পার্ট - ৩ চুম্বক প্রশ্ন উত্তর পড়তে নিচের লিংকে ক্লিক করো
👉 ( পার্ট -৩ চুম্বক প্রশ্ন উত্তর )
সপ্তম শ্রেণীর পরিবেশ ও বিজ্ঞান বিষয়ের একটি বিশেষ গুরুত্ব পূর্ণ অধ্যায় হলো, ভৌত পরিবেশ এবং তার একটি পার্ট হলো "আলো" । এই অধ্যায়ের পার্ট আলো থেকে কিছু বিশেষ বিশেষ প্রশ্ন উত্তর করা হয়েছে এই পোস্টটিতে ।
⬛অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর : প্রতিটা প্রশ্নের মান -1
1. আলো কী?
উঃ। আলো হল এক রকমের শক্তি যা কোনো বস্তুতে প্রতিফলিত হয়ে আমাদের চোখে পড়লে বস্তুটিকে আমরা দেখতে পাই।
2. আলোক কি দেখা যায়?
উঃ। না। আলো নিজে অদৃশ্য।
3. অন্ধকার কাকে বলে?
উঃ। আলোর অভাবকে অন্ধকার বলে।
4. মহাকাশকে অন্ধকার বলে মনে হয় কেন?
উঃ। মহাকাশে বস্তুকণার অস্তিত্ব প্রায় না থাকায় আলো প্রতিফলিত হতে পারে না। তাই মহাকাশকে অন্ধকার বলে মনে হয়।
5. পৃথিবী থেকে সূর্যের দূরত্ব কত?
উঃ । প্রায় 15 কোটি কিলোমিটার।
6. সূর্য থেকে পৃথিবীতে আলো পৌঁছতে কত সময় লাগে?
উঃ। মাত্র 8.3 মিনিট।
7. শূন্য মাধ্যমে আলোর গতিবেগ কত?
উঃ । সেকেন্ডে 3 x 108 মিটার।
8. আলোর উৎস কাকে বলে?
উঃ। যে বস্তু আলো বিকিরণ করে, তাকে আলোক প্রভব বা আলোক উৎস বলে। সূর্য ও নক্ষত্রগুলি হল আলোর স্বাভাবিক উৎস।
9. আলোক উৎস কয় প্রকার ও কী কী ?
উঃ। আলোক উৎস দুই প্রকার। যথা— (1) স্বপ্নভ উৎস (2) নিষ্প্রভ উৎস।
10. স্বপ্নভ উৎস কাকে বলে?
উঃ। যেসব বস্তু নিজেরাই আলো বিকিরণ করে তাদের স্বপ্নভ উৎস বলে। সূর্য, নক্ষত্র, জ্বলন্ত বাতি প্রভৃতি স্বপ্নভ উৎস।
11. নিষ্প্রভ উৎস কাকে বলে?
উঃ। যে সব বস্তু নিজে আলো বিকিরণ করতে পারে না এবং যারা স্বপ্রভ উৎসের আলোয় দৃশ্যমান হয়, তাদের নিষ্প্রভ উৎস বলে। যেমন, চাঁদ, গ্রহ-উপগ্রহ, চেয়ার-টেবিল, ঘরবাড়ি, গাছপালা প্রভৃতি।
12. আলোক মাধ্যম কাকে বলে ?
উঃ। যে স্বচ্ছ মাধ্যমের মধ্য দিয়ে আলো চলাচল করতে পারে, তাকে আলোক মাধ্যম বলে। যেমন—বায়ু, জল, কাচ ইত্যাদি।
13. আলোক মাধ্যম কয় প্রকার ও কী কী ?
উঃ। আলোক মাধ্যম দুই প্রকার। যথা— (1) সমসত্ত্ব মাধ্যম (2) অসমসত্ত্ব মাধ্যম।
14. সমসত্ত্ব মাধ্যম কাকে বলে?
উঃ। যে মাধ্যমের মধ্য দিয়ে আলো সব দিকে সমান বেগে চলে, তাকে সমসত্ত্ব মাধ্যম বলে। যেমন—কাচ, জল, বায়ু প্রভৃতি।
15. অসমসত্ত্ব মাধ্যম কাকে বলে?
উঃ। যে মাধ্যমের মধ্য দিয়ে আলো সবদিকে সমান বেগে চলতে পারে না, তাকে অসমসত্ত্ব মাধ্যম বলে। যেমন—অভ্র, কোয়ার্টজ ইত্যাদি।
16. স্বচ্ছ মাধ্যম কাকে বলে?
উঃ। যে মাধ্যমের মধ্য দিয়ে আলো সহজে চলাচল করতে পারে, তাকে স্বচ্ছ মাধ্যম বলে। যেমন- শূন্যস্থান, জল, বায়ু, কাচ ইত্যাদি।
17. ঈষৎ স্বচ্ছ মাধ্যম কাকে বলে?
উঃ। যে মাধ্যমের মধ্য দিয়ে আলো আংশিকভাবে চলাচল করতে পারে, তাকে ঈষৎ স্বচ্ছ মাধ্যম বলে। যেমন-রঙিন বা ঘষা কাচ, তৈলাক্ত কাগজ ইত্যাদি।
18. অস্বচ্ছ মাধ্যম কাকে বলে?
ঊ। যে মাধ্যমের মধ্য দিয়ে আলো মোটেই চলাচল করতে পারে না, তাকে অস্বচ্ছ মাধ্যম বলে। যেমন- মাটি, পাথর, কাঠ ইত্যাদি।
19. আলোক রশ্মি কাকে বলে?
উঃ । আলোক উৎস থেকে নির্গত আলো যে সরলরেখা ধরে আলোকমাধ্যমের এক বিন্দু থেকে অন্য বিন্দুতে যায়, সেই পথকে আলোকরশ্মি বলে। একটি সরলরেখার উপর তিরচিহ্নের সাহায্যে আলোক রশ্মির অভিমুখ নির্দেশ করা হয়।
20. রশ্মিগুচ্ছ কাকে বলে?
উঃ। পরস্পরের কাছাকাছি থাকা কতকগুলি আলোকরশ্মির সমষ্টিকে রশ্মিগুচ্ছ বলে।
21. সমান্তরাল রশ্মিগুচ্ছ কাকে বলে?
উঃ। আলোক রশ্মিগুচ্ছ যদি পরস্পর সমাস্তরাল হয় তবে ওই রশ্মিগুচ্ছকে সমান্তরাল রশ্মিগুচ্ছ বলে।
22. ছায়া কাকে বলে?
উঃ। আলোক উৎসের সামনে কোনো অস্বচ্ছ বস্তু রাখলে বস্তুটির পেছনে যে অন্ধকারাচ্ছন্ন স্থানের সৃষ্টি হয় তাকে ওই বস্তুর ছায়া বলে।
23. 'বেনীআসহকলা' বলতে কী বোঝায়?
উঃ। বেগুনি, নীল, আকাশি, সবুজ, হলুদ, কমলা, লাল এই সাতটি রঙের সমষ্টি কে তাদের নামের প্রথম অক্ষরগুলিকে নিয়ে এক কথায় বেণীআসহকলা বলা হয়।
24. সূর্যের আলো আসলে কী ?
উঃ । সূর্যের আলো আসলে অনেক আলাদা রং- এর আলোর সমষ্টি।
25. DNA-এর পুরো নাম কী?
উঃ । ডিঅক্সিরাইবো নিউক্লিক অ্যাসিড।
26. মেলানিন কী ?
উঃ। মেলানিন হল একরকমের রত্নক পদার্থ যা চামড়ার নীচে থাকে।
27. অতিবেগুনি রশ্মি কী?
উঃ। অদৃশ্য আলোর একটি অংশ হল অতিবেগুনি রশ্মি।
28. সূচিছিদ্র ক্যামেরার প্রতিকৃতি উলটো পড়ে কেন?
উঃ । আলো সরলরেখায় চলাচল করে বলে।
29. কোন্ দেশের মানুষের চামড়া সাদা?
উঃ ইউরোপীয় দেশের মানুষের সাদা চামড়া কারণ এদের চামড়া মেলানিন কম থাকে।
30. আফ্রিকাতে সূর্যরশ্মি প্রখর কেন?
উঃ। আফ্রিকা পৃথিবীর নিরক্ষীয় অঞ্চলে অবস্থিত বলে আফ্রিকাতে সূর্যরশ্মি প্রখর।
31. সূর্যরশ্মি ছাড়া গাছ কী করতে পারে না?
উঃ। খাদ্য তৈরি বা সালোকসংশ্লেষ করতে পারে না।
32. কৃত্রিম আলোকে কি গাছ খাদ্য তৈরি করতে পারে?
উঃ হ্যাঁ। কৃত্রিম আলোতে গাছ খাদ্য তৈরি করতে পারে।
33. গরমকালে ফোটে এমন কয়েকটি ফুলের নাম লেখো।
উঃ। বেল, জুঁই, চাপা, কামিনী, রজনীগন্ধা।
34. শীতকালে ফোটে এমন কয়েকটি ফুলের নাম লেখো।
উঃ। গাঁদা, গোলাপ, ডালিয়া, চন্দ্রমল্লিকা।
35. দিনের দৈর্ঘ্য 12 ঘণ্টার বেশি হলে কোন্ ফুল ফোটে?
উঃ। গম, ভুট্টা, পালং, মূলো প্রভৃতি গাছের ফুল দিনের দৈর্ঘ্য 12 ঘন্টার বেশি হলে ফোটে।
36. দিনের দৈর্ঘ্য 12 ঘণ্টার কম হলে কোন্ কোন্ ফুল ফোটে?
উঃ চন্দ্রমল্লিকা, ডালিয়া, আখ, আলু গাছের ফুল দিনের দৈর্ঘ্য 12 ঘন্টার কম হলে তবেই ফোটে।
37. দিনের সময় কমা ও বাড়ার উপর কোন্ কোন্ ফুল ফোটে?
উঃ টম্যাটো, সূর্যমুখী ইত্যাদি।
38. আলো কম পেলে কোন মাছের বাচ্চা মারা যায়?
উঃ। স্যামন মাছ।
39. সূর্যের আলো ও তাপ কম পেলে কোন্ কোন্ প্রাণী শীত ঘুমে যায়?
উঃ। গিরগিটি, সাপ, ছুঁচো, ভালুক, ব্যাং ইত্যাদি প্রাণী শীত ঘুমে চলে যায়।
40. পাপালের চলাফেরা কখন বন্ধ হয়ে যায় ?
উঃ। সূর্য যখন মেঘের আড়ালে ঢাকা পড়ে তখন পঙ্গপালের চলাফেরা বন্ধ হয়ে যায়।
41. কোন প্রাণী আলো তৈরি করে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ করে?
উঃ। জোনাকি পোকা যোগাযোগ রক্ষার জন্য আলো তৈরি করে।
42. কোন্ প্রাণীর জায়গা পরিবর্তন সূর্যের আলোর তীব্রতার উপর নির্ভর করে?
উঃ। পরিযায়ী পাখিদের। শীতের জায়গা থেকে তারা অপেক্ষাকৃত গরমের জায়গার দিকে উড়ে যায়।
43. ওজোন স্তর কীভাবে নষ্ট হচ্ছে?
উঃ। মানুষের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের ফলে এমন সব গ্যাসীয় পদার্থ ওজোন স্তরে পৌঁছোচ্ছে যারা ওজোন দেয়, বা তৈরি হতে বাধা দেয়। এর ফলে ধীরে ধীরে ওজোন স্তর নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
44. যৌগিক আলো কাকে বলে?
উঃ। সূর্যের আলো অনেক আলাদা রং-এর আলোর সমষ্টি। এধরনের আলোকে যৌগিক আলো বলে।
⬛ সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর : প্রতিটা প্রশ্নের মান -2/3
1. প্রচ্ছায়া ও উপচ্ছায়া কাকে বলে ?
উঃ। আলোক উৎস, বিন্দু আকৃতির না হয়ে যদি বড়ো আকারের হয়, তবে অস্বচ্ছ বস্তুর পিছনে যে ছায়া পড়ে তার মাঝখানে একটি গাঢ় অন্ধকারাচ্ছন্ন স্থান থাকে, একে প্রচ্ছায়া বলে। ওই প্রচ্ছায়ার চারপাশে অপেক্ষাকৃত কম অন্ধকারাচ্ছন্ন স্থান থাকে, এই অঞ্চলটিকে উপচ্ছায়া বলে। প্রচ্ছায়া অঞ্চলের কোনো অংশ থেকেই আলোক উৎসকে দেখা যায় না।
উপচ্ছায়া অঞ্চল থেকে আলোক উৎসের কিছু অংশ দেখা যায়।
2. অনেক উঁচু দিয়ে পাখি উড়ে গেলে তার ছায়া মাটিতে পড়ে না কেন?
উঃ। পাখি যখন অনেক উঁচু দিয়ে উড়ে যায়, তখন পাখি ও ভূ-পৃষ্ঠের মাঝের দূরত্ব বেড়ে যায়। এই অবস্থায় পাখির প্রচ্ছায়া ক্রমশ সরু হয়ে ভূ-পৃষ্ঠের অনেক উপরে একটি বিন্দুতে পরিণত হয়। ফলে অনেক উঁচু দিয়ে উড়ে যাওয়া পাখির ছায়া মাটিতে পড়ে না।
3. সিনেমার পর্দা সাদা এবং অমসৃণ হয় কেন?
উঃ। সিনেমার পর্দা সাদা করা হয়। কারণ, সাদা পর্দা আপতিত আলো কে শোষণ করে না। ফলে সাদা পর্দা থেকে সব রঙের আলো সমানভাবে প্রতিফলিত হয়, তাই পর্দার উপর ছবির উজ্জ্বলতা বজায় থাকে। সিনেমার পর্দা অমসৃণ করা হয়। কারণ অমসৃণ পর্দা থেকে আলোর বিক্ষিপ্ত প্রতিফলন হয় এবং প্রতিফলিত রশ্মিগুলি চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। ফলে সিনেমা হলের যেকোনো জায়গা থেকে প্রতিটি দর্শক পর্দায় ছবিকে সমানভাবে দেখতে পায়।
4. সমতল দর্পণে কোনো রশ্মির আপতন কোণ 45° হলে প্রতিফলন কোণ কত হবে?
উঃ। আলোক রশ্মির নিয়মিত প্রতিফলনের ক্ষেত্রে আপতন কোণ এবং প্রতিফলন কোণ পরস্পর সমান হয়। অর্থাৎ সমতল দর্পণে কোনো রশ্মির আপতন কোণ 45° হলে ওই রশ্মির প্রতিফলন কোণও 45° হবে।
5. সমতল দর্পণে কোনো আলোক রশ্মি লম্বভাবে আপতিত হলে, প্রতিফলন কোণ কত হবে?
উঃ। প্রতিফলনের সূত্রানুসারে আপতন কোণ ও প্রতিফলন কোণ পরস্পর সমান হয়। এখন সমতল দর্পণে কোনো আলোকরশ্মি লম্বভাবে আপতিত হলে রশ্মিটি আপতন বিন্দুতে অঙ্কিত অভিলম্বে পড়বে। ফলে ওই রশ্মির আপতন কোণ শূন্য হবে। সুতরাং রশ্মিটির প্রতিফলন কোণও শূন্য হবে। অর্থাৎ সমতল দর্পণে লম্বভাবে আপতিত আলোরকশ্মি প্রতিফলিত হবার পর ওই লম্বরেখা বরাবর আগের মাধ্যমে ফিরে আসবে।
6. ছায়ার আকৃতি ও প্রকৃতি কীসের উপর নির্ভর করে?
উঃ। (i) আলোর উৎস, (ii) অস্বচ্ছ বস্তুর আকার, (iii) আলোক উৎস থেকে অস্বচ্ছ বস্তুর দূরত্ব এবং অস্বচ্ছ বস্তু থেকে পর্দার দূরত্ব—এই কয়েকটি জিনিসের উপর উৎপন্ন ছায়ার আকার এবং প্রকৃতি নির্ভর করে। ছায়ার আকৃতি ও প্রকৃতি কেমন হবে তার কতকগুলি নিয়ম নীচে দেওয়া হল—
(১) পর্দায় সৃষ্ট ছায়াটির আকার বস্তুর আকারের মতো হয়।
(২) পর্দাকে অস্বচ্ছ বস্তুর কাছে আনলে ছায়াটির আকার ছোটো হয়ে যায়।
(৩) পর্দাকে অস্বচ্ছ বস্তুর কাছ থেকে দূরে সরালে ছায়াটির আকার ক্রমশ বড়ো হতে থাকে।
(৪) পর্দা এবং আলোক উৎস স্থির রেখে অস্বচ্ছ বস্তুটিকে পর্দার কাছে আনলে ছায়া ছোটো হয়—পর্দা থেকে দূরে সরিয়ে উৎসের দিকে নিয়ে গেলে ছায়াটি বড়ো হবে।
(৫) বস্তু এবং পর্দাকে স্থির রেখে আলোক উৎসকে বস্তুর কাছে আনলে উৎপন্ন ছায়া বড়ো হবে, উৎসকে দূরে সরালে ছায়া ছোটো হবে।
7. প্রচ্ছায়া (Umbra) কাকে বলে ব্যাখ্যা করো।
উঃ। কোনো অস্বচ্ছ বস্তুর যে ছায়া গঠিত হয় তা নির্ভর করে আলোর উৎস, পর্দার দূরত্বের উপর। আলোর উৎস যদি ক্ষুদ্র আকারের অর্থাৎ, বিন্দুর মতো হয় তাহলে প্রতিবন্ধকের যে ছায়া পড়ে তা ঘন কালো দেখায়। এই ঘন কালো ছায়াকে প্রচ্ছায়া বলে। মনে করি একটি চিত্রে চিত্রে আলোক বিন্দু উৎস। AB প্রতিবন্ধক এবং ABC পর্দার উপর প্রচ্ছায়া। S
8. উপচ্ছায়া (Penumbra) কাকে বলে? উপচ্ছায়ার গঠন বুঝিয়ে দাও।
উঃ। ছায়ার যে অংশে কিছুটা আলোক পড়ে সেই হালকা ছায়াকে বলা হয় উপচ্ছায়া। আলোর উৎস যদি আকারে বড়ো হয় কিন্তু প্রতিবন্ধকের চেয়ে ছোটো হালকা অন্ধকার হয়। মাঝের অংশটি প্রচ্ছায়া আর চারপাশের হালকা অন্ধকারময় যে অংশ থাকে তাকে উপচ্ছায়া বলে। উপচ্ছায়া অংশে উৎস থেকে কিছু আলো এসে পড়ে তাই ঘনকালো বা সম্পূর্ণ অন্ধকার দেখায় না।
9. আলোর প্রতিফলন (reficetion of light) কাকে বলে? প্রতিফলন কয় প্রকার ও কী কী?
উঃ। আলোক রশ্মি সরলরেখায় যায়। সমসত্ত্ব স্বচ্ছ মাধ্যমের মধ্য দিয়ে যাওয়ার সময় আলোক রশ্মি সরলরেখায় যায়—কিন্তু আলোক যখন এক মাধ্যম থেকে অন্য মাধ্যমে যায়, তখন দ্বিতীয় মাধ্যমের চকচকে তলে বাধা পেলে আলোক রশ্মির কিছু অংশ প্রথম মাধ্যমেই ফিরে আসে। এই ঘটনাকে আলোর প্রতিফলন বলে। প্রতিফলন দুই রকম – (i) নিয়মিত প্রতিফলন ও (ii) বিক্ষিপ্ত প্রতিফলন।
10. নিয়মিত প্রতিফলন (Regular reflection) কাকে বলে?
উঃ। সমান্তরাল আলোক-রশ্মিগুচ্ছ মসৃণ ও চকচকে তলের উপর পড়লে ওই রশ্মির প্রতিফলন কতকগুলি নিয়ম মেনে একটা নির্দিষ্ট দিকে রশ্মিগুলি সমান্তরাল হয়ে চলে যায়। এই রকম প্রতিফলনকে নিয়মিত প্রতিফলন বলে। যেমন, আয়নায় সূর্যের রশ্মির প্রতিফলন। নিয়মিত প্রতিফলনের ফলে বস্তুটির প্রতিবিম্ব গঠন করে।
11. বিক্ষিপ্ত প্রতিফলন (Diffused reflection) কাকে বলে ?
উঃ। অমসৃণ খসখসে তলের উপর সমান্তরাল আলোক রশ্মিগুচ্ছ পড়লে প্রতিফলিত রশ্মিগুলি সমান্তরাল ভাবে না গিয়ে চারদিকে বিক্ষিপ্ত হয়। এই রকম প্রতিফলনকে বিক্ষিপ্ত প্রতিফলন বলে। খসখসে কাগজ, ঘষা কাচ, ঘরের দেওয়াল, সিনেমার পর্দা—এই সব থেকে এইরকম বিক্ষিপ্ত প্রতিফলন হয়। বিক্ষিপ্ত প্রতিফলনে কোনো প্রতিবিম্ব গঠিত হয় না, শুধু প্রতিফলকটিকে দেখা যায়। বিক্ষিপ্ত প্রতিফলনের জন্যই আমরা বই পড়তে পারি। সব জিনিস দেখতে পাই। চিত্রসহ আলোচনা করো।
24. কোনো রশ্মি দর্পণের উপর লম্বভাবে পড়লে আপাতন কোণ ও প্রতিফলন কোণ কত হবে?
উঃ। কোনো রশ্মি দর্পণের উপর লম্বভাবে পড়লে আপাতন কোণ 0° এবং প্রতিফলন কোণ 0° হবে।
22. প্রতিবিম্ব কাকে বলে?
উঃ। প্রতিফলন বা প্রতিসরণের কোনো বিন্দু প্রভব থেকে যখন আলোক রশ্মি উৎপন্ন হয়ে পরে অন্য কোনো বিন্দুতে মিলিত হয় বা মিলিত হচ্ছে বলে মনে হয় তখন ওই দ্বিতীয় বিন্দুকে প্রথম বিন্দুর প্রতিবিম্ব বলে।
23. সদবিম্ব কাকে বলে উদাহরণ দাও ।
উঃ। কোনো বিন্দু আলোক উৎস থেকে আগত আলোক রশ্মিগুচ্ছ প্রতিফলন বা প্রতিসরণের পর যদি প্রকৃতই কোনো বিন্দুতে মিলিত হয় তাহলে ওই দ্বিতীয় বিন্দুকে প্রথম বিন্দুর সবিম্ব বলে। যেমন—সিনেমার পর্দায় গঠিত প্রতিবিম্ব।
24. অসবিম্ব কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
উঃ। কোনো বিন্দু প্রভব থেকে আগত অপসারী আলোক রশ্মিগুচ্ছ প্রতিফলিত বা প্রতিসৃত হয়ে যদি অন্য কোনো বিন্দু থেকে অবসৃত হচ্ছে বলে মনে হয় তখন ওই দ্বিতীয় বিন্দুকে প্রথম বিন্দুর অসবিম্ব বলে। যেমন—দর্পণের প্রতিবিম্ব হল অসবিম্ব ।
25. পার্শ্বীয় পরিবর্তন কাকে বলে?
উঃ। সমতল দর্পণে যে অসবিম্ব গঠিত হয়, তাতে ডান ও বাম এবং অন্য পশ্চাৎ উলটো হয়ে যায়। প্রতিবিম্বের এই পরিবর্তনকে পার্শ্বীয় পরিবর্তন বলে। অর্থাৎ আয়নায় গঠিত প্রতিবিম্ব সমশীর্ষ হয়।
26. বস্তুর দূরত্ব ও প্রতিবিম্বের দূরত্বের মধ্যে সম্পর্ক কী ?
উঃ। বস্তুর দূরত্ব = প্রতিবিম্বের দূরত্ব।
27. গ্লিসারিনে ডোবালে কাচের দণ্ড দেখা যায় কি? যুক্তি দাও।
উঃ। না, দেখা যায় না। গ্লিসারিন ও কাচের প্রতিসরাঙ্ক প্রায় সমান হওয়ার জন্য কোনো সময় আলো ওদের বিভেদতল থেকে প্রতিফলিত হয়ে দর্শকের চোখে পৌঁছাতে পারে না। সেজন্য গ্লিসারিনে ডোবালে কাচের দণ্ড দেখা যায় না।
28. আকাশে যে রংধনু তুমি দেখতে পাও তা আসলে কী এবং তা আলোর কোন্ ধর্মের জন্য ঘটে? প্রিজম ছাড়া কীভাবে তা সম্ভব হয়?
উঃ। আকাশের রংধনু একটি প্রাকৃতিক ঘটনা। সূর্যের সাদা আলোর বিচ্ছুরণের জন্য এটি ঘটে। সাধারণত বৃষ্টির পর আকাশে ভাসমান জলকণার মধ্য দিয়ে সূর্যের আলো যাওয়ার সময় বিচ্ছুরণের ফলে আকাশে যে সাতটা আলোর পট্টি গঠিত হয় তাই হল রংধনু। এখানে জলকণাই প্রিজমের কাজ করে।
No comments:
Post a Comment