চিত্রগ্রীব প্রশ্ন উত্তর পড়তে নিচের লিংকে ক্লিক করো
◼️কবি পরিচিতি;
বিমলচন্দ্র ঘোষ ১৯১০ খ্রিস্টাব্দের ১২ ডিসেম্বর কলকাতা শহরে জন্মগ্রহণ করেন। বিমলচন্দ্র কবি ও গীতিকার হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। তাঁর কিছু উল্লেখ্য কাব্যগ্রন্থ হল— জীবন ও রাত্রি, দক্ষিণায়ন, উলুখড়, সাবিত্রী, রক্তগোলাপ, বিশ্বশান্তি। বিমলচন্দ্রের লেখা 'উজ্জ্বল এক ঝাঁক পায়রা’, ‘ঝড় উঠেছে বাউল বাতাস”, “শোনো বন্ধু শোনো প্রাণহীন এই শহরের ইতিহাস' গানগুলি এখনও জনপ্রিয়। ১৯৮১ সালের ১২ ডিসেম্বর ৭১ বছর বয়সে এই খ্যাতনামা কবি ও গীতিকারের জীবনাবসান ঘটে।
◼️নাম করণ;
আলোচ্য কবিতায় কবি বিমলচন্দ্র ঘোষ উজ্জ্বল রোদেভরা আকাশে উড়তে থাকা এক ঝাঁক পায়রাদের বন্দনা করেছেন। চৈত্রের রোদে চারপাশ ছেয়ে আছে। আকাশও “নিঃসীম ঘননীল'। গ্রহ, তারা, নক্ষত্র কোনো কিছুই সেখানে দেখা যাচ্ছে না। মাটির পৃথিবীতেও কবি তাঁর চারপাশে কাউকে দেখতে পাচ্ছেন না। সমস্ত চরাচর নিস্তব্ধ । এরকম পরিবেশেই ‘দুপুরের ঝলমলে জীবন্ত রৌদ্রে' এক ঝাঁক পায়রা উড়ে চলেছে। উড়ন্ত পায়রাগুলি তাই যেন কবিতার মূল প্রতীক হয়ে উঠেছে। এই কারণে' এর নামকরণ সার্থক ও যথাযথ।
◼️সারমর্ম;
চৈত্র মাসের দুপুরবেলায় চারপাশ যখন নির্জন, শুনশান তখন কবি দেখেছেন প্রখর, তীব্র রোদে ভরা নিঃসীম, ঘন নীল আকাশে উড়ে যাচ্ছে একঝাক পায়রা—যেন ‘কম্পিত শত শত উড়ন্ত পাপড়ি'। দুপুরের উজ্জ্বল রোদ গায়ে মেখে তারাও উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে। গ্রহ, তারা, নক্ষত্র— কোনোকিছুই আকাশে দৃশ্যমান নয়, রোদের উদ্দাম উল্লাসে কেবলই উড়ে বেড়াচ্ছে 'শ্বেত পিঙ্গল কৃষ্ণ' এক ঝাঁক পায়রা। তারা কবির চোখে সজীব, প্রাণবন্ত সত্তার প্রতীক। পায়রাগুলির পাখনার কম্পনে ফুটে ওঠে জীবন; রৌদ্রও হয়ে ওঠে 'জীবন্ত' ।
◼️নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর দাও:
১. কবিতায় আকাশকে বিশেষিত করতে ব্যবহৃত দুটি বিশেষণের উল্লেখ করো।
উত্তর: নিঃসীম, ঘননীল ।
২.গ্রহ-তারা কোথায় থাকুক বলে কবি চান ?
উত্তর: কবি চান গ্রহ-তারা নীল শূন্যে থাকুক।
৩. কতগুলি পায়রা উড়ছে?
উত্তর: এক ঝাঁক পায়রা আকাশে উড়ছে।
৪. পায়রাগুলির পাখনা কীরূপ?
উত্তর: পায়রাগুলির পাখনা চঞ্চল প্রকৃতির।
৫. ‘উজ্জ্বল এক ঝাঁক পায়রা' কবিতায় বছরের কোন মাসের উল্লেখ রয়েছে?
উত্তর: আলোচ্য কবিতায় চৈত্র মাসের উল্লেখ রয়েছে।
৬. এক ঝাঁক পায়রার একটি বিশেষণ লেখো, যা কবি ব্যবহার করেছেন।
উত্তর: বিশেষণটি হল—‘কম্পিত শত শত উড়ন্ত পাপড়ি'।
৭. 'উজ্জ্বল এক বাঁকি পায়রা' গানটি কার লেখা?
উত্তর: 'উজ্জ্বল এক ঝাঁক পায়রা' গানটি বিমলচন্দ্র ঘোষের লেখা।
৮. 'উজ্জ্বল এক ঝাঁক পায়রা' কবিতায় পায়রাদের গায়ের কোন্ কোন্ রঙের কথা বলা হয়েছে?
উত্তর: 'উজ্জ্বল এক ঝাঁক পায়রা' কবিতায় পায়রাদের গায়ের সাদা, কালো ও ধূসর রঙের কথা বলা হয়েছে।
◼️নীচের সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যাভিত্তিক প্রশ্নগুলির উত্তর দাও:
১. “গ্রহ-তারা থাকে যদি থাক নীল শূন্যে।”—তাৎপর্য ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: কবি দেখছেন চৈত্রের দুপুরে উজ্জ্বল রোদেভরা আকাশে উড়ে চলেছে এক ঝাঁক পায়রা। সমস্ত বিশ্বচরাচর জুড়ে যেন শুধুমাত্র সেই পায়রাগুলি উড়ে বেড়াচ্ছে— কোথাও আর কেউ নেই। আমরা খালি চোখে গ্রহনক্ষত্রদের দেখতে পাই রাতের বেলা | দিনে যখন সূর্য তার প্রখর তেজ নিয়ে উপস্থিত, তখন তাদের দেখা যায় না । কবি চেয়েছেন অন্তত কিছুক্ষণের জন্য হলেও পায়রার ঝাঁক যেন নীল আকাশ থেকে প্রাণের উন্মাদনা, প্রাণের উচ্ছ্বাস চারদিকে ছড়িয়ে দেয় । গ্রহ, তারা, নক্ষত্র থাকলে পায়রাগুলির অপরূপ শোভা যেন কমে যাবে।
২. ‘আকাশি ফুলের শ্বেত পিঙ্গল কৃষ্ণ' বলতে কবি কাদের কেন বুঝিয়েছেন ?
উত্তর: উদ্ধৃত অংশটিতে কবি আকাশে উড্ডীয়মান এক ঝাঁক পায়রাদের বুঝিয়েছেন। তাঁর চোখে পায়রাগুলি ‘উড়ন্ত পাপড়ির তুল্য। আকাশের বুকে তারা উড়ে চলেছে। তাই তিনি 'আকাশি ফুল'-এর উল্লেখ করেছেন। আর পাখিগুলির রং সাদা, কালো, হালকা হলুদ-—নানান প্রকারের। তাই পায়রাগুলির গায়ের বর্ণ বোঝাতে কবি ‘শ্বেত পিঙ্গল কৃষ্ব' শব্দবন্ধটি প্রয়োগ করেছেন।
No comments:
Post a Comment