"পাহাড়িয়া বর্ষার সুরে" অধ্যায়ের প্রশ্ন উত্তর পড়তে নিচের লিংকে ক্লিক করো
⬛ কবি পরিচিতি :
বিখ্যাত কবি ও ছড়া রচয়িতা কার্তিক ঘোষের জন্ম ১৯৫০ সালে। তাঁর ছেলেবেলা কেটেছে হুগলি জেলার আরামবাগে। স্কুল জীবন থেকেই তিনি লেখা শুরু করেন। তাঁর কয়েকটি উল্লেখযোগ্য বই হল 'একটা মেয়ে একা’, ‘হাত ঝুমঝুম পা ঝুমঝুম', 'আমার বন্ধু গাছ', ‘দলমা পাহাড়ের দুলকি', 'এ কলকাতা সে কলকাতা’, ‘জুঁইফুলের রুমাল’ প্রভৃতি। তাঁর সম্পাদিত গ্রন্থগুলি হল ‘শ্রেষ্ঠ কিশোর কল্পবিজ্ঞান', 'সেরা রূপকথার গল্প', 'সেরা কিশোর অ্যাডভোর’ প্রভৃতি। ১৯৭৬-এ টুম্পুর জন্য' লেখাটির জন্য ‘সংসদ' পুরস্কারে তিনি সম্মানিত হয়েছেন। ১৯৯৩ সালে তিনি পান 'শিশু সাহিত্য জাতীয় পুরস্কার’। ‘তেপান্তর' ও 'সুনির্মল স্মৃতি পুরস্কার'-এ তিনি ভূষিত হয়েছেন।
কবিতা পরিচয় কবিতাটিতে মাঠ এবং ছুট অর্থাৎ দৌড়ানোর কথা বলা হয়েছে। বিভিন্ন মানুষের কাছে, নানা পরিস্থিতিতে মাঠ এবং ছুটের ধারণা নানাভাবে ফিরে আসে। কিন্তু কোথায় যেন মাঠ এবং ছুট এই শব্দ দুটি পরস্পরের সাথে সম্পর্কিত। তাই ‘মাঠ মানে ছুট' এই নামকরণ কবিতাটির পক্ষে যথার্থ হয়েছে বলা যেতে পারে।
⬛ সারমর্ম:
মাঠ ছোটো বাচ্চাদের কাছে চিরকালই এক অমোঘ আকর্ষণের বস্তু। নানাজনের কাছে হয়তো তার আকর্ষণের ক্ষেত্র বিভিন্ন। কারও কাছে মাঠ মানে মজা কারও কাছে খুশি, লুটোপুটি। কারও কারও কাছে হইচই আর ঘুম তাড়িয়ে দেওয়া মন হারানো বাঁশি। কারও কারও কাছে মাঠ হল ঝকঝকে বিকেলে বাজনার তালে তাধিন তাধিন নাচা ! মাঠ হল সবুজ প্রাণের শ্বাশ্বত এক প্রদীপ। মাঠ হল দৌড়ে এগিয়ে যাবার বাঁশি। ছুট হল এক একজনের কাছে এক এক রকম। কারও কাছে দৌড় হল শুধু ছোটা, কারও কাছে আশা। কেউ মনে করে দৌড় মানে শক্তপোক্ত পায়ের ভাষা। ছুট মানে বাঁচা, কোনো পাখির খাঁচা থেকে বেরিয়ে উড়ে যাওয়া। ছুট হল নতুন প্রাণের মধ্যে সমুদ্রের ঢেউ জাগানো। ছুট মানে হল জীবন আর ছুট মানে সোনা। এরপর কবি আর কিছু বলতে চান না—তিনি সবাইকে ছুটে দেখতে বলছেন।
⬛এলেমেলো শব্দগুলিকে সাজিয়ে বাক্য গঠন করো :
1. কী মানে পাখির ছোট্ট ভাঙা আগল খাঁচা ছুট।
উঃ। ছুট মানে কী ছোট্ট পাখির আগল ভাঙা খাঁচা।
2.আর বলব না কিছু ছুটেই কী দেখো ছুট মানে ।
উঃ। ছুট মানে কী ছুটেই দেখো—আর কিছু বলব না ।
3. শাশ্বত দীপ এক তো মাঠ মানে সবুজ প্রাণের।
উঃ। মাঠ মানে তো সবুজ প্রাণের শাশ্বত এক দীপ।
4. ঘুম তাড়ানো মন হারানো বাঁশি কী মাঠ মানে।
উঃ। মাঠ মানে কী ঘুম তাড়ানো মন হারানো বাঁশি?
⬛ নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর নিজের ভাষায় লেখো : প্রতিটা প্রশ্নের মান -1/2
1.কবি খুশির অবাধ লুটোপুটি কোথায় খুঁজে পান?
উঃ। কবি খুশির অবাধ লুটোপুটি মাঠে খুঁজে পান ।
2. কোথায় গেলে কবি তাধিন তাধিন শব্দ শুনতে পান?
উঃ। মাঠে গেলে কবি তাধিন তাধিন শব্দ শুনতে পান ।
3. ছুট মানে কী বুঝতে গেলে কী করতে হবে?
উঃ। কবির মতে ছুট মানে কী তা বুঝতে গেলে ছুটতে হবে।
4.‘নিকেল করা’ বিকেলের আলো কবি কোথায় দেখতে পান?
উঃ। মাঠে দেখতে পান ।
5. পাখির খাঁচার আগল ভাঙলে পাখি কী করে?
উঃ। পাখির খাঁচার আগল ভাঙলে পাঁখিও ছুট দেয় অর্থাৎ পাখি মুক্ত আকাশে ডানা মেলে উড়ে যায়।
6. কবির কাছে মাঠ বলতে যা বোঝায় তার যে কোনো তিনটি ভাবনা কবিতা থেকে বুঝে নিয়ে লেখো।
উঃ। মাঠ মানে অথই খুশির অগাধ লুটোপুটি, সেখানে শুধুই খুশি। মাঠ মানে চিৎকার-চেঁচামেচি, যেখানে সবাই শুধুই হল্লা করবে। মাঠ মানে সবুজ প্রাণের শাশ্বত এক দীপ। যা কোনোদিন সবুজ অর্থাৎ নবীন জীবনে নিভে বা হারিয়ে যাবে না।
7. ছুট অর্থে কবি যা যা বলেছেন তা (তিন-চারটি বাক্যে) লেখো।
উঃ। ছুট অর্থে কবি বলেছেন শুধুই ছোটা। ছুট মানে ছোটো পাখির দরজার আগল খুলে দিয়ে মুক্ত আকাশে বাঁচা। ছুট মানে সাতটি সমুদ্রের ঢেউকে ছুটন্ত ও ফুটন্ত সব প্রাণের মাঝে ডেকে আনা । ছুট মানে শক্ত পায়ের পোক্ত কোনো ভাষা
8. মাঠ’ আর ‘ছুট' তোমার কাছে কী অর্থ নিয়ে ধরা দেয় তা নিজের ভাষায় লেখো।
উঃ। মাঠ হল এমন এক বিশাল জায়গা যেখানে প্রাণভরে খেলা যায়, লুটোপুটি খাওয়া যায়। তেমনি মাঠ হল মনের বিশালতা যার মাঝে আমরা আমাদের নানা স্বপ্ন নিয়ে ভাবতে পারি, তা পূরণ করতে পারি। ছুট অর্থাৎ ছোটা বা দৌড়। ছুট মানে এগিয়ে চলা। বাঁচার সাহস নিয়ে খাঁচা ভাঙা ছোট্ট পাখির মতো মুক্ত আকাশে উড়ে চলার জীবন।
⬛ সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর : প্রতিটা প্রশ্নের মান -2/3
1. মাঠ মানে অগাধ লুটোপুটি বলতে কৰি কী বুঝিয়েছেন ?
উঃ। মাঠ হল ছুটির দিনে এক মজার জায়গা। সেখানে অথই খুশি, যত ইচ্ছে মজা করো আনন্দ করো, তবু তা ফুরোবে না। মাঠের এই অফুরন্ত মজাকে কবি অগাধ লুটোপুটি বলছেন ৷
2. ছুট মানে কী ছুটেই দেখো বলতে কবি কী বলতে চেয়েছেন?
উঃ। কবি শিশু কিশোরদের বলেছেন ছটে দেখতে, ছোটার ফলে অর্থাৎ এগিয়ে চলার ফলে তারা অনুভব করতে পারবে ছোটার মানে কী, তাদের মনে এগিয়ে চলতে শেখার কতটা প্রভাব পড়ে। তাই যারা ছুটতে চায় কবি তাদের ওপর ছোটার অর্থ বোঝার দায় ছেড়ে দিয়েছে।
3. ‘আগল ভাঙা খাঁচা না বলতে কৰি কী বোঝাতে চেয়েছেন ?
উঃ। ছুট মানে মনের অসীম সাহস, ছুট মানে সেই সাহসের জোরে বেঁচে থাকা, এগিয়ে চলা। একটি ছোট্ট পাখি যেভাবে বন্ধ খাঁচার আগল ভেঙে দিগন্তে উড়ে চলে, সেভাবেই শিশু ও কিশোর মন সাহস নিয়ে, বাধা ভেঙে ছুটতে থাকে, এগিয়ে চলতে থাকে। যে ছোটার শুরু হয় শৈশবকালে মাঠ থেকেই।
4. ‘ঘুম তাড়ানো মন হারানো বাঁশি'—বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন?
উঃ। মাঠ শিশু মনের এক অমোঘ আকর্ষণ। মাঠ শিশুদের কাছে ঘুম তাড়িয়ে দেওয়ার এক ডাক। মাঠ শিশুদের কাছে বাঁশির সেই সুর যা শুনে মন হারিয়ে যায়, কোনো এক অজানা আনন্দের দিকে তাদের মনকে টেনে নিয়ে যায়।
5. ‘সবুজ প্রাণের শাশ্বত এক দীপ'—বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন?
উঃ। শিশুরা খেলতে ভালোবাসে তাই মাঠ শিশুদের কাছে এক চিরকালীন আনন্দ। শিশু হল সবুজ প্রাণ অর্থাৎ নবীন জীবন। মাঠ তাদের কাছে সেই আলোর প্রদীপ, যা তাদের প্রাণে শাশ্বত বা চিরন্তন হয়ে জ্বলতে থাকে।
6.'মাঠ' কথাটা শুনে তোমার চোখের সামনে যে ছবি ভেসে ওঠে তা লেখো।
উঃ। মাঠ বললেই যেটা আমার সবার আগে মনে পড়ে সেটা হল সবুজ ঘাসে ভরা অনেক বড়ো জায়গা। যেখানে অনেক দূর পর্যন্ত দৌড়ানো যায়, খেলা যায়, প্রাণ ভরে লাফানো যায়। অনেক বন্ধুর সাথে একসঙ্গে খেলা যায়। চারিদিকে গাছপালা, মাটিতে সবুজ ঘাস ও অনেক শিশুরা খেলে বেড়াচ্ছে, হইচই করছে।
7. ‘মাঠ’ এবং ‘শৈশব’-এর এক অদ্ভুত যোগ আছে— তোমার বন্ধুদের সঙ্গে বিকেলগুলো কীভাবে মাঠে খেলে বা গল্প করে কাটে, তার বর্ণনা দাও।
উঃ। মাঠে আমরা সব বন্ধুরা একসঙ্গে জড়ো হই। তারপর নানারকম খেলা খেলি, যখন যা ইচ্ছে হয়। তারপর একসময় খেলে যখন খুব ক্লান্ত হয়ে পড়ি, তখন সবাই গোল হয় বসে নানারকম গল্প করি। নিজেদের নানান ঘটনার কথা বন্ধুরা একে অপরকে বলি।
No comments:
Post a Comment