সপ্তম শ্রেণীর পরিবেশ ও বিজ্ঞান বিষয়ের একটি বিশেষ গুরুত্ব পূর্ণ অধ্যায় হলো, "মানুষের খাদ্য " পার্ট -2 এই অধ্যায়ের কিছু বিশেষ বিশেষ প্রশ্ন উত্তর করা হয়েছে এই পোস্টটিতে ।
⬛অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর : প্রতিটা প্রশ্নের মান -1
1.. আমরা যে খাদ্য প্রতিদিন গ্রহণ করি তার কী পরিণতি হয়?
উঃ। খাদ্যনালীতে খাদ্য হজম হয়ে শোষিত হয়। যে খাদ্য হজম হয় না তা মল হয়ে দেহ থেকে বেরিয়ে যায়।
2. আপেলের বদলে আর কী খাওয়া যায়?
উঃ । পাকা পেয়ারা, পাকা পেঁপে।
3. মাংসের বদলে আর কী খাওয়া যায়?
উঃ। সয়াবিন, ছোলা, মটর, ডাল।
4. আয়রন টনিকের বদলে আর কী খাওয়া যায়?
উঃ। নটেশাক, কাঁচা পেয়ারা।
5. আয়রনের অভাবে কী কী রোগ হয়?
উঃ। অ্যানিমিয়া। চামচ আকৃতির নখ।
6. ভিটামিন A-এর অভাবে কী কী রোগ হয়?
উঃ। অন্ধত্ব, হাড় বেঁকে যাওয়া, চোখের মণিতে সাদা দাগ হওয়া।
7. প্রোটিন ও শক্তির অভাবে কী রোগ হয়?
উঃ। ম্যারাসমাস কোয়াশিওরকার।
8. ভিটামিন B-কমপ্লেক্স-এর অভাবে কী রোগ হয়?
উঃ। বেরিবেরি, স্নায়ুর দুর্বলতা, পাতলা পায়খানা, স্মৃতিভ্রংশ হওয়া প্রভৃতি রোগ হয়ে থাকে।
9. মানুষের স্থূলত্বের কারণ কী?
উঃ। প্রয়োজনের তুলনায় বেশি খাদ্য গ্রহণ করা।
10. কয়েকটি প্রাকৃতিক খাদ্যের নাম করো।
উঃ। আম, জাম, পেয়ারা, শশা।
11. কয়েকটি প্রক্রিয়াজাত খাদ্যের নাম করো।
উঃ। জ্যাম, জেলি, আচার, রুটি, ভাত ইত্যাদি।
12. কারখানার তৈরি কয়েকটি খাদ্যের নাম করো।
উঃ। কোল্ড ড্রিঙ্কস, পপকর্ন, চিপস্।
13. আইসক্রিমে কী মিশে থাকে?
উঃ। কারাজিনাম।
14. পটাটো চিপস-এ কী মিশে থাকে?
উঃ। ট্রান্স ফ্যাট।
15. হলুদ মিষ্টি ও সস্তা বিরিয়ানিতে কী মিশে থাকে?
উঃ। মেটানিল ইয়েলো নামক ক্ষতিকারক পদার্থ মিশে থাকে।
16. BMI কী?
উঃ। BMI হল দেহের স্থূলত্ব পরিমাপক সূচক।
17. খাদ্যের প্রধান উপাদানগুলি কী কী ?
উঃ। প্রোটিন, শর্করা বা কার্বোহাইড্রেট, খাদ্যতত্ত্ব ও উদ্ভিদ রাসায়নিক (ফাইটোকেমিক্যাল), লিপিড, ভিটামিন, জল ও খনিজ মৌল।
18. কোন্ খনিজ মৌল রক্তে শর্করার পরিমাণ বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে যুক্ত ?
উঃ । জিঙ্ক।
19. অনেক মানুষ দুগ্ধজাত খাবার খাওয়ার পর নানা সমস্যায় ভোগেন কেন ?
উঃ। দুগ্ধজাত খাবারে থাকা দুগ্ধ শর্করা ল্যাকটোজ হজম করতে না পারার জন্য এই সমস্যা হয়ে থাকে।
20. কোন্ কোন্ প্রাণীজ খাদ্য থেকে শর্করা পাওয়া যায়?
উঃ। মেটে, দুধ, মধু ইত্যাদি।
21. কোন্ কোন্ উদ্ভিজ্জ খাদ্য থেকে শর্করা পাওয়া যায় ?
উঃ। আলু, গম, চাল, শাঁকালু, আখ, পাকা আম ইত্যাদি।
22. দেহ গঠনের জন্য আমরা কয় ধরনের শর্করা ব্যবহার করি ও কী কী?
উঃ। দু ধরনের। যথা— গ্লুকোজ ও স্টার্চ বা শ্বেতসার।
23. হাত-পায়ের পেশি কী কাজ করে ?
উঃ। হাত-পায়ের পেশি আমাদের সোজা হয়ে দাঁড়াতে ও গমনে সাহায্য করে।
24. ফুসফুস কী কাজ করে?
উঃ ফুসফুস শ্বসনকার্য সম্পন্ন করে।
25. অস্ত্র কী কাজ করে?
উঃ অস্ত্র পাচিত খাদ্যবস্তু শোষণ করে।
26. পেটে কৃমি হলে দেহে কোন্ খনিজ মৌলের অভাব দেখা দেবে?
উঃ। দেহে লোহার অভাব দেখা দেবে।
27. প্রোটিন কী ভূমিকা পালন করে?
উঃ। প্রোটিন দেহের কলা গঠনে, ক্ষত সারাতে, পেশির সংকোচন ও শ্বাসবায়ুর পরিবহনে সাহায্য করে।
28. কোন্ কোন্ উদ্ভিজ্জ উৎস থেকে প্রোটিন পাওয়া যায় ?
উঃ। মটরশুঁটি, সিম, ডাল, গম ও সয়াবিন থেকে প্রোটিন পাওয়া যায়।
29. কোন্ কোন্ প্রাণীজ উৎস থেকে প্রোটিন পাওয়া যায় ?
উঃ। মাছ, মাংস, ছানা, পনির, কাঁকড়া ও ডিম থেকে প্রোটিন পাওয়া যায়।
30. দেহের কোন্ কোন্ স্থানে প্রচুর পরিমাণে লিপিড জমা থাকে?
উঃ। ঘাড়ে ও গলায়, ওপর হাতে, বুকে, পেটে ও উরুতে লিপিড জমা থাকে।
31. শরীরে বেশি লিপিড জমা হলে কী সমস্যা হয় ?
উঃ। শরীরে বেশি লিপিড জমা হলে হৃৎপিণ্ড, রক্তনালী ও যকৃতের নানা সমস্যা তৈরি হয়।
32. কোন্ কোন্ উদ্ভিজ্জ উৎস থেকে লিপিড পাওয়া যায়?
উঃ। আটা, ডাল, নারকেল, জোয়ান, কাঁঠাল ইত্যাদি থেকে লিপিড পাওয়া যায়।
33. কোন্ কোন্ প্রাণীজ উৎস থেকে লিপিড পাওয়া যায় ?
উঃ। মাছের তেল, দুধ, দই, মাংস ও ডিম থেকে লিপিড পাওয়া যায়।
34. ভিটামিন A কী কাজ করে?
উঃ। ভিটামিন A চোখ, চামড়া, হাড়, দাঁত ও খাদ্যনালীর গঠন ঠিক রাখতে সাহায্য করে।
35. ভিটামিন E কী কাজ করে?
উঃ। ভিটামিন E ত্বক, লোহিত রক্তকণিকা, হূৎপিণ্ড ও মস্তিষ্কের সক্রিয়তা বজায় রাখে।
36. কোন্ কোন্ উদ্ভিজ্জ উৎস থেকে ভিটামিন পাওয়া যায়?
উঃ। পাকা আম, ডুমুর, জলপাই, ধনে পাতা, নটে শাক, তেল, ডাল ইত্যাদি থেকে।
37. কোন্ কোন্ প্রাণীজ উৎস থেকে ভিটামিন পাওয়া যায়?
উঃ। মাংস, ঘি, ছানা, কাকড়া, চিংড়ি ইত্যাদি থেকে।
38. কয়েকটি প্রয়োজনীয় খনিজ মৌলের নাম উল্লেখ করো।
উঃ। আয়রন, ক্যালশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, সোডিয়াম, আয়োডিন ও জিঙ্ক।
39. ক্যালশিয়াম ও ফসফরাসের অভাবে কী সমস্যা হয় ?
উঃ। বারবার হাড় ভেঙ্গে যাওয়া, বেঁকে যাওয়া, হাড় ফুটো হওয়া ও দাঁতের সমস্যা।
40. বেশি পরিমাণে তন্তু থাকে এমন কিছু খাবারের নাম লেখো।
উঃ। সজনে ডাঁটা, বাঁধাকপি, চাল, আপেল, ওট, বীজের খোসা, ডাঁটাশাক, নটে শাক, আম ইত্যাদি।
41. মানুষের শরীরে ক্যারোটিনয়েডের ভূমিকা কী ?
উঃ। এরা মানবদেহের খুব তাড়াতাড়ি বুড়ো হয়ে যাওয়া আর্টকায়, হূৎপিন্ডের কাজ ঠিক রাখে। হাড় শক্ত রাখে এবং ক্যানসার হওয়ার সম্ভাবনা কমায়।
42. শরীর সুস্থ রাখতে কোন্ কোন্ খাদ্য উপাদান খাওয়া প্রয়োজন ?
উঃ। কার্বোহাইড্রেট প্রোটিন, লিপিড, ভিটামিন, খনিজ মৌল ও জল ।
43. জেলি কী কী দিয়ে তৈরি হয়?
উঃ । আনারস, পেয়ারা, আম, টমেটো প্রভৃতি ফল বা সবজি দিয়ে তৈরি হয়।
44. চাউমিনে ও মোমোতে কোন্ ক্ষতিকারক পদার্থ মেশানো হয়?
উঃ । আজিনোমোটো।
45. পৃথিবীতে নোনা জল ও মিষ্টি জলের পরিমাণ কত?
উঃ নোনা জল - 97% ও মিষ্টি জল-3%।
46. ভূ-পৃষ্ঠের জল কোথায় কত পরিমাণে থাকে?
উঃ হ্রদ-87%, নদী-2% ও জলাভূমি- 11%।
46. বাড়িতে কীভাবে পানীয় জল বিশুদ্ধ করা হয়?
উঃ জল অন্তত 20 মিনিট ফুটিয়ে ঠান্ডা করা, হ্যালোজেন ট্যাবলেট দিয়ে জল শোধন করা এবং ফিল্টার যন্ত্র ব্যবহার করে পানীয় জল বিশুদ্ধ করা হয়।
⬛ সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর : প্রতিটা প্রশ্নের মান -2/3
1. দেহে ব্যবহৃত জল আমরা কোথা থেকে পাই? একজন সুস্থ ব্যক্তির কতটা পরিমাণ জল পান করা উচিত?
উঃ। পানীয় জলের মাধ্যমে, তরমুজ, শশা, ভাত, ডাবের জল, আঙুর ইত্যাদি থেকে আমরা জল পাই। একজন সুস্থ ব্যক্তি যদি তার দেহ ওজনের কেজি প্রতি 50 মিলিলিটার জল দৈনিক পান করেন। তবেই তার দেহে সঠিক পরিমান জলের চাহিদা পূরণ হয়।
2. কোন্ কোন্ অবস্থায় দেহে জলের চাহিদা বৃদ্ধি পায়?
উঃ। অনেকটা ঘাম অথবা বারবার পাতলা পায়খানা হলে এবং তৃস্না পেলে জলের চাহিদা বৃদ্ধি পায়।
3. শিশুর অপুষ্টিজনিত সমস্যা কী করে সারানো যায়?
উঃ। নানা ধরনের পুষ্টিযুক্ত খাদ্য (যথা- গুড়, কিশমিশ, পেয়ারা, নটেশাক, আয়োডিন যুক্ত লবণ, ঢেঁকিছাটা চাল, দুধ, মাখন, কমলালেবু, ডিম, ছানা ইত্যাদি) খাওয়ানো উচিত।
4. মানুষের ওজন বেড়ে যাওয়ার ফলে কী কী সমস্যা দেখা দেয় ? কোন্ ধরনের খাদ্য খেলে স্থূলত্বের প্রবণতা রোধ করা যায় ?
উঃ। রক্ত চাপ বৃদ্ধি পাওয়া, রক্তে শর্করার পরিমাণ বেড়ে গিয়ে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়া, হৃৎপিণ্ডের নানা সমস্যা। তেলমশলাহীন, ফল, সবজি, রুটি, ছোটো মাছ, ফল, ডাল ও তত্ত্বযুক্ত খাদ্য খেলে স্থূলত্বের প্রবণতা রোধ করা যায়।
5. খাদ্যতন্তু কী? তত্ত্বসমৃদ্ধ খাদ্য খেলে কী উপকার হয়?
উঃ। খাদ্যতত্ত্ব এক ধরনের সেলুলোজ বা পেকটিন জাতীয় কার্বোহাইড্রেট। এটি জলে গুলতেও পারে নাও পারে। মানুষের দেহ তত্ত্ব ভেঙে শক্তি উৎপন্ন করতে পারে না। তত্ত্বসমৃদ্ধ খাদ্য খেলে উচ্চ রক্তচাপ, স্থূলত্ব, অস্ত্রের ক্যানসার, কোষ্ঠকাঠিন্য প্রভৃতি রোগ হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়।
6. কোন্ ব্যক্তিকে স্থূল বা মোটা বলে ধরা হয়?
উঃ। বয়স ও উচ্চতার তুলনায় একজন ব্যক্তির যে ওজন হওয়া উচিত তার 20% বেশি হলে সেই ব্যক্তিকে স্থূল বা মোটা বলে ধরা হয়।
7. প্রক্রিয়াজাত আর কৃত্রিম খাবার বেশি খেলে কী কী শারীরিক সমস্যা দেখা যায়?
উঃ। হৃৎপিণ্ড, যকৃৎ, বৃক্ক, হাড় বা মস্তিষ্কের ক্ষতি হতে পারে। শরীর ভালো রাখার জন্য হলুদ, গোলাপি বা উজ্জ্বল লাল রং মেশানো খাবার না খাওয়াই ভালো।
8. ভিটামিন কাকে বলে?
উঃ। যেজৈব পরিপোষক সাধারণ খাদ্যে স্বল্প পরিমাণে উপস্থিত থেকে জীবদেহের স্বাভাবিক পুষ্টি ও বৃদ্ধিতে সাহায্য করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে তাকে ভিটামিন বলে।
9. ক্যারোটিনয়েডস বা ফ্ল্যাভোনয়েডস কী কাজ করে?
উঃ। এগুলি নানা রঙের উদ্ভিজ্জ রাসায়নিক যৌগ। এরা মানবদেহের খুব তাড়াতাড়ি বুড়ো হয়ে যাওয়া আটকায়।হূৎপিন্ডের কাজ ঠিকঠাক রাখে। হাড়কে শক্ত করে ও ক্যানসার-এর সম্ভাবনা কমায়।
10. কী কী কারণে অপুষ্টি দেখা দেয়?
উঃ। খাদ্যে শক্তি উৎপাদক উপাদানগুলির অভাব ঘটলে অপুষ্টির সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়। এছাড়া শক্তি উৎপাদক নয় এমন খাদ্য উপদানের অভাব ঘটলেও অপুষ্টিজনিত নানা সমস্যা দেখা যায়। কৃমির সমস্যা থাকলেও অপুষ্টি হতে পারে।
No comments:
Post a Comment