জীবজগতে নিয়ন্ত্রণ ও সমন্বয় (প্রথম অধ্যায়) MCQ / বহু বিকল্প ভিত্তিক প্রশ্ন উত্তর -
Mark - 2
প্রশ্ন: হরমোন শব্দটি প্রথম ব্যবহার করেন..
a.) বেলিস ও স্টারলিং
b.) ওয়েন্ট
c.) কুরোসাওয়া
d.) জগদীশ চন্দ্র বসু
🢖🢖উত্তর:- a.) বেলিস ও স্টারলিং
প্রশ্ন: হরমোন হল একটি—
a.) উৎসেচক
b.) গ্রাহক
c.) ভৌত সমন্বয়কারী
d .)- রাসায়নিক সমন্বয়কারী
🢖🢖উত্তর: d .)- রাসায়নিক সমন্বয়কারী
প্রশ্ন: একটি প্রাকৃতিক হরমোনের নাম হল-
a. অক্সিন
b. IPA
c. NAA
d. OIBA
🢖🢖উত্তর: a. অক্সিন
প্রশ্ন:একটি কৃত্রিম হরমোন হল—
a) IAA
b) NAA
c) GA
d) সাইটোকাইনিন
🢖🢖উত্তর: b) NAA
প্রশ্ন: একটি গ্যাসীয় হরমোন হল—
b) অক্সিন
c) IPA
d) ডরমিন
c) ইথিলিন
🢖🢖উত্তর: c) ইথিলিন
প্রশ্ন: অক্সিন সম্বন্ধে প্রথম যে উদ্ভিদে পরীক্ষা হয়, সেটি হল—
a) মটর
b) গম
c) ধান
d) যই (Oat)
🢖🢖উত্তর: d) যই (Oat)
প্রশ্ন: বৃদ্ধিরোধক একটি উদ্ভিদ হরমোন হল—
a) ফ্লোরিজেন
b) অক্সিন
c) সাইটোকাইনিন
d) অ্যাবসিসিক অ্যাসিড
সঠিক উত্তরঃ- d) অ্যাবসিসিক অ্যাসিড
প্রশ্ন: জীবদেহে রাসায়নিক সমন্বয় সাধনের কাজ করে—
a) ভিটামিন
b) উৎসেচক
c) হরমোন
d) ফেরোমোন
🢖🢖উত্তর: c) হরমোন
প্রশ্ন: ফ্লোরিজেন হল একপ্রকার—
a) উদ্ভিদ হরমোন
b) প্রাণী হরমোন
c) উৎসেচক
d) ভিটামিন
🢖🢖উত্তর: a) উদ্ভিদ হরমোন
প্রশ্ন: ভ্রূণমুকুলাবরণীতে পাওয়া যায়—
a) অক্সিন
b) জিব্বেরেলিন
c) সাইটোকাইনিন
d) ফ্লোরিজেন
🢖🢖উত্তর: a) অক্সিন
প্রশ্ন: নাইট্রোজেনবিহীন উদ্ভিদ হরমোন হল--
a) জিব্বেরেলিন
b) অক্সিন
c) সাইটোকাইনিন
d) ভারনালিন
সঠিক উত্তরঃ- a) জিব্বেরেলিন
প্রশ্ন: বীজবিহীন ফল উৎপাদনে সাহায্য করে—
a) ইথিলিন
b) অক্সিন
c) সাইটোকাইনিন
d) ফ্লোরিজেন
🢖🢖উত্তর: b) অক্সিন
প্রশ্ন: গাছ থেকে পাতা বিচ্ছিন্ন করার বহুদিন পর পর্যন্ত পাতাটিকে সবুজ রাখতে কার্যকরী হরমোনটি হল—
a) অক্সিন
b) GA
c) সাইটোকাইনিন
d) IPA
🢖🢖উত্তর: c) সাইটোকাইনিন
প্রশ্ন: অক্সিনের প্রবাহ-
a) ঊর্ধ্বমুখী
b) নিম্নমুখী
c) সর্বত্র
d) পার্শ্বমুখী
🢖🢖উত্তর: b) নিম্নমুখী
প্রশ্ন: উদ্ভিদের বংশগত খর্বতা দূর করে দৈর্ঘ্য বৃদ্ধিতে সাহায্যকারী হরমোনটি হল—
a) অক্সিন
b) জিব্বেরেলিন
c) সাইটোকাইনিন
d) ফ্লোরিজেন
🢖🢖উত্তর: b) জিব্বেরেলিন
প্রশ্ন: জিব্বেরেলিনের প্রবাহ-
a) ঊর্ধ্বমুখী
b) নিম্নমুখী
c) ঊর্ধ্ব ও নিম্ন উভয়মুখী
d) এদের কোনোটিই নয়
🢖🢖উত্তর: c) ঊর্ধ্ব ও নিম্ন উভয়মুখী
প্রশ্ন: জিব্বেরেলিন হল-
a) পিউরিন গোষ্ঠীভুক্ত
b) ইনডোল গোষ্ঠীভুক্ত
c) পিরিমিডিন গোষ্ঠীভুক্ত
d) টারপিনয়েড গোষ্ঠীভুক্ত
🢖🢖উত্তর: d) টারপিনয়েড গোষ্ঠীভুক্ত
জীবজগতে নিয়ন্ত্রণ ও সমন্বয় (প্রথম অধ্যায়) SAQ / সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর। উদ্ভিদের সাড়া প্রদান এবং রাসায়নিক সমন্বয় -- হরমোন।Mark - 1
প্রশ্ন: একটি ক্ষারধর্মী উদ্ভিদ হরমোনের নাম লেখো।
🢖🢖উত্তর: একটি ক্ষারধর্মী উদ্ভিদ হরমোনের নাম সাইটোকাইনিন।
প্রশ্ন:পর্বমধ্যের দৈর্ঘ্য বৃদ্ধিতে সাহায্য করে কোন্ হরমোন ?
🢖🢖উত্তর:জিব্বেরেলিন হরমোন পর্বমধ্যের দৈর্ঘ্য বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
প্রশ্ন:ফলের আকার ও সংখ্যা বৃদ্ধি করে কোন্ হরমোন ?
🢖🢖উত্তর: ফলের আকার ও সংখ্যা বৃদ্ধি করে জিব্বেরেলিন হরমোন।
প্রশ্ন: বীজপত্রে ও পরিপক্ক বীজে কোন্ হরমোন পাওয়া যায় ?
🢖🢖উত্তর: বীজপত্রে এবং পরিপক্ব বীজে জিব্বেরেলিন নামক হরমোন পাওয়া যায়।
প্রশ্ন: NAA-এর পুরো নাম কী ?
🢖🢖উত্তর: NAA-এর পুরো নাম ন্যাপথালিন অ্যাসেটিক অ্যাসিড।
প্রশ্ন: IPA-এর পুরো নাম কী ?
🢖🢖উত্তর: IPA-এর পুরো নাম হল ইনডোল প্রোপিওনিক অ্যাসিড।
প্রশ্ন: GA-এর পুরো নাম কী ?
🢖🢖উত্তর:GA-এর পুরো নাম জিব্বেরেলিক অ্যাসিড।
প্রশ্ন: প্রধান প্রাকৃতিক জিব্বেরেলিন হরমোন কোটি ?
🢖🢖উত্তর:GA3 হল প্রধান প্রাকৃতিক জিব্বেরেলিন হরমোন।
প্রশ্ন: কোন্ হরমোন কৃষিক্ষেত্রে আগাছা দমনে সাহায্য করে ?
🢖🢖উত্তর: কৃত্রিম অক্সিন কৃষিক্ষেত্রে আগাছা দমনে সাহায্য করে।
প্রশ্ন: উদ্ভিদে পার্শ্বীয় মুকুলের বৃদ্ধি ঘটিয়ে ঝোপের সৃষ্টিতে সাহায্য করে কোন্ হরমোন ?
🢖🢖উত্তর: উদ্ভিদে পার্শ্বীয় মুকুলের বৃদ্ধি ঘটিয়ে ঝোপের সৃষ্টিতে সাহায্য করে সাইটোকাইনিন ।
প্রশ্ন: বীজের সুপ্তাবস্থা ভঙ্গকারী প্রধান হরমোনকে কী বলে?
🢖🢖উত্তর:বীজের সুপ্তাবস্থা ভঙ্গকারী প্রধান হরমোনকে জিব্বেরেলিন বা জিব্বেরেলিক অ্যাসিড (GA) বলে।
প্রশ্ন: কোন্ হরমোন উদ্ভিদের কোশ বিভাজনে সাহায্য করে ?
🢖🢖উত্তর: উদ্ভিদের কোশ বিভাজনে সাহায্যকারী প্রধান হরমোন হল সাইটোকাইনিন (কাইনিন)।
প্রশ্ন: বিপরীতধর্মী হওয়ায় একে কী বলে ?
🢖🢖উত্তর: অ্যাবসিসিক অ্যাসিডের ক্রিয়া জিব্বেরেলিনের বিপরীত- ধর্মী হওয়ায় একে অ্যান্টি-জিব্বেরেলিন বলে।
প্রশ্ন: সাইটোকাইনিনের রাসায়নিক নাম কী ?
🢖🢖উত্তর: সাইটোকাইনিনের রাসায়নিক নাম হল—ফুরফুরাইল আমিনোপিউরিন।
প্রশ্ন: কোন্ হরমোন উদ্ভিদের অগ্রমুকুলের বৃদ্ধি ঘটায় ?
🢖🢖উত্তর:অক্সিন হরমোন উদ্ভিদের অগ্রমুকুলের বৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করে।
প্রশ্ন: উদ্ভিদের অগ্র ও পার্শ্বীয় বৃদ্ধিতে সাহায্য করে কোন্ হরমোন ?
🢖🢖উত্তর:উদ্ভিদের অগ্র ও পার্শ্বীয় বৃদ্ধিতে সাহায্য করে অক্সিন নামক হরমোন।
প্রশ্ন: একটি প্রকল্পিত উদ্ভিদ হরমোনের নাম লেখো।
🢖🢖উত্তর:একটি প্রকল্পিত উদ্ভিদ হরমোনের নাম হল ফ্লোরিজেন।
প্রশ্ন: IAA-এর পুরো নাম কী?
🢖🢖উত্তর:IAA-এর পুরো নাম হল ইনডোল অ্যাসেটিক অ্যাসিড।
প্রশ্ন: হরমোন কথাটির আক্ষরিক অর্থ কী?
🢖🢖উত্তর: হরমোন (গ্রিক ‘হরমাও' শব্দজাত) কথাটির আক্ষরিক অর্থ—উত্তেজিত করা বা জাগ্রত করা।
প্রশ্ন: অক্সিনের রাসায়নিক নাম কী ?
🢖🢖উত্তর:অক্সিনের রাসায়নিক নাম হল ইনডোল অ্যাসেটিক অ্যাসিড (IAA)।
প্রশ্ন: গোলাপ, জবা প্রভৃতির শাখাকলম তৈরিতে কোন্ সংশ্লেষিত হরমোন ব্যবহার করা হয়?
🢖🢖উত্তর: গোলাপ, জবা প্রভৃতির শাখাকলম তৈরিতে কৃত্রিম অক্সিন ব্যবহার করা হয়।
প্রশ্ন: উদ্ভিদ হরমোন প্রয়োগ করে নিষেক ছাড়াই বীজহীন ফল উৎপাদন করার প্রক্রিয়াকে কী বলে?
🢖🢖উত্তর: উদ্ভিদ হরমোন প্রয়োগ করে, নিষেক ছাড়াই বীজহীন ফল উৎপাদন করার প্রক্রিয়াকে পারথেনোকার্পি বলে।
প্রশ্ন: উদ্ভিদদেহে সমন্বয়সাধনের কাজ কার সাহায্যে ঘটে ?
🢖🢖উত্তর: উদ্ভিদদেহে সমন্বয়সাধনের কাজ উদ্ভিদ হরমোন বা ফাইটোহরমোনের সাহায্যে ঘটে।
প্রশ্ন: অক্সিনের রাসায়নিক সংকেত কী?
🢖🢖উত্তর: অক্সিনের রাসায়নিক সংকেত C10H, ON
প্রশ্ন: জিব্বেরেলিনের রাসায়নিক নাম কী ?
🢖🢖উত্তর: জিব্বেরেলিনের রাসায়নিক নাম হল জিব্বেরেলিক অ্যাসিড (GA)।
প্রশ্ন: দুটি কৃত্রিম বা সংশ্লেষিত অক্সিনের নাম লেখো।
🢖🢖উত্তর: ইনডোল প্রোপিওনিক অ্যাসিড বা IPA এবং ইনডোল বিউটাইরিক অ্যাসিড বা IBA
প্রশ্ন: কোন্ হরমোন উদ্ভিদের ট্রপিক চলন নিয়ন্ত্রণ করে?
🢖🢖উত্তর:অক্সিন হরমোন উদ্ভিদের ট্রপিক চলন নিয়ন্ত্রণ করে।
প্রশ্ন: ডাবের জলে কোন্ হরমোন পাওয়া যায় ?
🢖🢖উত্তর:ডাবের জলে সাইটোকাইনিন নামক হরমোন পাওয়া যায়।
জীবজগতে নিয়ন্ত্রণ ও সমন্বয় (প্রথম অধ্যায়) SAQ / সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর। উদ্ভিদের সাড়া প্রদান এবং রাসায়নিক সমন্বয় -- হরমোনMark- 2
প্রশ্ন: হরমোন কাকে বলে?
🢖🢖উত্তর:যে জৈবরাসায়নিক পদার্থ কোনো বিশেষ কোশসমষ্টি বা অন্তঃক্ষরা গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত হয়ে বিশেষ উপায়ে পরিবাহিত হয়ে জীবের বিভিন্ন শারীরবৃত্তীয় ক্রিয়াকলাপের মধ্যে রাসায়নিক সমন্বয়সাধন করে এবং ক্রিয়ার শেষে বিনষ্ট হয়ে যায় তাকে হরমোন বলে। যেমন—অক্সিন নামক উদ্ভিদ হরমোন।
প্রশ্ন: উদ্ভিদদেহে হরমোনের প্রয়োজনীয়তা কী?
🢖🢖উত্তর:বৃদ্ধির সাথে সাথে উদ্ভিদদেহে জটিলতা বৃদ্ধি পায়। এর ফলস্বরূপ দেহের বিভিন্ন কলাকোশের মধ্যে সমন্বয়সাধনের প্রয়োজনীয়তাও বৃদ্ধি পায়। এই সমন্বয়সাধনের জন্যই উদ্ভিদদেহে হরমোনের প্রয়োজন হয়। বিভিন্ন শারীরবৃত্তীয় ক্রিয়াসমূহকে নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমেই হরমোন এই সমন্বয়সাধনের কাজ করে থাকে।
প্রশ্ন: অক্সিন ও সাইটোকাইনিনের একটি বিপরীত ক্রিয়া লেখো।
🢖🢖উত্তর: অক্সিন উদ্ভিদের অগ্রস্থ প্রকটতা, অর্থাৎ অগ্রমুকুলের বিকাশ ঘটায়, সাইটোকাইনিন তা প্রতিরোধ করে। পক্ষান্তরে সাইটোকাইনিন কাক্ষিক মুকুলের বৃদ্ধি ঘটায়, অক্সিন তা প্রতিরোধ করে।
প্রশ্ন: তুমি যদি কোনো অনুশীলন-মাধ্যমে (culturemedium) সাইটোকাইনিন প্রয়োগ করতে ভুলে যাও তাহলে কী ঘটবে?
🢖🢖উত্তর:সাইটোকাইনিন হরমোন কোশ বিভাজনে গুরুত্বপূর্ণভাবে সাহায্য করে। অনুশীলন-মাধ্যমে সাইটোকাইনিন প্রয়োগ করতে ভুল হলে, অনুশীলন-মাধ্যমে কোশ বিভাজন ঠিক মতো হবে না। ফলে বৃদ্ধি ব্যাহত হবে।
প্রশ্ন: হরমোনকে ‘রাসায়নিক দূত' বলে কেন?
🢖🢖উত্তর: হরমোন একপ্রকার রাসায়নিক পদার্থ যা তার ক্ষরণস্থল থেকে দূরবর্তী কোশগুলির রাসায়নিক বিক্রিয়াগুলিকে নিয়ন্ত্রণ করে। এই কারণে হরমোনকে রাসায়নিক দূত বলে। তবে কিছু হরমোন ক্ষরণকারী কোশের নিকটবর্তী স্থানেও কাজ করে থাকে ।
প্রশ্ন: অক্সিনের প্রধান দুটি কাজ লেখো।
🢖🢖উত্তর: [1] অক্সিন উদ্ভিদের বিভিন্ন ধরনের ট্রপিক চলন বিশেষত, ফোটোট্রপিক ও জিওট্রপিক চলন নিয়ন্ত্রণ করে। [2] এই হরমোনটির প্রভাবে উদ্ভিদে অগ্রস্থ প্রকটতা দেখা যায় অর্থাৎ অগ্রমুকুলের বৃদ্ধি ঘটে এবং পার্শ্বীয় মুকুলের বৃদ্ধি ব্যাহত হয়।
প্রশ্ন: সাইটোকাইনিনের উৎস ও কাজ উল্লেখ করো ।
🢖🢖উত্তর: উৎস: সাইটোকাইনিনের দুটি উৎস হল—[1] ভুট্টার সস্য ও [2] ডাবের জল।
🢖🢖কাজ: [1] কোশ বিভাজনে সহায়তা করা, [2] উদ্ভিদের পত্রমোচন বিলম্বিত করা। ডাবের জল—সাইটোকাইনিনের উৎস
প্রশ্ন: একজন আপেল বাগানের মালিক তার বাগানের ফলকে বড়ো ও ভালো করতে চাইলে এবং দাম বাড়ার জন্য অপেক্ষা করে আপেল বিক্রি করতে চাইলে তিনি কোন্ PGR ব্যবহার করবেন?
🢖🢖উত্তর: ওই আপেল বাগানের মালিক তার বাগানে ফলকে বড়ো ও ভালো করতে চাইলে জিব্বেরেলিন ও সাইটোকাইনিন ব্যবহার করবেন। কারণ জিব্বেরেলিন যেমন ফলের আকৃতি বাড়াতে সাহায্য করে। তেমনি সাইটোকাইনিন বার্ধক্য বিলম্বিত করে। এর ফলে বাজারদর মতো ফল বিক্রি করতে তিনি অপেক্ষা করতে পারবেন ।
প্রশ্ন: হরমোনকে উদ্ভিদের বৃদ্ধি-নিয়ন্ত্রক বলার কারণ কী?
🢖🢖উত্তর: হরমোন উদ্ভিদদেহের বিভিন্ন প্রকার বৃদ্ধি ও বৃদ্ধি-সম্পর্কিত চলনকে নিয়ন্ত্রণ করে, যেমন—অগ্র ও পার্শ্বীয় মুকুলের বৃদ্ধি,ফলের বৃদ্ধি, ট্রপিক চলন প্রভৃতি। এই কারণে হরমোনকে উদ্ভিদের বৃদ্ধি-নিয়ন্ত্রক বলা হয়।
প্রশ্ন: উদ্ভিদের 3টি বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রক হরমোনের নাম লেখো।
🢖🢖উত্তর: উদ্ভিদের বৃদ্ধি যে সমস্ত বিশেষ জৈবরাসায়নিক পদার্থ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়, তাদের উদ্ভিদের বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রক পদার্থ বলে। উদ্ভিদের 3টি বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রক হরমোন হল—[1] অক্সিন, [2] জিব্বেরেলিন, [3] সাইটোকাইনিন।
প্রশ্ন: অক্সিনের রাসায়নিক নাম এবং প্রকৃতি লেখো?
🢖🢖উত্তর:রাসায়নিক নাম: ইনডোল অ্যাসেটিক অ্যাসিড (IAA)
🢖🢖রাসায়নিক প্রকৃতি: অক্সিন হল কার্বন, হাইড্রোজেন, অক্সিজেন ও নাইট্রোজেনযুক্ত জৈব অ্যাসিড।
প্রশ্ন: প্রাকৃতিক ও কৃত্রিম অক্সিনের রাসায়নিক নাম লেখো ।
🢖🢖উত্তর:প্রাকৃতিক অক্সিন: ইনডোল অ্যাসেটিক অ্যাসিড (IAA)। » কৃত্রিম অক্সিন: [1] ইনডোল প্রোপিওনিক অ্যাসিড (IPA)। [2] ইনডোল বিউটারিক অ্যাসিড (IBA)।
প্রশ্ন: রিচমন্ড-ল্যং প্রভাব কাকে বলে?
🢖🢖উত্তর: সাইটোকাইনিন হরমোনটি ক্লোরোফিল, প্রোটিন ও নিউক্লিক অ্যাসিডের ধ্বংস প্রতিরোধ করে উদ্ভিদের পর্ণমোচন রোধ করে। এভাবে উদ্ভিদের অন্যান্য অঙ্গের জরাপ্রাপ্তিও বিলম্বিত হয়। একে রিচমন্ড-ল্যং প্রভাব বলে।
প্রশ্ন: উদ্ভিদের কাণ্ডের অগ্রভাগ কেটে দিলে প্রচুর শাখাপ্রশাখা বের হয় কেন?
🢖🢖উত্তর: উদ্ভিদের কাণ্ডের অগ্রভাগ কেটে দিলে অক্সিনের প্রভাব হ্রাস পায় ও সাইটোকাইনিন প্রভাবে প্রচুর শাখাপ্রশাখা বের হয়।
উদ্ভিদের সাড়া প্রদান এবং রাসায়নিক সমন্বয় -- হরমোন বড় প্রশ্ন উত্তর || জীবজগতে নিয়ন্ত্রণ ও সমন্বয় (প্রথম অধ্যায়) Mark - 5
প্রশ্ন: উদ্ভিদ হরমোনের সাধারণ বৈশিষ্ট্যগুলি লেখো।
🢖🢖উত্তর: উদ্ভিদ হরমোনের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যগুলি নিম্নরূপ।
i) উৎস:
উদ্ভিদের কান্ড ও মূলের অগ্রভাগে উপস্থিত ভাজক কলার কোশগুলি উদ্ভিদ হরমোনের অন্যতম প্রধান উৎসস্থল। এ ছাড়া বীজপত্র, মুকুলিত কচি পাতা, ভ্রূণমূল, ভ্রূণমুকুল, বর্ধনশীল পাতার কোশ থেকেও হরমোন ক্ষরিত হয়। ও পরিবহণের ধরন: উদ্ভিদ হরমোনগুলি উৎপত্তি স্থানের নিকটবর্তী ও দূরবর্তী স্থান উভয় অঞ্চলেই কার্যকরী হয়। উদ্ভিদ হরমোন উৎসস্থল থেকে প্রধানত ব্যাপন প্রক্রিয়ায় সংবহন কলার মাধ্যমে কার্যস্থলে পরিবাহিত হয়।
ii) কাজ:
অগ্র ও পার্শ্বীয় বৃদ্ধি, ফুলের পরিস্ফুটন, বীজের অঙ্কুরোদ্গম, মুকুলোদ্গম, সংবেদনশীলতা, জরারোধ প্রভৃতিতে হরমোন সাহায্য করে।
iii) পরিণতি:-
ক্রিয়ার শেষে উদ্ভিদ হরমোনগুলি বিনষ্ট হয়। বিভিন্ন হরমোন বিভিন্ন উৎসেচক বা অন্য কোনো শর্তের প্রভাবে বিনষ্ট হয়। যেমন, অক্সিন হরমোনটি আলোর প্রভাবে বা ইনডোল অ্যাসিটিক অ্যাসিড অক্সিডেজ নামক উৎসেচকের ক্রিয়ায় বিনষ্ট হয়। জিব্বেরেলিন, জিব্বেরেলিন অক্সিডেজের ক্রিয়ায় ও সাইটোকাইনিন, সাইটোকাইনিন অক্সিডেজের ক্রিয়ায় বিনষ্ট হয়।
প্রশ্ন: অক্সিনের সংজ্ঞা লেখো। অক্সিনের বৈশিষ্ট্যগুলি কী?
🢖🢖উত্তর: উদ্ভিদের অগ্রসস্থ ভাজক কলা থেকে উৎপন্ন নাইট্রোজেনযুক্ত (ইনডোল বর্ণযুক্ত) অম্লধর্মী বৃদ্ধি সহায়ক যে উদ্ভিদ হরমোন, মূলত নিম্নাভিমুখে পরিবাহিত হয় এবং উদ্ভিদের বৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করে, তাকে অক্সিন বলে।
অক্সিনের বৈশিষ্ট্য:
অক্সিন হরমোনের বৈশিষ্ট্যগুলি নীচে সংক্ষেপে আলোচনা করা হল।
[1] অক্সিন উদ্ভিদের বৃদ্ধিতে সহায়তাকারী একপ্রকার হরমোন।
[2] এটি প্রধানত কার্বন, হাইড্রোজেন, অক্সিজেন এবং
নাইট্রোজেন নিয়ে গঠিত একপ্রকার জৈব অ্যাসিড।
[3] ট্রিপটোফ্যান নামক অ্যামিনো অ্যাসিড থেকে অক্সিন সংশ্লেষিত হয়।
[4] এটি উদ্ভিদের বর্ধনশীল অঙ্গ, প্রধানত ভূণমুকুলাবরণী, কাণ্ড ও মূলের অগ্রস্থ ভাজক কলা থেকে উৎপন্ন হয়ে ফ্লোয়েম কলার মাধ্যমে সাধারণত নিম্নাভিমুখে পরিবাহিত হয়। তবে মূলের অগ্রভাগে উৎপন্ন অক্সিন নীচ থেকে কিছুটা ওপরের দিকে পরিবাহিত হয়।
[5] এই হরমোনের সংশ্লেষ সাধারণত আলোক উৎসের বিপরীতে হয়।
[6] এর ক্রিয়া প্রধানত মেরুবর্তী এবং এটি ক্রিয়ার পর ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়
। [7] এটি জলে দ্রবণীয় হওয়ার ফলে ব্যাপন ক্রিয়ার মাধ্যমে সহজেই পরিবাহিত হয়।
[৪] আলোকের উৎসের বিপরীতে অর্থাৎ অন্ধকারে অক্সিনের ক্রিয়া সর্বাধিক।
[9] মূলের ক্ষেত্রে স্বপ্ন ঘনত্বে এবং কাণ্ডের ক্ষেত্রে তুলনামূলকভাবে অধিক ঘনত্বে অক্সিন কাজ করে।
প্রশ্ন: উদ্ভিদদেহে অক্সিনের ভূমিকা লেখো।
🢖🢖উত্তর:অক্সিনের ভূমিকা-: উদ্ভিদদেহে অক্সিন নিম্নলিখিত ভূমিকাগুলি পালন করে। অগ্রস্থ প্রকটতা ও পার্শ্বীয় মুকুলের বৃদ্ধি হ্রাস:- অক্সিনের প্রভাবে উদ্ভিদের কাণ্ডের অগ্রমুকুল বৃদ্ধি পায় ও পার্শ্বীয় বা কাক্ষিক মুকুলগুলির বৃদ্ধি ব্যাহত হয়। পার্শ্বীয় মুকুলের ওপর অগ্রমুকুলের এই প্রাধান্যকে অগ্রস্থ প্রকটতা বলে। এর ফলে কাণ্ড দৈর্ঘ্যে বৃদ্ধি পায়। কিন্তু, যদি অগ্রমুকুল কেটে ফেলা হয় সেক্ষেত্রে কাক্ষিক মুকুল দ্রুত বৃদ্ধি পেয়ে গাছটিকে ঝোপের আকৃতি দেয়।
কোশ বিভাজন ও কোশের আকার বৃদ্ধি:- অক্সিন কোশে DNA-র পরিমাণ বৃদ্ধি করে কোশের বিভাজনে সাহায্য করে এবং কোশ বিভাজনের দ্বারা কোশের সংখ্যা বৃদ্ধি করে। এ ছাড়া অক্সিন কোশপ্রাচীরকে নমনীয় করে কোশের আকার ও আয়তন বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। এই হরমোনের প্রভাবে পরিণত কোশে কোশ গহ্বরের সৃষ্টি হয় যার ফলে কোশ আয়তনে বৃদ্ধি পায়।
ফলের বৃদ্ধি: নিষেকের পর ডিম্বাশয়ে অক্সিনের পরিমাণ বাড়ে। এর প্রভাবে ডিম্বক বীজে এবং ডিম্বাশয় ফলে পরিণত হয়। অনেকসময় নিষেকের পূর্বেই ডিম্বাশয়ে অক্সিনের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। তখন ডিম্বাশয় নিষেক ছাড়াই ফলে পরিণত হয়। কিন্তু নিষেক না হওয়ায় ডিম্বক বীজে পরিণত হয় না, ফলে বীজবিহীন ফল উৎপন্ন হয়। এইভাবে নিষেক ছাড়া ফল উৎপাদনকে পার্থেনোকাশি বলা হয়। পার্থেনোকার্ণিক ফল উৎপাদনে অক্সিনের ভূমিকা আছে।
প্রশ্ন: সংশ্লেষিত হরমোন কাকে বলে? সংশ্লেষিত হরমোনের চারটি ভূমিকা উল্লেখ করো।
🢖🢖উত্তর: সংশ্লেষিত হরমোন: গবেষণা দ্বারা আবিষ্কৃত ও রসায়নগারে প্রস্তুত যে রাসায়নিক পদার্থগুলি প্রাকৃতিক হরমোনের সমধর্মী ও একইভাবে কার্যকরী হয়, তাদের কৃত্রিম হরমোন বলে। যেমন—কৃত্রিম অক্সিন, কৃত্রিম জিব্বেরেলিন ইত্যাদি।
কৃত্রিম বা সংশ্লেষিত হরমোনের ভূমিকা কৃত্রিম উদ্ভিদ হরমোনগুলি কৃষিবিদ্যা, উদ্যালপালনবিদ্যা, ফলচাষ প্রভৃতি ক্ষেত্রে বর্তমানে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়।
এই হরমোনগুলির কয়েকটি ভূমিকা নীচে আলোচিত হল:-
i) শাখা থেকে নতুন উদ্ভিদ সৃষ্টি বা কলম তৈরি করা: শাখাকলম পদ্ধতির মাধ্যমে উদ্ভিদের অঙ্গজ বংশবিস্তারে কৃত্রিম হরমোন বিশেষ ভুমিকা পালন করে। যেমন— গোলাপ, জবা, বেল, গাঁদা, চন্দ্রমল্লিকা প্রভৃতি উদ্ভিদের ক্ষেত্রে গাছের শাখা থেকে নতুন উদ্ভিদ সৃষ্টির জন্য কৃত্রিম অক্সিন প্রয়োগ করা হয়। এইসব গাছের শাখা কেটে, কাটা অংশে অক্সিনের দ্রবণ লাগিয়ে মাটিতে রোপণ করা হলে কয়েক দিনের মধ্যে ওই স্থান থেকে অস্থানিক মূল সৃষ্টির মাধ্যমে নতুন গাছ উৎপন্ন হয়। এই পদ্ধতিটি শাখাকলম নামে পরিচিত।
ii) অপরিণত ফলের মোচন রোধ: -
গাছের থেকে অপরিণত শাখাকলম পদ্ধতি- (ক) শাখা কাটা, (খ) কাটা অংশের রোপণ ফলের পতন হলে ফলন কমে যায়...
আম, কলা, আঙুর প্রভৃতি ফলচাষের ক্ষেত্রে এটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা। গাছে কৃত্রিম অক্সিনের দ্রবণ স্প্রে করে বিভিন্ন উদ্ভিদের অপরিণত ফলের মোচন রোধ করা যায়। তা ছাড়া, অক্সিন স্প্রে করলে পাকা ফলের পতনও বিলম্বিত হয়। কৃত্রিম সাইটোকাইনিন ও জিব্বেরেলিনেরও একইরকম কার্যকরিতা লক্ষ করা যায়। এইভাবে কৃত্রিম হরমোনের প্রয়োগ দ্বারা বিভিন্ন ফলের উৎপাদন বৃদ্ধি করা যায়।
iii) আগাছানাশক হিসেবে কৃত্রিম হরমোন :-কৃষিক্ষেত্রে জন্মানো আগাছা বা অবাঞ্ছিত উদ্ভিদ মাটি থেকে পুষ্টি সংগ্রহ করে একদিকে যেমন মাটির উর্বরতা হ্রাস করে, অপরদিকে ফসলের মধ্যে বিভিন্ন রোগের সৃষ্টি করে ফলন কমায়। তাই কৃষিক্ষেত্র থেকে আগাছা নির্মূল করা খুবই প্রয়োজন। বিভিন্ন প্রকার কৃত্রিম অক্সিন প্রয়োগের মাধ্যমে কৃষিক্ষেত্রকে আগাছামুক্ত করা যায়। যেমন—একপ্রকার কৃত্রিম অক্সিন (যেমন –2, 4-D) নির্দিষ্ট মাত্রায় প্রয়োগ করলে দ্বিবীজপত্রী উদ্ভিদ ধ্বংস হয়। তাই ধান, গম, যব ইত্যাদি একবীজপত্রী উদ্ভিদের চাষের সময় দ্বিবীজপত্রী আগাছানাশক হিসেবে কৃত্রিম অক্সিন ব্যবহার করা হয়।
iv) পার্থেনোকার্গিক ফল সৃষ্টি :-নিষেক ছাড়াই ফল সৃষ্টি হলে ফলে বীজ সৃষ্টি হয় না এবং ফলের আকারও বৃদ্ধি পায়। নিষেকের পূর্বে ডিম্বাশয়ে কৃত্রিম অক্সিনের দ্রবণ প্রয়োগ করে উন্নত মানের এবং বীজহীন পেয়ারা, খেজুর, আঙুর, কলা, ইত্যাদি। ফল উৎপাদন করা হয়। কিছুকিছু ফলের ক্ষেত্রে কৃত্রিম জিব্বেরেলিনের প্রয়োগ দ্বারা বীজহীন ফল উৎপাদন করা হয়। যেমন, টম্যাটোর ক্ষেত্রে কৃত্রিম জিব্বেরেলিন, কৃত্রিম অক্সিনের তুলনায় প্রায় 500 গুণ বেশি কার্যকরী। উক্ত দুটি হরমোনের সাহায্যে। বর্তমানে তরমুজ, টম্যাটো প্রভৃতি পার্থেনোকার্থিক ফল তৈরি করা হচ্ছে।
No comments:
Post a Comment