"মাঠ মানে ছুট" অধ্যায়ের প্রশ্ন উত্তর পড়তে নিচের লিংকে ক্লিক করো
👉 (মাঠ মানে ছুট প্রশ্ন উত্তর )
এই পোস্টটিতে ক্লাস ফাইভ অর্থাৎ পঞ্চম শ্রেণীর বাংলা বিষয়ের একটি গুরুত্ব পূর্ণ অধ্যায় "ছেলেবেলা" এর থেকে ছেলে মেয়েদের সুভিদার্থে প্রায় সব ধরনের প্রশ্ন উত্তর করে দেওয়া হলো ।
⬛লেখক পরিচিতি:
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৮৬১ সালে কলকাতার জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। খুব অল্পবয়স থেকেই ঠাকুরবাড়ি থেকে প্রকাশিত 'ভারতী' ও 'বালক' পত্রিকায় তিনি নিয়মিত লিখতেন। তাঁর রচিত 'কথা ও কাহিনী', 'সহজপাঠ', 'রাজর্ষি', 'ছেলেবেলা', 'শিশু ভোলানাথ' 'হাস্যকৌতুক' ‘ডাঘর' ‘গল্পগুচ্ছ'-সহ বহু রচনাই শিশু-কিশোরদের আকৃষ্ট করে। দীর্ঘ জীবনে অজস্র কবিতা, গান, ছোটোগল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ তিনি লিখেছেন ও ছবি এঁকেছেন। ১৯১৩ সালে ‘Song Offerings 'কাব্যগ্রন্থের জন্যে প্রথম এশিয়াবাসী হিসেবে তিনি নোবেল পুরস্কার পান। দুটি স্বাধীন রাষ্ট্র ভারত আর বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত তাঁরই রচনা। ‘ছেলেবেলা' রচনাটি তাঁর 'ছেলেবেলা' বই থেকে নেওয়া হয়েছে।
⬛ সারসংক্ষেপ :
এক শিশু তার বাড়ির চার দেওয়ালের মধ্যে, পাঁচজনের নজরদারিতে সীমাবদ্ধ থাকলেও তার মানসিক জগৎ কোনো নির্দিষ্ট সীমানার মধ্যে আবদ্ধ থাকে না। রচনার শিশুটি ছাদে উঠে তার কল্পনার জগৎকে দিগন্তে ছড়িয়ে দেয়। শিশুটি দেখে তার বাবা ভোরবেলায় ছাদের উপর পাথরের মূর্তির মতো স্থির হয়ে বসে থাকেন। বাবা মাঝে মাঝে অনেক দিনের জন্য বাইরে গেলে ছুটির দিনে শিশুটিও ছাদে উঠে গিয়ে তার বাবার ঘরে বসে আকাশকুসুম কল্পনা করে। সেখানটাতে গিয়ে সে পায় সাত সমুদ্র পারে যাওয়ার আনন্দ।
ছেলেটি দুপুরবেলায় লুকিয়ে ছাদে উঠত। এই সময়টাই যেন তার মন ভুলিয়ে দিত। তার দেখাশুনো করার চৌকিদারেরা সে সময় ঝিমোত। ছাদে বসে সে শুনত ফেরিওয়ালার ডাক। সেই চুড়িওয়ালারা বাড়ির বউদের হাতে চুড়ি পড়িয়ে দিত। বাড়ির সেই ছাদটা ছিল ছেলেটির কাছে বইতে পড়া মরুভূমি। সেখানে গরম বাতাস ছুটছে ধুলো উড়িয়ে। সেই মরুভূমির ওয়েসিসটা বাংলাদেশের সেই একমাত্র লিভিংস্টন ছেলেটি যেন খুঁজে পেয়েছিল। তখন তেতলায় কলের জল ছিল। সেই কল খুলে সেখানে সে স্নান করত। তারপর বিছানার একখানা চাদর দিয়ে গা মুছে ছেলেটি সহজ হয়ে বসত।
দেখতে দেখতে ছুটির দিনটি ফুরিয়ে আসত। নীচের দেউড়ির ঘণ্টায় চারটে বাজত ছেলেটির মনে হত রবিবারের বিশ্রী বিকেলের পর এবার যেন সোমবার হাঁ করে তাকে গিলতে আসছে। নীচে ততক্ষণে ছেলেটির খোঁজ পড়ে গেছে। মনখারাপ নিয়ে আবার ছেলেটি ছাদ থেকে ঘুরে আসত। নীচে তাকিয়ে সে দেখত ঘাটে লোকজনের আনাগোনা শুরু হয়েছে। দিনের আলো ঘোলা হয়ে আসছে।
⬛ সঠিক উত্তরটি বেছে নিয়ে লেখো : প্রতিটা প্রশ্নের মান -1
1. ‘চিলেকোঠা' হল (কাঠের ঘর/তেতলার ঘর/ছাদের উপরে সিঁড়ির ঘর বসবার ঘর)।
উঃ। ‘চিলেকোঠা' হল ছাদের উপরে সিঁড়ির ঘর।
2.ভারতবর্ষের বিখ্যাত মরুভূমিটি হল (গোবি/ সাহারা/থর)।
উঃ। ভারতবর্ষের বিখ্যাত মরুভূমিটি হল থর মরুভূমি।
3. লিভিংস্টন ছিলেন (ইতালি / জার্মানি/ইংল্যান্ড / স্কটল্যান্ড) দেশের মানুষ।
উঃ। লিভিংস্টন ছিলেন স্কটল্যান্ড দেশের মানুষ ।
4. জুড়িগাড়ি হল (ঘোড়ায় টানা/হাতিতে টানা/ যন্ত্রচালিত গোরুতে টানা গাড়ি।
উঃ। জুড়িগাড়ি হল ঘোড়ায় টানা গাড়ি।
5.লেখকের জীবনে তার প্রধান ছুটির দেশ ছিল তার (ঘর/বাগান/ ছাদ/বারান্দা)।
উঃ। লেখকের জীবনে তার প্রধান ছুটির দেশ ছিল তার ছাদ।
6. লেখকের পিতা থাকতেন (নীচের ঘরে/দোতলায় / তেতালায়/চারতলায়)।
উঃ। লেখকের পিতা থাকতেন তেতালায় ।
7. লেখকের বাবা মাঝে মাঝে চলে যেতেন (সমুদ্রে পাহাড়-পর্বতে/গ্রামে/শহরে)।
উঃ। লেখকের বাবা মাঝে মাঝে চলে যেতেন পাহাড়-পর্বতে।
8.পিলপেগাড়ি হল (ঘোড়ায় টানা/হাতিতে টানা/মানুষে টানা/যন্ত্রচালিত) গাড়ি।
উঃ। পিলপেগাড়ি হল হাতিতে টানা গাড়ি।
9. দুপুর বেলাটা যেন বালক সন্ন্যাসীর (গৃহী/ বিবাগি /ব্যবসায়ী/ব্রক্ষ্মচারী) হওয়ার সময়।
উঃ। দুপুর বেলাটা যেন বালক সন্ন্যাসীর বিবাগি হওয়ার সময়।
10. ঘরটির সামনেই ছিল একটা (সোফা/চেয়ার/ খাট/টেবিল)।
উঃ। ঘরটির সামনেই ছিল একটা সোফা।
11.সামনের গলি দিয়ে হেঁকে যেত (ফেরিওয়ালা / মাছওয়ালা/বাসনওয়ালা /চুড়িওয়ালা)।
উঃ। সামনের গলি দিয়ে হেঁকে যেত চুড়িওয়ালা।
12.খোলা চুল এলিয়ে শুয়ে থাকত বাড়ির (বউ/মেয়ে/দাসী/গিন্নি)।
উঃ। খোলাচুল এলিয়ে শুয়ে থাকত বাড়ির বউ।
13. ছাদটা ছিল আমার কেতাবে পড়া (জঙ্গল/ মরুভূমি/পাহাড়/সমুদ্র)।
উঃ। ছাদটা ছিল আমার কেতাবে পড়া মরুভূমি
14.এই ছাদের মরুভূমিতে তখন একটা (প্রাসাদ/ পুকুর/নদী/ওয়েসিস) দেখা গিয়েছিল।
উঃ। এই ছাদের মরুভূমিতে তখন একটা ওয়েসিস দেখা গিয়েছিল।
15.মন খারাপ নিয়ে একবার (পুকুর-পাড়টা/ছাদটা/দেউড়িটা/গলিটা ঘুরে আসা গেল)।
উঃ। মন খারাপ নিয়ে একবার ছাদটা ঘুরে আসা গেল।
16. নীচের দেউড়ির ঘণ্টায় (তিনটে/চারটে/পাঁচটা বাজল।
উঃ। নীচের দেউড়ির ঘণ্টায় চারটে বাজল।
17.আকাশটা বিশ্রী হয়ে থাকে (রবিবারে / সোমবারে/ শনিবারে / বুধবারে)।
উঃ। আকাশটা বিশ্রী হয়ে থাকে রবিবারে।
18.দিনের আলো আসছে (ফিকে/ঘোলা/ হালকা/নিভু নিভু) হয়ে।
উঃ। দিনের আলো আসছে ঘোলা হয়ে।
19. পুকুর থেকে (মাছেরা/পাখিরা / পাতিহাঁসেরা/ পোকারা) উঠে গিয়েছে।
উঃ। পুকুর থেকে পাতিহাঁসেরা উঠে গিয়েছে।
20. রাস্তা থেকে (জুড়িগাড়ির/ট্রামগাড়ির/পিলপেগাড়ির/ বাসের) সইসের হাঁক শোনা গেল।
উঃ। রাস্তা থেকে জুড়িগাড়ির সইসের হাঁক শোনা গেল।
⬛এলোমেলো শব্দগুলি সাজিয়ে অর্থপূর্ণ বাক্য তৈরি করো :
1. নানারকমের ছাদে চলেছে দিন নানাভাবে ওই বয়ে।
উঃ। নানারকমের দিন ওই ছাদে নানাভাবে বয়ে চলেছে।
2. হাত জোড় দুটি করা কোলে।
উঃ। কোলে দুটি হাত জোড় করা।
3.জন্য অনেক দিনের তিনি যেতেন পাহাড়ে-পর্বতে চলে।
উঃ। তিনি অনেকদিনের জন্য চলে যেতেন পাহাড়ে-পর্বতে।
4. যায় মধ্যে দেখা মধ্যে মাথা গাছের ঝাকড়া।
উঃ। মধ্যে মধ্যে দেখা যায় গাছের ঝাঁকড়া মাথা।
5. একলা অত্যন্ত সেইখানে বসতুম হয়ে।
উঃ। সেইখানে অত্যন্ত একলা হয়ে বসতুম।
6. গলি হেঁকে সামনের যেত দিয়ে চুড়িওয়ালা।
উঃ। সামনের গলি দিয়ে হেঁকে যেত চুড়িওয়ালা।
7.দেখতে শেষের এসে দিনটা দেখতে ছুটির দিকে পৌঁছল।
উঃ। ছুটির দিনটা দেখতে দেখতে শেষের দিকে এসে পৌঁছল।
8. আনাগোনা ঘাটে আরম্ভ লোকজনের হয়েছে।
উঃ। লোকজনের আনাগোনা আরম্ভ হয়েছে ঘাটে।
⬛ দুটি বাক্যে ভেঙে লেখো :
1.আমার পিতা যখন বাড়ি থাকতেন তাঁর জায়গা ছিল তেতালার ঘরে।
উঃ। আমার পিতা মাঝে মাঝে বাড়ি থাকতেন। তাঁর জায়গা ছিল তেতালার ঘরে।
2. আমি লুকিয়ে ছাদে উঠতুম প্রায়ই দুপুর বেলায়।
উঃ। আমি লুকিয়ে ছাদে উঠতুম। প্রায়ই দুপুর বেলা ছাদে উঠতুম।
3. হঠাৎ তাদের হাঁক পৌঁছত, যেখানে বালিশের উপর খোলাচুল এলিয়ে দিয়ে শুয়ে থাকত বাড়ির বউ।
উঃ। হঠাৎ তাদের হাঁক গিয়ে পৌঁছত। বালিশের উপর খোলাচুল এলিয়ে দিয়ে শুয়ে থাকত বাড়ির বউ।
4.বিছানার একখানা চাদর নিয়ে গা মুছে সহজ মানুষ হয়ে বসতুম।
উঃ। বিছানার একখানা চাদর নিয়ে গা মুছতুম। সহজ মানুষ হয়ে বসতুম।
5. গরম বাতাস হু হু করে ছুটে যাচ্ছে ধুলো উড়িয়ে।
উঃ। গরম বাতাস হু হু করে ছুটে যাচ্ছে। ধুলো উড়ছে।
⬛অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর : প্রতিটা প্রশ্নের মান -1
1. কোন্ সময়টা বালক রবীন্দ্রনাথের মন ভুলিয়ে নিত?
উঃ। দুপুর বেলাটা বালক রবীন্দ্রনাথের মন ভুলিয়ে নিত।
2. রবীন্দ্রনাথের পিতা মাঝে মাঝে কোথায় চলে যেতেন?
উঃ। রবীন্দ্রনাথের পিতা মাঝে মাঝে অনেক দিনের জন্য পাহাড়-পর্বতে চলে যেতেন।
3. রবীন্দ্রনাথের পিতা ছাদে কীভাবে বসে থাকতেন ?
উঃ। রবীন্দ্রনাথের পিতা ছাদে সাদা পাথরের মূর্তির মতো কোলে হাতজোড় করে বসে থাকতেন।
4. ছোটো বয়স পর্যন্ত রবীন্দ্রনাথের ছুটির দিনগুলি কোথায় কেটেছে?
উঃ। ছোটো বয়স পর্যন্ত রবীন্দ্রনাথের ছুটির দিনগুলি ছাদে কেটেছে।
5. ছাদে উঠে কোন্ জিনিসটি পেরিয়ে যাওয়া যায় বলে লেখক মনে করেছেন?
উঃ। লেখক মনে করেছেন ছাদে উঠে লোকবসতির পিলপেগাড়ি পেরিয়ে যাওয়া যায়।
6. বালক রবীন্দ্রনাথ কীভাবে ঘরের ছিটকিনি খুলতেন ?
উঃ। বালক রবীন্দ্রনাথ খড়খড়ির ভিতর দিয়ে হাত গলিয়ে ঘরের ছিটকিনি খুলতেন।
7. বালক রবি তেতলার ঘরে কোথায় গিয়ে বসত ?
উঃ। বালক রবি তেতলার ঘরে দরজার সামনে রাখা একটা সোফায় গিয়ে বসত।
8. কারা গা মোড়া দিতে দিতে মাদুরে শুয়ে পড়েছে?
উঃ। ছোট্ট রবিকে পাহারা দেবার দায়িত্ব যাদের, সেই চৌকিদারেরা গা মোড়া দিতে দিতে মাদুরে শুয়ে পড়েছে।
9. নিস্তব্ধ দুপুরবেলায় বালক রবীন্দ্রনাথ বাড়ির সামনের গলি দিয়ে কার হাঁক দিয়ে যাওয়া শুনতে পেতেন?
উঃ। সামনের গলি দিয়ে হাঁক দিয়ে যাওয়া চুড়িওয়ালার ডাক তিনি শুনতে পেতেন।
10. বালিশে খোলা চুল এলিয়ে দিয়ে কারা শুয়ে থাকত?
উঃ। বালিশে খোলা চুল এলিয়ে দিয়ে বাড়ির বউরা শুয়ে থাকত।
11. সেদিনকার সেই বউরা আজকের দিনে কী করছে বলে রবীন্দ্রনাথ লিখেছেন?
উঃ। সেদিনকার সেই বউরা আজকের দিনে সেকেন্ড ক্লাসের পড়া মুখস্ত করছে।
12. সেই চুড়িওয়ালা আজকের দিনে কী করে ?
উঃ। সেই চুড়িওয়ালা আজকের দিনে হয়তো রিক্শ ঠেলে।
13. ছাদে যাওয়াটা বালক রবীন্দ্রনাথের কাছে কেমন আনন্দের ছিল?
উঃ। বালক রবীন্দ্রনাথের কাছে ছাদে যাওয়াটা ছিল সাত-সমুদ্দুর পারে যাওয়ার আনন্দের সমান।
14.ছাদের মরুভূমির ওয়েসিসটি আসলে কী ছিল?
উঃ। ছাদের মরুভূমির ওয়েসিসটি আসলে ছিল বালক রবীন্দ্রনাথের পিতার তেতালার স্নানের ঘর।
15. কী দিয়ে গা মুছে বালক রবি সহজ মানুষ হয়ে বসত ?
উঃ। বিছানার চাদর দিয়ে গা মুছে বালক রবি সহজ মানুষ হয়ে বসত।
16. চিলেকোঠা কাকে বলে ?
উঃ। উঁচু পাকাবাড়ির ছাদের একমাত্র ঘরটিকে চিলেকোঠা বলা হয়।
17.রবিবারের বিকেলের আকাশটা কেমনভাবে থাকত?
উঃ। রবিবারের বিকেলের আকাশটা বিশ্রী রকমের মুখ বিগড়ে থাকত।
18. কে আকাশটাকে গিলতে আসত?
উঃ। রবিবারের ছুটির পর আসতে থাকা সোমবারের হাঁ করা মুখের গ্রহণ লাগানো ছায়া আকাশটাকে গিলতে আসত।
19.নীচে ততক্ষণে কার খোঁজ পড়ে যেত ?
উঃ। নীচে ততক্ষণে পাহারা-এড়ানো ছেলেটির খোঁজ পড়ে
20.কারা ততক্ষণে পুকুর থেকে উঠে যেত?
উঃ। পাতিহাঁসগুলো ততক্ষণে পুকুর থেকে উঠে যেত।
21. কলকাতায় রবীন্দ্রনাথের বাড়িটি কী নামে বিশ্বজুড়ে পরিচিত?
উঃ। কলকাতায় রবীন্দ্রনাথের বাড়িটি বিশ্বজুড়ে ঠাকুরবাড়ি নামে পরিচিত।
22. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ছোটোদের জন্য লিখেছেন এমন দুটি বইয়ের নাম লেখো।
উঃ। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ছোটোদের জন্য লিখেছেন এমন দুটি বই হল—শিশু' ও 'ছেলেবেলা'।
23. ঠাকুরবাড়ি থেকে প্রকাশিত কোন্ দুটি পত্রিকায় তিনি নিয়মিত লিখতেন?
উঃ। ঠাকুরবাড়ি থেকে প্রকাশিত 'ভারতী' ও 'বালক' পত্রিকায় তিনি নিয়মিত লিখতেন।
24. বালক রবীন্দ্রনাথের প্রধান ছুটির দেশ কী ছিল ?
উঃ। বালক রবীন্দ্রনাথের প্রধান ছুটির দেশ ছিল তাদের বাড়ির বাইরের খোলা ছাদ।
25. তাঁর বাড়ির নীচতলায় বারান্দায় বসে রেলিঙের ফাঁক দিয়ে কী কী দেখা যেত ?
উঃ। তাঁর বাড়ির নীচতলায় বারান্দায় বসে রেলিঙের ফাঁক দিয়ে রাস্তার লোক চলাচল দেখা যেত।
⬛ সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর : প্রতিটা প্রশ্নের মান -2/3
1.ছাদটি ছিল আমার কেতাবে পড়া .......। বালক রবীন্দ্রনাথের কাছে ছাদটি কেমন ছিল ?
উঃ। তেতালার ছাদটি লেখক রবীন্দ্রনাথের কাছে বইয়ে পড়া মরুভূমির মতো মনে হত। চারদিক ধু ধু করত, হু হু করে গরম বাতাস ধুলো উড়িয়ে ছুটে যেত। আকাশের নীল রং ফিকে হয়ে আসত।
2. চিলেকোঠার আড়ালে দাঁড়িয়ে ...... কতদিন দেখেছি .......। কে কী দেখতেন?
উঃ। বালক রবীন্দ্রনাথের পিতা যখন বাড়িতে থাকতেন তখন তাঁর জায়গা ছিল তেতালার ঘরে। চিলেকোঠার আড়াল থেকে বালক রবীন্দ্রনাথ দেখতেন সূর্য ওঠার আগেই তাঁর পিতা কোলে দুটি হাত জোড় করে সাদা পাথরের মূর্তির মতো ছাদে চুপ করে বসে আছেন।
3.'ওখানে গেলে...' কোনখানে গেলে? কী দেখার কথা বলা হয়েছে?
উঃ। বাড়ির ছাদের ওপর উঠে বালক রবীন্দ্রনাথের মনে হত তিনি যেন লোকবসতির পিলপেগাড়ি পেরিয়ে কলকাতার মাথার ওপর দিয়ে পা ফেলে চলে এসেছেন সেখানে, যেখানে আকাশের শেষ নীল মিশে গেছে পৃথিবীর শেষ সবুজে। নানা বাড়ির নানা গড়নের উঁচু নীচু ছাদ তিনি দেখতেন আর মধ্য দিয়ে দেখা যেত গাছের ঝাঁকড়া মাথা।
4. 'সামনের গলি দিয়ে হেঁকে যেত চুড়িওয়ালা।' চুড়িওয়ালা কখন আসত? সে কী করত?
উঃ। যখন রোদ্দুর রাঙা হয়ে আসত, তখন সামনের গলি দিয়ে চুড়িওয়ালা হেঁকে যেত। তাদের হাঁক শুনে বালিশের ওপর খোলাচুল এলিয়ে শুয়ে থাকা বাড়ির বউরা দাসীদের দিয়ে তাদের ডেকে পাঠাত। বুড়ো চুড়িওয়ালা এসে বাড়ির বউদের কচি হাত টিপে টিপে তাদের পছন্দমতো বেলোয়াড়ি চুড়ি পরিয়ে দিত।
5. 'সেদিনকার সেই বউ আজকের দিনে...।' – সেদিনকার ও আজকের বউদের সম্বন্ধে রবীন্দ্রনাথ কী বলেছেন এবং তার অর্থ কী ?
উঃ। রবীন্দ্রনাথ বলেছেন সেদিনকার সেই বউরা আজকের দিনে এখনও বউ হয়নি। তারা সেকেন্ড ক্লাসে পড়া মুখস্থ করছে। এই বাক্যটিতে লেখক রবীন্দ্রনাথ বোঝাতে চেয়েছেন সেই সময় অনেক কম বয়সে মেয়েদের বিয়ে হয়ে যেত। আজকের দিনে যা প্রায় অসম্ভব। সেকেন্ড ক্লাসে পড়ার মতো বয়সেই মেয়েদের বিয়ে দিয়ে দেওয়া হত।
6. “এই ছাদের মরুভূমিতে তখন একটা ওয়েসিস দেখা দিয়েছিল।”—ওয়েসিস কথাটির অর্থ কী ? এখানে ওয়েসিসটি কী ? সেখানে বালক রবীন্দ্রনাথ কী করতেন?
উঃ। ওয়েসিস কথাটির অর্থ হল মরূদ্যান। এখানে ওয়েসিসটি আসলে হল রবীন্দ্রনাথের পিতার তেতালার স্নানের ঘর। তখনকার দিনে কলকাতা শহরে তেতালার ঘরেও কলের জল পৌঁছোেত। বালক রবীন্দ্রনাথ সেই স্নানের ঘরে ঢুকে কল খুলে দিতেন, গায়ে ধারাজল পড়ত। তিনি স্নান করে বিছানার একখানা চাদর দিয়ে গা মুছে সহজ হয়ে বসতেন।
7.নীচের দিকে দেখলুম তাকিয়ে...'। নীচের দিকে তাকিয়ে লেখক কী কী দেখতেন? কী শুনতেন?
উঃ। দিনের আলো যখন ঘোলা হয়ে আসত, তখন লেখক রবীন্দ্রনাথ নীচের দিকে তাকিয়ে দেখতেন পুকুর থেকে পাতিহাঁসগুলো উঠে গিয়েছে। লোকজনের আনাগোনা শুরু হয়েছে ঘাটেতে। আর বটগাছের ছায়াটা অর্ধেক পুকুর জুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে। রাস্তা থেকে জুড়িগাড়ির সহিসের হাঁক শোনা যাচ্ছে।
8. পাঠ্যাংশে 'ওয়েসিস' এর প্রসঙ্গ কীভাবে রয়েছে?
উঃ। গরমকালে যখন ছাদের উপর দিয়ে হুহু করে মরুভূমির মতো গরম বাতাস বয়ে যেত, তখন সেই মরুভূমির মধ্যে তেতালার ঘরের নাবার অর্থাৎ স্নান করার ঘরটাকে বালক রবীন্দ্রনাথের মনে হয়েছিল সেটি যেন ওয়েসিস বা একটি মরুদ্যান।
9. পাঠ্যাংশে রবীন্দ্রনাথের পিতার সম্পর্কে কী জানতে পারো?
উঃ। রবীন্দ্রনাথের পিতা ছিলেন ধার্মিক প্রকৃতির মানুষ। ভোরবেলা সূর্য ওঠার আগে তিনি কোলে হাত দুটি জোড় করে পাথরের মূর্তির মতো ছাদে চুপ করে বসে থাকতেন। মাঝে মাঝে অনেকদিনের জন্য তিনি পাহাড় পর্বতে চলে যেতেন।
10.পিতার কলঘরের প্রতি ছোট্ট রবির আকর্ষণের কথা কীভাবে জানা গেল ?
উঃ। গ্রীষ্মের প্রচণ্ড গরমে ছোট্ট রবি তার বাবার স্নানের ঘরটাকে মনে করত যেন মরুভূমির মধ্যে একখানি ওয়েসিস বা মরূদ্যান। সে সেই ঘরটাতে ঢুকে লিভিংস্টন-এর মতো নতুন দেশ খুঁজে বের করার এক কল্পিত আনন্দ পেত। সেখানে গিয়ে সে কল খুলে দিত, সারা গায়ে তার ধারাজল পড়ত, স্নান করে, বিছানার চাদরে গা মুছে ছোট্ট রবি সোফায় এসে বসত।
11.ছুটি শেষের দিকে এসে পৌঁছলে রবির মনের ভাব কেমন হত?
উঃ। ছুটি শেষের দিকে এসে পৌঁছলে রবির মনে হত রবিবারের বিকেলের আকাশের মুখটা বিশ্রীরকম বিগড়ে গেছে তাকে যেন সোমবারের হাঁ করা মুখের গ্রহণ লাগানো ছায়া গিলতে আসছে।
12.পাঠ্যাংশে কাকে, কেন বাংলাদেশের 'শিশু লিভিংস্টন' বলা হয়েছে?
উঃ। পাঠ্যাংশে ছোটো রবিকে বাংলাদেশের শিশু লিভিংস্টন' বলা হয়েছে। কারণ ডেভিড লিভিংস্টনের আবিষ্কারের মতো ছোট্ট রবিও যেন ছাদের ঘরে ওয়েসিস বা মরুদ্যান আবিষ্কার করেছিল।
13. তুমি যখন আরও ছোটো ছিলে তখন তোমার দিন কীভাবে কাটত, তোমার চারপাশের প্রকৃতি কেমন ছিল তা লেখো।
উঃ। আমি যখন ছোটো ছিলাম তখন আমার সবচেয়ে বেশি ভালো লাগত ঠাকুমার কাছে গল্প শুনতে। হাতি, ঘোড়া, রাক্ষস-খোক্কস, রাজপুত্র, রাজকন্যা, রাজা-রানির গল্প শুনতে শুনতে ঘুমিয়ে পড়তাম। আমার ছেলেবেলাতে আমাদের গ্রামের চারপাশে অনেক গাছপালা, পুকুর ছিল। সন্ধের পর ঝোপেঝাড়ে শেয়ালও ডাকত। সেই ডাক শুনে ভয়ে মা-ঠাকুমার কোলের মধ্যে গিয়ে বসতাম। সেই সময় আমাদের পরিবার বড়ো ছিল। বাবা, জেঠু সবাই একসাথেই থাকতাম। ছুটির দিনে বিকেল হলে সব ভাই-বোন মিলে একসাথে খেলা হত। রাতে সকলের সঙ্গে খেতে বসে নানারকম গল্প হত। এইভাবে পড়া, খেলা, গল্প ও বড়োদের স্নেহ-ভালোবাসায় আমার ছোটোবেলার দিনগুলি কাটত।
No comments:
Post a Comment