ইতিহাস
প্রশ্ন উত্তর
ষষ্ঠ অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর পড়তে নিচের লিঙ্ক এ ক্লিক করো
👉 ( ষষ্ঠ অধ্যায় )
ভূমিকা : মুঘল বা মোঘল শব্দটি এসেছে মোঙ্গল থেকে, যার অর্থ নির্ভীক। ১৫২৬ খ্রিস্টাব্দে বাবর ইব্রাহিম লোদিকে পরাজিত করে ভারতে মুঘল সাম্রাজ্যের সূচনা করেন। বাবর খানুয়ার যুদ্ধ ও ঘর্ঘরার যুদ্ধে জয়লাভের মধ্য দিয়ে সাম্রাজ্য বিস্তারে সক্ষম হন। বাবরের পর তার পুত্র হুমায়ুনের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে আফগান নেতা শের খান হুমায়ুনকে পরাজিত করে আফগান শাসনের সূচনা ঘটান। তিনি কৃষি ক্ষেত্রে পাট্টা ও কবুলিয়ত' নামক দলিল ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতিতে ‘সরফ-ই আজম’ তৈরি ও সাময়িক ক্ষেত্রে ‘দাগ ও হুলিয়া ব্যবস্থার প্রবর্তন করেন।
শেরশাহের মৃত্যুর পর হুমায়ুন পুনরায় মুঘল শাসনের ক্ষমতায় আসেন এবং তার পুত্র নাবালক আকবরকে পাঞ্জাবের শাসনকর্তা নিযুক্ত করেন। আকবর তার অভিভাবক বৈরাম খাঁর সহায়তায় ১৫৫৬ খ্রিস্টাব্দে পানিপথের দ্বিতীয় যুদ্ধে আফগানদের হারিয়ে একে একে মধ্য ভারত ও উত্তর-পশ্চিম সীমান্তের কয়েকটি ছোটো রাজ্য চিতোর, গুজরাট, বাংলা জয় করেন। তিনি ১৫৭৬ খ্রিস্টাব্দে হলদিঘাটের যুদ্ধে মেবারের রানা প্রতাপ সিংহকেও পরাজিত করেন । তিনি রাজপুত ব্যবস্থা গড়ে তুলেছিলেন। আকবরের পুত্র জাহাঙ্গির রাজনৈতিক ধর্মীয় গোষ্ঠীগুলির সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে পারেননি। তিনি প্রশাসনিক ক্ষেত্রে আকবরের নীতিকেই গ্রহণ করেছিলেন। জাহাঙ্গিরের পুত্র শাহজাহানের সময় সিংহাসন দখল নিয়ে চার পুত্রদের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে এবং ঔরঙ্গজেব শেষ পর্যন্ত সিংহাসনে বসেন। ঔরঙ্গজেবের পর মুঘল সাম্রাজ্যের পতন ঘটলেও সাড়ে তিনশো বছরের শাসনপর্বে মুঘলদের সামরিক, প্রশাসনিক, সাংস্কৃতিক ও স্থাপত্য-ভাস্কর্যের নজির অসামান্য।
◾ দু-এক কথায় উত্তর দাও :
১. 'গাজি' শব্দের অর্থ কী ?
উত্তর। ‘গাজি' শব্দের অর্থ ধর্মযোদ্ধা।
২. আকবর কত খ্রিস্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন?
উত্তর। আকবর ১৫৪২ খ্রিস্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন।
৩. শের খান দিল্লির শাসনক্ষমতা অধিকার করার পর কী উপাধি নিয়েছিলেন?
উত্তর। শের খান দিল্লির শাসনক্ষমতা অধিকারের পর শাহ উপাধি নিয়েছিলেন।
8. হিমু-কে ছিলেন?
উত্তর। হিমু ছিলেন আদিল শাহের সেনাপতি।
৫. মনসব পদাধিকারীদের কী বলা হত?
উত্তর। মনসব পদাধিকারীদের মনসবদার বলা হত।
৬. মুঘল বলতে কাদের বোঝায়?
উত্তর। মুঘল বলতে একদিকে মোঙ্গল নেতা চেঙ্গিস খান এবং অন্যদিকে তুর্কি নেতা তৈমুর লঙ-এর বংশধরদের বোঝায়।
৭. ‘পাদশাহ' বা ‘বাদশাহ' শব্দটির দ্বারা কী বোঝাত?
উত্তর। সার্বভৌম শাসক।
৮. খানুয়ার যুদ্ধে বাবরের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী কে ছিল?
উত্তর। রাজপুত রাজা মেবারের রানা সংগ্রাম সিংহ।
৯. ঘর্ঘরার যুদ্ধে আফগানদের সাথে বাংলার কোন্ শাসক যোগ দিয়েছিলেন?
উত্তর। বাংলার শাসক নসরৎ শাহ।
১০. হুমায়ুন কোন্ কোন্ যুদ্ধে, পারজিত হয়ে দেশ ছাড়তে বাধ্য হন ?
উত্তর। হুমায়ুন ১৫৩৯ খ্রি. চৌসার যুদ্ধে ও ১৫৪০ খ্রি. বিলগ্রামের যুদ্ধে শেরশাহর কাছে পরাজিত হয়ে দেশ ছাড়েন।
১১. হুমায়ুন দেশ ছেড়ে পালিয়ে গিয়ে কার আশ্রয় নেন?
উত্তর। পারস্যের সম্রাট শাহ তাহমস্পের।
১২. ‘পাট্টা' ও 'কবুলিয়ত' প্রথার উদ্ভাবক কে ছিলেন?
উত্তর। শেরশাহ।
১৩. শেরশাহ সেনাবাহিনীকে নিয়ন্ত্রণে আনতে কী ব্যবস্থা গ্রহণ করেন ?
উত্তর। 'দাগ' ও 'হুলিয়া' ব্যবস্থা চালু করেন।
১৪. আকবর যখন শাসনভার গ্রহণ করে তখন তার বয়স কত ছিল?
উত্তর। মাত্র তেরো বছর।
১৫. আকবরকে শাসনক্ষেত্রে সাহায্য করেছিলেন কে?
উত্তর। আকবরের অভিভাবক বৈরাম খান।
◾অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর
২. সার্বভৌম শাসক বলতে কী বোঝো?
উত্তর। সার্বভৌম শাসক বলতে বোঝায় সর্বভূমির আধিপত্য বা অধিকার। তবে সর্বভূমি বা গোটা পৃথিবীর উপর কখনো কারো আধিপত্য থাকতে পারে না। অর্থাৎ এখানে বুঝতে হবে যে যার আধিপত্য একটি বিস্তৃত অঞ্চলের উপর থাকে এবং যিনি সেখানে নিজের ক্ষমতায় শাসন করেন, তিনিই সার্বভৌম শাসক। এই কথাটা শুধু শাসক নিজে অবহিত হলেই চলবে না। জনগণ সেটা মেনে নিলে তবেই তার আধিপত্য টিকে থাকবে।
৩. খানুয়ার যুদ্ধ সম্পর্কে কী জান?
উত্তর। ১৫২৭ খ্রিস্টাব্দে মেবারের অধিপতি রানা সংগ্রাম সিংহ এবং গোয়ালিয়র, অম্বর, চান্দেরী, আজমের প্রভৃতি রাজ্যের রাজপুত রাজা ও লোদী বংশীয় সম্রাট ইব্রাহিম লোদীর ভ্রাতা মামুদ লোদির মিলিত বাহিনীর সাথে বাবরের মধ্যে খানুয়ার যুদ্ধ হয়। যুদ্ধ শুরু হওয়ার আগে বাবর মুঘল যোদ্ধাদের জোটবদ্ধ করতে একে ধর্মের জন্য লড়াই এবং যোদ্ধারা হল ধর্মযোদ্ধা বা গাজি বলে উৎসাহিত করেন। এই যুদ্ধে রাজপুত জাতির পরাজয়ের ফলে মুঘল শক্তির সম্প্রসারণ ঘটে এবং ভারতে রাজপুত আধিপত্যের আশা চিরতরে অবলুপ্ত হয়ে যায়।
৪. পাট্টা ও কবুলিয়ত কী ?
উত্তর। শেরশাহর বিভিন্ন সংস্কারগুলির মধ্যে রাজস্ব ক্ষেত্রে সংস্কার ছিল অন্যতম। রাজস্ব সংস্কারের ক্ষেত্রে বিশেষ পরীক্ষা-নিরীক্ষার ফল হল এই ‘পাট্টা' ও 'কবুলিয়ত যা ছিল শেরশাহ প্রবর্তিত ভূমিরাজস্ব বিষয়ক দুটি দলিল। প্রত্যেক প্রজার জমির সীমানা, তার দেয় খাজনা ও জমির ওপর তার অধিকার স্বত্ব উল্লেখ করে সরকার থেকে প্রজাকে যে দলিল দেওয়া হত, তা ‘পাট্টা' নামে পরিচিত। তার বদলে নিজেদের স্বত্ত্ব ও রাজস্ব দেওয়ার শর্ত স্বীকার বা কবুল করে সরকারকে যে দলিল প্রজারা স্বাক্ষর করে দিত, তার নাম কবুলিয়ত ।
৫. মনসবদারি ব্যবস্থা বলতে কী বোঝো?
উত্তর। আকবরের আমলে সামরিক ও বেসামরিক শাসন ব্যবস্থার মূল ভিত্তি ছিল আকবর প্রবর্তিত মনসবদারি ব্যবস্থা। আকবরের শাসনব্যবস্থার প্রশাসনিক পদগুলিকে বলা হত মনসব। তার পদাধিকারীদের বলা হত মনসবদার। প্রত্যেক মনসবদারকে নির্দিষ্ট পরিমাণ সেনা ও ঘোড়া রাখতে হত; সবচেয়ে উপরের পদগুলি কেবল রাজপরিবারের সদস্যদের জন্য রাখা থাকত। উচ্চপদস্থ মনসবদারদের বলা হত আমির। মনসবদারদের যুদ্ধের ঘোড়াগুলিকে পর্যবেক্ষণের জন্য মাঝে মাঝে হাজির করাতে হত। পদমর্যাদা ও দায়িত্ব অনুসারে মনসবদাররা ৩৩ টি স্তরে বিভক্ত ছিলেন। মানসবদারি প্রথা ছিল আকবরের সামরিক ও বেসামরিক শাসনব্যবস্থার মূল ভিত্তি।
◾সংক্ষেপে (৩০-৫০টি শব্দের মধ্যে) উত্তর দাও : (পূর্ণমান—৩)
(ক) মুঘলরা কেন নিজেদের বাদশাহ বলত ?
উত্তর। 'বাদশাহ' বা 'পাদশাহ' ছিল একটি ফরাসি শব্দ' 'পাদ' শব্দটির দ্বারা বোঝাত প্রভু এবং 'শাহ' শব্দটি দ্বারা বোঝাত শাসক বা রাজা। মুঘলরা সার্বভৌম শাসক বোঝাতে নিজেদের নামের পূর্বে 'বাদশা' উপাধিটি ব্যবহার করতেন। মুঘলরা 'সুলতান' শব্দটি যুবরাজের ক্ষেত্রে ব্যবহার করতেন। ১৫০৭ খ্রিস্টাব্দে বাবর কাবুলে থাকার সময় 'বাদশাহ' উপাধি নেন। 'বাদশাহ' উপাধি ব্যবহার করে মুঘলরা বোঝাতে চাইল যে তাদের শাসন ক্ষমতা অন্য কারোর অনুমোদনের ওপর নির্ভরশীল নয়। যা তাদের শক্তিশালী শাসক গোষ্ঠীরূপে পরিগণিত করেছিল।
(খ) হুমায়ুন আফগানদের কাছে কেন হেরে গিয়েছিলেন?
উত্তর। মুঘল সম্রাট হুমায়ুন আফগান নেতা শেরশাহর কাছে পর পর দুবার (১৫৩৯ খ্রি. চৌসার যুদ্ধ, ১৫৪০ খি বিলগ্রামের যুদ্ধ) পরাজিত হয়েছিলেন। হুমায়ুনের আফগানদের বিরুদ্ধে পরাজয়ের বেশ কয়েকটি কারণ ছিল। এগুলি হল—
(১) আফগানদের নেতৃত্বকারী শেরশাহের সামরিক প্রতিভা, কূটনীতি, রাজনৈতিক দক্ষতা ও যুদ্ধের রণকৌশল সব কিছুর কাছেই হুমায়ুনের দক্ষতা ছিল খুবই নগণ্য।
(২) মুঘলরা দিল্লির সিংহাসন দখল করে নিলেও, তা পুনরুদ্ধার করার অদম্য ইচ্ছা আফগানদের মধ্যে তখনও প্রবল ছিল।
(৩) এ ছাড়া হুমায়ুনের সেনাবাহিনী এতই ক্ষুদ্র ছিল যে তা দিয়ে তার সাম্রাজ্য রক্ষা করা সম্ভবপর ছিল না। সিংহাসনে আরোহণ করার পর নানান আভ্যন্তরীণ সমস্যা তার আর্থিক ভিত্তি দুর্বল করে দিয়েছিল ফলে হুমায়ুন তার সৈন্যবাহিনী পুনর্গঠন করতে ব্যর্থ হন, যা আফগানদের বিরুদ্ধে পরাজয়ের আরেকটি কারণ।
(গ) ঔরঙ্গজেবের রাজত্বে কেন মুঘল অভিজাতদের মধ্যে রেষারেষি বেড়েছিল?
উত্তর। মুঘল আমলের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদ ছিল মনসবদার। মুঘল আমলে এই মনসবদার বিভিন্ন সামরিক ও বেসামরিক দায়িত্ব পালন করত। ঔরঙ্গজেবের শাসনে অনেক চেষ্টায় বিজাপুর ও গোলকুণ্ডা মুঘলদের দখলে আসে। ফলে মারাঠা ও দক্ষিণী মুসলিম অভিজাতরা মুঘল শাসনে যোগ দেয়। এই পরিস্থিতিতে মনসবদারি ব্যবস্থার বৈচিত্র্য আনার জন্য নতুন। করে, মনসব প্রদান শুরু করেন। ফলে এই মনসব পাওয়া নিয়ে অভিজাতদের মধ্যে রেষারেষি বেড়ে গিয়েছিল।
(ঘ) সুনহ-ই-কুল কী ?
উত্তর। সুলহ-ই-কুল কথার অর্থ হল সকল ধর্মের প্রতি সমভাবাপন্ন, শ্রদ্ধা এবং ধর্মসহিতা। বাস্তববাদী আকবর বুঝেছিলেন যে, ভারতের মতো হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশে মুসলিম ধর্মাবলম্বী মুঘলদের পক্ষে একক শক্তিতে সাম্রাজ্য পরিচালনা সম্ভব নয়। তাই উদার ধর্মনীতির মুখোশে আকবর সংখ্যাগুরু হিন্দুদের আনুগত্য লাভ করে মুঘল সাম্রাজ্যের ভিত্তি সুদৃঢ় করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু আকবরের ধর্মনীতি নিছক রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত ছিল না—রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য তিনি সমস্ত প্রতিদ্বন্দ্বী জাতি, ধর্মীয় গোষ্ঠীর মধ্যে সমন্বয়সাধন করতে চেয়েছিলেন। সকলের প্রতি সহনশীল ও শান্তির এই পথই হল 'সুলহ-ই-কুল। 'দীন-ই-ইলাহী” হল এই নীতিরই বাস্তব প্রতিফলন।
(ঙ) মুঘল শাসন ব্যবস্থায় সুবা প্রশাসনের পরিচয় দাও।
উত্তর। মুঘলযুগে প্রদেশগুলিকে বলা হত সুবা। এই সুবাগুলিকে প্রশাসন ব্যবস্থার সুবিধার জন্য 'সরকার' এবং 'সরকার' গুলিকে 'পরগনায়' ভাগ করা হত। কতকগুলি গ্রাম নিয়ে একটি 'পরগনা' গঠিত ছিল। মুঘল সুবাগুলির প্রশাসনিক ব্যবস্থা কেন্দ্রীয় শাসন ব্যবস্থার প্রায় অনুরূপ ছিল বলা যায়। প্রদেশের বা সুবার প্রধানকে বলা হত 'সুবাদার'। এই উচ্চপদস্থ কর্মচারী সামরিক ও প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করত। রাজস্ব আদায়ের দেওয়ানকে সাহায্য করা ছিল সুবাদারদের কর্তব্য।। সুবাদারের কোনো অর্থনৈতিক বা রাজস্ব বিষয়ক ক্ষমতা ছিল না। কৃষি ও কৃষককে কাজে উৎসাহ দেওয়া ছিল সুবাদারের ।
◾ বিশদে (১০০-১২০ টি শব্দের মধ্যে ) উত্তর দাও : ( পূর্ণমান - ৫ )
(ক) শের শাহর শাসনব্যবস্থায় কী কী মানবিক চিন্তার পরিচয় তুমি পাও তা লেখো।
উত্তর। মাত্র পাঁচ বছরের রাজত্বকালের মধ্যে শেরশাহ শাসন ব্যবস্থার যে সংস্কার সাধন করেছিলেন তা তাকে ভারত ইতিহাসে অমর করে রেখেছে। শাসন পরিচালনার ক্ষেত্রে শেরশাহ বেশ কিছু শাসনতান্ত্রিক সংস্কার এনেছিলেন। এগুলি
(১) কেন্দ্রীয় শাসন পরিচালনার জন্য তিনি চারজন মন্ত্রী নিয়োগ করেছিলেন। শাসন কার্যের সুবিধার জন্য শেরশাহ সাম্রাজ্যকে ৪৭টি সরকারে ও প্রতিটি সরকারকে পরগনায় বিভক্ত করেন।
(২) রাজস্ব সংস্কার হিসাবে জমি জরিপ করে জমির উৎপন্ন ফসলের বা অংশ রাজস্ব নেবার ব্যবস্থা করেন। এ ছাড়া পাট্টা ও কবুলিয়ত এর প্রচলন ঘটান। পাট্টায় কৃষকের নাম, জমিতে কৃষকের অধিকার, কত রাজস্ব দিতে হবে প্রভৃতি লেখা থাকত। তার বদলে কৃষকরা রাজস্ব দেওয়ার কথা কবুল করে কবুলিয়ত নামে অন্য একটি দলিল রাষ্ট্রকে দিত।
(৩) যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি কল্পে শেরশাহ বাংলার সোনার গাঁ থেকে উত্তর-পশ্চিম সীমান্তে পেশোয়ার পর্যন্ত বিস্তৃত সড়ক ই আজম' নামে একটি সড়ক নির্মাণ করেন। যা পরিবর্তীতে গ্রান্ড ট্রাঙ্ক রোড নামে খ্যাত হয়। এ ছাড়া আরও অনেক সুন্দর ও প্রশস্ত পথ তিনি নির্মাণ করেন যাহল দেশের ব্যাবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটায়।
(৪) পথিক ও বণিকদের সুবিধার জন্য রাস্তার ধারে অনেক সরাইখানা তৈরি করা। হয়েছিল।
(৫) ঘোড়ার মাধ্যমে ডাক-যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি করেছিলেন।
(৬) সামরিক সংস্কার হিসেবে শেরশাহ সেনাবাহিনী নিয়ন্ত্রণে আনতে 'দাগ' ও হুলিয়া' প্রথা চালু করেন।
উপরিলিখিত সংস্কারগুলি থেকে আমরা তাঁর শাসন ব্যবস্থার যে পরিচয় পাই তা হল – তিনি প্রাচীন ও মধ্যযুগীয় হিন্দু-মুসলমান শাসন পদ্ধতির সঙ্গে নিজস্ব কিছু চিন্তাভাবনার সমন্বয় ঘটিয়ে এক জলকল্যাণমুখী শাসন ব্যবস্থা প্রবর্তন করেন। এ ছাড়া শেরশাহ তার শাসন ব্যবস্থায় মধ্যযুগীয় স্বৈরতন্ত্রের সঙ্গে দক্ষতা, উদারতা ও জনকল্যাণের আদর্শের সমন্বয়ে ঘটাতে সক্ষম হয়েছিলেন।
(খ) মুঘল শাসকদের রাজপুত নীতিতে কী কী মিল ও অমিল ছিল তা বিশ্লেষণ করো।
উত্তর। মুঘল রাজদরবারের আমির মণ্ডলীতে রাজপুতদের সম্মানীয় ও শক্তিশালী অতিথি হিসেবে প্রবেশ মধ্যযুগের ভারতবর্ষের মুঘল ইতিহাসের এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। মুঘল বাদশাহ হুমায়ুন বুঝেছিলেন যে, হিন্দুস্থানের ক্ষমতা দখল করতে গেলে রাজপুত রাজাদের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো রাখা দরকার। এই ধারণা থেকেই আকবর মৈত্রী ও যুদ্ধনীতির সাহায্যে রাজপুতদের মনসবদারি ব্যবস্থার আয়ত্তে নিয়ে আসেন। যে ব্যবস্থা পরবর্তী মুঘল সম্রাটগণের জাহাঙ্গির, শাহ জাহান ও ঔরঙ্গজেবের আমলে অক্ষুন্ন ছিল। মুঘল বাদশাহ ও শাহজাদাদের সঙ্গে কোনো রাজপুত পরিবারের মেয়েদের বিয়ে হওয়ার ফলে মুঘল-রাজপুত মৈত্রীর পথ প্রশস্ত হয়েছিল। মুঘল সম্রাটদের আমলেই রাজ দরবারে, এবং সামরিক প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রে রাজপুত শাসকরা গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বের অধিকারী ছিল। আকবর থেকে ঔরঙ্গজেব পর্যন্ত সকল মুঘল বাদশাই একই পথ অবলম্বন করেছিলেন।
আকবরের শাসনকালে মানসিংহ, টোডরমল প্রমুখ, জাহাঙ্গিরের আমলে রানা প্রতাপের ছেলে অমর সিংহ, ঔরঙ্গজেবের আমলে অম্বরের মির্জা, রাজা জয়সিংহ প্রমুখ রাজপুতরা মুঘল সাম্রাজ্যের চরম হিতৈষী জনে পরিণত হয়েছিলেন।
তবে রাজপুত নীতির ক্ষেত্রে মুঘল শাসকদের মধ্যে বেশ কিছু অমিলও পরিলক্ষিত হয়। যেমন শাহাজাহান প্রথমদিকে দরবারে দল ও রাজনীতির ফলে রাজপতদের থেকে মৌলবাদী শক্তিকেই প্রাধান্য দিয়েছিলেন। তেমনই আকবরের আমলে হিন্দুদের ওপর থেকে তীর্থকর ও জিজিয়া কর তুলে নেওয়া হয়। কিন্তু বহুকাল পরে ঔরঙ্গজেবের আমলে 'জিজিয়া' কর পুনঃপ্রবর্তন করা হলে রাজপুত মৈত্রীতে প্রচণ্ড আঘাত পড়ে। সম্রাট আকবর থেকে শাহাজাহান পর্যন্ত মুঘল শাসকরা রাজপুতদের সাথে সমস্ত রকম আপোস নীতির মাধ্যমে মুঘল সাম্রাজ্যকে দৃঢ়তা প্রদানে সম্ভবপর হলেও ঔরঙ্গজেব তাঁর রাজত্বের শেষে রাজপুতদের সাথে নানা ঝামেলায় জড়িয়ে পড়েছিলেন যা মুঘল সম্রাজ্যের পতনের জন্য অনেকখানি দায়ী ছিল।
(গ) দাক্ষিণাত্য অভিযানের ক্ষত মুঘল শাসনের উপর কী প্রভাব ফেলেছিল?
উত্তর। ঔরঙ্গজেবের দাক্ষিণাত্য নীতি মুঘল সম্রাট আকবরের সম্প্রসারণ নীতিরই অনুসরণ মাত্র। শাহাজাহানের রাজত্বকালে ঔরঙ্গজেব ছিলেন দাক্ষিণাত্যের শাসনকর্তা। তখনই দাক্ষিণাত্যের সিয়া মুসলমানগণ দ্বারা শাসিত স্বাধীন গোলকুণ্ডা ও বিজাপুরকে মুঘল সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত করা ছিল তার মূল লক্ষ্য। তাই অনেকে ঔরঙ্গজেবের দাক্ষিণাত্য অভিযানকে ধর্মীয় কারণ রূপে বর্ণনা করেছেন। তবে দাক্ষিণাত্যের উদীয়মান মারাঠা শক্তির সাথে বিজাপুর ও গোলকুণ্ডার ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ঔরঙ্গজেবের শিরঃপীড়ার প্রকৃত কারণ হয়ে ওঠে। ঔরঙ্গজেব ভেবেছিলেন দক্ষিণী রাজ্যগুলিকে জয় করতে পারলে সেখান থেকে অনেক বেশি রাজস্ব আদায় করা যাবে। এই ত্রিবিধ উদ্দেশ্য মাথায় নিয়ে তিনি দাক্ষিণাত্য রওনা হন এবং জীবনের শেষ ছাব্বিশ বছর সেখানেই অতিবাহিত করেন।
কিন্তু ঔরঙ্গজেবের দাক্ষিণাত্য নীতির কোনো উদ্দেশ্যই সফল হয়নি এবং তা মুঘল শাসনের ওপর ক্ষতরূপে বর্ষিত হয়। কেননা —বিজাপুর ও গোলকুণ্ডা রাজ্য দুটি ধ্বংস করে তিনি মারাঠাদের উত্থানকেই সহজ করে দেন। দাক্ষিণাত্যের বিরামহীন যুদ্ধ মুঘল রাজকোশ শূন্য করে দেয়। এমনকি সম্রাটের দীর্ঘকাল দাক্ষিণাত্যে অবস্থানের ফলে আমির-ওমরাহরা বিদ্রোহ, বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করে স্বাধীন হয়ে ওঠে, যাতে মুঘল সাম্রাজ্যের মর্যাদা ও শক্তি অনেকখানি খর্ব হয়। এই দাক্ষিণাত্য নীতি মুঘল সাম্রাজ্যে যে ক্ষতের সৃষ্টি করে তা ঔরঙ্গজেব ও তার উত্তরাধিকারী কেউ সারিয়ে তুলতে সক্ষম হননি। তাই বলা যায় যে, দাক্ষিণাত্য অভিযানের ক্ষতই ঔরঙ্গজেব ও তাঁর সাম্রাজ্যের সমাধিস্থলে পরিণত হয়।
(ঘ) মুঘল সম্রাটের কি কোনো নির্দিষ্ট উত্তরাধিকার নীতি ছিল? উত্তরাধিকারের বিষয়টি কেমনভাবে তাঁদের শাসনকে প্রভাবিত করেছিল ?
উত্তর। মুসলিম আইন অনুযায়ী জ্যেষ্ঠ পুত্রকে সিংহাসনের দায়িত্ব অর্পণ করা হয়। সেই সূত্রে মুঘল শাসকরা তাদের সিংহাসনের উত্তরাধিকারী মনোনীত করে যেতেন। তবে সবসময় জ্যেষ্ঠ পুত্রকেই যে তারা মনোনয়ন করতেন এমন নয়। কিন্তু মুঘল সিংহাসনের উত্তরাধিকার সম্বন্ধে কোনো সুনির্দিষ্ট আইন বা বিধিবদ্ধ নীতি না থাকায় প্রত্যেক সম্রাটের মৃত্যুর পরই সিংহাসনের উত্তরাধিকারী কে হবে তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যেত।
মুঘল শাসকদের এরকম কোনো বিধিবদ্ধ উত্তরাধিকার নীতি না থাকার ফলে সম্রাটের মৃত্যুর পর কে শাসক হবে তা নিয়ে এমন একটা সংঘর্ষ বা বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েই থাকে। সিংহাসনের উত্তরাধিকার প্রশ্নের সঙ্গে সম্রাটের অসাম্য পুত্রদের জীবন মরণের প্রশ্নও জড়িত ছিল। তাই শাসনকারী সম্রাট অসুস্থ হয়ে পড়লেই তার পুত্ররা সিংহাসনের উত্তরাধিকার পাবার জন্য বিদ্রোহ করত। সম্রাট কোনো পুত্রকে মনোনীত করে গেলে তার মৃত্যুর পর সিংহাসনের অধিকার নিয়ে ভাইয়ে ভাইয়ে যুদ্ধ বেধে যেত। মুঘল ঐতিহ্যে এই কারণেই দেখা যায় যে জাহাঙ্গির আকবরের বিরুদ্ধে ও শাহজাহান জাহাঙ্গিরের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে ছিলেন। সম্রাট শাহাজাহান তার প্রিয় পুত্র সুজাকে সিংহাসনের উত্তরাধিকারী করে গেলে তার মৃত্যুর পর অন্যান্য পুত্র দারা, মুরাদ ও ঔরঙ্গজেব সিংহাসনের দখল নিয়ে নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েছিলেন। উত্তরাধিকার নিয়ে এই বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি মুঘল শাসনে কলঙ্কের ছাপ ফেলেছিল।
◾ কল্পনা করে লেখো (১০০-১৫০ টি শব্দের মধ্যে) :
(ক) যদি তুমি বাদশাহ আকবরের মতো ধর্ম সম্প্রদায়ের মানুষের দেশে সম্রাট হতে তাহলে তোমার ধর্মনীতি কী হত ?
উত্তর। ভারতের ইতিহাসে আকবরের সবচেয়ে কালজয়ী অবদান হল উদার ও বিচক্ষণ ধর্মনীতি। উদার বিচক্ষণ রাষ্ট্রনায়ক রূপে আকবর বুঝেছিলেন বহু জাতি ও ধর্ম অধ্যুষিত ভারতে কোনো প্রকার বৈষম্যমূলক নীতি অনুসরণ করলে তার পরিণাম হবে ভয়াবহ। আকবরের মতো ধর্ম সম্প্রদায়ের মানুষের দেশে যদি আমি একজন সম্রাট হতাম তবে ধর্মীয় ক্ষেত্রে আকবরের নীতিকেই অনুসরণ করতাম। কেননা সাম্রাজ্যের ভিত্তি দৃঢ় করতে গেলে সংখ্যা গরিষ্ঠ হিন্দু সম্প্রদায়ের সমর্থন ও সহযোগিতা প্রয়োজন। এই কথা মাথায় রেখেই বৈষম্যমূলক নীতি পরিহার করে উদার ধর্মনীতি গ্রহণ করতাম। সরকারি উচ্চপদে মুসলিমদের পাশাপাশি যোগ্যতা অনুযায়ী হিন্দু রাজপুত সেনানায়কদেরও নিয়োগ করতাম। এ ছাড়া হিন্দুদের ওপর আরোপিত কর তুলে দেওয়ার পাশাপাশি তাদের সামাজিক ও ধর্মীয় ক্ষেত্রে সমান মর্যাদা দান করতাম। সম্রাট আকবরের মতোই ধর্মীয় সহিমুতা বা ‘সুলহ-ই-কুল' নীতির অনুরূপ ধর্মীয়নীতি গড়ে তুলতাম। বিভিন্ন ধর্মসভা আয়োজন করে সেখানে নানা ধর্মের সারকথা মানুষের কাছে মেলে ধরতাম, যা সকল ধর্মের মানুষের মধ্যে ধর্মীয় ভেদবোধকে দূরে ঠেলে ভ্রাতৃত্ববোধ জাগিয়ে তুলত।
তাই সবশেষে বলতে পারি যে, আজ থেকে চারশো বছর আগে আকবর জাতি-ধর্ম-বর্ণ-নির্বিশেষে যে সংমিশ্রিত ধর্ম নিরপেক্ষ জাতীয় রাষ্ট্র গঠনের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিলেন, সেই ঐতিহ্য অনুসরণ করতে পারলে ভারতের শান্তি ও সম্প্রীতি সুনিশ্চিত হবে। আকবর তার ধর্মনীতির মধ্যে যে সুলহ-ই-কুল বা সার্বজনীন শান্তির ভাবধারা তুলে ধরেছিলেন। তা সশ্রদ্ধচিত্তে স্মরণীয়।
(খ) মনে করো তুমি সম্রাট ঔরঙ্গজেব। তাহলে কেমনভাবে তুমি দাক্ষিণাত্যের সমস্যার মোকাবিলা করতে?
উত্তর। মুঘল সম্রাট ঔরঙ্গজেব দাক্ষিণাত্যের বিজাপুর ও গোলকোণ্ডাতে সৃষ্ট সমস্যার মোকাবিলায় যে কর্মসূচি নিয়েছিলেন তা প্রকৃত ভ্রান্তনীতির ফল ছিল যা মুঘল সাম্রাজ্যের পতন ডেকে আনে। আমি সম্রাট ঔরঙ্গজেব হলে দাক্ষিণাত্য সমস্যার সমাধানে বেশ কিছু উদার নীতি অবলম্বন করতাম। কেননা ঔরঙ্গজেব দাক্ষিণাত্যের গোলকোণ্ডা ও বিজাপুরের ধর্মীয় ক্ষেত্রে যে বিরোধিতা করেন তা একেবারে যুক্তিগ্রাহ্য নয়। কেননা মুঘল সাম্রাজ্যে যেহেতু বহু ধর্ম সম্প্রদায়ের অবস্থান ছিল তাই সাম্রাজ্যকে টিকিয়ে রাখার ক্ষেত্রে ধর্মীয় উদারতার নীতিই কাম্য। এমনকি দক্ষিণের এই দুই শক্তির সাথে মৈত্রীভাব গড়ে তুলে এবং মারাঠা শক্তির আক্রমণে সৈন্য বাহিনী দিয়ে সাহায্যের প্রতিশ্রুতির মাধ্যমে তাদের অনুগত রাষ্ট্রে পরিণত করা যেত। এই নিরাপত্তা প্রদানের বিনিময়ে তারা সহজেই একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থদানে অঙ্গীকার বদ্ধ হত। কিন্তু ঔরঙ্গজেব এরকম কোনো মৈত্রীর নীতি গ্রহণ না করে সরাসরি যুদ্ধের মাধ্যমে বিজাপুর ও গোলকোণ্ডায় অর্থনীতি ও রাজনীতির অধিকার কায়েম করতে চেয়েছিলেন। ফলে এই দুটি রাষ্ট্র মুঘল রাষ্ট্রের বিরোধী হয়ে পড়ে। এক্ষেত্রে সম্রাট হিসেবে করণীয় ছিল বিজাপুর ও গোলকোণ্ডার সাথে মৈত্রীর নীতি নিয়ে মারাঠাদের সাথে যুদ্ধে তাদের সাহায্য লাভ। কেননা দক্ষিণের এই দুটি শক্তিও তখন মারাঠাদের আক্রমণ থেকে বাঁচতে চাইছিল। কিন্তু ঔরঙ্গজেবের সম্পূর্ণ ভ্রান্তনীতি তার দাক্ষিণাত্য অভিযানকে ক্ষতে পরিণত করেছিল। যা তাঁর ও সাম্রাজ্যের পতনকে ত্বরান্বিত করে।
(গ) মনে করো তুমি সপ্তদশ শতকের একজন মারাঠা মনসবদার। তোমার জায়গির থেকে আয় কমে গেছে। এই অবস্থায় মুঘল ও মারাঠাদের মধ্যে যুদ্ধ বেধে গেছে। তুমি কী করবে? কেন করবে?
উত্তর। আমি মনে করা যাক আমি সপ্তদশ শতকের একজন মারাঠা মনসবদার।
সপ্তদশ শতকে মোগল সম্রাট ঔরঙ্গজেব নিজের সমর্থকের সংখ্যা বাড়ানোর জন্য আমার মতো অনেক দক্ষিণী অভিজাতকে মনসব দিয়েছেন। উত্তর ভারতের কৃষিজমি হল অনেক উর্বর। দক্ষিণ ভারতে আমার মতো যাঁরা জায়গির পেয়েছেন তারা অনেকেই ক্ষুব্ধ। কারণ এই জায়গিরগুলো নিম্নমানের। তা ছাড়া মোগল বিরোধী প্রজারা রাজস্ব দিচ্ছে না, ফলে জায়গির থেকে আয় কমে গেছে। আবার মোগল ও মারাঠাদের মধ্যে যুদ্ধও লেগে গেছে।
এই অবস্থায় আমি জোর করে রাজস্ব আদায় না করে প্রজারা যা দিতে পারবে তাই নেব আর আমার প্রাপ্য টাকা থেকে আমি মারাঠাদের উন্নতি কি করে হয় তার চেষ্টা করব।
এর কারণ আমি মোগল সম্রাটের ইচ্ছায় মনসবদারি পেলেও আমি একজন মারাঠি। মারাঠা সাম্রাজ্যের স্বাধীনতা নষ্ট হলে আমি মারাঠিদের পাশে দাঁড়াব এবং মাতৃভূমির স্বাধীনতা রক্ষার জন্য চেষ্টা করব।
No comments:
Post a Comment