নবম অধ্যায়
প্রশ্ন উত্তর
দশম অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর পড়তে নিচের লিঙ্ক এ ক্লিক করো
👉 ( দশম অধ্যায় )
❐ অভি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর :
প্রঃ । বন কী ?
উঃ । বন হল অনেকটা অঞ্চল জুড়ে জন্মানো উদ্ভিদ সমষ্টি এবং জীবজন্তুদের একমাত্র আশ্রয়স্থল ।
প্রঃ । পৃথিবীর স্থলভাগের কতটা অংশ বনভূমি ?
উঃ । পৃথিবীর স্থলভাগের এক - তৃতীয়াংশই বনে ঢাকা ।
প্রঃ । ভারতবর্ষে কত শতাংশ বনভূমি ?
উঃ । ভারতবর্ষে 21 শতাংশ স্থান হল বনভূমি ।
প্রঃ । কত সালকে সম্মিলিত জাতিপুঞ্জ আন্তর্জাতিক বনবর্ষ বলে ঘোষণা করেছে ?
উঃ । 2011 সালকে আন্তর্জাতিক বনবর্ষ বলে ঘোষণা করেছে ।
প্রঃ । একটি বড়ো গাছ 50 বছরে কত অক্সিজেন ত্যাগ করে ?
উঃ । প্রায় 2700 কেজি অক্সিজেন ত্যাগ করে ।
প্রঃ । সুচের মতো পাতাযুক্ত গাছ কী ?
উঃ । পাইন , ওক , দেবদারু হল সুচের মতো পাতাযুক্ত গাছ ।
প্রঃ । তিনটি পাতাঝরা গাছের নাম লেখো ।
উঃ । সেগুন , অর্জুন , আমলকী হল পাতাঝরা গাছ ।
প্রঃ । তিনটি চিরসবুজ গাছের নাম লেখো ।
উঃ । আম , জাম , বট হল চিরসবুজ গাছ ।
প্রঃ । তিনটি কাঁটাওয়ালা ঝোপঝাড় জাতীয় উদ্ভিদের নাম লেখো ।
উঃ । বাবুল , ক্যাকটাস , ব্ল্যাকবাক হল কাঁটাওয়ালা ঝোপঝাড় জাতীয় উদ্ভিদ ।
প্রঃ । চিরসবুজ গাছের অরণ্যে কী ধরনের প্রাণী বসবাস করে ?
উঃ । বাঘ , সিংহ , হরিণ , ময়ূর , হাতি প্রভৃতি প্রাণী বসবাস করে ।
প্রঃ । কাঁটাওয়ালা ঝোপঝাড় উদ্ভিদ অঞ্চলে বসবাসকারী দুটি প্রাণীর নাম লেখো ।
উঃ । চিৎকারা , শেয়াল বসবাস করে ।
প্রঃ । বনের একদম ওপরের স্তরকে কী বলে ?
উঃ । বনের উপরের স্তরকে ছাদ বলে ।
প্রঃ । বীরুৎজাতীয় উদ্ভিদ বনের কোথায় জন্মায় ?
উঃ । বনের মেঝের ঠিক ওপরে অল্প উচ্চতায় যে ধরনের গাছ থাকে তাদেরকে বীরুৎজাতীয় উদ্ভিদ বলে ।
প্রঃ । বনের শেষস্তর অর্থাৎ বনের মেঝেতে কোন্ কোন্ প্রাণী বসবাস করে ?
উঃ । কেঁচো , আরশোলা , কাঁকড়াবিছে , তেঁতুলবিছে , শামুকসহ নানা আনুবীক্ষণিক জীব এখানে বসবাস করে ।
প্রঃ । পৃথিবীর মোট বনভূমির কত শতাংশ প্রাকৃতিকভাবে গড়ে উঠেছে ?
উঃ । 95 % প্রাকৃতিক ভাবে গড়ে উঠেছে ।
প্রঃ । দক্ষিণ আমেরিকায় বনের পরিমাণ কত ?
উঃ । দক্ষিণ আমেরিকায় বনের পরিমাণ প্রায় 23 % ।
প্রঃ । ওশিয়ানিয়ায় বনের পরিমাণ কত ?
উঃ । ওশিয়ানিয়ায় বনের পরিমাণ 5 % ।
প্রঃ । বর্ষাবনের প্রধান বৈশিষ্ট্য কী ?
উঃ । লম্বা লম্বা গাছ , উষু আবহাওয়া আর প্রচুর বৃষ্টি হল বর্ষাবনের প্রধান বৈশিষ্ট্য ।
প্রঃ । বর্ষাবন কোথায় দেখা যায় ?
উঃ । নিরক্ষরেখার উত্তরে ও দক্ষিণে 10 ° -12 ° অক্ষাংশের মধ্যে ঐ বনভূমি দেখা যায় ।
প্রঃ । এক হেক্টরে বর্ষাবনে কত প্রজাতির গাছ থাকে ?
উঃ । প্রায় 40 এর বেশি প্রজাতির গাছ থাকে ।
প্রঃ । পৃথিবীতে আজ পর্যন্ত জানা কত প্রজাতির উদ্ভিদ আছে ?
উঃ । পৃথিবীতে আজ পর্যন্ত জানা 2,50,000 প্রজাতির উদ্ভিদ প্রজাতি আছে ।
প্রঃ । পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের অধিকাংশ অক্সিজেন কোন্ বনভূমি উৎপত্তি করে ?
উঃ । বর্ষাবনভূমি থেকে উৎপত্তি হয় ।
প্রঃ । বিলুপ্তপ্রায় চারটি জীবজন্তুর নাম লেখো ।
উঃ । গরিলা , শিল্পাঞ্জি , ওকাপি , ওরাং তাং হল বিলুপ্তপ্রায় জীবজন্তু ।
প্রঃ । বর্তমানে প্রতি সেকেন্ডে কত বর্ষাবন কাটা পড়ছে ?
উঃ । প্রতি সেকেন্ডে প্রায় দেড় একর বর্ষাবন ভূমি কাটা পড়ে ।
প্রঃ । তোমার জানা একটি দাবানলের উদাহরণ দাও ।
উঃ । 1910 সালে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রে এক বিধ্বংসী দাবানলের ফলে প্রায় তিন মিলিয়ন একর বন নষ্ট হয় , দাবানলটি প্রায় দু - দিন স্থায়ী হয়েছিল ।
প্রঃ । অধিক সংখ্যক গাছ কাটার ফলে কোন্ গ্যাসের পরিমাণ কমছে এবং কোন গ্যাসের পরিমাণ বাড়ছে ?
উঃ । O , গ্যাসের পরিমাণ কমছে CO , গ্যাসের পরিমাণ বাড়ছে ।
প্রঃ । পশ্চিমবঙ্গের প্রধান দুটি বনভূমি কী ?
উঃ । পশ্চিমবঙ্গে প্রধান দুটি বনভূমি হল উত্তরবঙ্গের বনভূমি এবং সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভস উদ্ভিদের বনভূমি ।
প্রঃ । উত্তরবঙ্গে কোথায় বনভূমি দেখা যায় ?
উঃ । উত্তরবঙ্গে উঁচু পাহাড়ি অঞ্চলের 8000 ফুটের ওপরে এবং ডুয়ার্সে - এর ( তরাই - এর বনভূমি ) দেখা যায় ।
প্রঃ । উত্তরবঙ্গের ডুয়ার্স এবং তরাই - এর বনভূমিতে কী কী গাছ আছে ?
উঃ । শাল , গামার , খয়ের , শিশু , আমলকী এবং উঁচু পাহাড়ের ঢালে রোডোডেনড্রন , পাইন প্রভৃতি নানা গাছ চোখে পড়ে ।
প্রঃ । উত্তরবঙ্গের বনভূমিতে কোন্ মাংসাশী প্রাণী দেখা যায় ?
উঃ । চিতাবাঘ দেখা যায় ।
প্রঃ । পশ্চিমবঙ্গের কোন পাহাড় থেকে হাতির দল নেমে আসে ?
উঃ । পশ্চিমবঙ্গের দলমা পাহাড় থেকে হাতির দল নেমে আসে ।
প্রঃ । উত্তরবঙ্গে প্রায়ই কীসের জন্য হাতির মৃত্যু ঘটেছে ?
উঃ । উত্তরবঙ্গে ট্রেনে কাটা পড়ে অনেক হাতি মারা পড়ছে ।
প্রঃ । হাতির আনাগোনা কখন বেড়ে যায় ?
উঃ । বর্ষার শুরুতে ভুট্টা ফলার সময় আর শীতের শুরুতে ধান পাকতে শুরু করলে হাতির চলাচল অনেকটা বেড়ে যায় ।
প্রঃ । উত্তরবঙ্গের বনভূমিতে কীসের অস্তিত্ব বিপন্ন হয়ে উঠেছে ?
উঃ । একশৃঙ্গ গণ্ডারের অস্তিত্ব বিপন্ন হতে চলেছে ।
প্রঃ। কোথায় ম্যানগ্রোভস অরণ্য দেখা যায় ?
উঃ । পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণদিকে জোয়ার ভাটা প্লাবিত অঞ্চলে শ্বাসমূলযুক্ত যে বিশেষ উদ্ভিদ সমষ্টি চোখে পড়ে তারা মিলেমিশে ম্যানগ্রোভস অরণ্য বা বাদাবন তৈরি করেছে ।
প্রঃ । ম্যানগ্রোভ অরণ্যে কী কী গাছ দেখা যায় ?
উঃ । ম্যানগ্লোভস অরণ্যে সুন্দরী , গরান , কেওড়া , পাইন প্রভৃতি উদ্ভিদ জন্মায় ।
প্রঃ । এখানকার উদ্ভিদগুলিতে শ্বাসমূল দেখা যায় কেন ?
উঃ । মাটির সূক্ষ্ম ছিদ্রগুলো কাদায় ঢাকা পড়ায় শ্বাসকার্য চালানো অসম্ভব হয়ে পড়ে । তাই এইসব উদ্ভিদের মূল থেকে মাটির ওপরে মূলোর মতো অসংখ্য শ্বাসমূল বের হয় ।
প্রঃ। ম্যানগ্রোভ অরণ্যের উদ্ভিদের ঠেসমূল দেখা যায় কেন ?
উঃ । কোনো ম্যানগ্রোভ যাতে জোয়ার - ভাটার স্রোতের টানে উপড়ে না যায় তার জন্য ঠেসমূল বের হয় ।
প্র । একহাজার গ্রাম সমুদ্রের জলে কত গ্রাম লবণ থাকে ?
উঃ । 33-38 গ্রাম লবণ থাকে ।
প্রঃ । ঝিনুক কী ?
উঃ । ঝিনুক হল একধরনের সামুদ্রিক প্রাণীর খোলক ।
প্রঃ । সমুদ্রের কোথায় জীবের বৈচিত্র্য খুব বেশি ?
উঃ । যেসব সমুদ্রে প্রবাল প্রাচীর থাকে সেখানে মাছ ও অন্যান্য সামুদ্রিক জীবের বৈচিত্র্য খুব বেশি ।
প্র । সমুদ্রে বসবাসকারী কয়েকটি জীবের নাম লেখো ।
উঃ । লাইকেন , শ্যাওলা , শামুক , ঝিনুক , তারা মাছ , সাগরকুসুম , কাঁকড়া ইত্যাদি ।
প্রঃ । ডায়াটম কী ? এর কোশপ্রাচীর কী দিয়ে তৈরি ?
উঃ । ডায়াটম একটি এককোশী উদ্ভিদ । এর কোশপ্রাচীর সিলিকা দিয়ে তৈরি ।
প্রঃ । সবুজ উদ্ভিদেরা কোন প্রক্রিয়ায় খাদ্য তৈরি করে ?
উঃ । সালোক - সংশ্লেষ প্রক্রিয়ায় খাদ্য তৈরি করে ।
প্রঃ । বায়োলুমিনিসেন্স কী ?
উঃ । সমুদ্রের গভীরে সূর্যের আলো প্রবেশ না করলেও অন্য এক ধরনের আলোর দেখা পাওয়া যায় যার কোনো উত্তাপ নেই । একে বায়োলুমিনিসেল বলে ।
প্রঃ। লুসিফেরিন কী ?
উঃ । বায়োলুমিনিসেন্ট জীবদের দেহে একধরনের প্রোটিন ঘটিত রঞ্জক পদার্থ থাকে তাকে লুসিফেরিন বলে ।
প্রঃ । বায়োলুমিনিসেন্ট কাদের বলে ? উঃ । সমুদ্রের গভীরে কিছু জীব দেখা যায় যারা রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে নিজেদের দেহে আলো তৈরি করতে পারে । এদের বায়োলুমিনিসেন্ট বলে । এদের সমুদ্রের 200-1000 মিটার গভীরতায় দেখা মেলে ।
প্রঃ । প্ল্যাংকটন কী ? এটি কর ধরনের ও কী কী ?
উঃ । প্ল্যাংকটন এক ধরনের জলজ জীব , যাঁরা স্রোতের বিরুদ্ধে সাঁতার কাটতে পারে না । দুই ধরনের যথা —– ( i ) ফাইটোপ্ল্যাংকটন ( ii ) জুপ্ল্যাংকটন ।
প্রঃ । ফাইটোপ্ল্যাংকটন কোথায় বাস করে ? এরা কীভাবে খাবার তৈরি করে ?
উঃ । এই এককোশী আণুবীক্ষণিক উদ্ভিদেরা সাধারণত ইউফোটিক অঞ্চলে বসবাস করে । সূর্যের আলোর সাহায্যে এরা খাবার তৈরি করে ।
প্রঃ । জুপ্ল্যাংকটন কী ?
উঃ । এরা মূলত আণুবীক্ষণিক ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র প্রাণী । সমুদ্রের ওপরের তলে ভেসে বেড়ায় ।
প্রঃ । ডিনোফ্ল্যাজেলেট কীসের সাহায্যে চলাফেরা করে ?
উঃ । এরা চলাফেরা করে ফ্ল্যাজেলার সাহায্যে । এরা এককোশী প্রাণী ।
প্রঃ। কেল্প কী ? কেল্প দেখতে কেমন ?
উঃ । খুব বড়ো সামুদ্রিক শ্যাওলা । বেশিরভাগ প্রজাতির দেহ চ্যাপটা , অনেকটা পাতার মতো দেখতে ।
প্রঃ । সাগরকুসুমের পাপড়িগুলো কী ?
উঃ । পাপড়িগুলো আসলে কর্ষিকা । এই কর্ষিকাগুলিতে অসংখ্য দশেক কোশ থাকে । যা ছোটো মাছ বা প্রাণী শিকার করতে কাজে লাগে ।
প্রঃ । সাগরকলম কী ?
উঃ । হাঁসের পালকের তৈরি কলমের মতো । একধরনের সামুদ্রিক প্রাণী ।
প্রঃ । অক্টোপাস কী ? এরকম নাম হল কেন ?
উঃ । এদের বাহুর সংখ্যা আট । তাই নাম অক্টোপাস ।
প্রঃ । সবচেয়ে বড়ো অক্টোপাস কী ?
উঃ । সবচেয়ে বড়ো অক্টোপাস হল প্রশান্ত মহাসাগরের দৈত্যাকার অক্টোপাস ।
প্রঃ । অক্টোপাস কীরুপ স্বভাবের প্রাণী ?
উঃ । অক্টোপাস নিরীহ আর ভীরু স্বভাবের প্রাণী ।
প্রঃ । অক্টোপাস কীভাবে আত্মরক্ষা করে ?
উঃ । আক্রান্ত হলে এদের দেহের একটি গ্রন্থি থেকে কালি ছিটিয়ে জল ঘোলা করে পালিয়ে যায় ।
প্রঃ । স্কুইডের কয়টি বাহু ? এরা কতটা লম্বা হয় ?
উঃ । দশটা বাহু । এরা সাধারণ 50-60 ফুট লম্বা হয়
প্রঃ । স্কুইড কীসের সাহায্যে শিকার করে ?
উঃ । শোষক যন্ত্রের সাহায্যে ফ্লুইড শিকার ধরে ।
প্রঃ । দৈত্যাকার ফ্লুইড কোথায় বাস করে ?
উঃ । দৈত্যাকার স্কুইড আটলান্টিক সমুদ্রের গভীরে বাস করে ।
প্রঃ । সমুদ্র ফেনা কী ?
উঃ । স্কুইডের আত্মীয় কাটল ফিশ সমুদ্রের ধারে পচে গেলে যে ক্যালশিয়ামঘটিত শক্ত জিনিসটা সহজেই সংগ্রহ করা যায় এই জিনিস সমুদ্র ফেনা নামে বিক্রি হয় ।
প্রঃ । হাঙরের কঙ্কাল কী দিয়ে তৈরি হয় ?
উঃ । হাঙরের কঙ্কাল হাড়ের চেয়ে নরম কার্টিলেজ দিয়ে তৈরি হয় ।
প্রঃ । দুটি হাত্তরের প্রজাতির নাম লেখো যারা মানুষের ক্ষতি করে না ?
উঃ । বাস্কিং শার্ক আর হোয়েল শার্কের মতো বড়ো আকারের হাঙর মানুষের ক্ষতি করে না ।
প্রঃ । তারামাছ কীসের সাহায্যে চলাফেরা করে ?
উঃ । নালিপদের সাহায্যে চলাফেরা করে ।
প্রঃ । পৃথিবীর মরুভূমি কতখানি ?
উঃ । পৃথিবীর প্রায় পাঁচ ভাগের একভাগ জুড়ে রয়েছে মরুভূমি ।
প্রঃ । ভারতের একটি মরুভূমির নাম লেখো ।
উঃ । ভারতের রাজস্থানের থর মরুভূমি ।
প্রঃ । সাহারা মরুভূমিতে কোন্ কোন্ প্রাণী বাস করে ?
উঃ । পেঁচা , হরিণ , সজারু , শেয়াল , উটপাখি , হায়না ইত্যাদি ।
প্রঃ । ভারতের থর মরুভূমিতে কী কী প্রাণী বসবাস করে ?
উঃ । শেয়াল , উট , সাপ , শকুন , কাঁটাওলা লেজবিশিষ্ট গিরগিটি ।
প্রঃ । মরুঅঞ্চলের উদ্ভিদের প্রধান বৈশিষ্ট্য কী ?
উঃ । কাটাজাতীয় উদ্ভিদ এবং তাদের মূলগুলো দীর্ঘ হয় ।
প্রঃ । মরু অঞ্চলের তিনটি গাছের নাম লেখো ।
উঃ । ফণীমনসা , সাগুয়ারো , যশুয়া গাছ ।
প্রঃ । সাগুয়ারা গাছের ফল কেমন খেতে হয় ?
উঃ । সাগুয়ারা গাছের ফল তরমুজের মতো খেতে হয় ।
প্রঃ । কাকে মরুভূমির জাহাজ বলা হয় ?
উঃ । উটকে মরুভূমির জাহাজ বলা হয় ।
প্রঃ । উট কত দিন পর্যন্ত জল না খেয়ে থাকতে পারে ?
উঃ । ৭ দিন পর্যন্ত জল না খেয়ে থাকতে পারে ।
প্রঃ মরুভূমির সবচেয়ে বিষাক্ত সাপ কী ?
উঃ । র্যাটল সাপ । এদের লেজের কাছে ফাঁপা ঝুমুরের মতো ঝুমঝুমি ( Rattle ) দেখা যায় ।
প্রঃ। জারবিল কী ?
উঃ । মরু অঞ্চলে ছোটো ইঁদুরের মতো প্রাণী হল জারবিল । এদের ক্যাঙারু ইঁদুরও বলা হয় ।
প্রঃ । এর মরুভূমির উল্লেখযোগ্য প্রাণী কী ?
উঃ । কুয়সার হরিণ ।
প্রঃ । এর মরুভূমির সবচেয়ে বড়ো পাখি কী ?
উঃ । বাস্টার্ড ।
প্রঃ । বুশমেন কী ?
উঃ দক্ষিণ - পশ্চিম আফ্রিকার নামিব মরুভূমিতে বসবাসকারী মানুষদের বুশম্যান বলে । এরা বালির ভিতরে গর্ত করে থাকে ।
প্রঃ । কালাহারি মরুভূমিতে বসবাসকারী মানুষদের কী বলে ?
উঃ । স্যান বুশম্যান বলে ।
প্রঃ । স্যান বুশম্যানরা কীভাবে জল পান করে ?
উঃ । স্যান বুশম্যানরা ভিজে বালির মধ্যে গর্ত করে নলাকার খাস ঢুকিয়ে জল টেনে খায় । অস্ট্রিচের ডির্মের খোলককে এরা জল খাওয়ার পাত্ররূপে ব্যবহার করে ।
প্রঃ । পেঙ্গুইনদের মধ্যে বৃহত্তম কারা ?
উঃ । পেঙ্গুইনদের মধ্যে বৃহত্তম হল এম্পেরর পেঙ্গুইন ।
প্রঃ । কত সালে কারা পেঙ্গুইনদের রক্ষা করার আবেদন জানায় ?
উঃ । 1905 সালে আন্তর্জাতিক পক্ষী মহাসভা পেঙ্গুইনদের রক্ষা করার আবেদন জানায় ।
প্রঃ । ডুয়ারেগ কী ?
উঃ সাহারা মরুভূমিতে বসবাসকারী মানুষদের তুয়ারেগ বলে ।
প্রঃ । থর মরুভূমিতে কোন কোন সম্প্রদায়ের মানুষ বাস করে ?
উঃ । ওয়াধা , ভীল , গাদি , লোহার প্রভৃতি সম্প্রদায়ের মানুষ থর মরুভূমিতে বাস করে ।
প্রঃ । কোন্ সালকে ইউনাইটেড নেশনস এর পক্ষ থেকে আন্তর্জাতিক মরুভূমি ও মরুল বছর রূপে ঘোষণা করা হয় ?
উঃ । 2006 সালকে ।
প্রঃ । দক্ষিণ মেরুকে ঘিরে থাকা অঞ্চল কী নামে পরিচিত ?
উঃ । অ্যান্টার্কটিকা বা কুমেরু নামে পরিচিত ।
প্রঃ । সুমেরুর জীবজগতের প্রধান বৈশিষ্ট্য কী ?
উঃ । জলজ স্তন্যপায়ীদের প্রাধান্য ।
প্রঃ । পৃথিবীর প্রথম শুশুক স্যাংচুয়ারি কোনটি ?
উঃ । বিক্রমশীল গ্যাম্পেটিক ডলফিল স্যাংচুয়ারিং
প্রঃ । এখানে উল্লেখযোগ্য প্রাণীগুলি কী কী ?
উঃ । তিমি , সিল , সি - লায়ন , বলগা হরিণ , কুকুর , ডলফিন ।
প্রঃ । পরিযান কী ?
উঃ । এক বাসস্থান ছেড়ে অন্য বাসস্থানে যাওয়াই হলো পরিযান ।
প্রঃ । সুমেরু মহাসাগরের জলে কত ধরনের মাছ থাকে ?
উঃ । 240 ধরনের মাছ থাকে ।
প্রঃ । ইনসিটু ( insitu ) সংরক্ষণ কোথায় দেখা যায় ?
উঃ । অভয়ারণ্যে ।
প্রঃ । গভারের কোন্ দাঁতটি খুব লম্বা ।
উঃ । গন্ডারের নীচের চোয়ালে কৃত্তক নামক দাঁতটি খুব লম্বা ।
প্রঃ । এস্কিমোরা কোথায় বসবাস করে ?
উঃ । আর্কটিক মেরু অঞ্চলে এরা স্থায়ী ভাবে বসবাস করে ।
❐ সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর :
প্রঃ। বন থেকে মানুষ কী কী উপকার পায় ?
উঃ । i ) বন আমাদের আবহাওয়ার প্রধান নিয়ন্ত্রক , বৃষ্টিপাত , তাপমাত্রা প্রভৃতি নিয়ন্ত্রিত হয় ।
ii ) বন হল বন্য জীবজন্তুর একমাত্র আশ্রয়স্থল ।
iii ) মাটির ক্ষয় ও বন্যা নিয়ন্ত্রিত হয় ।
iv ) বন থেকে আমরা জ্বালানি , ফুল , ফল , মূল , ওষুধি দ্রব্য পেয়ে থাকি ।
v ) শিল্পের প্রয়োজনীয় কাঠ , আসবাবপত্রের কাঠ বন থেকে পেয়ে থাকি ।
প্রঃ । পৃথিবীতে কোথায় কেমন ধরনের বন দেখা যায় ?
উঃ । পৃথিবীতে সব জায়গায় বনের পরিমাণ সমান নয় । সারা পৃথিবীর এক তৃতীয়াংশ বনে ঢাকা । এর মধ্যে 95 % প্রাকৃতিকভাবে গড়ে ওঠা আর বাকি 5 % মানুষের তৈরি । এর মধ্যে দক্ষিণ আফ্রিকায় বনের পরিমাণ প্রায় 23 % আর ওশিয়ানিয়ায় মাত্র 5 % । পৃথিবীতে 64 টি দেশে বনের পরিমাণ সেই দেশগুলির স্থলভাগের দশ শতাংশেরও কম , আবার পৃথিবীতে 10 টা দেশে বন নাই ।
প্রঃ । আমাজনের বর্ষারণ্য কোথায় অবস্থিত এবং এর বৈশিষ্ট্যগুলি লেখো ।
উঃ । অবস্থান ও নিরক্ষরেখার উত্তর এবং দক্ষিণে 0-10 ° অক্ষরেখার মধ্যে আমাজনের বর্ষারণ্য অবস্থিত । বৈশিষ্ট্য :
i ) লম্বা লম্বা গাছ , উষু আবহাওয়া আর প্রচুর বৃষ্টি এই ধরনের বনের প্রধান বৈশিষ্ট্য ।
ii ) অরণ্য এতটাই ঘন যে এখানে দিনের বেলাও সূর্যের আলো প্রবেশ করতে পারে । না এবং এখানে গাছগুলি এত ঘন যে বনের মাথায় আসা বৃষ্টির প্রথম ফোঁটা মাটিতে আসতে প্রায় 10 মিনিট সময় লাগে । এই বর্ষাবন থেকেই পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের অধিকাংশ অক্সিজেনের উৎপত্তি ।
প্রঃ। কী কী কারণে বনে আগুন লাগতে পারে ?
উঃ । i ) প্রচন্ড ঝড়ের সময় গাছে গাছে ঘষা লেগে আগুন লাগতে পারে ।
ii ) গড়িয়ে পড়া পাথরের ধাক্কায় তৈরি হওয়া আগুনের শিখায় মেঝেতে পড়ে থাকা শুকনো পাতায় আগুন লাগতে পারে ।
iii ) মানুষের নানাবিধ কাজ — বনের ভিতর ধূমপান , রান্না করা ইত্যাদির কারণে ।
iv ) বজ্রপাতের ফলেও অনেক সময় আগুন লাগে ।
প্রঃ । বনে আগুন লাগলে কী কী ক্ষতি হয় ?
উঃ । বনে আগুন লাগলে i ) বাতাসে CO , এর ঘনত্ব বাড়ে আর O , -এর ঘনত্ব কমে ।
ii ) বনের মাটি ও গাছের পাতা বৃষ্টিপাতের 50 % শুষে নেয় । আগুন লাগলে মাটি ও গাছের পাতার সেই ক্ষমতা থাকে না ফলে বন্যার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায় ।
iii ) বহু বন্যপ্রাণী মারা যায় , অনেকে খাদ্য , বাসস্থান হারায় । বাসস্থান ও খাদ্যের জন্য যে সব প্রাণীরা বনের ওপর সম্পূর্ণভাবে নির্ভরশীল , বনের আগুনে তাদের ক্ষতির সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি হয় ।
iv ) বড়ো গাছগুলি পুড়ে যাওয়ায় প্রবল বৃষ্টিপাতে মাটির ক্ষয় বেড়ে যায় ।
প্রঃ। কী করে বন বাঁচানো সম্ভব ?
উঃ । i ) বনাঞ্চলে গাছ কাটা বন্ধ করা ।
ii ) গাছ লাগিয়ে নতুন বনাঞ্চল তৈরি করা ।
iii ) বনের পরিণত গাছ কাটা ও সেই জায়গায় ওই একই প্রজাতির নতুন গাছের চারা লাগানো
iv ) বনের গাছে কোনো রোগের আক্রমণ ঘটলে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা ।
v ) বনে আগুন লাগার সম্ভাবনা কমানো ও বনাঞ্চলে পশুচারণ নিয়ন্ত্রণ করা ।
প্রঃ । উত্তরবঙ্গের বনভূমির সংকটের কারণ কী ?
উঃ । i ) উত্তরবঙ্গ চা বাগানের জন্য বনাঞ্চল কেটে ফেলা হচ্ছে ।
ii ) মানুষ অধিক উপার্জনের জন্য প্রাকৃতিক বনাঞ্চল কেটে ধূপির বনের ন্যায় বহু বন তৈরি করছে ।
iii ) সড়কপথ ও রেলপথ নির্মাণ করার জন্য বহু বন কেটে ফেলা হচ্ছে ।
iv ) মানুষ বসবাসের জন্য বনাঞ্চল কেটে নতুন নতুন শহরাঞ্চল তৈরি করছে ।
প্রঃ । ম্যানগ্রোভস বনভূমির বর্তমান সমস্যাগুলি কী কী ?
উঃ । পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণদিকে যে ম্যানগ্রোভস বনভূমি গড়ে উঠেছে তা আজ সংকটপূর্ণ কারণ -
i ) এই অরণ্যে জোয়ারের সময় সমুদ্রের নোনাজল সরাসরি খাঁড়ির মধ্যে প্রবেশ করে যা স্থলভাগের উদ্ভিদরা সহ্য করতে পারে না কারণ অতিরিক্ত লবণ উদ্ভিদের দেহকলায় বিষক্রিয়া সৃষ্টি করে । ফলে অনেক সময় তারা মারা যায় ।
ii ) বর্তমানে পরিবেশের তাপমাত্রা ক্রমশ বাড়তে থাকায় জলের উচ্চতা ক্রমাগত বাড়ছে । আর জ্বলে বাড়ছে নুনের পরিমাণ । এতে বহু গাছের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমতে শুরু করেছে , ফলে বিপন্ন হয়ে পড়েছে বাঘ , খাঁড়ির কুমির , রিভার টেরাপিন এর মতো প্রাণী ।
প্রঃ। সাগরকলম কী ?
উঃ । সাগরকলম হল একটি সামুদ্রিক প্রাণী । প্রাণীটির শরীরের দুই দিকেই সরু অংশ থাকে । অনেকটা হাঁসের পালকের তৈরি কলমের মতো । সী পেনের সারা শরীর জুড়ে অসংখ্য শাখা । প্রতিটা শাখাই মূল দেহ থেকে বেরিয়েছে । এই শাখাগুলো সী পেনকে পাথরে আটকে রাখতে সাহায্য করে ।
প্রঃ । ফাইটোপ্ল্যাংকটন কী ?
উঃ । ফাইটোপ্ল্যাংকটন হল এককোশী আণুবীক্ষণিক উদ্ভিদ । এরা সূর্যের আলোর সাহায্যে খাবার তৈরি করতে পারে । সাধারণত ইউফোটিক অঞ্চলে এরা বসবাস করে । এরা বিভিন্ন সামুদ্রিক জীবের খাদ্য । পরিবেশে কার্বনের ভারসাম্য বজায় রাখায় এদের ভূমিকা রয়েছে ।
প্রঃ । মরুভূমির বৈশিষ্ট্য কী ?
উঃ । i ) মরুভূমিতে শুধু বালি আর বালি । সাধারণত পৃথিবীর বৃষ্টিচ্ছায় অঞ্চলে মরুভূমিগুলি অবস্থিত ।
ii ) কোথাও জল নেই , বৃষ্টির ভীষণ অভাব ।
iii ) দিনের বেলায় রোদের তাপ খুব বেশি ।
iv ) বছরে 20 সেন্টিমিটারেরও কম বৃষ্টি হয় ।
v ) সূর্যের আলোর প্রায় 90 শতাংশ বিকিরিত হয় ।
vi ) রাত্রের বেলা খুব ঠান্ডা । মরুভূমিতে প্রায় বালির ঝড় হয়ে থাকে ।
প্রঃ । মেরুপ্রদেশের মরুভূমিগুলি ঠান্ডা হওয়ার কারণ কী ?
উঃ । পৃথিবীর মাঝখান দিয়ে নিরক্ষরেখা বয়ে গেছে । ঠিক তার উত্তরে কর্কটক্রান্তি আর দক্ষিণে মকরক্লান্তি রেখা । নিরক্ষরেখা থেকে যত উত্তরে বা দক্ষিণে যাওয়া যায় সূর্যর স্থির পতনকোণের ততই তারতম্য ঘটবে । মেরু অঞ্চলে প্রচণ্ড তীর্যকভাবে কিরণ দেয় বলে তাতে আলো ও তাপ থাকে না বললেই চলে । তাই সরু প্রদেশের মুঠিত হয় ।
প্রঃ । মরুদ্যান কী ?
উঃ । মরুভূমির বুকে শুধু বালি আর বালি , গাছপালা নেই বললেই চলে । আর যেখানে বৃষ্টিপাত কোনো হ্রদ , জলাশয় বা নদী থাকে সেখানে মরুভূমির বুকে কিছু তাল , খেজুর জাতীয় উদ্ভিদ
প্রঃ । মরু উদ্ভিদের বৈশিষ্ট্যগুলি লেখো ।
উঃ । i ) গাছের মূল খুব দীর্ঘ হয় ।
ii ) জলীয় বাষ্প রোধের জন্য এদের কান্ড এবং পাতায় নেমেজাতীয় বা থাকে ।
iii ) এখানে বেশিরভাগ কাঁটা জাতীয় উদ্ভিদ জন্মায় ।
প্রঃ । পুয়েবলা কী ?
উঃ । আমেরিকার মরু অঞ্চলে রেড ইন্ডিয়ানরা একসঙ্গে মিলেমিশে থাকে । সবাই নিলে বাড়ি বানার বেশ কয়েকটা ঘর থাকে । পাথরের তৈরি এই বাড়িগুলিকে পুয়েবলা বলে ।
প্রঃ । মেরু অঞ্চল বলতে কোন অঞ্চলকে বোঝায় ?
উঃ । পৃথিবীর উত্তর ও দক্ষিণ মেরুকে ঘিরে যে ভৌগোলিক অঞ্চল অবস্থান করে তাকে মেরু মেরুকে ঘিরে থাকা অঞ্চল আর্কটিক বা সুমেরু ও দক্ষিণ মেরুকে ঘিরে থাকা অঞ্চল অ্যান্টার্কটিকা বা সে নামে ।
প্রঃ । কীভাবে পেঙ্গুইনদের সংকট তৈরি হয়েছিল ? এদের রক্ষা করার জন্য
উঃ । ষোড়শ শতাব্দী থেকে ফ্যাটের লোভে মানুষ পেঙ্গুইন শিকার করতে শুরু করে । এদের তেল থেকে বিভিন্ন কারখানায় সাবান ও জ্বালানি তৈরি শুরু হয় , এমনকি ওষুধও তৈরি হয় । পেঙ্গুইনের পালক জামাকাপড় , টুপি , জুতো ও ব্যাগ তৈরির কাজে ব্যবহৃত হয় । পেঙ্গুইনদের বিলুপ্ত হবার মতো সংকট দেখা যায় । এই সংকট থেকে পেঙ্গুইনদের বাঁচাতে 1905 সালে আন্তর্জাতিক পক্ষী মহাসভা পেঙ্গুইনদের রক্ষা করার জন্য আবেদন জানায় । 1959 সালে 12 টি দেশ অ্যান্টার্কটিক চুক্তিতে সই করে । এর ফলে অ্যান্টার্কটিকার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে পেঙ্গুইনদের রক্ষা করা সম্ভব হয়েছে ।
প্রঃ । শুশুক দেখতে পায় না । তাহলে আশেপাশে কী আছে তা এঁরা বোঝে কীভাবে ?
উঃ । শুশুকের নাসাগহ্বরে থাকা একরকম অঙ্গ ডরসাল বার্সার সাহায্যে শুশুক এক রকম শব্দ খুঁড়ে দেয় । সেই শব্দ সামনে কিছুতে বাধা পেয়ে ফিরে এলে সেই প্রতিধ্বনি শুনে শুশুক বুঝতে পারে সামনে কতদূরে কোন জিনিস আছে । এই পদ্ধতিকে ইকোলোকেশন বলা হয় ।
প্রঃ । মাছের কীভাবে সুমেরুর কম তাপমাত্রা বেঁচে থাকে ?
উঃ । সুমেরু অঞ্চলে শুষ্ক মিষ্টি জলের পুকুর বা নদীর সবচেয়ে ওপরের জলস্তর জমে বরফ হয়ে গেলেও নীচের স্তরে জল তরল থাকে । ফলে মাছের সহজেই বেঁচে থাকে । আর নোনা জলের সমুদ্রে হিমাঙ্কের নীচে তাপমাত্রা নেমে গেলেও জলে থাকা নুন মাছের দেহকে জমে যেতে বাধা দেয় । এছাড়াও এদের দেহে অ্যান্টিফ্রিজ প্রোটিন থাকে যা ভেতরের জলকে বরফ হতে বাধা দেয় ।
প্রঃ । সুমেরুর প্রাণীরা কখন বাচ্চা দেয় বা ডিম পাড়ে ?
উঃ । শীতকালে সুমেরুর প্রচণ্ড ঠাণ্ডায় কোনো জীবই প্রায় বাচ্চা দেয় না । কারণ এ সময় তাদের খাদ্যের অভাব ঘটে । তাই বসন্তের শেষ থেকে প্রাণীরা নিজেদের অঞ্চল নির্দিষ্ট করে নেয় ও স্বল্পস্থায়ী গরমের দিনগুলিতে ডিম পাড়ে বা বাঙ্গা দেয় । মেরু ভালুকরা কিন্তু শীতকালে নতুন শিশু ভালুকের জন্ম দেয় এবং বরফের গুহায় এদের লুকিয়ে রাখে । বসস্ত আসার সঙ্গে সঙ্গে এরা গুহা থেকে বেরিয়ে আসে ।
প্রঃ । প্রবল ঠান্ডাতেও সুমেরুর প্রাণীরা কীভাবে বেঁচে থাকে ?
উঃ । সুমেরুর প্রাণীরা প্রবল ঠাণ্ডা শুরু হলে শীতঘুম ও পরির্যানের মাধ্যমে বেঁচে থাকে । শীতঘুমঃ সুমেরুর স্থলবাসী অনেক প্রাণী ঠাণ্ডা শুরু হলেই শীতঘুমে চলে যেতে শুরু করে । এই সময় এরা চলাফেরা করে না , এদের দেহের তাপমাত্রা , হৃৎস্পন্দন ও শ্বাসক্রিয়ার হার খুব কমে যায় । পরিধান এক বাসস্থান ছেড়ে অন্য বাসস্থানে যাওয়াই হলো পরিযান । প্রাকৃতিক চিহ্ন দেখে সুমেরুর বহু পাখি , বলগা হরিণ খাদ্যের খোঁজে বা বাচ্চা দেওয়ার জন্য ঠান্ডা জায়গা ছেড়ে অপেক্ষাকৃত গরম জায়গায় পাড়ি দেয় ।হে জলের তলায় নেতিয়ে যায় ।
❐ রচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর :
প্রঃ । একটা আদর্শ বনের গঠন কেমন হতে পারে ?
উঃ । একটা আদর্শ বনের প্রধানত পাঁচটি স্তর থাকে যেমন-
i ) একদম ওপরের স্তরকে ছাদ বলে ( canopy ) । এই স্তরে খুব বৃদ্ধি দেখা যায় ।
ii ) ছাদের নীচের স্তরে এমন গাছ দেখা যায় যারা এই ছাদকে স্পর্শ করে চলেছে । অর্থাৎ মাঝারি উচ্চতার বৃক্ষ জাতীয় গাছ দেখা যায় ।
iii ) তৃতীয় স্তরে নতুন জন্মানো গাছ , পরিণত গুল্ম , এবং ঝোপওয়ালা গাছ দেখা যায় যাতে বন্যপ্রাণীদের খাদ্য এবং বাসস্থান , আত্মরক্ষার স্তর ।
iv ) মেঝের ঠিক উপরের স্তর এখানে মূলত বীরুৎজাতীয় গাছ জন্মায় । যেমন চারা , ফার্ন , ঘাস । এই স্তরে ইঁদুর পোকামাকড় , সাপ , কচ্ছপ , ব্যাং ইত্যাদি বসবাস করে ।
v ) বনের গঠনের শেষস্তর হল বনের মেঝে , যাতে পচা পাতা , ফুল , ফলে মাটিতে হিউমাস তৈরি হয় । এতে বাস করে কেঁচো , আরশোলা , বিছে ইত্যাদি ।
প্রঃ । বন কেটে ফেলায় পরিবেশের কী কী ক্ষতি হতে পারে ?
উঃ । বন কেটে ফেলায় পরিবেশে নানা সমস্যা হতে পারে । এগুলি হল
1. মাটির গভীরে ও কম গভীরে যাওয়া গাছ উপড়ে ফেললে মাটির কণাগুলি আলগা হয়ে যায় এবং বৃষ্টিধারায় সেই মাটি সহজে ধুয়ে গিয়ে নীচের পাথর বেরিয়ে যায় । ফলে সেখানে আর উদ্ভিদ জন্মায় না । বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে দীর্ঘদিন ধরনের ঘটনা ঘটলে মরুভূমির সৃষ্টি হতে পারে ।
2. বন কেটে ফেলার ফলে সেখানকার মাটি আর বৃষ্টির জল ধরে রাখতে পারে না ফলে মাটির নীচের জলের স্তর কমতে থাকে ।
3. বন ক্রমাগত কেটে ফেলার ফলে অধিক CO , শোষণে সক্ষম গাছের সংখ্যা কমতে থাকে এবং বাতাসে CO , বেড়ে গিয়ে পরিবেশ গরম হয়ে ওঠে এবং জলচক্র ব্যাহত হয় । বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কমে ও তার পরিবর্তন ঘটে । ফলে খরা ও বন্যার সম্ভাবনা বাড়ে ।
4. বিভিন্ন প্রাণী বিশেষ ধরনের গাছ বা বনাঞ্চলকে তার বাসস্থানের জন্য ব্যবহার করে । এই ধরনের বন ধ্বংস হলে বিভিন্ন প্রজাতির বিলুপ্তি ঘটে ও জীববৈচিত্র্য হ্রাস পায় ।
প্রঃ । ম্যানগ্রোভস বনভূমির উদ্ভিদেরা কীভাবে বেঁচে থাকে ?
উঃ । ম্যানগ্রোভস বনভূমির উদ্ভিদেরা বেঁচে থাকার জন্য নানা কৌশল অবলম্বন করে । এই বনের পাইন , গরান , কেওড়া প্রভৃতি উদ্ভিদের নীচের অংশ জোয়ারের সময় দিনে দুবার জলে ঢেকে যাওয়ার ফলে মাটির ছিদ্রগুলো কাদায় ঢেকে যাওয়ার জন্য শ্বাসকার্য চালাতে পারে না । তাই এই সব উদ্ভিদের মূল থেকে মাটির ওপরে মুলোর মতো অসংখ্য শ্বাসমূল দেখা যায় । আবার গর্জন জাতীয় গাছে দেখা যায় ঠেসমূল । এই গাছগুলি যাতে জোয়ার ভাটার স্রোতের টানে উপড়ে না যায় তার জন্য এই ব্যবস্থা করে । এছাড়া গর্জন , গরান প্রভৃতি উদ্ভিদে বংশরক্ষার তাগিদে পাকা ফল মাটিতে পড়ার আগেই তার মধ্যে অঙ্কুরোদগম হয়ে যায় । এমনকি শিশু উদ্ভিদটি যাতে মাটিতে শক্তভাবে আঁকড়ে থাকতে পারে তার জন্যও বিশেষ ব্যবস্থা দেখা যায় ।
প্রঃ । মরুভূমির মধ্যে যে সকল প্রাণীরা থাকে তারা কীভাবে তাপ থেকে নিজেদের রক্ষা করে থাকে ?
উঃ । ( i ) কোনো কোনো প্রাণী কেবল রাতের বেলায় বের হয় ।
( ii ) কোনো কোনো প্রাণী খুব ভোরে বা সূর্য অস্ত যাওয়ার সময় কেবল কয়েক ঘণ্টার জন্য সক্রিয় হয় ।
( iii ) গরমকালে কোনো প্রাণী শুষ্ক জায়গা থৈকে উঁচু ঠান্ডা জায়গায় চলে যায় আবার শীতে ফিরে আসে ।
( iv ) তাপমাত্রা অনেক বেড়ে গেলে অনেক প্রাণী এস্টিভেশন নামক গরম ঘুমে চলে যায় ।
( v ) কোনো কোনো প্রাণীর ত্বক খুব গুরু হয় যাতে জল বেরিয়ে যেতে না পারে ।
( vi ) কোনো কোনো প্রাণীর পা খুব লম্বা হয় যাতে তারা দ্রুত লাফায় ও দৌড়োতে পারে । এতে তপ্ত বালির সরাসরি সংস্পর্শে আসার সম্ভাবনা কমে ।
প্রঃ । মেরু ভালুকেরা কীভাবে সুমেরুতে বেঁচে থাকে ?
উঃ । সুমেরুতে বসবাসকারী মেরু ভালুকদের লোমের তন্তুগুলো খুব স্বচ্ছ হয় যা সূর্যের আলো শোষণ করে তাপ ধরে রাখতে সাহায্য করে । ফলে এদের শরীর গরম থাকে । প্রবল ঠান্ডাকে আটকানোর জন্য এদের চামড়ার ওপর দু - দুটি ঘন লোমের আস্তরণ থাকে । এদের শরীরের নীচের চামড়া কালো রঙের হওয়ার ফলে সূর্যের তাপ যতটা সম্ভব ধরে রাখা সম্ভব হয় । প্রতিকূল পরিবেশে ঠান্ডার হাত থেকে বাঁচতে এদের চামড়ার নীচে প্রায় 10cm পুরু ফ্যাট থাকে । এজন্য এরা সহজেই জলে ভেসে থাকতে পারে । এদের চোখও জলের অনেক নীচের জিনিস দেখতে ও চিনতে সাহায্য করে । মেরু ভালুকের পা বরফের জুতোর মতো । এদের পায়ের তালুতে থাকা এক বিশেষ ধরনের লোম বরফ ও তুষারের ওপর দিয়ে হাঁটার সময় হড়কে যাওয়া থেকে আটকায় । এদের কোনো প্রাকৃতিক শত্রু নেই । কিন্তু মেরু ভালুকদের সবচেয়ে বড়ো সমস্যা বিশ্ব উন্নায়নের ফলে যে হারে মেরু অঞ্চলের বরফ গলতে শুরু করেছে , তাতে এদের বিচরণক্ষেত্র ক্রমশই সংকুচিত হয়ে পড়ছে । আর বহু বছর ধরে লোম , চামড়া ও নখের জন্য এদের শিকারও করা হয়েছে ।
প্রঃ । অ্যান্টার্কটিকার পরিবেশ কীভাবে দূষিত হয়ে চলেছে ?
উঃ । অ্যান্টার্কটিকা পৃথিবীর সবচেয়ে কম দূষিত স্থান । কিন্তু মানুষ এই স্থানকেও দূষিত করতে শুরু করেছে । অ্যান্টার্কটিকায় পাওয়া দূষিত পদার্থের উৎস কিন্তু পৃথিবীর অন্য জায়গায় । মানুষের ব্যবহৃত নানা ক্লোরোফ্লুওরো কার্বন ও হ্যালন জাতীয় যৌগ অ্যান্টার্কটিকার ওপরে থাকা ওজোনস্তরের ঘনত্ব কমিয়ে দিয়েছে । ফলে ওজোন ছিদ্র দেখা দিয়েছে । এই ছিদ্র দিয়ে ক্রমাগত অতিরিক্ত ক্ষতিকারক অতিবেগুনি রশ্মি পৃথিবীর পরিবেশে এসে মেশার ফলে মানুষ ও জলে বসবাসকারী নানা আণুবীক্ষণিক প্রাণীদের ক্ষতি হয়ে চলেছে । অ্যান্টার্কটিকায় জাহাজের চলাচল ক্রমশ বাড়ার ফলে তা থেকে চুঁইয়ে পড়া তেল সমুদ্রের জলে ক্রমাগত মিশে জলকে দূষিত করে চলেছে । মাছ ধরার জাল , যন্ত্রপাতি , দড়ি ইত্যাদির ব্যবহার বাড়ার ফলে পাখি ও সিলেরা এতে আটকে গিয়ে মারা পড়ছে ।
প্রঃ । বিপন্ন জীবকে কীভাবে বাঁচানো সম্ভব ?
উঃ । প্রাকৃতিক সম্পদের অন্তর্গত জীববৈচিত্র্যকে সংরক্ষণের জন্য যে সব পদ্ধতি নেওয়া হয়েছে সেগুলিকে একত্রে ‘ জিন ব্যাঙ্কস ’ বলা হয় । এই পদ্ধতি দুটি শ্রেণিতে বিভক্ত । এগুলি হল ইন সিটু ( In - situ ) সংরক্ষণ ও এক্স সিটু ( Ex Situ ) সংরক্ষণ । বিপন্ন উদ্ভিদ ও প্রাণীকে যখন তাদের প্রাকৃতিক পরিবেশে সংরক্ষণ করা হয় তখন ওই জীবের স্বাভাবিক বাসস্থান বা মানুষের তৈরি বনকে সংরক্ষিত বন বলে ঘোষণা করা হয় । এই ধরনের সংরক্ষণকে ইন সিটু সংরক্ষণ বলা হয় । এটি নানা ধরনের হয়ে থাকে যেমন — অভয়ারণ্য , ন্যাশানাল পার্ক , বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভ ও ভূপ্রাকৃতিক দৃশ্য । আবার যে সব জীবকে যখন তার স্বাভাবিক বাসস্থানে কোনোভাবেই বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব হয় না তখন তাদের দূরে অন্য কোনো স্থানে চিড়িয়াখানা বা বোটানিক্যাল গার্ডেনে রেখে বেঁচে থাকার অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করে কৃত্রিমভাবে সংখ্যা বাড়ানোর চেষ্টা করা হয় । একে এক্স সিটু সংরক্ষণ বলা হয় ।
No comments:
Post a Comment