাফল্যের পরিচয় দিয়ে দেশবাসীর মন জয় করেন এবং ডাইরেক্টরির শাসনের অবসান (৯ নভেম্বর, ১৭৯৯ খ্রি.) ঘটিয়ে কনসুলেট নামে নতুন শাসনব্যবস্থা চালু করেন। তিনি প্রথম কনসাল হিসেবে দেশের শাসনভার গ্রহণ করেন।
3. ভঁদেমিয়ার ঘটনা' কী? অথবা, 'অক্টোবরের ঘটনা' কী?
উঃ ফরাসি বিপ্লবের (১৭৮৯ খ্রি.) পরবর্তীকালে রাজতন্ত্রের সমর্থক উন্মত্ত জনতা ১৭৯৫ খ্রিস্টাব্দের ৫ অক্টোবর ফরাসি জাতীয় সভা আক্রমণ করলে ফরাসি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নেপোলিয়ন অল্প সংখ্যক সৈন্য নিয়ে জনতাকে ছত্রভঙ্গ করেন এবং জাতীয় সভা রক্ষা করেন। এটি ভঁদেমিয়ার ঘটনা' বা 'অক্টোবরের ঘটনা' নামে পরিচিত।
4 . সিজালপাইন প্রজাতন্ত্র' কী ?
উঃ নেপোলিয়ন ইটালির লম্বার্ডি দখল করে সেখানে যে প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেন তা সিজালপাইন প্রজাতন্ত্র নামে পরিচিত। এটি ১৮০৫ খ্রিস্টাব্দে ইতালীয় রাজ্য' নামে পরিচিত হয়।
5. কে, কোথায় ‘বাটাভিয়া' প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেন ?
উঃ ফরাসি সেনাপতি পেশেগ্রু হল্যান্ড দখল করে সেখানে ফ্রান্সের অধীনে এক তাঁবেদার প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেন। এটি বাটাভিয়া প্রজাতন্ত্র নামে পরিচিত।
6 . কনসুলেটের শাসন' কী?
উঃ ফরাসি সেনাপতি নেপোলিয়ন ১৭৯৯ খ্রিস্টাব্দে ডাইরেক্টরির শাসনের অবসান ঘটিয়ে (৯ নভেম্বর, ১৭৯৯ খ্রি.) ফ্রান্সে এক নতুন শাসনব্যবস্থা চালু করেন। এই ব্যবস্থায় নেপোলিয়ন-সহ মোট ৩ জন কনসালের হাতে ফ্রান্সের শাসনভার তুলে দেওয়া হয়। এটি ‘কনসুলেটের শাসন' নামে পরিচিত।
7. কনসুলেটের শাসনকালে ফ্রান্সের তিন জন কনসালের নাম লেখো।
উঃ কনসুলেটের শাসনকালে ফ্রান্সের প্রথম কনসাল ছিলেন নেপোলিয়ন যিনি ছিলেন দেশের চূড়ান্ত ক্ষমতার অধিকারী। অন্য দুই কনসাল ছিলেন আবে সিয়েস ও রজার ডুকোস। তাঁরা ছিলেন প্রথম কনসালের সহকারী ও আজ্ঞাবাহী মাত্র।
৪. প্রথম কনসাল হিসেবে নেপোলিয়নের কী ক্ষমতা ছিল ?
উঃ প্রথম কনসাল হিসেবে নেপোলিয়ন অপ্রতিহত ক্ষমতার অধিকারী ছিলেন। তাঁর হাতে সামরিক ও অসামরিক কর্মচারী, মন্ত্রী, রাষ্ট্রদূত প্রমুখের নিয়োগ, আইন প্রণয়ন, যুদ্ধ ঘোষণা, শান্তিস্থাপন প্রভৃতি দায়িত্ব ছিল।
9. নেপোলিয়ন নিজের বংশের শাসকদের কোথায় কোথায় শাসক পদে বসান ?
উঃ নেপোলিয়ন নিজ ভ্রাতা জোসেফকে স্পেনের সিংহাসনে, লুই বোনাপার্টকে হল্যান্ডের সিংহাসনে এবং জেরোম বোনাপার্টকে ওয়েস্টফেলিয়ার সিংহাসনে বসান।
10. কবে, কোথায় নেপোলিয়নের জন্ম হয়েছিল ?
উঃ ১৭৬৯ খ্রিস্টাব্দের ১৫ আগস্ট ভূমধ্যসাগরের কর্সিকা দ্বীপের অ্যাজাকসিও নামক স্থানে এক সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারে নেপোলিয়নের জন্ম হয়েছিল।
11. নেপোলিয়নের যুগ কাকে বলে ?
উঃ নেপোলিয়ন ডাইরেক্টরি শাসনের অবসান ঘটিয়ে ১৭৯৯ খ্রিস্টাব্দে প্রথম কনসাল হিসেবে ফ্রান্সের ক্ষমতা দখল করেন। তখন থেকে ১৮১৪ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত নেপোলিয়ন ছিলেন ফ্রান্সের সর্বময়কর্তা। এই পর্বে তাঁকে কেন্দ্র করেই ফ্রান্স তথা ইউরোপে ব্যাপক রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিবর্তন ঘটে। তাই এই সময়কালকে ‘নেপোলিয়নের যুগ' বলা হয়।
12. 'কোড নেপোলিয়ন'-এর গুরুত্ব কী ছিল ?
উঃ কোড নেপোলিয়নের বিভিন্ন গুরুত্ব ছিল,
যেমন— [1] আইনসংহিতার মূল নীতিগুলি তৎকালীন যুগের বিচারে অত্যন্ত আধুনিক ছিল। [2] আইনগুলি পরবর্তীকালে ইউরোপের বিভিন্ন দেশের আইনব্যবস্থায় স্থান পায়। ফিশারের মতে, এই আইনগুলি বিপ্লবের স্থায়ী বিজয়কে সুনিশ্চিত করে।
13. কাকে, কেন দ্বিতীয় জাস্টিনিয়ান' বলে অভিহিত করা হয় ?
উঃ ফরাসি শাসক নেপোলিয়ন খ্রিস্টাব্দে 'কোড ১৮০৪ নেপোলিয়ন' নামে নতুন আইনসংহিতা প্রণয়ন করেন। সমকালীন যুগের চেয়ে প্রগতিশীল এই আইনব্যবস্থা ছিল নেপোলিয়নের সর্বাপেক্ষা গৌরবময় সংস্কার এবং সর্বাধিক উল্লেখযোগ্য কীর্তি। এই কৃতিত্বের জন্য নেপোলিয়নকে দ্বিতীয় জাস্টিনিয়ান' বলে অভিহিত করা হয়।
14. নেপোলিয়নের শিক্ষা সংক্রান্ত সংস্কারগুলি লেখো।
উঃ নেপোলিয়নের শিক্ষাসংক্রান্ত প্রধান সংস্কারগুলি ছিল—[1] তিনি প্রতিটি কমিউন বা পৌরসভায় একটি করে প্রাথমিক শিক্ষাকেন্দ্র গড়ে তোলেন। [2] তিনি সামরিক শিক্ষাদানের জন্য ফ্রান্সে ২৯টি লাইসি বা আবাসিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। [3] সমগ্র ফ্রান্সে একইরকম শিক্ষা-পদ্ধতি প্রচলনের উদ্দেশ্যে তিনি ১৮০৮ খ্রিস্টাব্দে ইম্পিরিয়াল ইউনিভার্সিটি অব ফ্রান্স' প্রতিষ্ঠা করেন।
15. নেপোলিয়নের অভ্যন্তরীণ সংস্কারের দুটি উদ্দেশ্য লেখো।
উঃ নেপোলিয়নের অভ্যন্তরীণ সংস্কারের প্রধান দুটি উদ্দেশ্য ছিল— [1] বিপ্লব-বিধ্বস্ত ফ্রান্সে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে দেশবাসীর মনে শান্তি ও নিরাপত্তাবোধ সুনিশ্চিত করা। [2] দেশের অর্থনৈতিক সংকট দূর করা।
16. নেপোলিয়নের আইনসংহিতায় (কোড নেপোলিয়ন) কতগুলি বিধি ও কটি ভাগ ছিল?
উঃ নেপোলিয়নের আইনসংহিতায় ২২৮৭টি বিধি ও ৩টি ভাগ ছিল।
17. নেপোলিয়নের আইনসংহিতার ত্রুটি কী ছিল ?
উঃ নেপোলিয়নের আইনসংহিতার প্রধান ত্রুটি ছিল—[1] এই আইনের দ্বারা নেপোলিয়নের ক্ষমতা বৃদ্ধি পেলেও বিপ্লবের অগ্রগতি রুদ্ধ হয়। [2] পিতাকে পরিবারের সর্বময় কর্তৃত্ব দেওয়ায় স্ত্রী ও সন্তানদের ব্যক্তিস্বাধীনতা খর্ব হয়। [3] ফরাসি বিপ্লবের দ্বারা নারীসমাজের বন্ধন- মুক্তি ও সমান অধিকার লাভের যে সম্ভাবনা দেখা দিয়েছিল তা নেপোলিয়নের আইন পূরণ করতে পারেনি। [4] শ্রমিকদের কাজের অধিকার, নিম্নতম মজুরির অধিকার, ধর্মঘটের অধিকার কেড়ে নিয়ে তাদের বিপদে ফেলা হয় ।
18. ব্যাংক অব ফ্রান্স কে, কত খ্রিস্টাব্দে গঠন করেন ?
উঃ ফরাসি সম্রাট নেপোলিয়ন ১৮০০ খ্রিস্টাব্দে ব্যাংক অব ফ্রান্স গঠন করেন।
19. ‘কনকর্ডাট’ বা ‘ধৰ্ম-মীমাংসা চুক্তি' কী ?
উঃ ফরাসি বিপ্লবকালে ‘সিভিল কনস্টিটিউশন অব দ্য ক্লার্জি' নামে এক দলিল দ্বারা ফরাসি গির্জার জাতীয়করণ করা হলে ফরাসি রাষ্ট্রের সঙ্গে পোপের বিরোধ বাধে। এই বিরোধের মীমাংসার উদ্দেশ্যে নেপোলিয়ন পোপ সপ্তম পায়াস-এর সঙ্গে যে চুক্তি স্বাক্ষর করেন তা ‘কনকর্ডাট’বা ‘ধর্ম-মীমাংসা চুক্তি’নামে পরিচিত।
20. কনকর্ডাটের শর্তগুলি কী ছিল ?
উঃ খামার ক্যাল- কনকর্ডাটের প্রধান শর্তগুলি ছিল— [1] পোপ ফরাসি গির্জা ও গির্জার সম্পত্তির জাতীয়করণ মেনে নেন। [2] ফ্রান্স রোমান ক্যাথলিক ধর্মমত ও গির্জাকে স্বীকৃতি দেয়। [3] বলা হয়, সরকার যাজকদের নিয়োগ করবে এবং পোপ তাঁদের স্বীকৃতি দেবে। [4] রাষ্ট্র যাজকদের বেতন দেবে।
21. কনকর্ডাট কত খ্রিস্টাব্দে কাদের মধ্যে স্বাক্ষরিত হয় ?
উঃ কনকর্ডাট বা ধর্ম-মীমাংসা চুক্তি ১৮০১ খ্রিস্টাব্দে ফরাসি সম্রাট নেপোলিয়ন ও পোপ সপ্তম পায়াস-এর মধ্যে স্বাক্ষরিত হয়।
22. আর্থিক সংস্কারের জন্য নেপোলিয়ন ফ্রান্সে কী প্রচলন করেন ?
উঃ আর্থিক সংস্কারের জন্য নেপোলিয়ন ফ্রান্সে নিম্নলিখিত ব্যবস্থা অবলম্বন করেন—[1] 'সরকারি ব্যয় হ্রাস' এবং 'অডিট প্রথা' চালু করেন। [2] ব্যাংক অব ফ্রান্স (১৮০০ খ্রি.) প্রতিষ্ঠা করেন। [3] নেপোলিয়ন ‘ব্যয় সংকোচন নীতি' অবলম্বন করে সরকারি দপ্তরগুলিকে কঠোরভাবে ব্যয় সংকোচনের নির্দেশ দেন। [4] নিয়মিত কর আদায়ের ব্যবস্থা করেন।
23. 'লিজিয়ন অব অনার' কী ?
উঃ ফরাসি সম্রাট নেপোলিয়ন রাজকর্মচারীদের উৎসাহিত করার উদ্দেশ্যে দক্ষ কর্মচারীদের একটি বিশেষ রাষ্ট্রীয় সম্মান প্রদানের উদ্যোগ নেন। এই সম্মান 'লিজিয়ন অব অনার' নামে খ্যাত ৷
24. নেপোলিয়নকে ‘বিপ্লবের সন্তান' বলা হয় কেন?
উঃ নেপোলিয়নকে ‘বিপ্লবের সন্তান' বলা হয়, কারণ—[1] ফরাসি বিপ্লবের উদারনীতি নেপোলিয়নকে ফ্রান্সের ক্ষমতা দখলে সহায়তা করেছিল। [2] ফরাসি বিপ্লব-প্রসূত সাম্য ও মৈত্রীর আদর্শ নেপোলিয়ন তাঁর শাসনকালে কার্যকর করেছিলেন। [3] ফরাসি বিপ্লবের মূল আদর্শগুলি তিনি ইউরোপের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে দেন।
25. আমি বিপ্লবকে ধ্বংস করেছি' এই উক্তি কে, কেন করেছিলেন?
উঃ আমি বিপ্লবকে ধ্বংস করেছি' এই উক্তিটি করেন ফরাসি সম্রাট নেপোলিয়ন বোনাপার্ট।
নেপোলিয়ন এই উক্তি করেন, কারণ— [1] তিনি গণতান্ত্রিক জনপ্রতিনিধিমূলক সব প্রতিষ্ঠানের বিলোপ ঘটিয়ে দেশে রাজতন্ত্র ফিরিয়ে আনেন।[2] তিনি বিপ্লবের স্বাধীনতার আদর্শ ধ্বংস করে দেশের সব ক্ষমতা কুক্ষিগত করেন। [3] তিনি সাধারণ মানুষের বাক-স্বাধীনতা ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা কেড়ে নেন। [4] তিনি বিনা বিচারে গ্রেফতারের নিয়ম চালু করেন। ঐতিহাসিক ওলারের মতে, 'নেপোলিয়নের সম্রাট পদ লাভ করার সঙ্গে সঙ্গে ফরাসি বিপ্লবের সমাধি ঘটে।’
26. নেপোলিয়নকে 'বিপ্লবের ধ্বংসকারী' বলা হয় কেন?
উঃ নেপোলিয়নকে বিপ্লবের ধ্বংসকারী বলা হয়, কারণ—[1] বিপ্লবের স্বাধীনতার আদর্শ তিনি ধ্বংস করেন। [2] বিপ্লব ফ্রান্সে যে রাজতন্ত্রের পতন ঘটিয়েছিল তিনি ফ্রান্সে সেই রাজতন্ত্রের পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেন।
No comments:
Post a Comment