জীবদেহের গঠন
প্রশ্ন উত্তর
অধ্যায় -৭ অণুজীবের জগৎ প্রশ্ন উত্তর নিচের লিংক এ
👉 ( অণুজীবের জগৎ)
❐ অভি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর :
১. সজীব কাকে বলে ?
উঃ । যাদের প্রাণ আছে , যারা উত্তেজনায় সাড়া দেয় , যাদের বংশবৃদ্ধি হয় তাদের সজীব বলে ।
২.সজীব দেহে বিভিন্ন শারীরবৃত্তীয় কাজের জন্য কী থাকে ?
উঃ । অঙ্গ ও তন্ত্র ।
৩.আমাদের প্রধান শ্বাসঅঙ্গ কী ?
উঃ । আমাদের প্রধান শ্বাসঅঙ্গ ফুসফুস ।
৪. কলা কী নিয়ে গঠিত হয় ?
উঃ । কতকগুলি কোশ নিয়ে কলা গঠিত হয় ।
৫. জীবদেহ গঠনের ক্ষুদ্রতম একক কী ?
উঃ । জীবদেহ গঠনে ক্ষুদ্রতম একক হল কোশ ।
৬. কোশকে আমরা কি খালি চোখে দেখতে পাই ?
উঃ । না , কোশকে আমরা খালি চোখে দেখতে পাই না । মাইক্রোস্কোপের সাহায্যে আমরা কোশকে বড়ো করে দেখতে পাই ।
৭. কে , কত খ্রিস্টাব্দে কোশ আবিষ্কার করেন ?
উঃ । 1665 খ্রিস্টাব্দে বিজ্ঞানী রবার্ট হুক কোশ আবিষ্কার করেন ।
৮. কে , কবে প্রথম সজীব কোশ পর্যবেক্ষণ করেন ?
উঃ । 1674 খ্রিস্টাব্দে ডাচ বিজ্ঞানী লিভেনহিক প্রথম সজীবকোশ পর্যবেক্ষণ করেন ।
৯. কী দিয়ে কোশের আকার মাপা হয় ?
উঃ । কোশের আকার সাধারণত মাইক্রোমিটার বা মাইক্রন দিয়ে মাপা হয় ।
১০. রঞ্জক পদার্থ কাকে বলে ?
উঃ । কোশের গঠনকে ভালোভাবে বুঝতে গেলে নানা রঙের রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার করা হয় । এদের রঞ্জক পদার্থ বলে ।
১১. কয়েকটি এককোশী প্রাণীর নাম লেখো ।
উঃ । ব্যাকটেরিয়া , শৈবাল , ছত্রাক প্রভৃতি ।
১২. ইলেকট্রন অণুবীক্ষণ যন্ত্রে বস্তুকে কত বড়ো করে দেখা যায় ?
উঃ । বস্তুকে 50,000-3,00,000 গুণ বড়ো করে দেখা যায় ।
১৩. অ্যামিবার গমন অঙ্গের নাম কী ?
উঃ । অ্যামিবার গমন অঙ্গের নাম ক্ষণপদ ।
১৪. লোহিত রক্তকণিকার কোশগুলি কেমন ?
উঃ । লোহিত রক্তকণিকার কোশগুলি গোলাকার দু - পাশ চ্যাপটা , চাকতির মতো ।
১৫. কাজ অনুযায়ী আকৃতি বদলে যায় এমন একটি মানব কোশের নাম লেখো ।
উঃ । শ্বেতরক্তকণিকা ।
১৬. পেশিকোশের আকৃতি কেমন ?
উঃ । পেশিকোশের আকৃতি দু - প্রান্ত ছুঁচালো , মাঝখানটা চওড়া ।
১৭. প্রাণীদেহে নানা কাজ করতে কোন্ কোন্ অঙ্গ ব্যবহৃত হয় ?
উঃ । প্রাণীদেহে নানা কাজ করতে পাকস্থলী , যকৃৎ , ফুসফুস , হৃৎপিণ্ড , বৃদ্ধ , মস্তিষ্কের মতো অঙ্গ ব্যবহৃত হয় ।
১৮. কোন্ কোশের দৈর্ঘ্য সবথেকে বেশি ?
উঃ । স্নায়ুকোশের দৈর্ঘ্য সবথেকে বেশি ।
১৯.বৃহত্তম একক কোশ কোন্টি ?
উঃ । উটপাখির অনিষিক্ত ডিম হল বৃহত্তম একক কোশ ।
২০. মেরুদণ্ডী প্রাণীদের দেহে কীরূপ কোশীয় বৈচিত্র্য চোখে পড়ে ?
উঃ । যে কোনো মেরুদণ্ডী প্রাণীদের দেহে প্রায় 200 - এর বেশি কোশীয় বৈচিত্র্য চোখে পড়ে ।
২১. জীবদেহ গঠনের ধাপগুলো কীরূপ ?
উঃ । জীবদেহ → অতন্ত্র → অঙ্গ → কলা → কোশ ।
২২. উদ্ভিদদেহে কোশগুচ্ছ কী গঠন করে ?
উঃ । উদ্ভিদদেহে কোশগুচ্ছ বিভিন্ন ধরনের ভাজক কলা এবং স্থায়ী কলা গঠন করে ।
২৩. প্রাণীদেহে বিভিন্ন ধরনের কোশগুচ্ছ কী কী কলা গঠন করে ?
উঃ । প্রাণীদেহে কোশগুচ্ছ আবরণী কলা , যোগকলা , পেশিকলা ও স্নায়ুকলা এই চার ধরনের কলা গঠন করে ।
২৪. প্রাণীদেহে যেসব কোশ শোষণ করে তাদের আকৃতি কেমন ?
উঃ । শোষণ কোশের আকৃতি স্তত্তাকার ।
২৫. ক্ষরণ কোশের আকৃতি কেমন ?
উঃ । ক্ষরণ কোশের আকৃতি ঘনকাকার ।
২৬. প্রাণীদেহে কোথায় আঁশের ন্যায় কোশ দেখতে পাওয়া যায় ?
উঃ । মুখগহ্বরের ভেতরের যে কোশগুলি প্রতিরক্ষার অংশগ্রহণ করে তাদের আকৃতি মাছের ন্যায় ।
২৭. কোশপর্দা কী ?
উঃ । কোশের বাইরে যে পাতলা পর্দা দেখা যায় তা হল প্লাজমা পর্দা বা কোশপর্দা ।
২৮.কোশের ভেতরে অর্ধতরল জেলির মতো পদার্থকে কী বলে ?
উঃ । কোশের ভেতরে অর্ধতরল জেলির মতো পদার্থকে সাইটোপ্লাজম বলে ।
২৯. কোশের কোন্ অংশটিকে আমাদের মস্তিষ্কের সঙ্গে তুলনা করা যেতে পারে ?
উঃ । কোশের নিউক্লিয়াসকে আমাদের মস্তিষ্কের সঙ্গে তুলনা করা যেতে পারে ।
৩০. ক্রোমাটিন জালিকা কাকে বলে ?
উঃ । নিউক্লিয়াসের ভেতরে এক ধরনের সুক্ষ্ম জালকাকার গঠন দেখা যায় যা সুতোর মতো একে অপরকে পেঁচিয়ে থাকে , একে ক্রোমাটিন জালিকা বলা হয় ।
৩১.ক্রোমোজোম কাকে বলে ?
উঃ । ক্রোমাটিন জালিকা কতকগুলি লম্বা প্যাঁচানো দড়ির মতো গঠন দিয়ে তৈরি হয় । এদেরকে ক্রোমোজোম বলে ।
৩২. জিন কী ?
উঃ ক্রোমোজোমে এক বিশেষ ধরনের গঠন থাকে । এদের জিন বলে । পিতামাতার থেকে তাদের সন্তানদের মধ্যে বংশগত বৈশিষ্ট্য এই জিনের মাধ্যমে বাহিত হয় ।
৩৩. নিউক্লিওলাস কাকে বলে ?
উঃ । নিউক্লিয়াসের ভেতরে একটি ঘন গোলাকার অংশ দেখা যায় যেখানে রাইবোজোম তৈরি হয় । একে নিউক্লিওলাস বলে ।
৩৪. মানুষের ক্রোমোজোমের সংখ্যা কত ?
উঃ । মানুষের ক্রোমোজোমের সংখ্যা হল 46 ।
৩৫. প্রোটোপ্লাজম কাকে বলে ?
উঃ । কোশের অভ্যন্তরে নিউক্লিয়াস এবং সাইটোপ্লাজমকে একত্রে প্রোটোপ্লাজম বলে ।
৩৬. কোশীয় অঙ্গাণু কাকে বলে ? এদের কাজ কী ?
উঃ । কোশের সাইটোপ্লাজমে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বিভিন্ন ধরনের সূক্ষ্ম গঠনকে অঙ্গাণু বলা হয় । এরা নানা ধরনের শারীরবৃত্তীয় কাজ যথা — খাদ্যবস্তুর পরিপাক , ভাঙন ও শক্তি উৎপাদন , প্রোটিন সংশ্লেষ , পরিবহন , সঞ্চয় , ও ক্ষরণ ইত্যাদি কাজ করে ।
৩৭. মাইটোকনড্রিয়া দেখতে কেমন ?
উঃ । মাইটোকনড্রিয়া দেখতে গোলাকার , ডিম্বাকার বা রডের মতো ।
৩৮. মাইটোকনড্রিয়ার মধ্যে কী থাকে ?
উঃ । মাইটোকনড্রিয়ার ধাত্রের মধ্যে নানা ধরনের উৎসেচক রাইবোজোম ও নিউক্লিক অ্যাসিড থাকে ।
৩৯. DNA কী ?
উঃ । DNA হল এক ধরনের বৃহৎ জৈব অণু বা নিউক্লিয়াসের মধ্যে পরিস্থিতি অনুসারে গোটানো বা খোলা অবস্থায় থাকে ।
৪০. গলজি বস্তু কাকে বলে ?
উঃ । নিউক্লিয়াসের কাছে থাকা চ্যাপটা থলি বা ছোটো গহ্বরের মতো গঠনযুক্ত অঙ্গাণুকে । গলজি বস্তু বলে ।
৪১. । লাইসোজেম দেখতে কেমন ?
উঃ । লাইসোজেম পর্দা দিয়ে ঘেরা থলির মতো ।
৪২. লাইসোজেমের কাজ কী ?
উঃ । এর মধ্যে খাদ্যকে হজম করার , জীবাণুদের মেরে ফেলার ও পুরোনো জীর্ণ কোশকে ধ্বংস করার জন্য নানা ধরনের উৎসেচক থাকে ।
৪৩. লাইসোজোমকে আত্মঘাতী থলি বলা হয় কেন ?
উঃ । লাইসোজোম যে কোশে থাকে সেই কোশকেই ধ্বংস করতে পারে বলে একে আত্মঘাতী এলি বলে । এই অঙ্গানুর সক্রিয়তা বৃদ্ধি পেলে ক্যানসার হবার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায় ।
৪৪. রাইবোজোমের প্রধান কাজ কী ?
উঃ । প্রোটিন সংশ্লেষ করা রাইবোজোমের প্রধান কাজ ।
৪৫. প্রাণীকোশের কোন্ অঙ্গাণু বিভাজনে অংশগ্রহণ করে ?
উঃ । সেন্ট্রোজোম প্রাণীকোশের বিভাজনে সাহায্য করে ।
৪৬. কোশপ্রাচীর কী ? কোশপ্রাচীর কীরূপ প্রকৃতি হয় ? এর প্রধান কাজ কী ?
উঃ । উদ্ভিদকোশের বাইরে যে বিস্তৃত বহিঃকোশীয় ধাত্র থাকে তাকে কোশপ্রাচীর বলে । কোশপ্রাচীর মৃত , পুরু , শক্ত এবং দৃঢ় হয় । এটি উদ্ভিদকে অতিরিক্ত সুরক্ষা প্রদান করে ।
৪৭. প্লাসটিড কী ?
উঃ । সাইটোপ্লাজমে এক ধরনের রঙিন গঠন ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকে । একে প্লাসটিড বলে ।
৪৮. ক্লোরোফিলের রং কেমন ?
উঃ । ক্লোরোফিল সবুজ রঙের হয় ।
৪৯. গ্রানা কোথায় থাকে ?
উঃ । গ্রানা ক্লোরোপ্লাস্টিডের মধ্যে থাকে ।
৫০. উদ্ভিদের খাদ্য তৈরির প্রক্রিয়াটির নাম কী ?
উঃ । উদ্ভিদের খাদ্য তৈরির প্রক্রিয়াটির নাম সালোকসংশ্লেষ । ক্লোরোপ্লাস্টের মধ্যে থাকা ক্লোরোফিল এই প্রক্রিয়ায় প্রধান ভূমিকা গ্রহণ করে ।
৫১. ক্রোমোপ্লাসটিড কাকে বলে ?
উঃ । উদ্ভিদের প্লাসটিডে কমলা , লাল , হলুদ ও অন্যান্য বর্ণের ( সবুজ ব্যতীত ) রঞ্জক থাকে । এরা ফুল ও ফলের বর্ণ নিয়ন্ত্রণ করে এদের ক্রোমোপ্লাসটিড বলা হয় ।
৫২. লিউকোপ্লাসটিড কাকে বলে ?
উঃ । উদ্ভিদ দেহে বর্ণহীন একধরনের প্লাসটিড দেখা যায় , এরা নানা ধরনের খাদ্যসঞ্জয় করে । এদের লিউকোপ্লাসটিড বলা হয় ।
৫৩. মিষ্টি জলে বসবাসকারী উদ্ভিদ কেন জলে ভেসে থাকতে পারে ?
উঃ । এই ধরনের উদ্ভিদের পুষ্প ও পত্রবৃত্তে বায়ুগহ্বর যুক্ত প্যারেনকাইমা কোশ থাকে । ফলে এরা সহজেই জলে ভেসে থাকতে পারে ।
৫৪. খুব শুকনো ও গরম পরিবেশে কী জাতীয় উদ্ভিদ জন্মায় ?
উঃ । ক্যাকটাস জাতীয় উদ্ভিদ জন্মায় ।
৫৫. পরিবেশের বিভিন্ন উপাদানগুলি কী শী ?
উঃ । বায়ুর উন্নতা , আর্দ্রতা , অক্সিজেনের পরিমাণ , সালফারের পরিমাণ , চাপ প্রভৃতি ।
৫৬. ব্যাকটেরিয়ার কোশে মাইটোকনড্রিয়া অনুপস্থিত কেন ?
উঃ । কম অক্সিজেন যুক্ত পরিবেশে বিকল্প শ্বসন চালানোর
৫৭. লবণাক্ত পরিবেশে বসবাসকারী উদ্ভিদের মূলে কী কোশ থাকে ?
উঃ । লবণাক্ত পরিবেশে বসবাসকারী উদ্ভিদের মূলে লবণপূর্ণ কোশ থাকে ।
৫৮. অ্যান্টিফ্রিজ প্রোটিন কী ?
উঃ । খুব শুকনো ও ঠান্ডা পরিবেশে বসবাসকারী প্রাণীদের কোশে এক ধরনের পদার্থে সংমেশিত হয় একে অ্যান্টিফ্রিজ প্রোটিন বলে । এটি কোশীয় তরলে বরফের কেলাস তৈরিতে বাধা দেয় । এছাড়াও তাপ সংরক্ষণের জন্য এদের দেহে ফ্যাট সঞ্চয়কারী কোশের প্রাচুর্য থাকে ।
❐ সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর :
১. এক বা একাধিক কাজ করতে সঞ্জীবদেহে কী থাকে ?
উঃ । 1 ) শ্বাসবায়ু নেওয়া ও ছাড়ার জন্য ফুসফুল । ii ) খাদ্য হজম করার জন্য পাকস্থলী , ক্ষুদ্রান্ত । iii ) দেহের বর্জ্যকে মুত্রের মাধ্যমে বের করে দেওয়ার জন্য বৃক্ক । iv ) রক্তকে সঞ্চালনের জন্য হৃৎপিণ্ড । v ) উদ্দীপনা গ্রহণ ও তাকে উত্তেজনায় রূপান্তরের জন্য মস্তিষ্ক ।
২. ইলেকট্রন অনুবীক্ষণ যন্ত্র কী ?
উঃ । ইলেকট্রন অণুবীক্ষণ যন্ত্রে কাচের লেন্সের পরিবর্তে তড়িৎচুম্বক ব্যবহার করা হয় । এই যন্ত্রে আলোর পরিবর্তে দ্রুতগতির ইলেকট্রন প্রবাহ দ্রষ্টব্য বস্তুর মধ্য দিয়ে পাঠানো হয় । দ্রষ্টব্য বস্তুকে 50,000-3,00,000 গুণ বড়ো করে দেখা যায় । তবে দ্রষ্টব্য বস্তুকে খালি চোখে দেখা এই যন্ত্রের সাহায্যে সম্ভব নয় । পরিবর্তে ফোটোগ্রাফিক ফিল্ম ব্যবহার করা যায় ।
৩. যৌগিক আলোক অণুবীক্ষণ যন্ত্র কীরূপ ? এটি কোথায় ব্যবহার করা হয় ?
উঃ । এই অণুবীক্ষণ যন্ত্রে বস্তুকে অনেক গুণ বড়ো করে দেখানোর জন্য বিবর্ধন ক্ষমতা সম্পন্ন একাধিক লেন্স ব্যবহৃত হয় । এতে দৃশ্যমান আলো দ্বারা আলোকিত করতে একটি বিশেষ ধরনের আয়নার সাহায্য নেওয়া হয় । i ) কোশের ভেতরের অঙ্গাণু ও কোশের বাইরের পর্দার গঠন জানার জন্য । ii ) ব্যাকটেরিয়া , শৈবাল , ছত্রাক , বিভিন্ন এককোশী ও বহুকোশী প্রাণীর দেহের বহির্গঠন জানার জন্য । iii ) জীবদেহের বিভিন্ন অঙ্গ ও তার প্রস্থচ্ছেদ করে তার কণার গঠন জানার জন্য ।
৪. আমাদের দেহের কোশগুলো কোন্টা কেমন ?
উঃ । লোহিত রক্তকণিকা গোলাকার ; দু - পাশ চ্যাপটা , চাকতির মতো । পেশিকোশের দু - প্রাপ্ত সূঁচালো , মাঝখানটা চওড়া , সংকোচন প্রসারণের জন্য এদের আকার এরকম হয় । অন্যান্য কোশের তুলনায় স্নায়ুকোশের দৈর্ঘ্য অনেক বেশি হয় । ' । প্রাণীদেহে কী কী শারীরবৃত্তীয় কাজ হয় ? উঃ । i ) খাদ্যগ্রহণ , পরিপাক , শোষণ , আত্তীকরণ ও অপাচ্য খাদ্য বহিষ্করণ । যাকে আমরা এককথায় পুষ্টি বলি । ii ) রেচন অর্থাৎ দেহে উৎপন্ন ক্ষতিকারক বর্জ্যকে দেহ থেকে বার করে দেওয়া । iii ) শ্বাসবায়ুর আদানপ্রদান ও শক্তি উৎপাদন অর্থাৎ শ্বসন । iv ) সংবহন । v ) জনন অর্থাৎ বংশবিস্তার । vi ) গমন ।
৫. কলা কাকে বলে ? প্রাণীদেহে কয় ধরনের কলা দেখা যায় ও কী কী ?
উঃ । জীবনের বিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে কোশগুলির প্রোটোপ্লাজমের মধ্যে শ্রমবিভাজন ঘটার ফলে কাজের পার্থক্য ঘটে । এই ঘটনা ঘটার জন্য একেক ধরনের কোশসমষ্টির উৎপত্তি হয়েছে । এই কোশসমষ্টিই বা কোশগুচ্ছই হল কলা । চার ধরনের কলা গঠন করে । যথা —1 ) আবরণী কলা । ii ) যোগকলা । iii ) পেশিকলা । iv ) স্নায়ুকলা ।
৬. উদ্ভিদদেহে কী কী শারীরবৃত্তীয় কাজ হয় ? এতে উদ্ভিদের কোন্ কোন্ অঙ্গ ব্যবহৃত হয় ।
উঃ । i ) মাটি থেকে জল তোলা ও পাতায় পরিবহন করা । ii ) সূর্যের আলো শোষণ করা ও খাদ্য তৈরি করা । iii ) খাদ্য সঞ্চয় ও পরিবহন করা । iv ) সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা । v ) ফুল , ফল ও বীজ তৈরি করা । উদ্ভিদদেহে মূল , কান্ড ও পাতার মতো অঙ্গ ব্যবহৃত হয় ।
৭. উদ্ভিদের ভাজক কলার কাজ কী ?
উঃ । উদ্ভিদের ভাজক কলার কাজ হল i ) নতুন অঙ্গ সৃষ্টি করা । ii ) মূল ও কাণ্ডের দৈর্ঘ্য বৃদ্ধি করা । iii ) নতুন পাতা , কাক্ষিক মুকুল ও শাখা উৎপন্ন করা । iv ) ফুল উৎপন্ন করা । v ) সংবহন কলা গঠন করা । vi ) রক্ষণমূলক আবরণ গঠন করা ।
৮. উদ্ভিদের স্থায়ী বলার কাজ কী ?
উঃ । স্থায়ীকলার কাজ হল i ) খাদ্য সংশ্লেষ , সঞ্চয় ও পরিবহন করা । ii ) জল সংবহন করা । iii ) ভারবহন ও দৃঢ়তা প্রদান করা । iv ) বর্জ্য পদার্থ সঞ্চয় করা । v ) প্রবতা প্রদান করা । vi ) ক্ষত নিয়াময় করা । vii ) ফল ও বীজের বিস্তার করা , উদ্ভিদ অঙ্গের তাপ ও চাপ সহনশীলতা বৃদ্ধি করা ।
৯. প্রাণীদের পেশিকলার কাজ কী ?
উঃ । প্রাণীদের পেশিবলার কাজ হল —1 ) অঙ্গপ্রত্যঙ্গের সঞ্চালন ঘটানো , গমনে সাহায্য করা । ii ) হূৎস্পন্দন , রক্তপ্রবাহ ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করা । ii ) খাদ্যকে গিলতে সাহায্য করা । iv ) শব্দ সৃষ্টি করা , গ্রন্থির ক্ষরণ , মুখের অভিব্যক্তি ঘটানো , দৈহিক ভঙ্গির পরিবর্তন ঘটানো । v ) পৌষ্টিকনালির ও মূত্রনালির ক্রমসংকোচন ঘটানো ।
১০. প্রাইমরডিয়াল ইউট্ৰিকল কাকে বলে ?
উ : মতো গঠন যুক্ত অঙ্গাণু । এরা পরস্পর সমান্তরালভাবে বিন্যস্ত থাকে । এন্ডোপ্লাজমীয় জালিকা থেকে গলজি বস্তুর সৃষ্টি হয় । কোশমধ্যস্থ বিভিন্ন বস্তুর পরিবহন ও ক্ষরণে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ।
মাইটোকনড্রিয়াঃ এটি দুটি প্লাজমা পর্দা বেষ্টিত কোশীয় অঙ্গাণু । এরা গোলাকার , ডিম্বাকার বা রডের মতো দেখতে । এর যাত্রের মধ্যে নানা ধরনের উৎসেচক , রাইবোজোম ও নিউক্লিক অ্যাসিড ( DNA ) থাকে । এরা খাদ্যের পরিপোষককে ভেঙে শক্তি ( ATP ) উৎপন্ন করে । মাইটোকনড্রিয়া শক্তি উৎপাদন প্রক্রিয়ায় অংশ নেয় ।
রাইবোজোম গঠন : এটি পর্দাবিহীন কোশীয় অঙ্গাণু , সাধারণত কোশের সাইটোপ্লাজমে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকলেও মাইটোকনড্রিয়া , ক্লোরোপ্লাসটিড কিংবা এন্ডোপ্লাজমীয় জালিকা প্রভৃতির বাইরেও এই অঙ্গাণুকে আবদ্ধ অবস্থায় দেখা যায় ।
কাজ : i ) প্রোটিন সংশ্লেষ করা এই অঙ্গাণুর প্রধান কাজ । ii ) কোশের ক্ষয়পূরণ ও নতুন কোশ তৈরিতে অংশগ্রহণ করে ।
কোশপ্রাচীর : উদ্ভিকোশের বাইরে যে বিস্তৃত বহিঃকোশীয় ধাত্র থাকে তাকে কোশপ্রাচীর বলে । এটি মৃত , পুরু , শক্ত এবং দৃঢ় হয় ।
কাজ : i ) কৌশপ্রাচীর উদ্ভিদকে অতিরিক্ত সুরক্ষা দিয়ে থাকে । ii ) কোশপ্রাচীরের উপস্থিতির জন্যই উদ্ভিদ ও প্রাণীদেহের মধ্যে আন্তঃকোশীয় সংযোগ বৃদ্ধি হয় । জলসাম্য বজায় রাখার কাজ করে ।
১১. মেসোজোম কী ?
উঃ । কম অক্সিজেনযুক্ত পরিবেশে বিকল্প শ্বসন চালানোর জন্য কোশে মাইটোকনড্রিয়া থাকে না এর পরিবর্তে কোশপর্দা ভিতরে সাইটোপ্লাজমের দিকে ভাঁজ হয়ে থলির মতো মেসোজোম গঠিত হয় । মেসোজোম শ্বসনে অংশগ্রহণ করে ।
❐ রচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর :
১. কোশপ্রাচীর কী ? এর কাজগুলি লেখো ।
উঃ । উদ্ভিদকোশের বাইরে যে বিস্তৃত বহিঃকোশীয় ধাত্র থাকে তাই হল কোশপ্রাচীর । এটি মৃত , পুরু , শক্ত এবং দৃঢ় । এটি প্রাণীকোশে দেখা যায় না । কোশপ্রাচীরে ছিদ্রের সংখ্যা নির্দিষ্ট , ফলে পরিবেশ ও উদ্ভিদকোশের মধ্যে বৃহৎ অণুর আদান - প্রদানও সীমিত । পরিবেশে প্রায়ই তাপমাত্রার পার্থক্য হয় , বাতাসে জলীয়বাষ্পের পরিমাণেরও হেরফের হয় । স্থান পরিবর্তন করতে না পারার কারণে সবসময়েই উদ্ভিদকে এধরনের পরিবেশের প্রতিকূল পরিস্থিতির মুখে পড়তে হয় । এই অবস্থায় উদ্ভিদকোশের অতিরিক্ত সুরক্ষার প্রয়োজন হয় । কোশপ্রাচীর উদ্ভিদকে এই অতিরিক্ত সুরক্ষা দিয়ে থাকে । কোশপ্রাচীরের উপস্থিতির জন্যই উদ্ভিদ ও প্রাণীদেহের মধ্যে আন্তকোশীয় সংযোগ , বৃদ্ধি , জলসাম্য বজায় রাখা , পুষ্টি , বংশবিস্তার , প্রতিরক্ষা ও বাহ্যিক গঠনের নানা পার্থক্য চোখে পড়ে ।
No comments:
Post a Comment