এই পোস্টটিতে ক্লাস ফাইভ অর্থাৎ পঞ্চম শ্রেণীর বাংলা বিষয়ের একটি গুরুত্ব পূর্ণ অধ্যায় "পাহাড়িয়া বর্ষার সুরে" এর থেকে ছেলে মেয়েদের সুভিদার্থে প্রায় সব ধরনের প্রশ্ন উত্তর করে দেওয়া হলো ।
⬛ সারসংক্ষেপ :
পশ্চিমবঙ্গের উত্তরে রয়েছে হিমালয় পাহাড় এবং তার পাদদেশে রয়েছে সবুজে মোড়া অরণ্য যা নীচের সমভূমি পর্যন্ত বিস্তৃত, যার ভালো নাম তরাই। সেই বনের গা দিয়ে বয়ে চলেছে পাহাড়ি নদী তিস্তা, তোর্সা, রঙ্গিত। এই নদী ও জঙ্গলের আঁকে বাঁকে বাস করে, রাভা, মেচ, লেপচা, টোটো আর গারো সম্প্রদায়ের মানুষেরা। এরা প্রত্যেকে প্রত্যেকের সাথে সদ্ভাব বজায় রেখে চলে। এদের প্রত্যেকের নিজস্ব ভাষা আছে। এদের নিজেদের ভাষায় বহু শতবছর ধরে রচিত হয়েছে এদের গল্প আর গান ।
এই আদি জনগোষ্ঠীরা তাদের উৎসবে-পার্বণে গানের সুরে নাচের ছন্দে দল বেঁধে আনন্দ করে। দল বেঁধে মাছ ধরতে যাওয়া রাভাদের জীবনে একটা আনন্দময় পর্ব। তাদের সেই উৎসবের একটা গান হল-ফৈ লীগী ফৈ না রীতিয়া... ফৈ লীগী না লীয়ৈয়া। তারা এই গানের মাধ্যমে সবাইকে বলে নতুন বছরের নতুন জল নদীর দুকূল ছাপিয়ে বয়ে চলেছে। এই নতুন জলে চল গিয়ে মাছ ধরি। মাঠ ঘাট সব জল থই থই। কুরুয়া পাখিরা উড়ে উড়ে কাঁদছে। মাছরাঙা অনেক চেষ্টাতেও মাছ পায়নি। এদিকে মাছ না পাওয়া গেলে ওদিকে চল।
বৃষ্টি আসে কেমনভাবে তা নিয়ে লেপচাদের মধ্যে খুব সুন্দর একটা প্রচলিত গল্প আছে। গল্পটি হল ঃ একবার খরায় পৃথিবীতে মানুষ ও গাছপালা ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় সব জন্তুরা এক হয়ে ভাবতে লাগল কীভাবে বৃষ্টি এনে পৃথিবীকে বাঁচানো যায়। ব্যাং বলল সে নিজে গিয়ে ভগবানকে জিজ্ঞাসা করবে কেন ভগবান তার সৃষ্টিকে এত অবহেলা করছে। ভগবান অনেক দূরে থাকেন। ব্যাং একদিন ভোরবেলা যাত্রা শুরু করল। যাওয়ার পথে এক মৌমাছির সাথে তার সাক্ষাৎ হল। সেও জল নেই, ফুলে কেন মধু নেই তার নালিশ জানাতে ব্যাঙের সঙ্গ নিল। তারপর দেখা হল এক মোরগের সাথে সেও ফসল না পাওয়ার নালিশ জানাবার জন্য ব্যাঙের সাথে চলল। এরপর তাদের দেখা হল এক ক্ষুধার্ত বাঘের সাথে। জীবজন্তু না থাকলে বাঘও থাকতে পারবে না তাই বাঘও তাদের সঙ্গে যেতে চাইল।
অবশেষে দীর্ঘযাত্রা শেষে ভগবানের প্রাসাদে গিয়ে তারা দেখল মন্ত্ৰী ও তাদের স্ত্রীরা সবাই ভোজ ও আনন্দ করতে ব্যস্ত। তারা রেগে গিয়ে ভগবানের কাছে যাওয়ায় ভগবান তার রক্ষীদের ডাকলেন। তখন মৌমাছি রক্ষীদের মুখে হুল ফোটাতে লাগল। বাঘ তাদের খেয়ে নেবে বলে ভয় দেখাল আর মোরগও ডানা ঝাপটে ভয় দেখাতে লাগল। তখন ভগবান তার মন্ত্রীদের ডেকে তাদের গাফিলতির জন্য তিরস্কার করলেন। এরপর তাদের জয়ের জন্য গর্বিত ব্যাং পুকুরে ফিরে এল। তারপর থেকে যখনই ব্যাং ডাকে তখনই বৃষ্টি নামে।
⬛ রচনাটি সম্পর্কে দু-চার কথা :
লেপচাদের মধ্যে প্রচলিত গল্পটির তরজমা করেছেন ঐন্দ্রিলা ভৌমিক। রাভা গানটি ‘জলপাইগুড়ি জেলার বর্ণময় লোকসংস্কৃতি, নৃত্যসংগীত" নামক প্রবন্ধ থেকে নেওয়া। রচনাটি ‘পশ্চিমবঙ্গ' পত্রিকার জলপাইগুড়ি জেলা সংখ্যায় প্রকাশিত হয়েছিল। প্রবন্ধটি লিখেছেন ও গানটির তরজমা করেছেন সুনীল পাল। এই গানটির মূল পাঠ সংগ্রহ ও শব্দার্থ চয়নে সাহায্য করেছেন লোকসংস্কৃতির বিশিষ্ট গবেষক দয়চাঁদ রাভা ।
⬛ সঠিক উত্তরটি বেছে নিয়ে লেখো : প্রতিটা প্রশ্নের মান -1
1. পশ্চিমবঙ্গের উত্তরে (আরাবল্লী/আল্পস/হিমালয়) অবস্থিত।
উঃ। পশ্চিমবঙ্গের উত্তরে হিমালয় অবস্থিত।
2.সবুজ বনের গা দিয়ে বয়ে চলেছে (ভিস্তা/ গঙ্গা/ ব্রক্ষ্মপুত্র নদী।
উঃ। সবুজ বনের গা দিয়ে বয়ে চলেছে তিস্তা।
3. জঙ্গলের আঁকে-বাঁকে বসবাস করে (বাঙালি/ লেপচা/মাড়োয়ারি) জাতি।
উঃ। জঙ্গলের আঁকে-বাঁকে বসবাস করে লেপচা জাতি।
4.রাভাগোষ্ঠীর জীবনে (ধানকাটা/মাছ ধরা/শিকার করা) হল আনন্দ উৎসব।
উঃ। রাভাগোষ্ঠীর জীবনে মাছ ধরা হল আনন্দ উৎসব।
5. বৃষ্টি আসা সম্পর্কে প্রচলিত গল্পটি আছে (টোটো/লেপচা/মেচ) দের ভাঁড়ারে।
উঃ। বৃষ্টি আসা সম্পর্কে প্রচলিত গল্পটি আছে লেপচাদের ভাঁড়ারে।
6.স্বেচ্ছায় ভগবানের কাছে যেতে চাইল (সাপ/ব্যাং/ মৌমাছি)।
উঃ। স্বেচ্ছায় ভগবানের কাছে যেতে চাইল ব্যাং।
7. ব্যাং ভগবানের কাছে যাচ্ছিল (আগুন আনতে/বাতাস আনতে/বৃষ্টি আনতে)।
উঃ। ব্যাং ভগবানের কাছে যাচ্ছিল বৃষ্টি আনতে।
8. ব্যাঙের প্রথম সঙ্গী হল (বাঘ/ মোরগ/ মৌমাছি)।
উঃ। ব্যাঙের প্রথম সঙ্গী হল মৌমাছি।
9.রাগে উত্তেজিত হয়ে তারা (শয়তানের/ ভগবানের/ মানুষের) কাছে গেল।
উঃ। রাগে উত্তেজিত হয়ে তারা ভগবানের কাছে গেল। .
10.ব্যাং তখনি উল্লসিত হয়ে (ডোবায়/পুকুরে/ নদীতে) ফিরে এল।
উঃ। ব্যাং তখনি উল্লসিত হয়ে পুকুরে ফিরে এল।
⬛ এলোমেলো শব্দগুলিকে সাজিয়ে অর্থপূর্ণ বাক্য তৈরি করো :
1.পাদদেশে সবুজ হিমালয়ের রয়েছে বন সেই।
উঃ। সেই হিমালয়ের পাদদেশে রয়েছে সবুজ বন।
2.গা দিয়ে চলেছে বনের বয়ে তিস্তা নদী, তোর্সা পাহাড়ি রঙ্গিত।
উঃ। বনের গা দিয়ে বয়ে চলেছে পাহাড়ি নদী তিস্তা, তোর্সা, রঙ্গিত।
3.সেই ভাষায় শত কত ধরে বছর হয়েছে রচিত এদের গান গল্প আর।
উঃ। সেই ভাষায় কত শত বছর ধরে রচিত হয়েছে এদের গল্প আর গান।
4. গেল হয়ে ধ্বংস গাছপালা পশু মানুষ।
উঃ। মানুষ পশু গাছপালা ধ্বংস হয়ে গেল।
5.সঙ্গে হল ব্যাঙের যাওয়ার পথে সাক্ষাৎ মৌমাছির।
উঃ। যাওয়ার পথে ব্যাঙের সাক্ষাৎ হল মৌমাছির সঙ্গে।
6.কোথায় মধু ফুলের জল নেই আকাল পাব।
উঃ। জল নেই ফুলের আকাল মধু পাব কোথায়।
7. কাছে গেল হয়ে রাগে উত্তেজিত তারা ভগবানের।
উঃ। রাগে উত্তেজিত হয়ে তারা গেল ভগবানের কাছে।
⬛ এলোমেলো বাক্যগুলি ঘটনাক্রম অনুসারে সাজাও :
1. তখন মৌমাছিরা হুল ফোটাতে লাগল রক্ষীদের মুখে।
উঃ। পশ্চিমবঙ্গের উত্তরে হিমালয়।
2.একদিন সকালবেলা সে যাত্রা শুরু করল।
উঃ। এই নদী আর জঙ্গলের আঁকে-বাঁকে মেচ রাভা, গারো, লেপচা আর টোটোদের বাস।
3. চলার পথে দেখা হল মোরগের সঙ্গে।
উঃ। এদের প্রত্যেকের একটি করে নিজস্ব ভাষা আছে।
4.একবার পৃথিবীতে খুব খরা হল।
উঃ।একবার পৃথিবীতে খুব খরা হল।
5. পশ্চিমবঙ্গের উত্তরে হিমালয়।
উঃ। (ঙ) ব্যাং স্বেচ্ছায় বৃষ্টি আনার কাজে যুক্ত হল।
6. ব্যাং স্বেচ্ছায় বর্ষা আনার কাজে যুক্ত হল।
উঃ। একদিন সকালবেলা সে যাত্রা শুরু করল।
7. এদের প্রত্যেকের নিজস্ব একটি ভাষা আছে।
উঃ। চলার পথে দেখা হল মোরগের সঙ্গে।
8.তাদের স্ত্রী ও মন্ত্রীদের মহানন্দ।
উঃ। তাদের স্ত্রী ও মন্ত্রীদের মহানন্দ ।
⬛অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর : প্রতিটা প্রশ্নের মান -1
1. তরাই কী?
উঃ। হিমালয়ের পাদদেশে রয়েছে এক সবুজ বন, যার পোশাকি নাম তরাই।
2.বনের গা দিয়ে কোন্ কোন্ নদী বয়ে চলেছে?
উঃ। বনের গা দিয়ে তিনটি নদী বয়ে চলেছে— তিস্তা, তোর্সা, রঙ্গিত।
3. উত্তরবঙ্গের কয়েকটি উপজাতির নাম করো।
উঃ। উত্তরবঙ্গের কয়েকটি উপজাতি হল গারো, মেচ, রাভা ও টোটো।
4. রাভাদের আনন্দময় উৎসব কোনটি?
উঃ। রাভাদের আনন্দময় উৎসব হল মাছ ধরা।
5. কোন পাখি উড়ে উড়ে কাঁদছে?
উঃ । কুরুয়া পাখি উড়ে উড়ে কাঁদছে।
6. কোন্ পাখি বার বার চেষ্টা করেও মাছ পায়নি?
উঃ। মাছরাঙা পাখি বার বার চেষ্টা করেও মাছ পায়নি।
7. বৃষ্টি আসা সম্পর্কিত গল্পটি কোন্ উপজাতিদের মধ্যে প্রচলিত ?
উঃ। বৃষ্টি আসা সম্পর্কিত গল্পটি লেপচা উপজাতিদের মধ্যে প্রচলিত ।
8. ভগবান তার মন্ত্রীদের কী করলেন?
উঃ। ভগবান তার মন্ত্রীদের গাফিলতির জন্য তিরস্কার করলেন।
9. ভগবানের প্রাসাদে যাওয়ার রাস্তাটি কেমন ছিল?
উঃ। ভগবানের প্রাসাদে যাওয়ার রাস্তাটি ছিল অত্যন্ত ক্লান্তিকর।
10. যাওয়ার পথে ব্যাঙের সাথে কার কার সাক্ষাৎ হয়েছিল?
উঃ। যাওয়ার পথে ব্যাঙের সাথে মৌমাছি, মোরগ ও বাঘের সাক্ষাৎ হয়েছিল।
11. রাগে উত্তেজিত হয়ে তারা কোথায় গেল?
উঃ। রাগে উত্তেজিত হয়ে তারা ভগবানের কাছে গেল।
12.কে ভগবানের রক্ষীদের হুল ফুটিয়ে দিল ?
উঃ। মৌমাছি ভগবানের রক্ষীদের হুল ফুটিয়ে দিল।
13.মোরগ কীভাবে রক্ষীদের ভয় দেখাল?
উঃ। মোরগ, ডানা ঝাপটিয়ে রক্ষীদের ভয় দেখাল।
14.কোন্ প্রাণী ডাকলে বৃষ্টি হয়?
উঃ। ব্যাং ডাকলে বৃষ্টি হয়।
15. জয়ের জন্য গর্বিত ব্যাং কোথায় ফিরে গেল ?
উঃ। জয়ের জন্য গর্বিত ব্যাং উল্লসিত হয়ে পুকুরে ফিরে গেল।
⬛ নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর নিজের ভাষায় লেখো : প্রতিটা প্রশ্নের মান -1/2
1.দিনের শেষে কেমন রাত নামল?
উঃ । দিনের শেষে জ্যোৎস্নারাত নামল।
2.রাত হলেও তেমন আঁধার নেই কেন?
উঃ। রাতটা যেহেতু জ্যোৎস্নারাত, তাই রাত হলেও তেমন আঁধার নেই।
3. টোটোরা তাদের প্রথম গানে কী প্রার্থনা করেছে?
উঃ। টোটারা প্রার্থনা করেছে কালো মেঘ যেন না আসে এবং চাঁদ যেন মেঘে ঢাকা না পড়ে।
4. ভোরের সূর্য ওঠায় কী কেটে গেছে?
উঃ। ভোরের সূর্য ওঠায় অন্ধকার কেটে গেছে।
5. এখন তারা কী করতে পারবে?
উঃ। এখন তারা সব জায়গায় অবাধে যেতে পারবে।
6. কার ইচ্ছায় তারা অবাধে যেতে পারবে ?
উঃ। ইসপা-র ইচ্ছায় তারা অবাধে যেতে পারবে।
7.ইসপা কে?
উঃ। ইসপা হলেন টোটো জনগোষ্ঠীর দেবতা।
⬛ সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর : প্রতিটা প্রশ্নের মান -2/3
1.তরাই অঞ্চল কাকে বলা হয় ?
উঃ। পশ্চিমবঙ্গের উত্তরে হিমালয়ের পাদদেশে যে সবুজ বন রয়েছে তা নেমে এসেছে নীচের স্থলভূমি পর্যন্ত। এই সবুজ বনাঞ্চলকে তরাই বলা হয়।
2.পশ্চিমবঙ্গের যেকোনো একটি পাহাড়ের নাম লেখো।
উঃ। পশ্চিমবঙ্গের একটি পাহাড় হল অযোধ্যা পাহাড়।
3. পাহাড়ের কথা বললেই কোন ছবি তোমার চোখের সামনে ভেসে ওঠে?
উঃ। পাহাড়ের কথা বললেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে বিশাল উঁচু পাথরের স্তূপ যা সবুজ জঙ্গলে ঢাকা তার মধ্যে দিয়ে নেমে আসা ঝরনার জল।
4. 'খরা' বলতে কী বোঝায় ?
উঃ। বহুদিন বৃষ্টি না হওয়ার ফলে জলের অভাবে গাছপালা, ফসল, পুকুর সব শুকিয়ে যায়। তার ফলে পশু-পাখি, মানুষ সবাই জল ও খাদ্যের অভাবে কাহিল হয়ে পড়ে, একেই খরা বলা হয়।
5. অনাবৃষ্টির ফলে মানুষ, পশুপাখি, গাছপালার অবস্থা কেমন হয়েছিল ?
উঃ। গাছপালা, পশুপাখি, মানুষ খরার ফলে সবই প্রায় ধ্বংস হরে যেতে বসেছিল।
6. ভগবানের প্রাসাদে পৌঁছে ব্যাং কী দেখল ?
উঃ। ভগবানের প্রাসাদে পৌঁছে ব্যাং দেখল সেখানে সবাই নানান ভোজ ও আনন্দ উৎসবে ব্যস্ত। মন্ত্রী ও তাদের স্ত্রীরা মহানন্দে দিন কাটাচ্ছে।
7. প্রাসাদের দৃশ্য দেখে ব্যাং রাগে উত্তেজিত হয়ে পড়ল কেন?
উঃ। ব্যাং দেখল ভগবানের প্রাসাদে সবাই আনন্দ করতে ব্যস্ত। এই ভোজ ও আনন্দ উৎসব দেখে ব্যাং বুঝতে পারল কেন রাজ্যে এত অভাব, এত কষ্ট। এদিকে খরায় পৃথিবীর অবস্থা খারাপ আর এখানে সবাই আনন্দ করছে! এই দৃশ্য দেখে ব্যাং রাগে উত্তেজিত হয়ে পড়ল।
8. ভগবান ও তার রক্ষীরা মৌমাছি, বাঘ, মোরগের হাতে কীভাবে নাকাল হল?
উঃ। ভগবান ও তার রক্ষীরা ব্যাং ও তার সঙ্গীদের ধরতে এলে মৌমাছি তাদের হুল ফোটাতে লাগল, বাঘ তাদের খেয়ে নেবে বলে ভয় দেখাল, মোরগও ডানা ঝাপটে তাদের ভয় দেখাতে লাগল।
5. বর্ষায় মাছ ধরা নিয়ে তোমার অভিজ্ঞতার কথা কিংবা মাছ ধরা নিয়ে তোমার পড়া একটি গল্প বা ছড়া লেখো।
উঃ। বর্ষার সময় আমরা বন্ধুরা সামনের নদীতে মাছ ধরতে যাই। বর্ষার সময় সব পুকুর, বিল ভেসে গিয়ে নদীতে অনেক মাছ এসে পড়ে। সেই সময় আমরা বন্ধুরা মিলে খুব আনন্দ করে নদীতে বা পুকুরে মাছ ধরি। আমরা সবাই মিলে একটা জায়গায় ছিপ্ ফেলে বসি। মাছ ধরতে ধরতে আমরা নিজেরা গল্প-গুজব করে আনন্দে সময় কাটাই।
6.বর্ষায় প্রকৃতির রূপ কেমন হয়? তোমার পাঠ্যবইতে বর্ষা নিয়ে আর কোন্ কোন্ লেখা রয়েছে?
উঃ। বর্ষায় প্রকৃতি যেন নতুন জীবন পায়। চারিদিকের গাছপালা সবুজ হয়ে ওঠে। নদী, নালা, খাল, বিল, পুকুর সমস্ত জলে ভরে ওঠে। চাষের খেত জলে পূর্ণ হয়ে যায়। এই সময় চাষিরা খুব আনন্দের সাথে মাঠে চাষ করে। মাটি থেকে সোঁদা গন্ধ ওঠে। প্রকৃতি এই সময় এক নতুন সাজে সেজে ওঠে। আমার পাঠ্য বইতে বর্ষা নিয়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা 'বৃষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর' কবিতাটি রয়েছে।
7. তরাই অঞ্চলের যে সমস্ত আদি জনগোষ্ঠী রয়েছে তাদের জীবনযাত্রা সম্বন্ধে কয়েকটি বাক্য লেখো।
উঃ। তরাই অঞ্চলে নদী আর জঙ্গলের আঁকেবাঁকে বাস করে মেচ, রাভা, গারো, লেপচা ও টোটো জনগোষ্ঠী। গোষ্ঠীগত ভাবে বসবাস করলেও আশেপাশের গ্রামের সমাজের লোকেদের সঙ্গেও এদের আত্মীয়তার সম্পর্ক রয়েছে। এই জনগোষ্ঠীর প্রত্যেকের একটি করে নিজস্ব ভাষা আছে। সেই ভাষায় বহু বছর ধরে এদের গল্প আর গান রচিত হয়েছে।
8. তরাই অঞ্চলের আদি জনগোষ্ঠীর উৎসব সম্বন্ধে কী জানা যায় ?
উঃ। তরাই অঞ্চলের এই আদি জনগোষ্ঠীদের উৎসব ও পার্বন উজ্জ্বল হয়ে ওঠে তাদের গানের সুরে ও নাচের ছন্দে। দল বেঁধে গান গাইতে গাইতে মাছ ধরতে যাওয়া রাভা গোষ্ঠীর জীবনে একটি আনন্দময় পর্ব।
9. কারা কারা ভগবানের প্রাসাদে পৌঁছেছিল? সেখানে তারা কী দেখল?
উঃ। ব্যাং, মৌমাছি, মোরগ ও বাঘ ভগবানের প্রাসাদে পৌঁছেছিল। সেখানে পৌঁছে তারা দেখল সবাই সেখানে নানান ভোজ ও আনন্দ উৎসবে ব্যস্ত। মন্ত্রী ও তাদের স্ত্রীরা মহানন্দে দিন কাটাচ্ছে।
10. ভগবান শেষ পর্যন্ত কী করলেন? ব্যাং এরপর কী করল ?
উঃ। ভগবান তাঁর মন্ত্রীদের ডাকলেন এবং গাফিলতির জন্য তাদের তিরস্কার করলেন। নিজেদের জয়ের জন্য গর্বিত ব্যাং আনন্দিত হয়ে পুকুরে ফিরে গেল। তারপর থেকে যখনই ব্যাং ডাকে তখনই বৃষ্টি হয়।
11.ব্যাং যাত্রা শুরু করার পর তার সাথে মৌমাছি, মোরগ ও বাঘ কেন যেতে চেয়েছিল ?
উঃ। ব্যাং একদিন সকালবেলা ভগবানের প্রাসাদে যাওয়ার জন্য যাত্রা শুরু করল। সেই ক্লান্তিকর রাস্তায় ব্যাঙের সাক্ষাৎ হল মৌমাছির সঙ্গে। মৌমাছি ব্যাঙকে জানাল খরার ফলে জল নেই, ফুলও ফুটছে না, তাই মধু পাওয়া যাচ্ছে না। তাই সেও ভগবানের কাছে যেতে চাইল। এরপর ব্যাঙের সাথে দেখা হল মোরগের। সে ব্যাঙের কাছে সব শুনে বলল খরার ফলে সব ফসল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। দানা ছাড়া কীভাবে বাঁচা যাবে, তাই সেও যেতে চাইল। এরপর গভীর জঙ্গলে এক ক্ষুধার্ত বাঘের সঙ্গে ব্যাঙের দেখা হল। সব শুনে বাঘও তাদের সঙ্গে যেতে চাইল। কারণ জীবজন্তুরা না খেয়ে মারা গেলে বাঘ একা বাঁচতে পারবে না।' এরপর দীর্ঘ যাত্রা শেষে তারা ভগবানের প্রাসাদে পৌঁছল।
No comments:
Post a Comment