পঞ্চম শ্রেণীর বাংলা সাজেশন |পঞ্চম শ্রেণীর বাংলা কবিতা - মায়াতরু প্রশ্ন উত্তর | ক্লাস সেভেন বাংলা কবিতা - মায়াতরু গুরুত্ব পূর্ণ প্রশ্ন উত্তর, সহায়িকা | Class 5 Bangla Mayataru Important Questions And Answers | পঞ্চম শ্রেণীর বাংলা গুরুত্ব পূর্ণ প্রশ্ন উত্তর | #Class5 Bangla Mayataru Questions And Answers #Class 5th Bangla Questions And Answers
⬛ কবি পরিচিতি :
কবি ও প্রাবন্ধিক অশোকবিজয় রাহা ১৯১০ সালে বাংলাদেশের শ্রীহট্টে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর রচিত উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থগুলি হল ভানুমতীর মাঠ', 'রুদ্রবসন্ত', 'ডিহং নদীর বাঁকে, ‘জলডম্বুর পাহাড়', ‘রক্তসন্ধ্যা', 'উড়ো চিঠির ঝাঁক', 'সেথা এই চৈত্রের শালবন। নদী, পাহাড়, অরণ্যপ্রকৃতি ছিল তাঁর কবিতার কেন্দ্রভূমি। কবি অধ্যাপক হিসেবে শান্তিনিকেতনে বিশ্বভারতীতে যোগদান করেন এবং অবসরের পর শান্তিনিকেতনের সব কাজেই নিজেকে জড়িয়ে রাখেন। ১৯৯০ সালে তাঁর জীবনাবসান হয়।
⬛ রচনা পরিচয় :
একটা গাছ যে দিনের এক এক সময় রূপ পরিবর্তন করে এক এক রকম হাবভাব করতে থাকে। গাছটির এইরূপ ভাবভঙ্গী ও কাজকর্মের জন্য কবি গাছটিকে মায়াত বলেছেন। কবিতাটি যেহেতু মূলত গাছটিকে নিয়ে তাই গাছটির নানারকম মায়ারূপ ধরার জন্য কবিতাটির নামকরণ ‘মায়াতরু’ সার্থক হয়েছে। ‘মায়াতরু’ কবিতাটি অশোকবিজয় রাহার লেখা 'ভানুমতীর মাঠ' কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে।
⬛ সারমর্ম :
একটি গাছ ছিল। গাছটি সন্ধে হবার সাথে সাথেই দু-হাত তুলে ভূতের নাচ নাচত। তারপর বনের মাথার যেই ঝিলিক মেরে চাঁদ উঠত তখন আবার সে ভালুক সেজে ঘাড় ফুলিয়ে গরগর করত। বৃষ্টি হলে তার আবার কাপুনি দিয়ে জ্বর আসত। তারপর এক পশলা বৃষ্টির শেষে আবার যখন চাঁদ হেসে উঠত তখন দেখা যেত লক্ষ হীরার মাছ যেন মুকুট হয়ে ঝাঁক বেঁধেছে । তারপর আবার ভোরবেলায় আবছায়াতে গাছটি আর এক কাণ্ড করত। যা কবি নিজেও ভেবে পাননি। তারপর আবার সকাল হলে দেখা যেত, একটিও মাছ নেই, সেখানে কেবল রূপালি আলোর এক ঝিকিমিকির ঝালর পড়ে আছে।
⬛ সঠিক উত্তরটি বেছে নিয়ে বাক্যটি আবার লেখো : প্রতিটা প্রশ্নের মান -1
1.সন্ধে হলেই গাছটি (নাচত / ঘুমোত / দৌড়ত)।
উঃ। সন্ধে হলেই গাছটি নাচত।-
2.চাঁদ উঠলে গাছটি (মহিষ / ভালুক / কুকুর) হয়ে যেত।
উঃ। চাঁদ উঠলে গাছটি ভালুক হয়ে যেত।
3.বৃষ্টি হলে গাছটির (সর্দি / হাঁচি / জ্বর) হত।
উঃ। বৃষ্টি হলে গাছটির জ্বর হত।
4.সকালবেলা কেবল একটা আলোর (রেখা / ঝালর / মুকুট) পড়ে থাকত।
উঃ। সকালবেলা কেবল একটা আলোর ঝালর পড়ে থাকত।
⬛ অতি-সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর; প্রতিটা প্রশ্নের মান -1
1.. 'মায়া' কবিতায় গাছটা সন্ধে হলে কী করত?
উঃ । গাছটা সন্ধে হলে দু-হাত তুলে ভূতের নাচ নাচত।
2.. গাছটি কখন ভালুক হয়ে যেত?
উঃ। বনের মাথায় ঝিলিক দিয়ে যখন চাঁদ উঠত তখন গাছটি ভালুক হয়ে যেত।
3.. ভালুক হয়ে গাছটি কী করত?
উঃ । ভালুক হয়ে গাছটি ঘাড় ফুলিয়ে গরগর করত।
4. বৃষ্টি হলে গাছটার কী হত?
উঃ । বৃষ্টি হলে গাছটির কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসত।
5.. বৃষ্টি থেমে গেলে চাঁদ উঠলে কী দেখা যেত?
উঃ। বৃষ্টি থেমে গেলে চাঁদ উঠলে দেখা যেত লক্ষ হীরার মাছ যেন ঝাঁক বেঁধে গাছটিতে মুকুট হয়ে রয়েছে।
6.. সকাল হলে কী দেখা যেত?
উঃ। সকাল হলে দেখা যেত যে কোনো মাছই নেই, কেবল রূপালি আলোর এক ঝালর সেখানে পড়ে আছে।
7. কবিতাটিতে আছে এমন বিষয় বা বস্তুগুলি লেখো।
উঃ। একটি গহনা—মুকুট। মূল্যবান রত্ন—হীরা। একটি অসুখের নাম—জ্বর। একটি প্রাণী-ভালুক। দেখা যায় না। কিন্তু ভয় লাগে—ভূত। একটি রং-রূপানি।
8.নানারকম রঙিন মাছ তুমি কোথায় দেখেছ?
উঃ। চিড়িয়াখানার মাছঘরে আমি নানারকম রঙিন মাছ দেখেছি।
9.ডোরের আলো তোমার কেমন লাগে? তখন তোমার কোথায় যেতে ইচ্ছে করে?
উঃ। ভোরের আলো আমার খুব ভালো লাগে। তখন আমার নদীর ধারে বেড়াতে যেতে ইচ্ছে করে।
10. আলোয় এবং অন্ধকারে একই গাছের দুরকম চেহারা তোমার চোখে কীভাবে ধরা পড়ে?
উঃ। আলো-অন্ধকারে কলা গাছকে দুরকম চেহারায় দেখা যায়। দিনের বেলায় গাছ এবং রাতের বেলায় মনে হয় কে যেন হাত নেড়ে ডাকছে।
11. তোমার চেনা এমন দুটি গাছের নাম লেখো অন্ধকারে যাদের দেখলে মনে হয় যেন মানুষের মতো হাত নেড়ে ডাকছে।
উঃ। আমার চেনা এমন দুটি গাছ হল কলা গাছ ও খেজুর গাছ। অন্ধকারে তাদের দেখলে মনে হয় যেন মানুষের মতো হাত নেড়ে ডাকছে।
⬛ নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর নিজের ভাষায় লেখো :
1. ‘মায়াতরু' শব্দটির অর্থ কী ? কবিতায় গাছকে 'মায়া' বলা হয়েছে কেন ?
উঃ। মায়াতরু শব্দের অর্থ হল মায়াবী গাছ। কবিতায় গাছটিকে দিনের এক এক সময় ও আলো-আঁধারি বর্ষায় এক এক রকম দেখতে লাগত। অনেকটা যেন মায়ার খেলা দেখা যেত গাছটিকে ঘিরে। তাই গাছটিকে মায়াবী বা 'মায়াতরু' বলা হয়েছে।
2. ভূতের আর গাছের প্রসঙ্গ রয়েছে এমন কোনো গল্প তুমি পড়েছ? পাঁচটি বাক্যে সেই গল্পটি লেখো।
উঃ। একবার একটা লোক রাতের অন্ধকারে গ্রামের পথ দিয়ে যাচ্ছিল। হঠাৎ সে দেখল সাদা শাড়ি পরা কে একজন তাকে হাত নেড়ে ডাকছে। সে প্রচণ্ড ভয় পেয়ে চিৎকার করে দৌড়তে দৌড়তে গিয়ে তাদের বাড়িতে ঢুকল। তার মুখে সব শুনে গ্রামের লোকেরা সবাই মিলে সেইখানেতে এসে দেখে যে যে লোকটিকে সাদা শাড়ি পরা মহিলা ভেবেছিল সেটা আসলে একটা কলাগাছ। গ্রামের লোকেরা হাসাহাসি করতে করতে যে যার বাড়ি ফিরে গেল।
3.দিনের বিভিন্ন সময়ে কবি গাছকে কোন্ কোন্ রূপে দেখেছেন?
উঃ। কবি সন্ধেবেলায় গাছটিকে ভূতের নাচ নাচতে দেখেছেন। আবার রাত্রিবেলা চাঁদ উঠলে গাছটিকে দেখে তাঁর মনে হয়েছে সে যেন ভালুক এবং বৃষ্টির সময় যেন তার কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসছে। আবার যখন বৃষ্টি শেষ হয়ে যায় তখন তার মাথায় যেন লক্ষ হীরার মাছ মুকুট হয়ে ঝাঁক বেঁধে থাকে। কিন্তু যেই সকাল হয় তখন দেখা যায় সেখানে রুপালি আলোর এক ঝালর পড়ে আছে।
4. মায়াত কবিতায় গাছটি কখন কী করত তা নিজের ভাষায় লেখো।
উঃ। মায়াতরু গাছটি সন্ধে হলেই দু-হাত তুলে ভূতের নাচ জুড়ে দিত। আবার যখন বনের মাথায় ঝিলিক দিয়ে চাঁদ উঠত তখন গাছটি যেন ভালুকের মতো হয়ে ঘাড় ফুলিয়ে গরগর করত। আবার বৃষ্টি হলেই তার কম্প দিয়ে জ্বর এসে যেত। এক পশলা বৃষ্টির শেষে যখন আকাশে চাঁদ হেসে উঠত তখন মনে হত গাছটির জায়গায় যেন লক্ষ হীরার মাছ মুকুট হয়ে ঝাঁক বেঁধে রয়েছে। আবার সকাল হলেই দেখা যেত কোনো মাছই নেই ঝিকমিক করছে এমন এক রূপালি আলোর ঝালর সেখানে পড়ে আছে।
5. কৰি 'মায়াত' কবিতায় গাছটির বিভিন্ন কল্পিত রূপের বর্ণনা দিয়েছেন। সেগুলি কোন্ বাস্তব ভিত্তিতে কবির কল্পনায় ধরা পড়েছে বলে তোমার মনে হয়?
উঃ। কবি মায়ারু কবিতাটিতে গাছটির বিভিন্ন রূপ দেখেছেন। সম্ভবত প্রকৃতির সাথে সামান্য রেখে কবি এই ৰূপগুলি কল্পনা করেছেন। গাছটির দুই হাত তুলে ভূতের নাচ জোড়া বা ভালুক হয়ে ঘাড় ফুলিয়ে গরগর করা এগুলি হাওয়ার বিভিন্ন বেগের ওপর নির্ভর করে হয়েছে বলে মনে হয়। আবার বৃষ্টি হলেই গাছটি কাঁপত অর্থাৎ জল ও হাওয়ার দাপটে কেঁপে ওঠাকে কবি কম্প দিয়ে জ্বর আসার রূপে কল্পনা করেছেন। আবার যখন চাঁদ উঠত তখন গাছের মাথায় চাঁদের আলো ও বৃষ্টি শেষের জলের ফোঁটার মধ্যে পড়ায় মনে হত গাছটির মাথায় যেন হীরার মুকুট বা মাছ দেখা যাচ্ছে। আর ভোরের বেলায় শিশিরের বিন্দুতে গাছটির গায়ে লেগে থাকায় মনে হত যেন এক রূপালি ঝালর পড়ে আছে যা ঝিকমিক করছে।
6. দুই বন্ধু আর ভালুককে নিয়ে যে গল্পটি আছে তা তোমরা শুনেছ? যদি না শুনে থাকে, তাহলে শিক্ষকের থেকে জেনে নিয়ে গল্পটি নিজের খাতায় লেখো।
উঃ। দুই বন্ধু একদিন ঘুরতে বেড়িয়ে অনেক দূর চলে গেল। তাড়াতাড়ি বাড়ি ফেরা দরকার। তারা তখন সোজা বনের পথ ধরে বাড়ি ফিরছিল। দুই বন্ধু কথা বলতে বলতে হাঁটছিল। কখন একটি ভালুক তাদের পিছনে পিছনে আসছিল তা তাদের নজরে পড়েনি। দুজনে যখন জানতে পারল তখন তারা ভীষণ ভয় পেল। প্রথম বন্ধু অন্যজনকে বলল এসো বন্ধু আমরা সামনের ওই উঁচু গাছটায় উঠে পড়ি। অন্য বন্ধু ভয়ে বলল, আমি গাছে চড়তে পারি না। অন্য কোনো উপায় বলো। প্রথম বন্ধুটি অন্য কথা না ভেবে গাছে উঠে পড়ল। অন্য বন্ধুটি শুনেছিল যে ভালুক মরা মানুষ ছোঁয় না। সে তখন দম বন্ধ করে মড়ার মতো পড়ে রইল। ভালুকটি তার কাছে এসে চোখ, কান, নাক ও মুখ শুঁকল। ভালুকটি ভাবল লোকটি মড়া, তাই সে জঙ্গলে ঢুকে গেল। ভালুক চলে যেতেই প্রথম বন্ধুটি গাছ থেকে নেমে অন্য বন্ধুটির কাছে গিয়ে বলল ভালুকটি তোমার কানে কানে কী কথা বলল। বন্ধুটি বলল ভালুক আমার কানে এই কথা বলে গেল, যে লোক বন্ধুকে বিপদে ফেলে পালায়, তার উপর ভরসা করতে নেই।
No comments:
Post a Comment