এক ভুতুড়ে কান্ড প্রশ্ন উত্তর || ষষ্ঠ শ্রেণীর বাংলা এক ভুতুড়ে কান্ড প্রশ্ন উত্তর, নামকরণ সহায়িকা | Class -6th Bangla Questions And Answers - Psycho Principal

Fresh Topics

Thursday, 2 January 2025

এক ভুতুড়ে কান্ড প্রশ্ন উত্তর || ষষ্ঠ শ্রেণীর বাংলা এক ভুতুড়ে কান্ড প্রশ্ন উত্তর, নামকরণ সহায়িকা | Class -6th Bangla Questions And Answers

  

এক ভুতুড়ে কান্ড
প্রশ্ন উত্তর







বাঘ অধ্যায়ের প্রশ্ন উত্তর পড়তে নিচের লিংকে ক্লিক করো

👉 ( বাঘ প্রশ্ন উত্তর )


◼️লেখক পরিচিতি;

শিবরাম চক্রবর্তী ১৯০৩ খ্রিস্টাব্দের ১৩ ডিসেম্বর মালদহ জেলার চাঁচলে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর লেখা প্রথম দুটি বইয়ের নাম— মানুষ ও চুম্বন। এ ছাড়াও তিনি অজস্র প্রবন্ধ, নাটক ও অদ্বিতীয় হাসির গল্প লিখেছেন। তাঁর লেখা স্মৃতিকথামূলক গ্রন্থ ঈশ্বর পৃথিবী ভালোবাসা। প্রবন্ধের বই— মস্কো বনাম পন্ডিচেরী।


◼️নামকরণ;

রাঁচি থেকে হুজুর উদ্দেশে কথক একবার সাইকেল চড়ে যাওয়ার পথে তাঁর সাইকেলের টায়ার ফেঁসে যায়। এই অবস্থায় একটি বেবি অস্টিন কথককে দেখে দাঁড়ায়। কথক তাতে চড়ে বসেন, কিন্তু উঠেই দেখেন কোনো ড্রাইভার গাড়িটি চালাচ্ছে না—তা আপনা আপনি চলছে। অনেকটা পথ এভাবে আসবার পর তিনি বুঝতে পারেন। সামনেই রেললাইন এবং তা ধরে ট্রেন ছুটে আসছে। কথক কোনোভাবে দরজা খুলে বেরিয়ে আসেন। সেই মুহূর্তেই গাড়িটি দাঁড়িয়ে যায় এবং এক ভদ্রলোক মোটরগাড়ির পেছন থেকে সামনে এসে বলেন, কল-বিগড়ানো গাড়িটি দুজন মিলে ঠেলে যদি কিছুদূরে তাঁর বাড়ি পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়া যায় তাহলে খুব উপকার হয়। এখানেই গল্পের শেষ। কথক নিশ্চিত ছিলেন না ভদ্রলোক ভূত কি না। তবে ব্যাপারটি যে অদ্ভুত—এতে কোনো সন্দেহ নেই। এই কারণেই তিনি গল্পের নাম দিয়েছেন ‘এক ভূতুড়ে কাণ্ড', বিষয়বস্তু অনুসারে যে নামকরণ একেবারে সার্থক।


◼️সারমর্ম;

রাঁচিতে থাকাকালীন একদিন কথক সাইকেলে চেপে হুজুর পথে সন্ধেবেলা কিছুদূর যেতেই টায়ার ফেঁসে যায়। তিনি বিপদে পড়েন। অবশেষে বাধ্য হয়েই একটি বেবি অস্টিন গাড়ি আসতে দেখে হাত দেখান। গাড়িটি থামে, তিনিও চড়ে বসেন। কিন্তু গাড়িতে ওঠামাত্র বুঝতে পারেন ড্রাইভারের সিটটা বিলকুল ফাঁকা, সেখানে কেউ বসে নেই । প্ৰায় ঘণ্টা দুয়েক এভাবে চলার পর গাড়িটি লেভেল-ক্রসিং-এর মুখে পৌঁছোয়। ক্রসিংয়ের গেট পেরোনোর পর তাঁর খেয়াল হয় উলটো দিকে লাইন বেয়ে ছুটে আসছে ট্রেন । কথক প্রাণের মায়ায় বাইরে বেরিয়ে যান, সেই মুহূর্তেই বন্ধ হয় গাড়ি। আর তিনি খেয়াল করেন গাড়ির এতটুকু ক্ষতি হয়নি। বরং একটি ভদ্রলোক গাড়ির পেছন থেকে সামনে তাঁকে গাড়িটি ঠেলতে অনুরোধ জানান ।


◼️নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর দাও:


১. ‘এক ভূতুড়ে কাণ্ড' রচনাংশে লেখক কোথা থেকে কোথায় যাচ্ছিলেন ?

উত্তর: ‘এক ভূতুড়ে কাণ্ড' রচনাংশে লেখক রাঁচি থেকে হুডু যাচ্ছিলেন।


২. ‘এক ভূতুড়ে কাণ্ড' গল্প অনুযায়ী রাঁচি থেকে হুজুর দূরত্ব মোটামুটি কত মাইল?

উত্তর: ‘এক ভূতুড়ে কাণ্ড' গল্প অনুযায়ী রাঁচি থেকে হুজুর দূরত্ব মোটামুটি বারো মাইল।


৩. ‘এক ভূতুড়ে কাণ্ড' গদ্যাংশ অনুসারে কে লেখককে  কখনও দেখা দেননি ?

উত্তর: ‘এক ভূতুড়ে কাণ্ড' গদ্যাংশ অনুসারে ভূত লেখককে কখনও দেখা দেননি ।


৪. লেখকের মতে তাঁর ‘হার্ট' কীরূপ?

উত্তর: লেখকের মতে তাঁর ‘হার্ট’ ‘উইক’ বা দুর্বল।


৫. লেখকের মতে, যেখানে সন্ধে হয় সেখানে আর কী ঘটে?

 উত্তর: লেখকের মতে, যেখানে সন্ধে হয় সেখানে  সাইকেলের টায়ার ফাঁসে।


৬. ‘এক ভূতুড়ে কাণ্ড' গল্পে কোন্ কালের কথা বলা হয়েছে?

উত্তর: 'এক ভূতুড়ে কাণ্ড' গল্পে শীতকালের কথা হয়েছে। বলা


৭. লেখকের মতে, কার দৃষ্টিভঙ্গি উদার হতে পারে না'?

উত্তর: লেখকের মতে, বাঘের দৃষ্টিভঙ্গি 'উদার' হতে পারে না।


৮. গল্পে কোন্ কোম্পানির মোটরগাড়ির উল্লেখ রয়েছে ?

উত্তর: গল্পে অস্টিন কোম্পানির মোটরগাড়ির উল্লেখ রয়েছে।



◼️নীচের সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যাভিত্তিক প্রশ্নগুলির উত্তর দাও: 


১. “এই একই প্রশ্ন প্রায় আধ ঘণ্টা ধরে পুনঃপুনঃ আমার মানসপটে উদিত হয়েছে।”—কথকের মনে কোন্ প্রশ্ন কেন বারবার জেগেছিল ?

উত্তর: গল্পের কথক রাঁচি থেকে হুজুর পথে সাইকেলে চড়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু মাঝরাস্তায় তাঁর সাইকেল খারাপ হয়ে যায়। তিনি বুঝতে পারেন না সাইকেল ফেলে তিনি হাঁটা দেবেন, নাকি অপেক্ষা করবেন নাকি রাঁচি ফিরে যাবেন | শেষপর্যন্ত কি এই দীর্ঘ পথ তাঁকে হেঁটেই যেতে হবে? এই প্রশ্নই তখন কথকের মনে বারবার জেগেছিল।


২. “আমার টর্চ বাতিটা জ্বালিয়ে নিয়ে প্রাণপণে ঘোরাতে লাগলাম।”—কথকের এই কাজের পরিণাম কী হয়েছিল ?

উত্তর: শীতের রাতের কুয়াশা এবং চাঁদের আলো ফিকে হয়ে আসা সত্ত্বেও কথকের টর্চের আলো একটি লরির ড্রাইভার দেখতে পেয়েছিলেন, কিন্তু তিনি কথককে সাহায্যদানের বদলে লরি না থামিয়ে মুহূর্তের মধ্যে পথের বাঁকে দূরে অদৃশ্য হয়ে যান। কথকের প্রচেষ্টা এভাবে ব্যর্থ হয়।


 ৩.“সাইকেল ঘাড়ে করে যেতে হলেই হয়েছে।”— লেখকের গন্তব্য কোথায়? সাইকেল ঘাড়ে করে যাওয়ার প্রসঙ্গ এসেছে কেন ?


উত্তর:• লেখকের গন্তব্যস্থল হুডু।

সাইকেল চেপে রাঁচি থেকে হুডু যাওয়ার সময় মাঝরাস্তায় লেখকের সাইকেলের টায়ার ফেঁসে যায়। সেই অবস্থায় সাইকেল চালানো অসম্ভব। এই কারণেই সাইকেল ঘাড়ে করে যাওয়ার প্রসঙ্গটি এসেছে।


৪. “যেখানে বাঘের ভয় সেইখানেই সন্ধে হয়”- প্রবাদটির মর্মার্থ কী? একই ভাব বোঝাতে তুমি আরেকটি প্রবাদ উল্লেখ করো। 

উত্তর: উদ্ধৃত প্রবাদটির মর্মার্থ হল—কোনো বিপদ এড়াতে চাইলেও সেই বিপদের সামনে পড়া। 

• একই ভাব বোঝাতে ব্যবহৃত আরেকটি প্রবাদ হল— একে মা মনসা, তায় ধুনোর গন্ধ । 


৫. “চিরদিনই আমি আশাবাদী”—এই আশাবাদের গুণে লেখক কীভাবে পুরস্কৃত হলেন ?

উত্তর: লেখকের সাইকেলের টায়ার ফেঁসে গিয়েছিল বলে তিনি সন্ধেবেলা রাস্তায় দাঁড়িয়েছিলেন। সেই অবস্থায় ওভাবে দাঁড়িয়ে থাকাটা নিরাপদের নয়। তাই তিনি বিপদ থেকে মুক্তি পেতে যে-কোনো সাহায্যের আশা করছিলেন। কিছুক্ষণ বাদেই একটি বেবি অস্টিন এসে দাঁড়ায় এবং তিনি উঠে বসেন। এভাবেই আশাবাদের গুণে লেখক পুরস্কৃত হন ।

 

৬. গল্প অনুসরণে সেই নির্জন বনপথে লেখকের রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতার কথা নিজের ভাষায় বর্ণনা করো। 

উত্তর: ছুডু যাবেন বলে গল্পের কথক একদিন সাইকেল চেপে বের হন। মাঝরাস্তায় তাঁর সাইকেলের টায়ার ফেঁসে যায়। বাকিটা পথ তিনি কীভাবে যাবেন তারই চিন্তা করতে আমি থাকেন। এমন সময় একটি ছোটো গাড়ি তার সামনে এসে পাড়ায় । কথক এই অপ্রত্যাশিত সাহায্য লাভ করে গাড়িতে চড়ে বসলেও বুঝতে পারেন ড্রাইভারের জায়গা একেবারে ফাঁকা— সেখানে কেউ বসে নেই। সেই মুহূর্তে চলন্ত গাড়ি থেকে নেমে পড়াটাও নিরাপদ ছিল না। তাই তিনি অপেক্ষা করতে থাকেন। অবশেষে দু ঘন্টা পথ অতিক্রম করার পর যখন রেললাইন দিয়ে ট্রেন ছুটে আসতে দেখেন তখন কথক উপায় না দেখে গাড়ি থেকে নেমে যান। ট্রেন পেরিয়ে গেলে বুঝতে পারেন গাড়িটি অক্ষতই আছে। শুধু তাই নয়, একজন ভদ্রলোক গাড়ির পেছন থেকে সামনে এসে কথককে বিকল মোটরগাড়িখানা ঠেলতে অনুরোধ করেন।


৭. “বাঘের দৃষ্টিভঙ্গি ওরকম উদার হতে পারে না।”— কোন্ উদার দৃষ্টিভঙ্গির কথা বলা হয়েছে? লেখকের কাছে সেই 'দৃষ্টিভলি' কতটা উদারতা নিয়ে এসেছিল, তা বুঝিয়ে দাও ।

উত্তর: গল্পের কথক দুটি হলদে রঙের চোখকে চারপাশের কুয়াশা ভেদ করে আসতে দেখেন । তিনি প্রথমে ভাবেন বাঘ আসছে হয়তো। কিন্তু চিন্তা করে বুঝতে পারেন বাঘের দৃষ্টির মধ্যে এক ধরনের হিংস্রতা রয়েছে, যা হলুদ রঙের আলোর মধ্যে ধরা দেয়নি। পরে তিনি বুঝতে পারেন ও দুটি আসলে মোটরগাড়ির হেডলাইটের আলো।

• গল্পের কথক মোটরগাড়ি দেখে উঠে পড়েছিলেন বটে, কিন্তু তাঁর যাত্রা সুখের হয়নি। গাড়িতে চড়ামাত্র তিনি দেখেছিলেন ড্রাইভিং সিটে কেউ বসে নেই, গাড়ির ইঞ্জিনও দেখা যাচ্ছে না। সবমিলিয়ে সেই দৃষ্টিভঙ্গি' শেষ পর্যন্ত কোনো উদারতা নয়, বরং একটি ভূতুড়ে অভিজ্ঞতা নিয়ে এসেছিল।


৮. “এই হয়তো সশরীরে রাঁচি ফেরার শেষ সুযোগ।”—কোন্ সুযোগের কথা বলা হয়েছে? লেখক কীভাবে সেই সুযোগটাকে কাজে লাগালেন ?

উত্তর: • কথক দূর থেকে একটি বেবি অস্টিন আসতে দেখেন | তিনি বুঝতে পারেন এই গাড়িতে তাঁকে চড়তেই হবে, নইলে এই জনহীন পথে রাত্রিবেলা যে-কোনো সময় বিপদ আসতে পারে। সেই গাড়িতে উঠে রাঁচিতে ফিরে যাওয়ার সুযোগটিকে এখানে 'শেষ সুযোগ' বলা হয়েছে।

• লেখক মন্থর গতিতে চলা গাড়িটিতে উঠে পড়তে মরিয়া হয়ে উঠেছিলেন। হাঁকডাক করবার পরও যখন গাড়িটি দাঁড়ায় না তখন তিনি তার গায়ে গিয়ে পড়েন এবং হ্যান্ডেল খুলে ভেতরে ঢুকে যান। এভাবেই লেখক তাঁর শেষ সুযোগটিকে কাজে লাগান ।


৯. “বে-ড্রাইভার গাড়ি যেমন চলছিল তেমনি চলতে লাগল”—'বে-ড্রাইভার গাড়ি চলার প্রকৃত কারণটি কীভাবে গল্পে উন্মোচিত হল ?

উত্তর: গাড়িতে উঠে বসে লেখক ড্রাইভারকে উদ্দেশ্য করে লালপুরার মোড়ে তাঁকে নামিয়ে দেওয়ার কথা বলতে গিয়েছিলেন। কিন্তু বলতে গিয়ে তাঁর চোখ ঠিকরে বেরিয়ে আসতে চায়, শার্টের কলার যেন আরও পেঁচিয়ে ধরে এবং শরীরে ঘাম দেখা দেয়। কারণ তিনি দেখেন গাড়িটি চালকবিহীনভাবে চলছে এবং তার ইঞ্জিনও নেই। পরে কোনোভাবে গাড়ি থেকে বাইরে বেরিয়ে এসে তিনি বুঝতে পারেন গাড়িটি হয়তো একজন কেউ ঠেলছিল । কারণ এক ভদ্রলোক মোটরগাড়ির পেছন থেকে সামনে এগিয়ে এসে গাড়িটি ঠেলবার অনুরোধ জানান। এভাবেই 'বে-ড্রাইভার গাড়ি' চলার প্রকৃত কারণটি উন্মোচিত হয় |


১০. “এবারও আমার আলস্যই জয়ী হল শেষটায়।”- গল্প অনুসরণে লেখকের উৎকণ্ঠা, আলস্য কর্মতৎপরতার দৃষ্টান্ত দাও ৷

উত্তর: • লেখকের উৎকণ্ঠা: ‘এই ঝাপসা আলো আর কুয়াশার মধ্যে সাইকেল টেনে পাক্কা সাত মাইলের ধাক্কা। —ভাবতেই আমার বুকটা দুর দুর করতে থাকে।'

• আলস্য: ‘...হেঁটে যাওয়ার চেয়ে বসে যাওয়ার আরাম বেশি বিবেচনা করে প্রাণের মায়া ছেড়ে দিয়ে সেই ভূতুড়ে গাড়িকেই আশ্রয় করে রইলাম।'

• কর্মতৎপরতা: ‘অগত্যা, আগায়মান গাড়ির গায়ে গিয়ে পড়লাম। দরজার হ্যান্ডেল ঘুরিয়ে ঢুকে পড়লাম ভেতরে | চলন্ত গাড়িতে ওঠা সহজ নয়, নিরাপদও না; কিন্তু কী করব, এক মিনিটও সময় নষ্ট করার ছিল না।”



No comments:

Post a Comment