❐ বন্ধনির মধ্যে ঠিক উত্তরে টিক চিহ্ন (✔) দাও:
1. 'বঙ্গভাষা' কবিতাটি রচনা করেন-
(ক) মধুসূদন দত্ত।
(খ) মধুসূদন বসু।
(গ) সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত।
(ঘ) সুভাষচন্দ্র বসু।
উত্তরঃ মধুসূদন দত্ত।
2. কোন্ দেশে ভিক্ষা বৃত্তি কুক্ষণে আচরি।
(ক) ভিনদেশে।
(খ) পরদেশে।
(গ) বিদেশেতে।
(ঘ) কোন্ জায়গায় নয়।
উত্তরঃ পরদেশে।
3. অনিদ্রায়, অনাহারে সঁপি মন--
(ক) দেহ।
(খ) তনু।
(গ) কায়।
(ঘ) কোন্টাই নয়।
উত্তরঃ কায়।
4. স্বপ্নে তব কয়ে দিলা পরে।
(ক) রাজলণী।
(খ) কুললণী।
(গ) গৃহলণী।
(ঘ) কোন্টাই নয়।
উত্তরঃ কুললণী।
5. মাতৃ-ভাষা রূপে খনি, পূর্ণ -
(ক) খনিজালে।
(খ) মণিজালে।
(গ) স্বর্গজালে।
(ঘ) কোল্টাই নয়।
উত্তরঃ মণিজালে।
❐ কবিতা থেকে ঠিক শব্দটি বসিয়ে শূন্যস্থান পূরণ করো:
1. হে বঙ্গ ---- তব বিবিধ রতন।
উত্তরঃ ভান্ডারে।
2. মজিনু বিফল তপে ----- বরি।
উত্তরঃ অবরেণ্য।
3. কেলিনু : ----- ভুলি কমল-কানন।
উত্তরঃ শৈবালে।
4. অন্দ্রিায়, ------ সঁপি কায়, মনঃ।
উত্তরঃ অনহারে।
5. ------ ৰূপে খনি, পূর্ণ মণিজালে।
উত্তরঃ মাতৃভাষা।
❐ ভুল থাকলে পঙ্ক্তি গুলি যুদ্ধ করে লেখো:
1. হে ভারত, ভাণ্ডারে তব বিবিধ রতন
উত্তরঃ হে বঙ্গ, ভান্ডারে তব বিবিধ রতন
2. কাটাইনু তিন দিন সুখ পরিহরি।
উত্তরঃ কাটাইনু বহুদিন সুখ পরিহরি।
3. কেলিনু বিফল তপে অবরেণ্যে বরি;
উত্তরঃ মজিনু বিফল তপে অবরেণ্য বরি;
4. যা ফিরি, বিদ্বান তুই, যা রে ফিরি ঘরে।
উত্তরঃ যা ফিরি, অজ্ঞান তুই, যা রে ফিরি ঘরে।
5. মাতৃ-ভাষা- রূপে মণি, পূর্ণ মোহজালে।
উত্তরঃ মাতৃ-ভাষা-রূপে খনি, পূর্ণ মণিজালে।
❐ অতি-সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর:
দু-একটি বাক্যে উত্তর দাও:
1. সকার ভাণ্ডারে বিবিধ রতন আছে?
উত্তরঃ বাংলা ভাষার ভান্ডারে বিবিধ রতন আছে।
2. কবি কাকে অবোধ বলেছেন?
উত্তরঃ কবি নিজেকেই অবোধ বলেছেন।
3. কবি কার আদেশ পেয়েছেন?
উত্তরঃ কবি কুললণীর আদেশ পেয়েছেন।
4. কবি কাকে অবহেলা করেছিলেন?
উত্তরঃ কবি বাংলা ভাষাকে অবহেলা করেছিলেন।
5. বাংলা ভাষাকে অবহেলা করে কবি কোন্ ভাষা চর্চা করেন?
উত্তরঃ বাংলা ভাষাকে অবহেলা করে কবি ইংরাজি ভাবা চর্চা করেন।
6. লোকমল-কানন ফেলে কবি কোথায় খেলা করেছেন?
উত্তরঃ কমল-কানন ফেলে কবি শৈবালে খেলা করেছেন।
7. 'শৈবাল'- শব্দটির অর্থ কী?
উত্তরঃ 'শৈবাল' শব্দটির অর্থ হল শ্যাওলা।
8. কবি কীসে মত্ত ছিলেন?
উত্তরঃ কবি পরের ধন লাভ করার জন্য মত্ত ছিলেন। অর্থাৎ নিজের দেশের সম্পদকে অবহেলা করে পরের ধন বা বিদেশি সম্পদ লাভের জন্য বিদেশে গমন করেছিলেন।
9. কবি কীভাবে বহুদিন কাটিয়েছেন?
উত্তরঃ কবি বিদেশে গিয়ে বহু দুঃখ কষ্ট পেয়েছিলেন। এমনকি অনিদ্রায়, অনাহারে বহুদিন কাটিয়েছেন।
10. কে কবিকে স্বপ্নে দেখা দিলেন?
উত্তরঃ কুললণী অর্থাৎ বঙ্গমাতা কবিকে স্বপ্নে দেখা দিয়ে আদেশ দিয়েছিলেন যে নিজের দেশে ফিরে গিয়ে কাব্য চর্চা করার জন্য। বলেছিলেন এতেই তার সফলতা আসবে।
❐ সংক্ষিপ্ত প্রশ্নাবলি:
1. ভাণ্ডার তব বিবিধ রতন', বিবিধ রতনের পরিচয় দাও।
উত্তরঃ বাংলা ভাষার ভান্ডার বিবিধ রতনে পূর্ণ। এই ভাষায় আছে প্রচুর শব্দ ভাণ্ডার। আছে নানা রকমের ছন্দ বৈচিত্র আর ভাবের ঐশ্বর্য। এই ভাষার শব্দগুলি অত্যন্ত হৃদয়গ্রাহী।
2. 'পরধন লোভে মত্ত'- এরূপ বলার কারণ কী?
উত্তরঃ এরূপ বলার কারণ হল কবি মধুসূদন দত্ত নিজের দেশের ভাষাকে অর্থাৎ বাংলা ভাষাকে অবহেলা করে। পরের ধনে অর্থাৎ ইংরাজি ভাষার সাহিত্য চর্চা করার জন্য ইংল্যান্ডে গিয়েছিলেন। এখানে পরধন বলতে ইংরেজি ভাষাকে বোঝানো হয়েছে।
3. 'কাটাইনু বহু দিন সুখ পরিহরি' পরিস্থিতি কেন সৃষ্টি হয়েছিল? এরূপ
উত্তরঃ বাংলা ভাষায় প্রচুর রত্ন লুকিয়ে আছে। কবি অবোধের মত সেগুলিকে পরিত্যাগ করে পরধনের লোভে বিদেশে যান। সেখানে তিনি ইংরেজি সাহিত্য চর্চা করেন। কিন্তু সেখানে তিনি সফল হননি। ফলে বহু দুঃখ কষ্ট তাকে ভোগ করতে হয়েছিল।
4. 'কেলিনু শৈবাল ভুলি কমল-কানন'। কবি কমল-কানন ভুলে কী করেছিলেন? কেন করেছিলেন?
উত্তরঃ কবি মধুসূদন দত্ত কমল-কানন ভুলে বিদেশে অর্থাৎ ইংল্যান্ডে গিয়ে ইংরেজি সাহিত্য চর্চা করে খ্যাতি লাভ করতে চেয়েছিলেন।
কবি নিজের মাতৃভাষা অর্থাৎ বাংলা ভাষাকে অবহেলা করে বিদেশে গিয়েছিলেন ইংরেজি ভাষায় সাহিত্য চর্চা করে খ্যাতি লাভের জন্য। কিন্তু তিনি পরে নিজের ভুল বুঝতে পেরেছিলেন। তাই তিনি বলেছিলেন যে, এতদিন তিনি কমল কানন ভুলে শ্যাওলা বনে খেলা করেছিলেন।
5. কবি কীভাবে মাতৃভাষার রূপের খনি পেলেন?
উত্তরঃ পরের ধনে মেতে উঠে কবি নিজের ভাষাকে অবহেলা করে বিদেশে গিয়েছিলেন অধিক উপার্জনের আশায়। কিন্তু বিদেশে গিয়ে তার ইচ্ছা পূরণ হল না। তাকে অনিদ্রায়, অনাহারে অনেক দুঃখ, কষ্ট করে জীবন কাটাতে হয়েছিল। তখন কুললণী তাঁকে স্বপ্নে দেখা দিয়ে বলেছিলেন যে, হে বাছা তুই কেন বিদেশে পড়ে আছিস। নিজের দেশে ফিরে যা, তোর মাতৃভাষা অনেক সমৃদ্ধ। তুই বাংলা ভাষায় কাব্য চর্চা করে তাতেই সফল হবি। এই কথা শোনার পর কবি দেশে ফিরে আসেন এবং বাংলা ভাষায় কাব্য চর্চা করতে লাগলেন। তিনি বুঝতে পেরেছিলেন তাঁর মাতৃভাষায় সত্যিই রূপের খনি আছে।
6. বঙ্গভাষার উদ্দেশ্যে কবি কী বলেছেন?
উত্তরঃ কবি বঙ্গভাষার উদ্দেশ্যে বলেছেন যে এই ভাষার ভান্ডারে অনেক রত্ন লুকিয়ে আছে। তিনি অবুঝ বলে এই ভাষাকে অবহেলা করে পরধনে মত্ত হয়ে বিদেশে গিয়েছিলেন। কিন্তু সেখানে তিনি সাফল্য না পেয়ে বহু দুঃখ, কেষ্ট অনিদ্রায়, অনাহারে দিন কাটিয়েছেন। আজ তিনি তাঁর ভুল বুঝতে পেরেছেন যে সত্যিই তাঁর মাতৃভাযায়, রত্নের খনি আছে। এই মাতৃভাষায় কাব্য চর্চা করে তিনি সফলতা লাভ করতে পেরেছিলেন।
7. কূললণী কবিকে স্বপ্নে কী বললেন?
উত্তরঃ কুললণী কবিকে স্বপ্নে দেখা দিয়ে বলেছিলেন যে, হে বাছা তুই কেন বিদেশে পড়ে আছিস। নিজের দেশে ফিরে যা। তোর মাতৃভাষা অনেক উন্নত। তুই মাতৃভাষায় কাব্য চর্চা করে তাতেই সফল হবি। দেখবে তোমার মাতৃভাষায় রূপের খনি আছে।
❐ রচনাধর্মী প্রশ্নাবলি:
1. 'বঙ্গভাষা' - কবিতার বিষয়বস্তু আলচনা করো।
উত্তরঃ বাংলা ভাষার ভান্ডারে নানা রত্ন লুকিয়ে আছে। অবোধের মত এসবকে অবহেলা করে কবি বিদেশে গিয়েছিলেন অধিক উপার্জনের আশায়। সেখানে তিনি সফল হন নি। বিদেশে গিয়ে ইংরেজি ভাষা চর্চাকে তিনি ভিক্ষাবৃত্তি বলেছেন। সেখানে তাকে অনেক কষ্ট, দুঃখ সহ্য করতে হয়েছিল। এরপর কূললণী কবিকে স্বপ্নে দেখা দিয়ে বলেছিলেন যে, তুই দেশে ফিরে যা এবং নিজের মাতৃভাষায় কাব্য চর্চা করে সফল হবি। তাঁর আদেশ পালন করে তিনি বাংলা ভাষার রত্নের খনিপেয়েছেন।
2. 'বঙ্গভাষা' কবিতাটি কী ধরনের কবিতা কবিতাটিতে কবির আর্তি যেভাবে ফুটে উঠেছে তার পরিচয় দাও।
উত্তরঃ 'বঙ্গভাষা' কবিতাটি একটি স্বদেশ ও মাতৃভাষা প্রেমমূলক কবিতা।
কবি এই কবিতার মধ্য দিয়ে নিজের ভুল প্রকাশিত করেছেন। তাই কবি নিজের ভুল বুঝে বলেছেন যে, মাতৃভাষা রূপে কমল তিনি এতদিন শৈবাল বা জঞ্জালের মধ্যে খেলা করেছন। কারণ বিদেশি ইংরেজি ভাষা বাংলা ভাষার কাছে কিছুই নয়। এতদিন তিনি বিদেশে ভিখারীর মত ঘুরেছেন। বাংলা ভাষাকে অবহেলা করে ভুল করেছেন। যাকে গ্রহন করা যায় না তাকেই এতদিন গ্রহন করতে গিয়েছিলেন তিনি। অবশেষে কুললণী তাকে নিজের ঘরে ফিরে যেতে বলেছেন। কবি তাঁর আদেশ পালন করেছেন।
3. কবি মাতৃ ভাষাকে অবহেলা করেছিলেন কেন?
উত্তরঃ কবি মধুসূদন দত্ত প্রথমে বিদেশি ভাষা অর্থাৎ ইংরেজি ভাষার সাহিত্য রচনা করতে মেতে ছিলেন। কারণ সেই সময় ইংরেজি ভাষার যথেষ্ট ব্যুৎপত্তি ছিল। তিনি মনে করতেন বাংলা ভাষা সমৃদ্ধ নয়। তাই এই ভাষায় সাহিত্য চর্চা করলে সফলতা অর্জন করতে পারবেন না। সেই কারণে তিনি ইংরেজি ভাষায় কাব্য চর্চা করতে মনোযোগ দেন। তিনি খুব উচ্চাকাঙ্খী ছিলেন। তাই ভেবেছিলেন ইংল্যান্ডে গিয়ে ইংরেজি ভাষার সাহিত্য চর্চা করলে অধিক সফলতা ও অধিক উপার্জন করা যাবে। কিন্তু সেখানে তিনি সাফল্য লাভ করতে পারেন নি। কবিকে অনেক দুঃখ, কষ্ট সহ্য করতে হয়েছে। তিনি এতদিন কমল কাননকে ছেড়ে শৈবালে খেলা করেছিলেন। সেকথা তিনি বুঝতে পারেন নি। ফলে পরে তিনি নিজের ভুল বুঝতে পেরে কুললণীর আদেশে দেশে ফিরে মাতৃভাষা কাব্য চর্চা করেন এবং এতে তিনি দারুণভাবে সফল হলেন। তাঁর মাতৃভাষায় যে এত রত্নের খনি আছে তা তিনি উপলব্ধি করতে পারলেন।
4. 'মাতৃভাষা'- এই শিরোনামে ১০০ টি শব্দে একটি অনুচ্ছেদ রচনা করো।
উত্তরঃ 'মাতৃভাষা':- যে যে ভাষায় কথা বলে সেটাই তাঁর মাতৃভাষা। মাতৃভাষা সকলের কাছে পূজনীয়। এই ভাষাকে বাদ দিয়ে সিদ্ধি লাভ করা যায় না। নিজের মাতৃভাষা প্রত্যেকের কাছে মর্যাদার বস্তু। নিজের মাতৃভাষাকে অবহেলা করা উচিত নয়। অকারণে কষ্ট করে মাতৃভাষা ছেড়ে বিদেশি ভাষা চর্চায় মনোনিবেশ করা ঠিক নয়। মাতৃভাষা সম্পর্কে সবাইকে বুঝতে হবে। তাই একথা মনে রেখে জাতি সংঘ ২০০০ সালে বিশ্বমাতৃ ভাষা দিবস ঘোষণা করেছে ২১শে ফেব্রুয়ারি বিশ্বমাতৃ ভাষা দিবস। প্রকাশ থাকে যে 'বিশ্ব ভাষা দিবস' বাংলা ভাষাকে কেন্দ্র করেই করা হয়েছিল। এজন্য বাঙালি হিসাবে আমরা গর্বিত। ঐ দিন আমরা মাথা উচু করে বলতে পারি। আমাদের জন্যই আজ ভাষা দিবস। এই ভাষাই শিক্ষার মাধ্যম হওয়া উচিত। প্রত্যেকের কাছেই তার মাতৃভাষা একটা সহজ মাধ্যম। এই মাতৃভাষা ছাড়া মনের আশা মেটে না।
No comments:
Post a Comment