বল ও চাপ
প্রশ্ন উত্তর
👉(অধ্যায় - ৬ জীবদেহের গঠন সহায়িকা)
❐ অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর :
প্রঃ। কখন আমাদের বল প্রয়োগ করতে হয় ?
উঃ । কোনো স্থির বস্তুকে গতিশীল করতে , কোনো গতিশীল বস্তুর দিক পরিবর্তন করতে বা ওই গতিকে দ্রুত বা মন্থর করতে আমাদের বল প্রয়োগ করতে হয় ।
প্রঃ। এক নিউটন বল কাকে বলে ?
উঃ । একটি এক কেজি ভরের বস্তুর ওপর যে পরিমাণ বল প্রয়োগ করলে বস্তুটিতে এক মিটার / সেকেন্ড ত্বরণ সৃষ্টি হয় , সেই পরিমাণ বলকে এক নিউটন বল বলা হয় ।
প্রঃ । কোনো বস্তুর বেগ বৃদ্ধির হারকে কী বলে ? ।
উঃ । ত্বরণ বলে ।
প্রঃ। SI পদ্ধতিতে বল মাপার একক কী ?
উঃ । এক নিউটন ।
প্রঃ । স্প্রিং তুলা তৈরি করা হয়েছে কেন ?
উঃ । বল প্রয়োগের ফলে স্প্রিং - এর প্রসারণকে কাজে লাগিয়ে বল মাপার যন্ত্র স্প্রিং তুলা তৈরি করা হয়েছে ।
প্রঃ ঘনত্ব কাকে বলে ?
উঃ । কোনো পদার্থের একক আয়তনের ভরকে ওই পদার্থের উপাদানের ঘনত্ব বলে ।
প্রঃ । ঘনত্বের S.I একক কী ?
উঃ । কিলোগ্রাম / ঘনমিটার ।
প্রঃ। গ্যালন কীসের একক ?
উঃ । তরল পদার্থের আয়তন মাপার একক ।
প্রঃ । চাপ কাকে বলে ?
উঃ । একক ক্ষেত্রফল যে পরিমাণ বল ক্রিয়া করে তাকে চাপ বলে ।
প্রঃ । কোনো বস্তুর ওপর একই পরিমাণ বল প্রযুক্ত হলে এবং ক্ষেত্রফল বৃদ্ধি পেলে চাপের মান বাড়বে না কমবে ?
উঃ । চাপ কমবে ।
প্রঃ । বস্তুর ওজন কাকে বলে ?
উঃ । কোনো বস্তুকে পৃথিবী যে বল দ্বারা কেন্দ্রের দিকে আকর্ষণ করে তাকে বস্তুর ওজন বলে ।
প্রঃ । কোনো বস্তু ওপর থেকে নীচে যে জ্বরণের অধীনে পড়ে তাকে কী বলে ?
উঃ অভিকর্ষজ ত্বরণ ।
প্রঃ । অভিকর্ষজ ত্বরণের S.I পদ্ধতিতে মান কত ?
উঃ 9.81 মিটার / সেকেন্ড ।
প্রঃ । কোনো বস্তুকে জলে ডোবালে তার আপাত ওজনের কী পরিবর্তন হয় ?
উঃ ওজন কমে যায় ।
প্রঃ । কোনো বিন্দুতে তরলের চাপের রাশিমালাটি লেখো ।
উঃ । চাপ = তরলের গভীরতা x ঘনত্ব x অভিকর্ষজ ত্বরণ । = . চাপ ( P ) hdg যেখানে h = গভীরতা , d = ঘনত্ব , ৪ = অভিকর্ষজ ত্বরণ ।
প্রঃ । কোনো বস্তু স্থির অবস্থা থেকে বিনা বাধায় নীচের দিকে পড়তে থাকলে 1 সেকেন্ড পর উহার গতিবেগ কত হবে ?
উঃ । 9.81 মিটার / সেকেন্ড ।
প্রঃ । অভিকর্ষজ ত্বরণ বস্তুর ভরের ওপর নির্ভর করে কি ?
উঃ । না । অভিকর্ষজ ত্বরণ বস্তুর ভরের ওপর নির্ভর করে না ।
প্রঃ । লবণাক্ত জলের ও বিশুদ্ধ জলের মধ্যে কোন্টির ঊর্ধ্বমুখী ঘাত বেশি ?
উঃ । লবণাক্ত জলের ঊর্ধ্বমুখী ঘাত বেশি ।
প্রঃ । নিউটনের কোন্ গতিসূত্র থেকে ক্রিয়া - প্রতিক্রিয়ার ধারণা পাওয়া যায় ?
উঃ । তৃতীয় গতিসূত্র থেকে ।
প্রঃ । বস্তুর ওপর প্রযুক্ত বল , ভর ও জ্বরণের মধ্যে সম্পর্কটি কী ?
উঃ বল = ভর x ত্বরণ ।
প্রঃ । SI পদ্ধতিতে জলের ঘনত্ব কত ?
উঃ 1000 কিলোগ্রাম / ঘন মিটার ।
প্রঃ । বর্গমিটার কোন রাশির একক ?
উঃ । বর্গমিটার ক্ষেত্রফলের একক ।
প্রঃ । কোনো বস্তু কখন কোনো তরলের মধ্যে ভাসে ?
উঃ । বস্তুর ওজন উহার দ্বারা অপসারিত তরলের ওজনের সমান হলে বস্তু তরলের মধ্যে নিমজ্জিত হয়ে ভাসে ।
প্রঃ । একক আয়তন বলতে কী বোঝায় ?
উঃ । তরল পদার্থের ক্ষেত্রে আয়তন নির্দিষ্ট হয় । যখন ওই আবর্তনের মান 1 ধরা হয় তখন তাকে একক আয়তন বলে । যেমন— 1 লিটার ।
সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর :
প্রঃ । বল কাকে বলে ?
উঃ । কোনো বস্তুর ওপর যা প্রযুক্ত হয়ে বস্তুর গতীয় অবস্থার পরিবর্তন করে বা করার চেষ্টা করে তাকে বল বলে ।
প্রঃ। নিউটনের প্রথম গতিসূত্র থেকে কোন্ কোন্ বিষয় জানা যায় ?
উঃ । নিউটনের প্রথম গতিসূত্র থেকে প্রধানত দুটি বিষয় জানা যায় : ( i ) বলের সংজ্ঞা । ( ii ) বস্তুর জাড্যধর্ম ।
প্রঃ । নিউটনের দ্বিতীয় গতিসূত্র থেকে কোন্ কোন্ বিষয় জানা যায় ?
উঃ । নিউটনের দ্বিতীয় গতিসূত্র থেকে প্রধানত দুটি বিষয় জানা যায় : ( i ) বলের একক ( ii ) বলের মাপ ।
প্রঃ । নিউটনের তৃতীয় গভিসূত্র থেকে কোন কোন বিষয় জানা যায় ?
উঃ । নিউটনের তৃতীয় গতিসূত্র থেকে প্রধানত দুটি বিষয় জানা যায় : ( i ) ক্রিয়া প্রতিক্রিয়ার ধারণা । ( ii ) রৈখিক ভরবেগের সংরক্ষণ সূত্র ।
প্রঃ । বল বেশি না কম কীভাবে জানা যায় ?
উঃ । কোনো বস্তুতে ভিন্ন সময়ে দুটি ভিন্ন মানের বল প্রযুক্ত করা হলে , বস্তুর মধ্যে যে বলের জন্য অপেক্ষাকৃত বেশি ত্বরণ সৃষ্টি হয় , সেই বলের মান বেশি । অর্থাৎ বল বেশি না কম তা জানতে ত্বরণ হিসাব করতে হয় ।
প্রঃ । জ্বরণ কাকে বলে ? উহার SI একক কী ?
উঃ । কোনো বস্তু ক্রমবর্ধমান গতিবেগ নিয়ে চললে গতিবেগ বাড়ার হারকে ত্বরণ বলে । জ্বরণের S.I একক মিটার / সেকেন্ড ।
প্রঃ । অভিকর্ষজ ত্বরণ কাকে বলে ? S.I পদ্ধতিতে উহার মান কত ?
উঃ । কোনো বস্তুকে বিনা বাধায় ভূমির দিকে পড়তে দিলে বস্তুর বেগ ক্রমশ বাড়তে থাকে । এই বেগ বৃদ্ধির হারকে অভিকর্ষজ ত্বরণ বলে । S.I পদ্ধতিতে অভিকর্ষজ ত্বরণের মান 981 সেমি / সেকেন্ড ।
প্রঃ । প্রতিক্রিয়া বল কাকে বলে ?
উঃ । একটি বস্তু যখন অপর এক বস্তুর ওপর বল প্রয়োগ করে তখন দ্বিতীয় বস্তুটিও প্রথম বস্তুর ওপর প্রতিক্রিয়া বল প্রয়োগ করে , দ্বিতীয় বস্তু দ্বারা প্রথম বস্তুর ওপর প্রযুক্ত বলকে প্রতিক্রিয়া বল বলে ।
প্রঃ । ঘর্ষণ বল কাকে বলে ?
উঃ । দুটি তলের সংস্পর্শে তৈরি হওয়া এই বল যা গতি বা গতি উৎপন্ন করার চেষ্টার বিরুদ্ধে সৃষ্টি হয়ে থাকে তার নামই হলো ঘর্ষণ বল ।
প্রঃ । ভর ও ওজনের মধ্যে কোন্টি বস্তুর স্বকীয় ধর্ম এবং কেন ?
উঃ । ভর ও ওজনের মধ্যে ভর বস্তুর স্বকীয় ধর্ম । কারণ ভর সর্বত্র সমান । সমানভেদে ও কালভেদে এর মান অপরিবর্তনীয় । কিন্তু ওজন বস্তুর স্বকীয় ধর্ম নয় কারণ বস্তুর ওজন অভিকর্ষজ ত্বরণের মানের ওপর নির্ভর করে । অভিকর্ষজ ত্বরণের মান বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন বলে বস্তুর ওজনও বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন হয় ।
প্রঃ । বস্তুর প্রকৃত ওজন ও আপাত ওজন কাকে বলে ?
উঃ । জড় মাধ্যমের অনুপস্থিতিতে অর্থাৎ শূন্যস্থানে কোনো বস্তুর ওজন হল তার প্রকৃত ওজন ।
কোনো তরল বা গ্যাসে নিমজ্জিত থাকা অবস্থায় বস্তুর ওজনের বিপরীত দিকে তরল বা গ্যাসের যারা বল বা প্লবতার জন্য বস্তুর ওজন কিছুটা কমে যায় । একে বস্তুর আপাত ওজন বলে ।
প্রঃ। কোনো বস্তুর ওজন কোন্ কোন্ বিষয়ের উপর নির্ভর করে ? কীভাবে ?
উঃ । কোনো বস্তুর ওজন দুটি বিষয়ের উপর নির্ভর করে । বস্তুর ভর ও অভিকর্ষজ ত্বরণ । বস্তুর ওজন = বস্তুর ভর × অভিকর্ষজ ত্বরণ । বস্তুর ভর ও অভিকর্ষজ ত্বরণ দুটিরই মান বৃদ্ধির সাথে সাথে বস্তুর ওজন বৃদ্ধি পায় ।
প্রঃ। চাপ ও ঘাত বলতে কী বোঝ ? উহাদের মধ্যে সম্পর্কটি কী ?
উঃ । চাপঃ একক ক্ষেত্রফলের ওপর প্রযুক্ত বলকে চাপ বলে । ঘাতও কোনো তলের ওপর মোট ক্রিয়াশীল বলকে খাত বলে । ঘাত ও চাপের মধ্যে সম্পর্কটি হল : ঘাত = চাপ x ক্ষেত্রফল ।
প্রঃ। কোনো বস্তুকে মেঝের ওপর দিয়ে গতিশীল করার শর্ত কী ?
উঃ প্য়োগ করতে হয় ।
প্রঃ । ঘর্ষণ বল কীভাবে পরিমাপ করা যায় ?
উঃ । কোনো বস্তুর ওপর মেঝে কী পরিমাণ ঘর্ষণ বল প্রয়োগ করছে তা পরিমাপ করতে হলে বস্তুটিকে একটি স্প্রিং তুলার সাথে অটিকে তার ওপর বল প্রয়োগ করতে হয় । বস্তুটি গতিশীল করার ঠিক আগের মুহূর্তে সেটির ওপর যে টান স্প্রিং তুন্নাতে ধরা পড়ে সেটাই তার ওপর প্রযুক্ত ঘর্ষণ টান ।
প্রঃ। ঘর্ষণ বল কত প্রকার ও কী কী ?
উঃ । ঘর্ষণ বল দু প্রকার ; ( 1 ) স্থির অবস্থার অবণ বল ও ( ii ) গতিশীল অবস্থার ঘর্ষণ বল ।
প্রঃ। স্থির অবস্থার ঘর্ষণ বল কাকে বলে ?
উঃ । টানা বা যে কোনো ধরনের বল যেমন ঠেলা , ধাক্কা ইত্যাদির প্রয়োগ সত্ত্বেও যখন কোনো বস্তু একটি তলের ওপর স্থির হয়ে থাকে , তখন যে ঘর্ষণ বলটি ক্রিয়া করে তাকে স্থির অবস্থার ঘর্ষণ বল বলে ।
প্রঃ প্রগতিশীল অবস্থার ঘর্ষণ বল কাকে বলে ?
উঃ । কোনো বস্তু কোনো অমসৃণ মেঝের ওপর দিয়ে গতিশীল থাকার সময় বস্তুর গতির বিরুদ্ধে মেঝে যে ঘর্ষণ বল ক্রিয়া করে তাকে গতিশীল অবস্থার ঘর্ষণ বল বলে ।
প্রঃ । গতিশীল ঘর্ষণ বল এবং স্থির ঘর্ষণ বলের মধ্যে কোন্টির মান বেশি হয় এবং কেন ?
উঃ । স্থির ঘর্ষণ বলের মান গতিশীল ঘর্ষণ বলের মানের থেকে বেশি । কারণ গতিশীল অবস্থায় তল দুটির মধ্যে ঘর্ষণ বল কম হয় ।
প্রঃ । কোনো বস্তুকে কোনো মেঝেতে রেখে বস্তুর ওপর টান ক্রমাগত বাড়াতে থাকলে ঘর্ষণ বলের মান কি সীমাহীন ভাবে বাড়ৰে ?
উঃ । না , ঘর্ষণ বলের মান সীমাহীন বাড়বে না । একটি নির্দিষ্ট সীমা পর্যন্ত ঘর্ষণ বলের মান বৃদ্ধি পেয়ে তারপর সর্বোচ্চ মানে পৌঁছাবে । সর্বোচ্চ মানে পৌঁছানোর পর বস্তুটি গতিশীল হবে এবং ঘর্ষণ বলের মান ভ্রমণ কমতে থাকবে ।
প্রঃ । কেরোসিন তেল জলের ওপর ভাসে কেন ?
উঃ । কেরোসিন তেলের ঘনত্ব জলের থেকে কম । অর্থাৎ 1 ঘন সেমি কেরোসিনের ভর সমপরিমাণ জলের থেকে হালকা । তাই কেরোসিন জলের ওপর ভাসে ।
প্রঃ । সমআয়তন জলকে ক্রমান্বয়ে দুটি পাত্রে ঢালা হল : প্রথমবার গামলাতে , দ্বিতীয়বার একটি সরু নলে , কোন্ ক্ষেত্রে চাপ বেশি হবে ।
উঃ । দ্বিতীয় ক্ষেত্রে চাপ বেশি হবে । কারণ চাপ = তরলের গভীরতা x ঘনত্ব x অভিকর্ষতা ত্বরণ । সরু নলের প্রস্থচ্ছেদের ব্যাসার্ধ গামলার থেকে অনেক কম বলে জলের গভীরতা বেশি হবে । তাই চাপ বেশি হবে ।
প্রঃ । সমুদ্রের জলের চাপ একই গভীরতা বিশিষ্ট নদীর জলের চাপের থেকে বেশি হয় কেন ?
উঃ । সমুদ্রের জলে লবণের ভাগ বেশি থাকে বলে ওই জলের ঘনত্ব বেশি হয় । জলের ঘনত্ব বেশি হলে চাপ বেশি হয় । কারণ তরলের চাপ = তরলের গভীরতা × ঘনত্ব × অভিকর্ষজ ত্বরণ ।
প্রঃ । হুবহু একইরকম দুটি বোতলে একই পরিমাণের ভিন্ন ভিন্ন তরল রাখা আছে । বোতলসমেত একটির ভর 2 kg ও অপরটির ভর 2.5 kg । কোন বোতলের তরলের ঘনত্ব বেশি ।
উঃ । 2.5 kg ওজনের বোতলের তরলের ঘনত্ব বেশি । কারণ সাধারণ তরলের চেয়ে গাঢ় তরলের ঘনত্ব বেশি এবং তা ভারীও বেশি ।
প্রঃ । একটি চৌবাচ্চায় বিভিন্ন উচ্চতায় ফুটো করে তার ওপর জল ঢাললে কোন্ ফুটো দিয়ে সব থেকে বেশি গতিতে জল পড়বে ?
উঃ । যে ফুটোটি সব থেকে নীচে সেটি দিয়ে সব থেকে জোরে জল পড়বে । যে ফুটোটি সব থেকে উপরে সেটি দিয়ে সব থেকে আস্তে জল পড়বে । যে ফুটোটি মাঝামাঝি উচ্চতায় অবস্থিত সেই ফুটো দিয়ে মাঝামাঝি জল পড়বে । কারণ তরলের চাপ ( P ) = hxdxg . তরলের গভীরতা ( h ) বাড়ার সাথে সাথে তার চাপ বেশি হবে এবং বেশি জোরে জল পড়বে ।
প্রঃ । একটি জাহাজ সমুদ্র থেকে নদীতে এলে জাহাজটির ডুবে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে কেন ?
উঃ । সমুদ্রের জলের ঘনত্ব বেশি । তাই সমুদ্রের জলের প্লবতা বেশি । পক্ষান্তরে নদীর জলের ঘনত্ব কম । তাই প্রবতা কম । প্লবতা সমুদ্রের জলে বেশি বলে জাহাজের ওপর ক্রিয়ারত ঊর্ধ্বমুখী ঘাতও বেশি । এখন ঊর্ধ্বমুখী ঘাতের মান জাহাজের ওজনের থেকে কম হয়ে গেলে জাহাজ ডুবে যায় । সেজন্য একটি জাহাজ সমুদ্র থেকে নদীর জলে এলে তা ডুবে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে ।
প্রঃ । তরলের চাপ কাকে বলে ?
উঃ । তরলের মধ্যে কোনো বিন্দুর চারদিকে একক ক্ষেত্রফলে তরল লম্বভাবে যে বল প্রয়োগ করে তাকে তরলের চাপ বলে ।
প্রঃ । তরলের সমোচ্চশীলতা ধর্ম কাকে বলে ?
উঃ । তরল বিভিন্ন পাত্রে ঢাললে যদি এক পাত্রের তরল অন্য পাত্রে প্রবাহিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে তাহলে প্রতিটি পাত্রে একই উচ্চতা দখল করে । তরলের এই ধর্মকে সমোচ্চশীলতা ধর্ম বলে ।
প্রঃ । তরলের সমোচ্চশীলতা ধর্মের দুটি উদাহরণ দাও ।
উঃ । তরলের সমোচ্চশীলতা ধর্মের দুটি উদাহরণ হল ( i ) আর্তেজীয় কূপ এবং ( ii ) শহরে জল সরবরাহ ব্যবস্থা ।
প্রঃ । প্রমাণ বায়ুমণ্ডলীয় চাপ কাকে বলে ?
উঃ । 45 ° অক্ষাংশে সমুদ্রপৃষ্ঠে 76 সেমি পারদস্তম্ভ যে চাপ দেয় তাকে প্রমাণ বায়ুমণ্ডলীয় চাপ বলে ।
প্রঃ । পৃথিবীর সব স্থানেই কি পারদ স্তম্ভের উচ্চতা 76 সেমি হবে ব্যাখ্যা করো ।
উঃ । বায়ুমণ্ডলের চাপ বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন । উদাহরণস্বরূপ বলা যায় যে ভূপৃষ্ঠ থেকে যত ওপরে ওঠা যায় বায়ুর চাপও তত কমতে থাকে । বায়ুর চাপ কমলে পারদস্তম্ভের উচ্চতাও কমে যাবে । তাই পাহাড়ি অঞ্চলে পারদস্তম্ভের চাপ 76 সেমির কম হবে ।
প্রঃ । প্লবতা কাকে বলে ?
উঃ । যখন কোনো বস্তুকে কোনো তরলে ডোবানো হয় তখন ওই তরল বস্তুটির ওপর একটি উর্ধ্বমুখী বল প্রয়োগ করে । এই বলটিকে প্লবতা বলা হয় ।
প্রঃ । ভাসন কী ? বস্তুর ভাসনের শর্তগুলি লেখো ।
উঃ । তরলে অদ্রবণীয় বস্তু তরলের মধ্যে পাত্রের তলদেশে না পৌঁছে যে কোনো অবস্থানে স্থির হয়ে থাকাকে বস্তুর ভাসন বলে । যেমন- বরফ , ভেজা কাঠ ইত্যাদি ভেসে থাকে । বস্তুর ভাসনের দুটি শর্ত আছে : ( i ) বস্তু কর্তৃক অপসারিত তরলের ওজন বস্তুর ওজনের থেকে বেশি হবে । ( ii ) বস্তুর ভারকেন্দ্র ও প্রবতা কেন্দ্র একই সরলরেখার ওপর অবস্থিত হবে ।
প্রঃ । আর্কিমিদিসের সূত্রটি বিবৃত করো ।
উঃ । স্থির তরল বা গ্যাসীয় পদার্থে কোনো বস্তুকে আংশিক বা সম্পূর্ণ ডোবালে বস্তুটির কিছু পরিমাণ আপাত ওজন হ্রাস ঘটে । যা ওই বস্তু দ্বারা অপসারিত তরল বা গ্যাসীয় পদার্থের ওজনের সমান ।
প্রঃ । কীভাবে প্রমাণ করবে যে কোনো বস্তুকে কোনো তরলে নিমজ্জিত করলে ওই বস্তুর ওজনের আপাত হ্রাস হয় ?
উঃ । একটি বস্তুকে স্প্রিং তুলার হুক থেকে ঝুলিয়ে দাও । স্প্রিং তুলার সূচকটি যে দাগ পর্যন্ত নেমে আসে সেটি লক্ষ করো । এবার ওই অবস্থায় বস্তুটিকে একটি পাত্রের জলে নিমজ্জিত করো । দেখতে পাবে যে স্প্রিং তুলার সূচকের পাঠ 164 CM ধীরে ধীরে কমে যাচ্ছে । এর দ্বারা প্রমাণ করা যায় যে - কোনো বস্তুকে তরলে নিমজ্জিত করলে বস্তুর ওজনের আপাত হয় ।
প্রঃ । কোনো বস্তুকে তরলে ডোবানো হলে ওই বস্তুর ওপর প্রযুক্ত তরলে ঊর্ধ্বমুখী বল কোন কোন বিষয়ের ওপর এবং কীভাবে নির্ভর করে ?
উঃ । কোনো বস্তুকে ভরলে ডোবালে ওই তরলের ওপর প্রযুক্ত তরলের ঊর্ধ্বমুখী বল দুটি বিষয়ের ওপর নির্ভর করে । প্রথমতঃ বস্তু দ্বারা অপসারিত তরলের আয়তন ।
দ্বিতীয়তঃ ওই তরলের ঘনত্ব । বস্তু দ্বারা অপসারিত তরলের আয়তন বাড়লে বস্তুর ওপর প্রযুক্ত উর্ধ্বমুখী বলের পরিমাণ বেড়ে যায় । আবার তরলের ঘনত্ব বাড়লেও বস্তুর ওপর নিমজ্জিত ঊর্ধ্বমুখী বলের পরিমাণ বাড়ে ।
❐ ধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর :
প্রঃ নিউটনের গতিসূত্র তিনটি বিবৃত্ত করো ।
উঃ প্রথম গতিসূত্র : বাইরে থেকে বল প্রযুক্ত না হলে স্থির বস্তু চিরকাল স্থির থাকবে এবং সচল বস্তু সমযোগে সরলরেখা অবলম্বন করে চলতে থাকবে । দ্বিতীয় সূত্র ঃ বস্তুর ভরবেগের পরিবর্তনের হার বস্তুটির উপর প্রযুক্ত বলের সমানুপাতিক এবং বল যেদিকে ক্রিয়া করে বস্তুর ভরবেগের পরিবর্তন সেই দিকে ঘটে । তৃতীয় সূত্র : প্রত্যেক ক্রিয়ারই সমান ও বিপরীত প্রতিক্রিয়া আছে ।
প্রঃ । ঘর্ষণ বল কাকে বলে ? এটি কোন অভিমুখে কাজ করে ? উহার দুটি সুবিধা ও অসুবিধা উল্লেখ করো ।
উঃ । যখন কোনো একটি তল অপর একটি তলের উপর দিয়ে পিছলে বা গড়িয়ে যায় বা যাবার চেষ্টা করে তখন একতল অপরতলের গতিরোধ করতে যে বল প্রয়োগ করে তাকে ঘর্ষণ বল বলা হয় । অর্ষণ বল বস্তুর গতির বিপরীত অভিমুখে কাজ করে । সুবিধা : ( i ) ঘর্ষণ বলের জন্যই আমরা মেঝের উপর হাঁটতে পারি । ( ii ) কোনো বস্তুর গতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারা যায় । অনুবিধা : ( i ) কোনো যন্ত্রের যন্ত্রাংশগুলি তাড়াতাড়ি ক্ষয়প্রাপ্ত হয় । ( ii ) কোনো বস্তুকে মেঝের উপর দিয়ে গড়িয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে আশানুরূপ দ্রুতি পাওয়া যায় না ।
প্রঃ তরণের কোনো বিন্দুতে চাপের মান কোন কোন বিষয়ের উপর নির্ভর করে এবং কীভাবে ?
উঃ । তরলের কোনো বিন্দুতে চাপের মান নির্ভর করে প্রধানত তিনটি বিষয়ের ওপর । ( I ) তরণের গভীরতা ভরলের গভীরতা বাড়লে চাপ বাড়ে । ( II ) তরলের ঘনত্ব : তরলের ঘনত্ব বাড়লে চাপ বাড়ে । ( III ) অভিকর্ষ রণ কোনো স্থানের অভিকর্ষজ ত্বরণ বেশি হলে ওই স্থানে তরলের চাপ বেশি হয় । এই তিনটি বিষয়কে একত্রিত করে তরলের চাপ সঙ্ক্রান্ত যে রাশিমালাটি পাওয়া যায় তা হল : তরলের চাপ ( P ) = hdg যেখানে h = তরলের গভীরতা , d = তরলের ঘনত্ব এবং g = অভিকর্ষজ ত্বরণ ।
প্রঃ প্রমাণ করো যে কোনো বিন্দুতে ভরলের চাপ = তরলের গভীরতা × তরলের ঘনত্ব × অভিকর্ষজ ত্বরণ
উঃ । মনে করি পাত্রে জল আছে । ওই জলের গভীরতা = h । এখন জলের তলদেশের একটি বিন্দুতে A ক্ষেত্রফল বিশিষ্ট একটি চোঙাকৃতি অংশ কল্পনা করা হয় । ওই A ক্ষেত্রফল বিশিষ্ট চোঙাকৃতি অংশের ভরলের আয়তন = A×h ভরলের ভর = তরলের আয়তন × ঘনত্ব [ d = তরলের ঘনত্ব = A×h×d তালের ওজন = ভর × অভিকর্ষজ ত্বরণ । = A×h×d×g এটিং হয় ওই তরলের মোট খাত । এখন তরলের ওই বিদুতে A×h×d×g = hdg A = তরলের গভীরতা × ঘনত্ব × অভিকর্ষজ ত্বরণ । প্রযুক্ত বল =
প্রঃ । টরিচেল্লির পরীক্ষাটি বর্ণনা করো ।
উঃ । ইতালীয় পদার্থ বিজ্ঞানী টরিচেল্লি এবার সর্বপ্রথম বায়ুর চাপ পরিমাপের একটি অত্যন্ত সহজ পদ্ধতি উদ্ভাবন করেন । প্রায় 1 মিটার লম্বা একমুখ খোলা একটি কাচনল বিশুদ্ধ ও শুষ্ক পারদ দিয়ে ভরতি করা হয় । নালের খোলামুখটি আঙুল দিয়ে আটকে নলটিকে উলটিয়ে এর খোলামুখটি একটি পারদপূর্ণ পাত্রে ডুবিয়ে ধরে বুড়ো আঙুলটি সরিয়ে নিলে দেখা যায় যে , নলের ভিতর পারদ কিছুটা নেমে এসে স্থির হয়ে দাঁড়িয়েছে এবং এই অবস্থায় পাত্রের পারদতল থেকে নলে আবদ্ধ পারদস্তম্ভের উচ্চতা হয়েছে প্রায় 76 সেমি । পাত্রের উন্মুক্ত পারদ তলে বায়ু যে নিম্নমুখী চাপ দেয় তা পারদের মধ্য দিয়ে সঞ্চালিত হয়ে নলের মধ্যস্থিত পারদস্তত্ত্বের ওপর ঊর্ধ্বাভিমুখে ক্রিয়া করে । বায়ুমণ্ডলের চাপও নলের মধ্যে দাঁড়ানো পারদস্তত্তের চাপ সমান হলে পারদত্তম্ভ স্থির অবস্থায় আসে ।
মনে রাখতে হবে-
( i ) কাচনলের ভিতর পারদস্তম্ভের উপরে যে ফাঁকা স্থান থাকে , তাকে টরিচেল্লির শূন্যস্থান ( Torricellian vacuum ) বলে । প্রকৃত অর্থে যদিও এই অংশটি শূন্য নয় । এর মধ্যে সামান্য পারদবাষ্প থাকে , যা ঘরের উন্নতায় সম্পৃক্ত ।
( ii ) সরু বা মোটা যে - কোনো ব্যাসের কাচনল পরীক্ষা করে দেখা যায় যে , প্রতিক্ষেত্রে পারদস্তম্ভের উচ্চতা একই হয় , কারণ — চাপের মান ক্ষেত্রফলের উপর নির্ভর করে না । তবে নলটি খুব সরু হলে পিছুটানের জন্য পারদত্তম্ভের উচ্চতার পরিবর্তন হতে পারে ।
( iii ) নলকে আনত করলে নলের মধ্যে আরও পারদ প্রবেশ করে । নতিকোণের মান যথেষ্ট বৃদ্ধি করলে টরিচেল্লির শূন্যস্থানটি পারদ দ্বারা পূর্ণ হয় , যদিও পারদস্তম্ভের উল্লম্ব উচ্চতা 76 সেমি থাকে । যেহেতু পারদত্তত্তের উচ্চতা 76 সেমি , সুতরাং বায়ুমণ্ডলের চাপ 76 সেমি পারদস্তত্ত্বের চাপের সমান ।
প্রঃ । নিউটনের দ্বিতীয় গতিসূত্র হতে প্রথম গতিসূত্রটি প্রতিষ্ঠা করো ।
উঃ । নিউটনের দ্বিতীয় গতিসূত্র হতে জানা যায় যে , m ভরের কোনো বস্তুর উপর P বল প্রযুক্ত হলে বস্তু যদি ত্বরণ পায় , তবে P = m.f ; এখন P = 0 হলে , f = 0 হবে । অথবা বাইরে থেকে বল প্রযুক্ত না হলে বস্তু ত্বরণহীন হবে । বস্তু স্থির থাকলে জ্বরণহীন হতে পারে ; আবার সমবেগে সরলরেখায় গতিশীল হলেও ত্বরণহীন হতে পারে কারণ বেগের মান বা অভিমুখ পরিবর্তন না করলে ত্বরণ উৎপন্ন হয় না । অতএব বাইরে থেকে বস্তুর উপর যতক্ষণ বল প্রয়োগ না করা হচ্ছে ততক্ষণ স্থির বস্তু স্থির থাকবে অথবা সমবেগে সরলরেখায় গতিশীল হলে , ঐ গতি বজায় রাখবে । এটিই হল নিউটনের প্রথম গতিসূত্র ।
❐ ব্যাখ্যামূলক ঘশ্ন ও উত্তর :
প্রঃ । সাধারণত জল সরবরাহের ট্যাংক বাড়ির সবচেয়ে উঁচু স্থানে রাখা হয় কেন ?
উঃ । বাড়ির জল সরবরাহের ট্যাংক বাড়ির সবচেয়ে উঁচু স্থানে রাখা হয় , কারণ বাড়ির সমস্ত কলগুলি যেন ট্যাংকের জলতলের চেয়ে কম উচ্চতায় থাকে । ফলে বাড়ির যে - কোনো জায়গার কল খুললে সমোচ্চশীলতা ধর্মের জন্য জল ট্যাংকের জলের উচ্চতায় আসতে চায় ও তীব্রবেগে পড়ে । এত দৈনন্দিন কাজে সুবিধা হয় ।
প্রঃ । একটি কাঠের গুঁড়িকে স্থলপথে টেনে নিয়ে যেতে কষ্ট হয় । কিন্তু জলের ওপর দিয়ে সহজেই টানা যায় কেন ?
উঃ । কাঠের গুঁড়িকে স্থলপথে টেনে নিয়ে যেতে যে বলের প্রয়োজন হয় জলপথে টেনে নিয়ে যেতে তার থেকে অনেক কম বলের প্রয়োজন হয় । এর কারণ হল , জল বস্তুর ওপর কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী বল প্রয়োগ করে যাকে প্লবতা বলে । এই ঊর্ধ্বমুখী বলের জন্য নিমজ্জিত অবস্থায় বস্তুর আপাত ওজন কিছুটা কমে যায় ।
প্রঃ । জলের মধ্যে থার্মোকলের টুকরো ভাসে কিন্তু লোহার টুকরো ডুবে যায় কেন ?
উঃ । থার্মোকলের টুকরো যে পদার্থ দিয়ে তৈরি তার ঘনত্ব কম । কিন্তু লোহার টুকরোর ঘনত্ব বেশি । তাই থার্মোকলের টুকরো দ্বারা অপসারিত জলের ভর থার্মোকলের ভরের থেকে বেশি । পক্ষান্তরে লোহার টুকরো দ্বারা অপসারিত জলের ভর লোহার টুকরোর থেকে কম । তাই থার্মোকলের টুকরো জলে ভাসলেও লোহার টুকরো জলে ডুবে যায় ।
প্রঃএকই বল প্রয়োগ করার ফলে ক্ষেত্রফল বেশি হলে চাপ কম হয় কিন্তু ক্ষেত্রফল কম হলে চাপ বেশি হয় । ছুরির ধারালো প্রান্তের ক্ষেত্রফল কম । তাই চাপ বেশি পড়ে এবং কোনো জিনিসকে সহজে কাটা যায় , তোতা প্রান্তের ক্ষেত্রফল বেশি বলে চাপ কম হয় । তাই জিনিস কাটা সঠিক হয় না । এ বাঁধ নির্মাণের সময় ওপরের দিকের চেয়ে নীচের দিকে বেশি মোটা করা হয় কেন ?
উঃ । আমরা জানি তরল যে কোনো বিন্দুতে পার্শ্বচাপ প্রয়োগ করে । এই পার্শ্বচাপের মান = ভরলের গভীরতা x ঘনত্ব x অভিকর্ষজ ত্বরণ । সুতরাং তরলের গভীরতা বাড়লে পার্শ্বচাপ বাড়ে । নীচের দিকের গভীরতা বেশি বলে পার্শ্বচাপ বেশি । হয় । সেজন্য বাঁধের নীচের দিক ওপরের দিকের থেকে মোটা করতে হয় ।
প্রঃ । একটি লম্বা চোঙের নীচের দিকে একটি প্যাঁচকল এঁটে চোরটি জলপূর্ণ করা হল । একটি কর্কের ওপর চোঙটি রেখে জলে ভাসানো হল ও প্যাঁচকলটি খুলে দেওয়া হল । কী ঘটবে বলো ।
উঃ । একটি লম্বা চোঙের নীচের দিকে একটি প্যাঁচকল এঁটে চোঙটি জলপূর্ণ করে একটি কর্কের ওপর চোঙটি রেখে জ্বলে ভাসানো হলে এবং প্যাঁচকল খুলে দিলে প্যাঁচকল দিয়ে জল বাইরে বেরিয়ে যাবে । এর প্রতিক্রিয়া স্বরূপ কর্মটি বিপরীত দিকে অগ্রসর হবে ।
প্রঃ । পাঙ্কালের সুত্রটি বিবৃত করো । পুকুরের জলে কী পাঙ্কালের সূত্র প্রযোজ্য ?
উঃ আবদ্ধ তরলের কোনো এক অংশে চাপ প্রয়োগ করলে ওই চাপ পাত্রের দেওয়ালের সমস্ত অংশে লম্বভাবে কিনা করে এবং সর্বত্র সমহারে সঞ্চালিত হয় । না , পুকুরের জলে পাঞ্চালের সূত্র প্রযোজ্য নয় । কারণ পাস্কালের সূত্রটি শুধুমাত্র আবন্ধ তরলের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য । পুকুরের জল আবদ্ধ তরল নয় ।
প্রঃ বরফ জলে ভাসে কেন ?
উঃ । বরফের ঘনত্ব জলের থেকে কম । জলের ঘনত্ব 1gm / cm । কিন্তু বরফের ঘনত্ব 0.917gm / cm 12ce বরফ গলে 11cc . জল তৈরি হয় । তাই বরফকে জলে ফেললে বরফ দ্বারা অপসারিত জলের ভর বরফের ভরের থেকে বেশি । হয় । অর্থাৎ বরফের ওপর প্রযুক্ত ঊর্ধ্বমুখী ঘাড় বা প্লবতা বরফের ওজনের থেকে বেশি হয় । সেজন্য বরফ জলে ভাসে ।
প্রঃ। এক টুকরো লোহা জলে ডুবে যায় কিন্তু পারদে ভাসে কেন ?
উঃ । লোহার ঘনত্ব জলের থেকে বেশি । তাই লোহাকে জলে ফেললে তার দ্বারা অপসারিত জলের ভর লোহার ভরের থেকে কম হয় । তাই লোহাকে জলে ফেললে লোহা জলে ডুবে যায় । আবার পারদের ঘনত্ব লোহার ঘনত্বের থেকে বেশি । ভাই লোহাকে পারদে ফেললে লোহার দ্বারা অপসারিত পারদের ভর লোহার ভরের থেকে বেশি হয় । তাই এক্ষেত্রে তা ( ঊর্ধ্বমুখী ঘাত ) বস্তুর ওজনের থেকে বেশি হয় । সেজন্য লোহা পারদে ভাসে ।
প্রঃ । নদীর জলের চেয়ে সমুদ্রের জলে সাঁতার কাটা সহজ হয় কেন ?
উঃ । নদীর জলে লবণের ভাগ কম । সমুদ্রের জলে লবণের ভাগ বেশি । সমুদ্রের জলে লবণের ভাগ বেশি হওয়ায় তার ঘনত্ব বেশি হয় । সমুদ্রের জলের ঘনত্ব বেশি বলে কোনো বস্তুর ওপর ওই জলের উর্ধ্বমুখী ঘাত ( প্লবতা ) নদীর জলের তুলনায় অনেক বেশি । তাই সমুদ্রের জলে সাঁতার কাটা সহজ হয় ।
প্রঃ । একটি বেলুনকে খালি অবস্থায় ওজন করা হল । এতে বাতাস ভরলেও কি ওজন একই থাকবে — ব্যাখ্যা করো ।
উঃ । বেলুনে বাতাস ভরলে বেলুনের ভর বাড়ে ঠিকই । কিন্তু বেলুনের আয়তনও বৃদ্ধি পায় । এর ফলে যে হারে বেলুনের ওজন বাড়ে ঠিক সেই হারেই বেলুনের ওপর প্রযুক্ত ঊর্ধ্বমুখী ঘাত বৃদ্ধি পায় । তাই বেলুনের বর্ধিত ওজন ও অতিরিক্ত প্রযুক্ত ঊর্ধ্বমুখী ঘাত সমান হয় । সেজন্য বেলুনের আপাত ওজনের কোনোরূপ পরিবর্তন হয় না ।
প্রঃ । বস্তু যত ভারী হয় অমসৃণ মেঝের উপর দিয়ে সেটিকে টানতে বেশি কষ্ট হয় কেন ?
উঃ । বস্তুর ভল কিছু না কিছু অমৃসণ । ওই বস্তুকে অমৃসণ মেঝেতে রাখলে , বস্তুর ভলের এবং অমৃসণ মেঝের খাঁজগুলি পরস্পরের সঙ্গে আটকে যায় । তখন ওই বস্তুকে টানতে গেলে একটি বাধার সৃষ্টি হয় যাকে বলা হয় ঘর্ষণ । বস্তু যত ভারী হয় , খাঁজগুলি পরস্পরের সঙ্গে তত বেশি জোরে আটকে থাকে অর্থাৎ ঘর্ষণ বল বৃদ্ধি পায় । তখন তাকে টানতে আরও বেশি কষ্ট হয় ।
প্রঃ । মসৃণ বরফের উপর দিয়ে হাঁটতে গেলে ছোটো ছোটো পদক্ষেপ ফেলতে হয় । এর কারণ কী ?
উঃ । আমরা যখন হাঁটি তখন পা দিয়ে মাটির উপর আনত ভাবে চাপ দিই । মাটি আমাদের দেহের উপর সমান ও বিপরীতমুখী প্রতিক্রিয়া দেয় । এই প্রতিক্রিয়া বলের অনুভূমিক উপাংশ যদি বিরুদ্ধ ঘর্ষণ বল অপেক্ষা বেশি হয় , ।
No comments:
Post a Comment