তৃতীয় অধ্যায় "পরমাণু অনু,ও রাসায়নিক বিক্রিয়া" প্রশ্ন উত্তর পড়তে নিচের লিংকে ক্লিক করো
👉 ( পরমাণু , অনু ও রাসায়নিক বিক্রিয়া প্রশ্ন উত্তর )
সপ্তম শ্রেণীর পরিবেশ ও বিজ্ঞান বিষয়ের একটি বিশেষ গুরুত্ব পূর্ণ অধ্যায় হলো, "সময় ও গতি" এই অধ্যায়ের কিছু বিশেষ বিশেষ প্রশ্ন উত্তর করা হয়েছে এই পোস্টটিতে ।
⬛অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর : প্রতিটা প্রশ্নের মান -1 /2
1. গতি কয় ধরনের ও কী কী?
উঃ। গতি দুই ধরনের—(1) চলন গতি। (2) আবর্ত গতি।
2. ঘূর্ণায়মান বৈদ্যুতিক পাখার গতি কী ধরনের গতি?
উঃ। আবর্ত গতি।
3. ভূপৃষ্ঠে পতনশীল পাথরখণ্ডের গতি কী ধরনের গতি?
উঃ। চলন গতি।
4. চলন্ত গাড়ির চাকার গতি কী ধরনের গতি?
উঃ । মিশ্রগতি।
5. সরণ কী ?
উঃ। কোনো নির্দিষ্ট দিকে গতিশীল কোনো বস্তুর একই পথ অতিক্রম করাকে বা অবস্থানের পরিবর্তন কে ওই বস্তুর সরণ বলে।
6. একটি ক্রিকেট বল ভূমির উপর দিয়ে সবেগে গড়াতে গড়াতে চলছে। ক্রিকেট বলটি কী কী গতির অধিকারী ?
উঃ। ক্রিকেট বলটি চলনগতি ও ঘূর্ণনগতির অধিকারী হবে।
7. দ্রুতি কী ?
উঃ। একটি গতিশীল কণা একক সময়ে যে পথ অতিক্রম করে, তাকে ওই কণার দ্রুতি বলা হয়।
৪. ত্বরণ কী?
উঃ। চলমান বস্তুর বেগ বৃদ্ধির হারকে ত্বরণ বলা হয়।
9. মন্দন কী?
উঃ। সময়ের সাপেক্ষে কোনো বস্তুর বেগ হ্রাস পাওয়ার হারকে মন্দন বলে।
10. বেগ কী?
উঃ। কোনো গতিশীল বস্তু একক সময়ে নির্দিষ্ট দিকে যে দূরত্ব অতিক্রম করে তাকে বস্তুটির বেগ বলা হয়।
11. বেগের একক কী ?
উঃ । SI পদ্ধতিতে বেগের একক মিটার/সেকেন্ড।
12. সরণের একক কী ?
উঃ । S.I. পদ্ধতিতে সরণের একক মিটার।
13. বল কী ?
উঃ। বাইরে থেকে যা প্রয়োগ করে বস্তুর স্থির বা গতিশীল অবস্থার পরিবর্তন করা হয় বা করানোর চেষ্টা করা হয় তাকে বল বলে।
14. প্রিন্সিপিয়া গ্রন্থের লেখক কে?
উঃ স্যার আইজ্যাক নিউটন।
15. নিউটনের কয়টি গতি সূত্র?
উঃ। নিউটনের তিনটি গতি সূত্র।
16. শক্তি কী ?
উঃ। কাজ করার সামর্থ্যকে শক্তি বলে।
17. খাবার থেকে আমরা কী পাই?
উঃ। খাবার থেকে আমরা শক্তি পাই।
18. কাজ পরিমাপের SI পদ্ধতিতে একক কী ?
উঃ। জুল।
19. কাজের পরিমাণ কীসের ওপর নির্ভর করে?
উঃ। কাজের পরিমাণ = ( প্রযুক্ত বল ) × ( প্রযুক্ত বলের প্রভাবে বস্তুর সরণের পরিমাণ)
20. শ্বসনের হার বেড়ে যাওয়ার জন্য কী উৎপন্ন হয়?
উঃ। তাপ উৎপন্ন হয়।
21. উদাহরণ সহ বুঝিয়ে দাও বেগের পরিবর্তন হলেও ত্বরণের মান শূন্যই থাকে।
উঃ। সমুদ্রতিতে বৃত্তপথে আবর্তনশীল কোনো বস্তুকণার গতি।
22. নিউটনের কোন্ সূত্রকে জাড্যের সূত্র বলা হয় ?
উঃ। প্রথম গতিসূত্রকে।
⬛ সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর : প্রতিটা প্রশ্নের মান -2/3
1. শক্তির সংজ্ঞা দাও। শক্তির বিভিন্ন রূপ কী কী ?
উঃ। কোনো বস্তুর কাজ করার সামর্থ্যকে শক্তি বলে। অর্থাৎ কাজ ও শক্তির একক অভিন্ন।
শক্তির বিভিন্ন রূপ—তাপশক্তি, আলোকশক্তি, যান্ত্রিক শক্তি, শব্দশক্তি, তড়িৎ শক্তি, চৌম্বক শক্তি, রাসায়নিক শক্তি।
2. বস্তুর ভর ও জাড্যের মধ্যে সম্পর্ক কী ?
উঃ। জাড্য পদার্থের মৌলিক ধর্ম। বস্তুর ভর বেশি হলে ওর জাড্যও বেশি হয় সুতরাং ভরই জাড্যের পরিমাপক।
3. জাড্য কয় প্রকার ও কী কী?
উঃ। জাড্য দুই প্রকার, স্থিতিজাড্য ও গতিজাড়া।
5. কার্যহীন বল কী ? উদাহরণ দাও।
উঃ। বস্তুর উপর প্রযুক্ত কোনো বল যখন বস্তুর সরণের অভিমুখের সঙ্গে লম্বভাবে ক্রিয়া করে তখন ওই বল কোনো কার্য করে না। এই বলকে কার্যহীন বল বলে।
6. কোন্ কোন্ ঘটনা আমাদের বুঝতে সাহায্য করে যে শরীরের ভেতর শক্তি খরচ হয়েছে?
উঃ। শরীরের ক্লান্তি, হৃৎস্পন্দনের হার বৃদ্ধি, গা গরম হওয়া ইত্যাদি ঘটনা আমাদের বুঝতে সাহায্য করে যে শরীরের ভেতর শক্তি খরচ হয়েছে।
7. টীকা লেখো : স্যার আইজ্যাক নিউটন।
উঃ। স্যার আইজ্যাক নিউটন : 1642 খ্রিস্টাব্দে ইংল্যান্ডের উলসথর্প গ্রামে এক চাষির পরিবারে স্যার আইজ্যাক নিউটন জন্মগ্রহণ করেন। 1669 খ্রিস্টাব্দে মাত্র 27 বছর বয়সে তিনি কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হন। তাঁর গতিসূত্র, মহাকর্মসূত্র, সূর্যরশ্মির বর্ণালি, আলোর কণিকাতত্ত্ব, দ্বিপদ উপপাদ্য, ক্যালকুলাস বিজ্ঞান ও গণিতের জগতে নতুন দিগন্তের সূচনা করে। তাঁর লেখা বিশ্ববিখ্যাত গ্রন্থ 'প্রিন্সিপিয়া । 1672 থেকে টানা 25 বছর তিনি রয়াল সোসাইটির সভাপতি ছিলেন। 1727 খ্রিস্টাব্দে তাঁর জীবনাবসান হয়।
8. গড়দ্রুতি বলতে কী বোঝ?
উঃ। কোনো বস্তুকণা যদি ভিন্ন ভিন্ন সময়ে ভিন্ন ভিন্ন পরিমাণ দূরত্ব অতিক্রম করে, তবে সেই গতি বোঝাতে গড়দ্রুতির ধারণা ব্যবহার করা হয়।
9. গড়বেগ বলতে কী বোঝায় ?
উঃ। কণার গতি যদি শুধু মাত্র সরলরেখা বরাবর সীমাবদ্ধ থাকে তবে গড়দ্রুতির পরিবর্তে গড়বেগ ব্যবহার করা হয়।
6. 'অতিক্রান্ত দূরত্ব' বলতে কী বোঝায়?
উঃ। যে কোনো দিকে বস্তুকণার অবস্থানের পরিবর্তন ঘটলে তার প্রাথমিক ও অস্তিম অবস্থানের মধ্যবর্তী পথকে বস্তুকণার অতিক্রান্ত দূরত্ব বলা হয়।
7. তাৎক্ষণিক দ্রুতি কাকে বলে?
উঃ। কোনো গতিশীল কণা বা বস্তুর গতির কোনো নির্দিষ্ট মুহূর্তে মানকে বলা হয় তাৎক্ষণিক দ্রুতি। যেমন— মোটর গাড়ির স্পিডোমিটারের কাটা।
⬛ রচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর : প্রতিটা প্রশ্নের মান -2/3
1. নিউটনের তিনটি গতি সূত্র বিবৃত করো।
উঃ। নিউটনের প্রথম গতিসূত্র–বাইরে হতে বল প্রয়োগ না করলে স্থির বস্তু চিরকাল স্থির থাকবে বা সমবেগে সরলরেখা বরাবর গতিশীল কোনো বস্তু চিরকাল ও একই গতিতে একই সরলরেখা ধরে চলতে থাকে। উদাহরণ – স্থির বাস হঠাৎ চলতে আরম্ভ করলে কোনো কিছু না ধরে দাঁড়িয়ে থাকা যাত্রী পিছনদিকে হেলে পড়ে। পাখিরা উড়তে উড়তে ডানা ঝাপটানো বন্ধ করেও দিব্যি ডানা মেলে বাতাসে ভেসে ভেসে এগিয়ে যায়। নিউটনের দ্বিতীয় গতিসূত্র–কোনো বস্তুর ভরবেগের পরিবর্তনের হার বস্তুর উপর প্রযুক্ত বলের সমানুপাতিক এবং বল যে দিকে প্রযুক্ত হয়, ভরবেগের পরিবর্তনও সেই দিকে ঘটে। নিউটনের তৃতীয় গতিসূত্র প্রত্যেক ক্রিয়ার সমান ও বিপরীতমুখী প্রতিক্রিয়া আছে।
উদাহরণ—বন্দুক থেকে গুলি ছুঁড়লে বন্দুক পিছনের দিকে ধাক্কা দেয়।
2. কাজ কী? কীভাবে কাজের পরিমাপ করা হয়?
উঃ। কোনো বস্তুর উপর বল প্রয়োগ করলে যদি বলের প্রয়োগ বিন্দুর সরণ ঘটে তবে প্রযুক্ত বল কার্য করছে বলা হয়। কোনো বস্তুর উপর প্রযুক্ত বল এবং ঐ বলের অভিমুখে বলের প্রয়োগ বিন্দুর সরণের গুণফল দ্বারা কার্যের পরিমাপ করা হয়।
মনে করি কোনো বস্তুর উপর F বল ক্রিয়া করাতে বলের অভিমুখে বলের প্রয়োগ বিন্দুর সরণ S হল, তবে কৃতকার্য W = FXS অর্থাৎ কৃতকার্য = বল x সরণ।
3. নিউটনের প্রথম গতিসূত্র থেকে কীভাবে বলের সংজ্ঞা পাওয়া যায় ?
উঃ। নিউটনের প্রথম গতিসূত্র থেকে আমরা জানি যে, কোনো বস্তুর স্থির বা প্রথম গতিশীল অবস্থার পরিবর্তন করতে হলে বাইরে থেকে বস্তুটির উপর বল প্রয়োগ করতে হয়। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় বাইরে থেকে বস্তুর ওপর বল প্রয়োগ করা সত্ত্বেও বস্তুর জড় অবস্থার পরিবর্তন ঘটে না। যেমন— ধাক্কা দিয়ে ইটের দেওয়াল সরানো যায় না। সেইহেতু বলের সংজ্ঞা হিসাবে বলা যায়—বাইরে থেকে যা প্রয়োগ করে কোনো বস্তুর স্থির বা গতিশীল অবস্থার পরিবর্তন করা হয় বা করানোর চেষ্টা করা হয়, তাকেই বল বলা হয়।
4. নিউটনের দ্বিতীয় গতিসূত্রটির গাণিতিক রূপ লেখো।
উঃ। যদি m ভরের কোনো বস্তুর উপর P বল ক্রিয়া করে বস্তুটিতে ত্বরণ সৃষ্টি করে তবে নিউটনের দ্বিতীয় গতিসূত্র থেকে পাই, প্রযুক্ত বল = বস্তুর বল x এক সেকেন্ডে বস্তুর বেগের পরিবর্তন = বস্তুর ভর × বস্তুতে উৎপন্ন ত্বরণ F = m xa
অর্থাৎ P = mf. এটিই নিউটনের দ্বিতীয় গতিসূত্রের গাণিতিক রূপ।
5. নিউটনের প্রথম গতিসূত্রকে জাড্যের সূত্র বলা হয় কেন?
উঃ নিউটনের প্রথম গতিসূত্রটি থেকে জানা যায় যে, স্থির বস্তু নিজে থেকে সচল হতে পারে না কিংবা সচল বস্তু নিজের থেকে তার গতিশীল অবস্থার পরিবর্তন করতে পারে না। স্থির বস্তুর ধর্ম চিরকাল স্থির থাকা এবং গতিশীল বস্তুর ধর্ম সমবেগে একই সরলরেখায় চলতে থাকা। এটি জড় পদার্থের একটি মৌলিক ধর্ম। এই ধর্মের জন্যই বস্তু তার স্থিতি বা গতি অবস্থা পরিবর্তনের যে কোনো রেখাকে বাধা দেয়। পদার্থের এই ধর্মের নাম জাড্য বা জড়তা। এজন্য নিউটনের প্রথম সূত্রকে জাড্যের সূত্র বা জড়তার সূত্র বলা হয়।
6. উদাহরণ দিয়ে বুঝিয়ে দাও নিউটনের তৃতীয় সূত্র অনুসারে ‘প্রত্যেক ক্রিয়ার সমান ও বিপরীতমুখী একটি প্রতিক্রিয়া বল আছে।'
উঃ। নৌকা থেকে লাফ দিয়ে নামার সময় নৌকা জলে পিছিয়ে যায়। আমরা নামার সময় নৌকাটাকে পিছন দিকে ঠেলি। নৌকাটি আমাদের দেওয়া বলের উলটোদিকে সমান জোরে আমাদের পায়ে বলপ্রয়োগ করে, আর সেই বলই আমাদের সামনের দিকে ঠেলে দেয়। এ থেকেই বোঝা যায় প্রত্যেক ক্রিয়ারই সমান ও বিপরীতমুখী প্রতিক্রিয়া বল রয়েছে। ক্রিয়া ও প্রতিক্রিয়া সবসময় একসঙ্গেই ঘটে। তাই যে কোনো একটা ক্রিয়া হলে অন্যটি হবে তার প্রতিক্রিয়া। এই ক্রিয়া ও প্রতিক্রিয়া আলাদা আলাদা বস্তুর ওপর কাজ করে। তাই আমরা নৌকার ওপর বল প্রয়োগ করি আর নৌকার বল প্রয়োগ হয় আমাদের পায়ের ওপর।
No comments:
Post a Comment