"ছেলেবেলা" প্রশ্ন উত্তর পড়তে নিচের লিংকে ক্লিক করো
⬛ কবি পরিচিতি :
বাংলা সাহিত্যে শিশু সাহিত্যিক হিসাবে নবকৃষ্ণ ভট্টাচার্য অত্যন্ত সুপরিচিত নাম। ১৮৫৯ সালে হাওড়া জেলার আমতা অঞ্চলের নারিটে তাঁর জন্ম হয়। তিনি সংস্কৃত কলেজিয়েট স্কুলে শিক্ষাগ্রহণ করেন। তাঁর রচিত গ্রন্থের মধ্যে উল্লেখযোগ্য—'বালক পাঠ', 'বাঙালির ছবি', ‘শিশুপাঠ', 'ছেলেখেলা', 'কবিতা কুসুম', 'শিশুরঞ্জন রামায়ণ', ‘ছবির ছড়া’, সকালের ইতিকথা', ‘সুখবোধ ব্যাকরণ’, ‘নীতিপাঠ' ইত্যাদি। তিনি 'সখা' পত্রিকার সম্পাদক ও মাসিক বসুমতী' পত্রিকার সহ-সম্পাদক ছিলেন। ১৯৩৯ সালে কবির জীবনাবসান হয়।
⬛ কবিতা পরিচয় :
বিমলা নামে মেয়েটির বড়োই অভিমান হয়েছে এই জন্য যে তাকে দাদা ও ভাইয়ের থেকে কম পরিমাণ ক্ষীর দেওয়া হয়েছে। তাই সে খেতে নারাজ। তাকে দিয়ে সব কাজ করানো হয়, কিন্তু মনোমতো খাবার সে পায় না, তাই সে খাবে না। এই ব্যাপারে সে বদ্ধপরিকর। মেয়েটির অভিমান তার মায়ের প্রতি। সে মনে করছে সংসারে তার কোনো দাম নেই । তার দাদা ও ভাই সোনার চূড়ো আর সে যেন দূর ছাই। এই কবিতাটিতে শিশু মনের এক অভিমানের কথা ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। সমাজে ছেলে ও মেয়ের সমান আদর থাকা দরকার তা না হলে যে শিশুটিকে অনাদর করা হচ্ছে তার মনে এই বোধ বা ভাবনা আসবে যা তার বেড়ে ওঠায় প্রভাব ফেলবে। তাই কবিতাটির নামকরণ 'বিমলার অভিমান' সার্থক।
⬛ সারমর্ম :
বিমলা নামক মেয়েটির বড়োই অভিমান হয়েছে কারণ তার মা তার থেকে দাদা এবং ছোটো ভাই অবনীকে বেশি পরিমাণে ক্ষীর খেতে দিয়েছে। তার কথা হল যখনই কোনো কাজের দরকার পড়ে যেমন—ফুল আনা, ছাগল তাড়ানো, খোকার ভার নেওয়া তখনি তার ডাক পড়ে। যার যত ফরমাস আসে সব তাকে পূরণ করতে, হয় তাতে সে বাঁচুক বা মরুক। কিন্তু যেই খাবার দেওয়ার সময় আসে তখনই তাকে ভুলে যাওয়া হয়। দাদা বড়ো, তাই বেশি খাবে, ভাই অবনী ছোটো, তাই বেশি খাবে এমনটা হয়। যেন দুধারে দুই সোনার চুড়োর মাঝে সে একখানি ছাইয়ের নুড়ো। তাই সবাই ভাবে বুঝি সংসারে বিমলার কোনো দামই নেই। এজন্য বিমলা ঠিক করেছে যে কোনোমতেই সে খাবে না।
⬛ সঠিক উত্তরটি বেছে নিয়ে লেখো : প্রতিটা প্রশ্নের মান -1
১. দাদা বেশি খাবে (পনির / ক্ষীর / মিষ্টি)।
উঃ। দাদা বেশি খাবে ক্ষীর।
২. বিমলার ছোটো ভাইয়ের নাম (রজনী/অবনী/ধরণী)।
উঃ। বিমলার ছোটো ভাইয়ের নাম অবনী ।
৩. ছাগলে নটে গাছটি খায় (বুড়িয়ে মুড়িয়ে/তাড়িয়ে)
উঃ। ছাগলে নটে গাছটি খায় মুড়িয়ে।
৪. 'বিমলার অভিমান' কবিতায় (জাম/নটে/পেয়ারা) গাছের কথা বলা হয়েছে
উঃ। বিমলার অভিমান কবিতায় নটে গাছের কথা বলা হয়েছে।
৫. দাদা বসেছে খেতে, দাও তো মা (চুন/নুন/মিষ্টি)।
উঃ । দাদা বসেছে খেতে, দাও তো মা নুন ।
⬛অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর : প্রতিটা প্রশ্নের মান -1
১. 'বিমলার অভিমান' কবিতাটির কবি কে ?
উঃ। বিমলার অভিমান কবিতাটির কবি হলেন নবকৃষ্ণ ভট্টাচার্য।
২. বিমলার কীসের প্রতি অভিমান হয়েছে?
উঃ। বিমলার খাওয়ার প্রতি অভিমান হয়েছে।
৩. বিমলাকে কোন্ খাবার কম দেওয়া হয়েছে।
উঃ। বিমলাকে ক্ষীর কম দেওয়া হয়েছে।
৪. কাকে কাকে বেশি ক্ষীর দেওয়া হয়েছে?
উঃ। বিমলার দাদাকে ও তার ভাই অবনীকে বেশি ক্ষীর দেওয়া হয়েছে।
৫. বিমলার ছোটো ভাইয়ের নাম কী?
উঃ। বিমলার ছোটো ভাইয়ের নাম অবনী।
৬. মা পুজো করার আগে বিমলাকে কী করতে হয় ?
উঃ। মা পুজো করার আগে বিমলাকে গাছ থেকে ফুল তুলে আনতে হয়।
৭. কবিতাটিতে ছাগলের কোন্ গাছ মুড়িয়ে খাওয়ার কথা বলা হয়েছে?
উঃ। কবিতাটিতে ছাগলের নটেগাছ মুড়িয়ে খাওয়ার কথা বলা হয়েছে।
৮. বিমলাকে কী তাড়াতে যেতে হয়?
উঃ। বিমলাকে ছাগল তাড়াতে যেতে হয়।
৯. বিমলাকে কার ভার নিতে হয়?
উঃ। বিমলাকে দুরন্ত খোকার ভার নিতে হয়।
১০. খোকাকে কখন ধরে রাখা ভাৱ ?
উঃ। কেঁদে উঠলে দুরন্ত খোকাকে ধরে রাখা ভার।
১১. দাদা খেতে বসলে বিমলাকে কী করতে হয় ?
উঃ। দাদা খেতে বসলে বিমলাকে তার দাদার পাতে খাবার সময় নুন দিতে হয়।
১২. বিমলার দাদা ও ভাই কেন বেশি খাবে ?
উঃ। বিমলার দাদা বড়ো তাই বেশি খাবে এবং ভাই ছোটো তাই সে বেশি খাবে।
১৩. বিমলা তার দাদা ও ভাইকে কীসের সাথে তুলনা করেছে?
উঃ। বিমলা তার দাদা ও ভাইকে সোনার চুড়োর সাথে তুলনা করেছে।
১৪. বিমলা নিজেকে কীসের সাথে তুলনা করেছে?
উঃ। বিমলা নিজেকে ছাইয়ের নুড়োর সাথে তুলনা করেছে।
১৫. বিমলার কী কমে গেছে বলে তার মনে হয়েছে?
উঃ। বিমলার দাম কমে গেছে বলে তার মনে হয়েছে।
১৬. কবিতায় বিমলা অনেকগুলি মেয়ের নাম তুলনা দিয়ে বলেছে নামগুলি লেখো।
উঃ। নামগুলি হল রাধু, মাধু, রামী, বামী, শ্যামী।
১. বিমলাকে সারাদিন কোন্ কোন্ কাজ করতে হয় ?
উঃ। বিমলাকে সারাদিন পূজার জন্য ফুলতোলা, খোকাকে সামলানো, ছাগল তাড়ানো, দাদাকে নুন দেওয়া, পানে ঝাল হলে চুন এনে দেওয়া এইসব কাজ করতে হয়।
২. বিমলার ছোটো ভাইয়ের নাম কী? সে ও তার দাদা বেশি বেশি খাবার পাবে কেন ?
উঃ। বিমলার ছোটো ভাইয়ের নাম অবনী। সে ছোটো বলে বেশি খাবার পাবে। তার দাদা বড়ো বলে সে বেশি খাবার পাবে।
৩. “তাই বুঝি বিমলার কমে গেছে দাম-ই' –বিমলার দাম কমে গেছে মনে হওয়ার কারণ কী ?
উঃ। দুই ভাইয়ের মধ্যে বিমলা এক বোন। তার দাদা ও ভাই অবনী আদর ও খাবার বেশি পায়, সে পায় না। অথচ দরকারে তাকেই সব কাজ করে দিতে হয়। তাই তার মনে হয়েছে যে পরিবারে সকলের কাছে তার দাম বুঝি কমে গেছে।
⬛ সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর : প্রতিটা প্রশ্নের মান -2/3
১. কী কারণে বিমলার অভিমান হয়েছিল?
উঃ। বিমলারা তিন ভাই-বোন। খাবার সময় বিমলার দাদাকে অনেকটা ক্ষীর এবং বিমলার ছোটো ভাই অবনীকে বেশি পরিমাণে ক্ষীর খেতে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বিমলার পাতে নামমাত্র ক্ষীর দেওয়ায় অভিমানে তার খাবার ইচ্ছা হল না।
২. যার যত ফরমাস.....। কী কী ফরমার্স বিমলাকে শুনতে হয় তা লেখো।
উঃ। বাড়িতে যত ফরমাস সবই বিমলাকে শুনতে হয়। মা পুজো করার আগে বিমলাকে ফুল তুলে এনে দিতে হয়। দুরন্ত খোকা কাঁদলে তাকে ধরে রাখা খুব মুশকিল, তখন বিমলাকেই সে দায়িত্ব নিতে হয়। ছাগলে নটেগাছ মুড়িয়ে খেলে তাকে তাড়াতে হয়। দাদা খেতে বসলে খাবারে নুন কম হলে তখন নুন আনা থেকে শুরু করে ঝাল পানের জন্য চুন আনা সবই বিমলাকে করতে হয়।
৩. 'তাই বুঝি বিমলার কমে গেছে দাম-ই—কেন তার দাম কমে গেছে বলে বিমলার মনে হয়েছে?
উঃ। বিমলার দাদা বড়ো সে বেশি খাবার খাবে আর তার ভাই অবনী সবার ছোটো ও বেশি আদরের তাই সেও বেশি খাবে। মাঝখানে বিমলা সবার ফরমাস শোনে, তবু তাকে অনাদর সইতে হয়। তাই বিমলার মনে হয়েছে তার দাদা ও ভাই দুপাশে সোনার চুড়োর মতো আর সে যেন মাঝখানে ছাইয়ের নুড়োর মতো গুরুত্বহীন অর্থাৎ ফেলনা। তাই বিমলার মনে হয়েছে তার বুঝি কোনো কদর বা দাম নেই।
৪. আর তারে মনে নেই—কখন কার কথা মনে না থাকার কথা বলা হয়েছে?
উঃ। কবিতার বিমলা নামে বালিকাটির অভিমান হয়েছে। কারণ যার যত ফরমাস সব বিমলাকে করতে হয় তাতে বিমলা বাঁচল কি মরলো সেটা কারো খেয়াল থাকে না। কিন্তু ভালো খাবার দাবার এলে অন্যের কথা মনে পড়লেও বিমলার কথা কারো মনে পড়ে না।
No comments:
Post a Comment