বঙ্গ আমার জননী আমার প্রশ্ন উত্তর পড়তে নিচের লিংকে ক্লিক করো
◼️কবি পরিচিতি;
নবনীতা দেবসেন ১৯৩৮ সালে কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর প্রথম প্রকাশিত বই প্রথম প্রত্যয়। নবনীতা দেবসেনের অন্যান্য উল্লেখযোগ্য রচনার মধ্যে রয়েছে— আমি অনুপম, সমুদ্রের সন্ন্যাসিনী, নটী নবনীতা, ট্রাকবাহনে ম্যাকমাহনে।
◼️নামকরণ;
লেখিকা এখানে একটি ছোটো বাঘের দুঃখের ছবি ছড়ার আকারে তুলে ধরেছেন। বাঘ বলতে আমরা ভীষণ, হিংস্র, বলশালী প্রাণীকে বুঝি । কিন্তু ছড়ার বাঘের ছানাটি শিকার না পেয়ে মনমরা হয়। কাঁকড়া ধরতে গিয়ে তার কামড় খেয়ে সে কাঁদে। তাই আমাদের পরিচিত বাঘের ধারণার সঙ্গে ছড়ায় বর্ণিত ‘ব্যাঘ্রশাবক’-টির মিলের চাইতে অমিলই বেশি | আমরা অনেকেই বাঘের ছানাটির আচরণে অবাক হই | আর সেই কারণেই ছড়ার নামকরণে নবনীতা 'বাঘ' লিখেই ক্ষান্ত হননি, তার সঙ্গে একটি বিস্ময়বোধক - চিহ্ন (!) যুক্ত করেছেন | তাই সবদিক মিলিয়ে ছড়ার নামটি সার্থক ও সুন্দর
◼️সারমর্ম;
একটি ছোট্ট বাঘ পাখিদের অভয়ারণ্যে তার বাবা-মায়ের সঙ্গে বাস করত। ছাগল, হরিণ, ভেড়া—কোনোকিছুই সেখানে চরত না। ফলে তার খাবারের খুব অসুবিধে হত। পাখি আকাশে উড়ে চলে, ফলে নিজের থাবা বাগিয়েও বাঘটি খুব একটা সুবিধে করতে পারত না। একদিন সে কাকড়া শিকার করতে যায়, কিন্তু উলটে কামড় খেয়ে সে কাঁদতে থাকে। এরপর একদিন মাছ শিকারে নদীর ঘাটে উপস্থিত হয়। তখন তার মা তাকে বোঝায় যে এটা মোটেও বাঘসুলভ আচরণ নয় এবং তারা নিজেরাও বোঝে এভাবে এখানে থাকাটা তাদের সন্তানের পক্ষে ভীষণই কষ্টকর। তাই বাপ-মা পাখিরালয় থেকে সজনেখোলায় নিজেদের বাসা বদল করে।
◼️নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর দাও।
১.নবনীতা দেবসেনের প্রথম প্রকাশিত বইয়ের নাম কী ?
উত্তর: নবনীতা দেবসেনের প্রথম প্রকাশিত বইয়ের নাম প্ৰথম প্ৰত্যয়।
২. তাঁর লেখা একটি ভ্রমণকাহিনির নাম লেখো ।
উত্তর: নবনীতা দেবসেনের লেখা একটি ভ্রমণকাহিনির নাম ট্রাকবাহনে ম্যাকমাহনে।
৩. পাখিরালয়ের বাসায় কী পাওয়া যেত না?
উত্তর: পাখিরালয়ের বাসায় ছাগল, হরিণ, ভেড়া পাওয়া যেত না ।
৩. ছোট্ট বাঘ তার খিদে মেটানোর জন্য প্রথমে কী ধরতে গিয়েছিল?
উত্তর: ছোট্ট বাঘ তার খিদে মেটানোর জন্য প্রথমে কাঁকড়া ধরতে গিয়েছিল।
৪. ছোট্ট বাঘের বাবা-মা বাসা বদলে কোথায় গিয়েছিল ?
উত্তর: ছোট্ট বাঘের বাবা-মা বাসা বদলে সুন্দরবনের সজনেখালি গিয়েছিল ।
৫. সুন্দরবনের বাঘ কী নামে পরিচিত?
উত্তর: সুন্দরবনের বাঘ ‘রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার' নামে পরিচিত।
◼️নীচের প্রশ্নগুলির সংক্ষিপ্ত উত্তর দাও।
২. ছোট্ট বাঘ পাখির ছানা ধরতে পারেনি কেন ?
উত্তর: পাখি চটপটে ও দুরন্ত বলে বাঘছানাটি থাবা বাগিয়ে আক্রমণ করলে পাখিগুলি দ্রুত আকাশে উড়ে যেত। তাই সে পাখির ছানা শিকার করতে পারেনি।
২. বাঘের ছানা গর্তে থাবা দিয়েই কেঁদে উঠেছিল কেন?
উত্তর: বাঘের ছানা গর্তে থাবা দিয়েই কেঁদে উঠেছিল, তার কারণ সেখানে লম্বা দাঁড়াবিশিষ্ট কাঁকড়ার দল তাকে কামড়ে দিয়েছিল।
৩. বাঘছানাকে বাবা কীভাবে কাঁকড়ার হাত থেকে রক্ষা করল?
উত্তর: বড়ো ও ধারালো নখযুক্ত থাবা দিয়ে কাঁকড়ার দাঁড়া কেটে বাঘছানাকে তার বাবা বিপদ থেকে মুক্ত করল।
৪. বাঘজননী লজ্জা পেয়েছিল কেন ?
উত্তর: বাঘের সন্তান হয়ে বাঘছানাটি মাছ শিকার করছে দেখে তার মা লজ্জা পেয়েছিল।
৫. বাঘছানার মতে বনটা কেবল কী দিয়েই 'ঠাসা'?
উত্তর: বাঘছানার মতে বনটা কেবল পাখি দিয়েই "ঠাসা'।
৬. বাঘের ছানার বাবার থাবা কেমন দেখতে?
উত্তর: বাঘের ছানার বাবার থাবাটি নখযুক্ত এবং বিশাল আকারের।
◼️ নীচের সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যাভিত্তিক প্রশ্নগুলির উত্তর দাও:
১. বাঘছানাটি কী কী শিকারে কীভাবে ব্যর্থ হত?
উত্তর: বাঘছানাটি যে বনে থাকত সেখানে শিকারের উপযুক্ত হরিণ, ভেড়া কিছুই ছিল না। বনটি ছিল পাখিতে ভরা। তাই সে বাধ্য হয়ে পাখি ধরতে যেত, কিন্তু খুদে বাঘছানার পক্ষে সেটাও পেরে ওঠা অসম্ভব হত। মুহূর্তে পাখিরা তার নাগালের বাইরে উড়ে যেত। আবার কাঁকড়ার শক্তিশালী এবং ধারালো দাঁড়া থাকে সেটা না জেনেই বাঘশাবকটি গিয়েছিল তা শিকার করতে। কিন্তু কাঁকড়ার কামড় খেয়ে বাঘছানাটি কান্না জুড়ে দেয় । এইভাবেই বাঘের ছানাটি শিকার করতে অসফল বা ব্যর্থ হয়।
২. “ভোঁদড় তো নোস, ব্যাঘ্র যে তুই, বৎস!”- বাঘজননীর তার সন্তানকে এমনটা বলবার কারণ কী?
উত্তর: ভোঁদড় বিড়ালজাতীয় প্রাণী। মাছ তাদের প্রিয় খাদ্য। অন্যদিকে বাঘ শিকার করে হরিণ, মহিষ, ভেড়া। মাছ মেরে খাওয়া তাদের কাছে অপমানের। শক্তিশালী প্রাণী শিকারে যে বীরত্ব ও ক্ষমতা প্রকাশ পায়, মাছ বা কাঁকড়া মারায় তার সামান্যটুকুও দেখা যায় না। ছড়ায় যে বাঘছানাটির কথা বলা হয়েছে সে কিছু না পেয়ে মাছশিকারে বাধ্য হয়েছিল। এই কারণে সে যে বাঘ, তার যে এমন কাজ করা সাজে না—এটা মনে করাতেই বাঘজননী সন্তানকে এমন উপদেশ দেন।
No comments:
Post a Comment