1. 'স্কুলে কী বিভীষিকাই যে ছিলেন'-স্কুলে বিভীষিকা ছিলেন-
i. মাস্টারমশাই।
ii. ভদ্রলোক।
iii. সুকুমার।
iv. কর্তৃপক্ষ।
উত্তরঃ ভদ্রলোক।
2. বিভীষিকাপূর্ণ এই মাস্টারমশাই স্কুলে যে বিষয় পড়াতেন, তা হল-
i. বাংলা।
ii. ইতিহাস।
iii. রসায়ন।
iv. গণিত।
উত্তরঃ গণিত।
3. 'একবার মাত্র তাকিয়ে দেখতেন তার দিকে, তারপরেই এগিয়ে যেতেন'-মাস্টারমশাই এগিয়ে যেতেন-
i. ব্ল্যাকবোর্ডের দিকে।
ii. সুকুমারের দিকে।
iii. ক্লাসরুমের দিকে।
iv. পরীক্ষার হলের দিকে।
উত্তরঃ ব্ল্যাকবোর্ডের দিকে।
4. খসখস করে ঝড়ের গতিতে এগিয়ে চলত-
i. কলম।
ii. খড়ি।
iii. পেনসিল।
iv. লাঠি।
উত্তরঃ খড়ি।
5. 'হঠাৎ খড়ি ভেঙে গেলে বিরক্ত হয়ে টুকরো দুটো'-
i. টেবিলে ফেলে রাখতেন।
ii. জানলা দিয়ে বাইরে ছুঁড়তেন।
iii. ছাত্রদের দিকে ছুঁড়ে দিতেন।
iv. মেঝেতে ফেলে দিতেন।
উত্তরঃ ছাত্রদের দিকে ছুঁড়ে দিতেন।
6. 'ছবির মতো অঙ্কটা সাজিয়ে দিয়েছেন।' -এই দৃশ্য দেখে ছাত্ররা-
i. রোমাঞ্চিত হত।
ii. বিমর্ষ হত।
iii. বিরক্ত হত।
iv. ভাবলেশহীন হয়ে পড়ত।
উত্তরঃ রোমাঞ্চিত হত।
7. 'পৃথিবীতে যত অঙ্ক ছিল, সব যেন ওঁর মুখস্থ।'-এমন মনে হত-
i. সহকর্মীদের।
ii. সহপাঠীদের।
iii. ছাত্রদের।
iv. প্রধান শিক্ষকের।
উত্তরঃ ছাত্রদের।
8. 'অথচ উনি দেখতে পাচ্ছেন ঠিক'-যা দেখতে পাচ্ছেন, তা হল-
i. দুষ্টু ছেলেটিকে।
ii. যারা পাশের খাতা থেকে দেখছে।
iii. বোর্ডের ওপরের অদৃশ্য অক্ষর।
iv. বোর্ডে আগে থেকে লিখে রাখা আঁকিবুকি।
উত্তরঃ বোর্ডের ওপরের অদৃশ্য অক্ষর।
9. 'ওঁর ভয়ে তারাই তটস্থ হয়ে থাকত।'-এখানে 'তারা' বলতে বোঝানো হয়েছে-
i. অঙ্কে কাঁচা ছিল যারা।
ii. অঙ্কে একশো পেত যারা।
iii. অঙ্কে ফেল করত যারা।
iv. অঙ্কে মাঝারি ছিল যারা।
উত্তরঃ অঙ্কে একশো পেত যারা।
10. 'আমাদের মতো যেসব অঙ্ক-বিশারদের টেনেটুনে ও উঠতে চাইত না,' (শূন্যস্থান পূরণ)
i. দশ।
ii. তিরিশ।
iii. কুড়ি।
iv. চল্লিশ।
উত্তরঃ কুড়ি।
11. প্রকাণ্ড হাতের প্রচণ্ড চড় খেয়ে মাথা-
i. ঘুরে যেত।
ii. ভোঁ ভোঁ করত।
iii. ফেটে যেত।
iv. কেটে যেত।
উত্তরঃ ঘুরে যেত।
12. 'প্রচণ্ড চড় খেয়ে মাথা ঘুরে যেত'-মাথা ঘুরে গেলেও-
i. কৌতূহল থাকা চলত না।
ii. লোককে জানানো যেত না।
iii. কাঁদবার জো ছিল না।
iv. অহেতুক তাড়না দেওয়া যেত না।
উত্তরঃ কাঁদবার জো ছিল না।
13. চোখে এক ফোঁটা জল দেখলেই বলতেন-
i. "ক্লাস থেকে বেরিয়ে যাও।"
ii. "কান ধরে দাঁড়িয়ে থাকো।"
iii. "দশটা অঙ্ক করে আনো।"
iv. "পা ধরে স্কুলের পুকুরে ছুঁড়ে ফেলে দেব।”
উত্তরঃ "পা ধরে স্কুলের পুকুরে ছুঁড়ে ফেলে দেব।”
14. 'কাঁদবার জো ছিল না।'-এমন ঘটার কারণ-
i. কাঁদলে সবাই হাসত।
ii. কাঁদলে অভিভাবকদের ডাকা হত।
iii. কাঁদলে মাস্টারমশাই আরও ক্ষেপে যেতেন।
iv. কাঁদলে আরও অঙ্ক কষতে হত।
উত্তরঃ কাঁদলে মাস্টারমশাই আরও ক্ষেপে যেতেন।
15. মাস্টারমশাইয়ের পক্ষে সবচেয়ে বড়ো অঘটন ছিল-
i. পুরুষমানুষ হয়ে অঙ্ক না পারা।
ii. অঙ্ক না পারা।
iii. খেলতে না পারা।
iv. কাঁদতে না পারা।
উত্তরঃ পুরুষমানুষ হয়ে অঙ্ক না পারা।
16. 'এমন অঘটন কল্পনাও করতে পারতেন না মাস্টারমশাই' -মাস্টারমশাই কল্পনা করতে পারতেন না যে-
i. ছেলেদের অঙ্ক মুখস্থ নেই।
ii. পুরুষমানুষ হয়ে অঙ্ক পারে না।
iii.জ্যামিতির এক্সট্রা কষতে হবে।
iv. একটা অঙ্কও আমার মিলছে না।
উত্তরঃ পুরুষমানুষ হয়ে অঙ্ক পারে না।
17. 'প্লেটোর দোরগোড়ায় কী লেখা ছিল, জানিস?'-প্লেটোর দোরগোড়ায় লেখা ছিল-
i. "সেখানে রাজোচিত সংবর্ধনা পাওয়া যাবে।"
ii. "বাংলাদেশের কলেজে বক্তৃতা দিতে হবে।”
iii. "স্মৃতির দিকে তাকাবার অবসর নেই।"
iv. যে "যে অঙ্ক জানে না-এখানে তার প্রবেশ নিষেধ।"
উত্তরঃ যে "যে অঙ্ক জানে না-এখানে তার প্রবেশ নিষেধ।"
18. মাস্টারমশাইয়ের মতে, স্বর্গের দরজায় লেখা রয়েছে-
i. "যে অঙ্ক জানে-তার প্রবেশ নিষেধ।"
ii. "যে অঙ্ক জানে না-তার প্রবেশ মঞ্জুর।"
iii. "যে অঙ্ক জানে না-এখানে তার প্রবেশ নিষেধ।"
iv. কোনোটিই নয়।
উত্তরঃ "যে অঙ্ক জানে না-এখানে তার প্রবেশ নিষেধ।"
19. সে স্বর্গের চাইতে লক্ষ যোজন দূরে থাকাই নিরাপদ, কেননা সেই স্বর্গে-
i. পড়াশোনার জ্বালাতন খুব বেশি।
ii. জ্যামিতির এক্সট্রা বা স্কোয়ার মেজারের অঙ্ক কষার সম্ভাবনা আছে।
iii. সব ভাষা জানতে হয়।
iv. কোনোটিই নয়।
উত্তরঃ জ্যামিতির এক্সট্রা বা স্কোয়ার মেজারের অঙ্ক কষার সম্ভাবনা আছে।
20. 'কিন্তু (শূন্যস্থান পূরণ) সেই বিভীষিকা মন থেকে গেল না।
i. বাংলার।
ii. হিন্দির।
iii. ইংরেজির।
iv. অঙ্কের।
উত্তরঃ অঙ্কের।
21. 'পরীক্ষার লাস্ট বেল পড়ো-পড়ো, অথচ'-
i. একটা অঙ্কও মিলছে না।
ii. মাস্টারমশাই গার্ড হয়ে দাঁড়িয়ে আছেন।
iii. মাস্টারমশাইয়ের দু-চোখ দিয়ে আগুন ঝরছে।
iv. আগের সব কয়টিই।
উত্তরঃ একটা অঙ্কও মিলছে না।
22. 'ঘামে নেয়ে আমি জেগে উঠেছি।'-কারণ-
i. প্রচন্ড গরম।
ii. পরীক্ষার উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা।
iii. অঙ্কের বিভীষিকায় ভয়ানক স্বপ্ন দেখেছেন।
iv. বাইরে কেউ ডাকছে।
উত্তরঃ অঙ্কের বিভীষিকায় ভয়ানক স্বপ্ন দেখেছেন।
23. 'আর আমাকে স্কুলে অঙ্ক কষতে হয় না, আমি কলেজে ----- ।' (শূন্যস্থান পূরণ)
i. বাংলা পড়াই।
ii. চাকরি করি।
iii. যাই না।
iv. যাবই।
উত্তরঃ বাংলা পড়াই।
24. কিন্তু পত্রিকা কর্তৃপক্ষ গল্পের কথককে ছাড়লেন না, কারণ-
i. তিনি স্বনামধন্য লেখক।
ii. তিনি সব পত্রিকায় লিখে থাকেন।
iii. বড়ো লেখকদের কাছে তারা তেমন গুরুত্ব পাননি।
iv. কর্তৃপক্ষের লোকেরা কাউকে ধরলে ছাড়েন না।
উত্তরঃ বড়ো লেখকদের কাছে তারা তেমন গুরুত্ব পাননি।
25. লেখকের আত্মকথা কারো কাছে স্পর্ধার মতো মনে হবে না, কারণ তাঁর বিশ্বাস ছিল-
i. কর্তৃপক্ষ সহৃদয়তার সঙ্গে ব্যাপারটি ভাববেন।
ii. লেখার কৌশলে তা পাঠকের চোখে পড়বে না।
iii. পত্রিকার পাঠকসংখ্যা খুবই সীমিত।
iv. পত্রিকাটি বাংলায় পাওয়া যেত না।
উত্তরঃ পত্রিকার পাঠকসংখ্যা খুবই সীমিত।
26. 'ওটা প্রীতির ব্যাপার, পদমর্যাদার নয়।'-লেখকের কাছে প্রীতির ব্যাপারটি ছিল-
i. পত্রিকার পাঠকসংখ্যা প্রায় নেই বললেই চলে।
ii. পত্রিকা কর্তৃপক্ষ লেখকের অত্যন্ত সুপরিচিত।
iii. নিজের মাস্টারমশাইয়ের প্রশস্তি কাহিনি।
iv. কয়েকটি ঘরোয়া মানুষের কাছে ঘরোয়া গল্প বলার ইচ্ছা।
উত্তরঃ কয়েকটি ঘরোয়া মানুষের কাছে ঘরোয়া গল্প বলার ইচ্ছা।
27. 'ছবি যা ফুটল, তা খুব উজ্জ্বল নয়।'-এখানে কার ছবির কথা বলা হয়েছে?
i. অঙ্কের মাস্টারমশাইয়ের ভাবমূর্তি।
ii. কথকের ভাবমূর্তি।
iii. লেখকের ছবি।
iv. হেড মাস্টারমশাইয়ের ছবি।
উত্তরঃ অঙ্কের মাস্টারমশাইয়ের ভাবমূর্তি।
28. 'ছবি যা ফুটল, তা খুব উজ্জ্বল নয়'-ছবি উজ্জ্বল না হওয়ার কারণ-
i. কবিস্মৃতি।
ii. কর্তৃপক্ষের নির্দেশ।
iii. উদ্দিষ্ট ব্যক্তির রাগ-ক্ষোভ-শাসন-পীড়নের প্রতি কটাক্ষ।
iv. বিষয়ের প্রতি লেখকের অনীহা।
উত্তরঃ উদ্দিষ্ট ব্যক্তির রাগ-ক্ষোভ-শাসন-পীড়নের প্রতি কটাক্ষ
29. লেখক তাঁর গল্পে কল্পনার খাদের সঙ্গে বর্ষণ করেছিলেন-
i. জ্ঞান।।
ii. রসিকতা।
iii. নীতিবাক্য।
iv. সদুপদেশ।
উত্তরঃ সদুপদেশ।
30. 'মূল কথাটা এই ছিল,-অহেতুক তাড়না করে কাউকে'-
i. বোঝানো যায় না।
ii. শিক্ষা দেওয়া যায় না।
iii. শেখানো যায় না।
iv. পাওয়া যায় না।
উত্তরঃ শিক্ষা দেওয়া যায় না।
❐ কমবেশি ১৫টি শব্দের মধ্যে উত্তর দাও:
1. স্কুলে কে বিভীষিকা ছিলেন?
উত্তরঃ গল্পের কথক সুকুমারের স্কুলে বিভীষিকা ছিলেন তার অঙ্কের মাস্টারমশাই।
2. ঘণ্টার পর ঘণ্টা কী নিয়ে পন্ডশ্রম করত ছেলেরা?
উত্তরঃ ঘণ্টার পর ঘণ্টা স্কুলের ছেলেরা জটিল অঙ্ক নিয়ে পণ্ডশ্রম করত।
3. 'ঝড়ের গতিতে এগিয়ে চলতো খড়ি।'-কখন এমন ঘটত?
উত্তরঃ ছেলেরা জটিল অঙ্ক নিয়ে নাজেহাল হলে মাস্টারমশাই ব্ল্যাকবোর্ডে খড়ি দিয়ে ঝড়ের গতিতে তা কষে দিতেন।
4. খড়ি ভেঙে গেলে মাস্টারমশাই কী করতেন?
উত্তরঃ হঠাৎ খড়ি ভেঙে গেলে অঙ্কের মাস্টারমশাই বিরক্ত হয়ে তা ছাত্রদের দিকে ছুঁড়ে দিতেন।
5. 'আমরা রোমাঞ্চিত হয়ে দেখতুম'-কী দেখার কথা বলা হয়েছে?
উত্তরঃ যে-কোনো জটিল অঙ্ক অনায়াসে মাস্টারমশাই ব্ল্যাকবোর্ডে ছবির মতো সাজিয়ে দিতেন, তা ছাত্ররা রোমাঞ্চিত হয়ে দেখত।
6. পৃথিবীর সব অঙ্ক কার মুখস্থ ছিল?
উত্তরঃ পৃথিবীর সব অঙ্ক গল্পের কথক সুকুমারের অঙ্কের মাস্টারমশাইয়ের যেন মুখস্থ ছিল।
7. অঙ্ক মাস্টারমশাইয়ের পারদর্শিতা দেখে ছাত্রদের কী মনে হত?
উত্তরঃ ছাত্রদের মনে হত ব্ল্যাকবোর্ডে অদৃশ্য অক্ষরে কষা অঙ্কগুলোর উপর মাস্টারমশাই খড়ি বুলিয়ে চলেছেন।
8. 'ওঁর ভয়ে তারাই তটস্থ হয়ে থাকত।'- এখানে 'তারা' বলতে কাদের কথা বলা হয়েছে?
উত্তরঃ এখানে 'তারা' বলতে কথকের স্কুলের সেইসব ছাত্রদের কথা বলা হয়েছে, যারা অঙ্কে একশোয় একশো পায়।
9. গল্পকথক নিজেকে 'অঙ্ক-বিশারদ' বলেছেন কেন?
উত্তরঃ গল্পকথক সুকুমার অঙ্কে মোটেও পারদর্শী ছিলেন না বলে নিজেকে ব্যঙ্গ করে 'অঙ্ক-বিশারদ' বলেছেন।
10. মাস্টারমশাইয়ের ক্লাসে অঙ্কে কাঁচাদের কী পরিণতি হত?
উত্তরঃ অঙ্কে কাঁচা ছাত্রদের মাস্টারমশাইয়ের হাতে চড় খেয়ে মাথা ঘুরে গেলেও কাঁদার উপায় ছিল না। কেননা তাহলে তিনি আরও খেপে যেতেন।
11. 'তা উনি পারতেন।'- 'উনি' কী পারতেন?
উত্তরঃ মাস্টারমশাই অঙ্ক না পারা ছাত্রদের কাঁদতে দেখলে পা ধরে স্কুলের পুকুরে ছুঁড়ে ফেলে দিতে পারবেন।
12. মাস্টারমশাই কী কল্পনা করতে পারতেন না?
উত্তরঃ পুরুষমানুষ হয়ে অঙ্ক পারে না, এমন অঘটন মাস্টারমশাই কল্পনা করতে পারতেন না।
13. প্লেটোর দোরগোড়ায় কী লেখা ছিল?
উত্তরঃ প্লেটোর দোরগোড়ায় লেখা ছিল 'যে অঙ্ক জানে না-এখানে তার প্রবেশ নিষেধ।'
14. কোন্ স্বর্গের থেকে লক্ষ যোজন নিরাপদ দূরত্বে থাকা ছাত্রদের কাছে গ্রহণীয় ছিল?
উত্তরঃ ছাত্রদের মতে, যে স্বর্গে অঙ্ক কষতে হয়, সেই স্বর্গ থেকে দূরে থাকাই ভালো।
15. মাস্টারমশাইয়ের হাত থেকে গল্পকথক কীভাবে রক্ষা পেয়েছিলেন?
উত্তরঃ ম্যাট্রিকুলেশন পাস করে অঙ্ক এবং অঙ্কের মাস্টারমশাইয়ের হাত থেকে গল্পকথক রক্ষা পেয়েছিলেন।
16. 'অঙ্কের সেই বিভীষিকা মন থেকে গেল না।'-এর কারণ কী?
উত্তরঃ অঙ্কের মাস্টারমশাইয়ের শাসন-গর্জন-শাস্তি গল্পকথকের অন্তর্মনে গভীরভাবে চেপে বসায়, তা মন থেকে কখনোই পুরোপুরি মুছে যায়নি।
17. 'এম. এ পাশ করবার পরেও স্বপ্ন দেখেছি,' -কে, কী স্বপ্ন দেখেছেন?
উত্তরঃ গল্পকথক সুকুমার স্বপ্ন দেখতেন পরীক্ষার শেষ ঘণ্টা আসন্ন, তবু অঙ্ক মিলছে না আর মাস্টারমশাই আগুন ঝরা চোখে তাকিয়ে আছেন।
18. স্বপ্নভঙ্গের পর গল্পকথক কী ভেবে আশ্বস্ত হতেন?
উত্তরঃ স্বপ্নভঙ্গের পর গল্পকথক এখন আর তাঁকে স্কুলে অঙ্ক কষতে হয় না ভেবে আশ্বস্ত হতেন।
19. পত্রিকার পক্ষ থেকে কী ফরমাশ এসেছিল? ম
উত্তরঃ গল্পের কথক তথা বাংলার অধ্যাপক সুকুমারের কাছে পত্রিকার পক্ষ থেকে ফরমাশ এসেছিল, ছেলেবেলার গল্প লেখার।
20. পত্রিকা কর্তৃপক্ষের ফরমাশে প্রাথমিকভাবে ৪ কথক রাজি হননি কেন?
উত্তরঃ গল্পকথক সুকুমারের শৈশবে তেমন কোনো উল্লেখযোগ্য ঘটনা নেই বলেই, তিনি কর্তৃপক্ষের ফরমাশে ভরাজি ছিলেন না।
21. কর্তৃপক্ষ সুকুমারকে ছাড়ল না কেন?
উত্তরঃ বাংলা সাহিত্যের প্রথিতযশা লেখকেরা কেউ পত্রিকায় লেখা দিতে রাজি না হওয়ায় কর্তৃপক্ষ সুকুমারকে ছাড়ল না।
22. 'সাহিত্যের ইন্দ্র চন্দ্র মিত্র বরুণেরা'-বলতে এখানে কাদের কথা বলা হয়েছে?
উত্তরঃ 'সাহিত্যের ইন্দ্র চন্দ্র মিত্র বরুণ' বলতে কথক সেই বিশ সময়কার বাংলা সাহিত্যের প্রতিষ্ঠিত এবং প্রথিতযশা লেখকদের কথা বোঝাতে চেয়েছেন।
23. 'তা হলে নির্ভয়ে লিখতে পারি।-কথকের এই নির্ভয়তার কারণ কী?
উত্তরঃ পত্রিকাটির পাঠকসংখ্যা সীমিত আত্মকথা অন্য কারো কাছে স্পর্ধার মনে হবে না, এই ভেবেই তিনি নির্ভয় হয়েছিলেন।
24. 'ওটা প্রীতির ব্যাপার।'-'প্রীতির ব্যাপারটি কী?
উত্তরঃ গুটিকয় পাঠকের কাছে একটি পত্রিকায় নিজের শৈশবের কথা ঘরোয়া ঢঙে বলাকেই কথক 'প্রীতির ব্যাপার' বলে মনে করেছেন।
25. 'লিখলুম তাঁকে নিয়েই।'-এখানে কার কথা বলা হয়েছে?
উত্তরঃ গল্পকথক সুকুমার স্কুলের অঙ্কের মাস্টারমশাইকে নিয়ে গল্পটি লিখেছিলেন, এখানে তাঁর কথাই বলা হয়েছে।
26. গল্পে সুকুমারের লেখা সদুপদেশটি কী ছিল?
উত্তরঃ গল্পে সুকুমারের লেখা সদুপদেশটি ছিল, অহেতুক তাড়না করে কাউকে শিক্ষা দেওয়া যায় না।
27. 'তার প্রমাণ আমি নিজেই।'-তিনি কীসের প্রমাণ?
উত্তরঃ শাসন ও শাস্তির মাধ্যমে যে কাউকে কিছু শেখানো যায় না, গল্পকথক নিজেই এ ঘটনার সবচেয়ে বড়ো প্রমাণ।
28. পত্রিকা-কর্তৃপক্ষ সুকুমারকে কত টাকা দক্ষিণা দিয়েছিল?
উত্তরঃ পত্রিকা-কর্তৃপক্ষ গল্পলেখক সুকুমারকে দশ টাকা সম্মান-দক্ষিণা দিয়েছিল।
29. 'মাস্টারমশাইয়ের কাছ থেকে এইটুকুই আমার নগদ লাভ।'-বলতে বক্তা কী বুঝিয়েছেন?
উত্তরঃ গল্পকথক মাস্টারমশাইকে নিয়ে গল্প লিখে দশ টাকা সাম্মানিক হিসাবে পেয়েছিলেন। একেই তিনি নগদ লাভ বলেছেন।
30. 'ভুলে গেলুম মাস্টারমশাইকেও।'-ভুলে যাওয়ার কারণ কী?
উত্তরঃ মাস্টারমশাইকে নিয়ে লেখা গল্পটি প্রকাশের অনেকদিন পর গল্পকথক স্বাভাবিক নিয়মেই আস্তে আস্তে পুরো বিষয়টি ভুলে গিয়েছিলেন।
31. 'আতিথ্য নিয়ে যেতে হবে ওখানে।-কাকে, কোথায় যেতে হবে?
উত্তরঃ গল্পকথক তথা বাংলার অধ্যাপক সুকুমারকে বাংলাদেশের এক প্রান্তের একটি কলেজের বার্ষিক উৎসবে আতিথ্য নিয়ে যেতে হবে।
32. রাজোচিত সংবর্ধনা কোথায় মেলে?
উত্তরঃ কলকাতা থেকে বাইরে গ্রাম-মফস্সলের কোনো কলেজে আতিথ্যগ্রহণের ডাক এলে রাজোচিত সংবর্ধনা পাওয়া যায়।
33. 'আমাদের মতো নগণ্যের পক্ষে ততই সুখাবহ।'- নগণ্যদের পক্ষে কী সুখাবহ?
উত্তরঃ কলকাতা থেকে দূরে অতিথি হিসেবে যাওয়ার সম্মান-শ্রদ্ধা ও সংবর্ধনার বহর বেশি হওয়ায় নগণ্য অধ্যাপকদের কাছে তা অধিক সুখাবহ।
34. সভায় সুকুমার কেমন বক্তৃতা করেছিলেন?
উত্তরঃ সভায় গল্পকথক ও অধ্যাপক সুকুমার জাঁকিয়ে বক্তৃতা করেছিলেন।
35. গল্পকথকের বক্তৃতাটি কেমন ছিল?
উত্তরঃ গল্পকথক রবীন্দ্রনাথের বারোটি উদ্ধৃতি, বার্নার্ড শ'র নাম করে একটি ইংরেজি কোটেশন-সহ তরুণদের উদ্দেশ্যে এক জ্বালাময়ী বক্তৃতা দেন।
36. গল্পকথকের বক্তব্য শুনে কলেজের বৃদ্ধ প্রিন্সিপালের প্রতিক্রিয়া কী ছিল?
উত্তরঃ মুগ্ধ বৃদ্ধ প্রিন্সিপাল বক্তব্য শুনে বলেছিলেন ভারী চমৎকার, সুমধুর এবং সারগর্ভ বক্তব্য রেখেছেন বক্তা সুকুমার।
37. 'ছেলেরা বিস্ময়ে চোখ কপালে তুলল।'-ছেলেদের বিস্ময়ের কারণ কী?
উত্তরঃ শরীর ভালো না থাকা সত্ত্বেও গল্পকথক সুকুমার এত চমৎকার বক্তব্য রেখেছেন জেনে ছেলেরা বিস্মিত হয়েছিল।
38. 'যদিও মনে মনে জানি।'-বক্তা মনে মনে কী জানতেন?
উত্তরঃ বক্তা সুকুমার জানতেন, রবীন্দ্র জন্মোৎসব থেকে বনমহোৎসব পর্যন্ত এই একটি সর্বার্থসাধক বক্তৃতাই তাঁর একমাত্র কাশের পুরো সম্বল।
39. সুকুমারের মাস্টারমশাই কোথায় দাঁড়িয়ে ছিলেন?
উত্তরঃ সুকুমারের মাস্টারমশাই কলেজের বাইরে মাঠে দাঁড়িয়েছিলেন।
40. 'আচ্ছা চলো, আমি যাচ্ছি।'-এমন বলার কারণ কী?
উত্তরঃ এক বৃদ্ধ ভদ্রলোক বাইরে সুকুমারের সাক্ষাৎ-প্রত্যাশী শুনে, তিনি দাক্ষিণ্য-পুলকিত মনে এমন মন্তব্য করেছিলেন।
41. হলের বাইরে মাঠের অন্ধকার কেমন ছিল?
উত্তরঃ হলের বাইরে মাঠের অন্ধকার ছিল তরল।
42. 'তারপর চোখে পড়ল মানুষটিকে।'-মানুষটি দেখতে কেমন ছিলেন?
উত্তরঃ মানুষটির চেহারা ছিল কুঁজো ও লম্বা এবং মাঠের তরল অন্ধকারেও তাঁর সাদা চুলগুলি চিকমিক করছিল।
43. 'আমার মনটাকে অদ্ভুতভাবে দুলিয়ে দিল।'- মন দুলে উঠেছিল কেন?
উত্তরঃ এক অতিপরিচিত ও আশ্চর্য গলায় লেখকের নাম ধরে কেউ ডাকলে তাঁর মন দুলে উঠেছিল।
44. 'একটা ভয়ের মৃদু শিহরন আমার বুকের ভিতর দিয়ে বয়ে গেল।'- এমন ঘটার কারণ কী বলে তোমার মনে হয়?
উত্তরঃ সুকুমারের অন্তর্মনে মাস্টারমশাই সম্পর্কে আতঙ্ক প্রচ্ছন্ন থাকায় মাস্টারমশাইয়ের গলা শুনে শিহরন বয়ে যায় তাঁর শরীরে।
45. .লুকিয়ে ছিল মনের চোরাকুঠুরিতে-' কী লুকিয়ে ছিল?
উত্তরঃ ছেলেবেলায় অঙ্ক না পারলেই মাস্টারমশাইয়ের কাছে শাস্তি পাওয়ার স্মৃতি লুকিয়ে ছিল গল্পকথক সুকুমারের মনের চোরাকুঠুরিতে।
46. মাস্টারমশাই কেন ছুটে এসেছেন?
উত্তরঃ মাস্টারমশাই সাধারণত বাড়ি থেকে না বেরোলেও আজ তাঁর ছাত্র সুকুমারের বক্তৃতা শুনতে ছুটে এসেছিলেন।
47. মাস্টারমশাই নিজে কীসের ছাত্র ছিলেন?
উত্তরঃ গল্পকথক সুকুমারের অঙ্কের মাস্টারমশাই নিজে বিজ্ঞানের ছাত্র ছিলেন।
❐ কমবেশি ৬০ শব্দের মধ্যে উত্তর দাও :
1. 'স্কুলে কী বিভীষিকাই যে ছিলেন ভদ্রলোক।' ভদ্রলোকটি কে? তাঁকে বিভীষিকা বলা হয়েছে কেন ১+২=৩
উত্তরঃ নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের 'দাম' গল্পে 'ভদ্রলোকটি ঘ হলেন কথক সুকুমারের অঙ্কের মাস্টারমশাই।
অঙ্কের মাস্টারমশাইয়ের বিশ্বাস পুরুষমাত্রেই অঙ্কে পারদর্শী হবে। সেজন্যই তিনি ছাত্রদের অত্যন্ত যত্ন সহকারে অঙ্ক শেখাতেন। মুহূর্তের মধ্যেই জটিল অঙ্কের সমাধান করেি দিতেন তিনি। তবে অঙ্ক না পারলে ছাত্রদের বরাদ্দ ছিল তার ন প্রশস্ত হাতের চড় ও সেই সঙ্গে হুংকার। তাঁর হাতে মার খেয়েও ছাত্রদের কাঁদবার উপায় ছিল না। এভাবেই মাস্টারমশাই ছাত্রদের কাছে বিভীষিকা হয়ে উঠেছিলেন।
2. 'ছবির মতো অঙ্কটা সাজিয়ে দিয়েছেন।' কার কথা বলা হয়েছে? তিনি কীভাবে অঙ্ক করাতেন? ১+২ = ৩
উত্তরঃ উক্তিটিতে সুকুমারের স্কুলের অঙ্কের মাস্টারমশাইয়ের কথা বলা হয়েছে। অঙ্কে পরিষ্কার মাথা ছিল মাস্টারমশাইয়ের। যে-কোনো ধরনের জটিল অঙ্ক একবার মাত্র তাকিয়ে দেখে নিতেন তিনি। তারপরই ব্ল্যাকবোর্ডে খসখস শব্দে ঝড়ের গতিতে এগিয়ে যেত তাঁর খড়ি। খড়ি ভেঙে গেলে টুকরো দুটো ছুঁড়ে দিয়ে আর-একটা নতুন খড়ি হাতে তুলে নিতেন। ছেলেরা রোমাঞ্চিত হয়ে দেখত ছবির মতো অঙ্কটা কষে ব্ল্যাকবোর্ডে সাজিয়ে দিয়েছেন মাস্টারমশাই।
3. 'মুখস্থ বললেও ঠিক হয় না,'-উক্তিটি কার? তার এমন মন্তব্যের কারণ কী? ১+২=৩
উত্তরঃ নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের 'দাম' গল্প থেকে গৃহীত। উক্তিটির বক্তা গল্পকথক সুকুমার।
পৃথিবীতে এমন কোনো জটিল অঙ্ক ছিল না যার সমাধান সুকুমারদের স্কুলের অঙ্কের মাস্টারমশাই জানতেন না। ছেলেদের মনে হত, পৃথিবীর সব অঙ্কই তাঁর মুখস্থ। অথবা ঠিক মুখস্থ নয়। যেন আগে থেকেই অদৃশ্য অক্ষরে ব্ল্যাকবোর্ডে সেগুলি লেখা ও রয়েছে। মাস্টারমশাই শুধু তার উপর খড়ি বুলিয়ে চলেছেন। দিয়ে জটিল অঙ্কে মাস্টারমশাইয়ের অনায়াস দক্ষতা বোঝাতেই সুকুমার এমন মন্তব্য করেছেন।
4. 'ওঁর ভয়ে তারাই তটস্থ হয়ে থাকত' -এখানে 'তারা' বলতে কাদের কথা বলা হয়েছে? তাদের 'তটস্থ' থাকার কারণ কী? ১+২=৩
উত্তরঃ নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের 'দাম' গল্পে কথকের স্কুলে অঙ্কের মাস্টারমশাইয়ের ভয়ে একশোয় একশো পাওয়া ভালো ছাত্ররাও তটস্থ হয়ে থাকত। এখানে 'তারা' বলতে এইসব ভালো ছাত্রদের কথা বলা হয়েছে।
অঙ্কে মাস্টারমশাইয়ের প্রশ্নাতীত পারদর্শিতা ছিল। তিনি যে-কোনো জটিল অঙ্কের অনায়াসে সমাধান করতে পারতেন। কিন্তু অঙ্ক না পারলে তিনি কাউকেই রেয়াত করতেন না। ফলত মাস্টারমশাইয়ের ক্লাসে ভালো ছাত্ররাও 'তটস্থ' হয়ে থাকত।
5. 'তাদের অবস্থা সহজেই কল্পনা করা যেতে পারে।'-কাদের কথা বলা হয়েছে? তাদের অবস্থা কেমন হত? ১+২ = ৩
উত্তরঃ নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের 'দাম' গল্প থেকে উদ্ধৃত অংশে কথকের স্কুলে যেসব ছাত্র কোনোরকমে কুড়ি বা তার কম পেত, তাদের কথা বলা হয়েছে।
অঙ্কে দুর্বল ছেলেদের মাস্টারমশাইয়ের হাতের প্রচণ্ড চড় খেয়েও কাঁদবার উপায় ছিল না। চোখে জল দেখলেই তিনি খেপে গিয়ে পা ধরে স্কুলের পুকুরে ছুঁড়ে ফেলে দেবার ভয় দেখাতেন। কড়া মেজাজের মাস্টারমশাইয়ের পক্ষে কাজটি যে অসম্ভব নয় তা বুঝেই ছেলেরা ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে থাকত।
6. পুরুষমানুষ হয়ে অঙ্ক পারিসনে-তার উপরে কাঁদতে লজ্জা করে না?' -উদ্ধৃতাংশটিতে বক্তার কোন্ মনোভাব প্রকাশ পেয়েছে? ৩
উত্তরঃ উদ্ধৃতাংশটির বস্তা হলেন নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের 'দাম' গল্পের অন্যতম চরিত্র অঙ্কের মাস্টারমশাইয়ের। অঙ্কের প্রতি ছিল তাঁর প্রগাঢ় ভালোবাসা। তিনি ছাত্রদের মধ্যে অঙ্কের প্রতি এরকমই ভালোবাসা ও দক্ষতা প্রত্যাশা করতেন। তাঁর মতে, পৌরুষের প্রতীক হল অঙ্কের উপর অনায়াস দখল। তাই অঙ্ক না পারা ছাত্রদের মাস্টারমশাইয়ের হাতে মার খেয়েও কাঁদার উপায় ছিল না। তাঁর মতে সেটা নাকি পৌরুষের প্রতি অবমাননা।
7. 'তা উনি পারতেন।' -কার, কী পারার কথা বলা হয়েছে?
উত্তরঃ গল্পকথক সুকুমারের স্কুলের অঙ্কের মাস্টারমশাইয়ের অঙ্কের প্রতি প্রগাঢ় ভালোবাসা ও দক্ষতা ছিল। তিনি অনায়াসে | বোর্ডে জটিল অঙ্কের সমাধান করতেন। ছাত্ররা অঙ্ক না পারলে তাদের পিঠে পড়ত প্রশস্ত হাতের প্রচণ্ড চড়। কিন্তু তাতে কাঁদবার উপায় ছিল না। কাঁদলে তিনি তাদের স্কুলের পুকুরে ছুঁড়ে ফেলার ভয় দেখাতেন। মাস্টারমশাইয়ের হাতে চড় খাওয়া ছেলেরা কড়া মেজাজের মাস্টারমশাইয়ের পক্ষে ব্যাপারটা আদৌ অসম্ভব নয় বলেই মনে করত।
8. 'এমন অঘটন কল্পনাও করতে পারতেন না মাস্টারমশাই।'- বলতে লেখক কী বুঝিয়েছেন? ৩
অথবা, 'যে অঙ্ক জানে না- এখানে তার প্রবেশ নিষেধ'-এমন কথা বলার তাৎপর্য কী? ৩
উত্তরঃ নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের 'দাম' গল্পের অঙ্কের মাস্টারমশাইয়ের অঙ্কের প্রতি ছিল প্রগাঢ় শ্রদ্ধা ও জ্ঞান। তাঁর বিশ্বাস ছিল অঙ্কের প্রতি এই ভালোবাসা ও পারদর্শিতা প্রতিটি ছাত্রের থাকা উচিত। ছাত্রদের কাছে তিনি গল্প করেছিলেন, গ্রিক দার্শনিক প্লেটোর নাকি দোরগোড়ায় লেখা থাকত অঙ্ক না-জানাদের প্রবেশ নিষেধ। মাস্টারমশাইয়ের মতে, স্বর্গের দরজায়ও নাকি এমনই লেখা থাকে। আসলে অঙ্কের মাহাত্ম্য ছাত্রদের উপলব্ধি করাতে বক্তার এমন উক্তি।
9. 'লক্ষ যোজন দূরে থাকাই আমরা নিরাপদ বোধ করতুম।'-কাদের কথা বলা হয়েছে? কার কাছ থেকে তাঁরা দূরে থাকতেন? ১+২=৩
উত্তরঃ 'দাম' গল্পে সুকুমার এবং তাঁর বন্ধুরা যাঁরা অঙ্কে খুব দুর্বল ছিলেন এখানে তাঁদের কথা বলা হয়েছে।
মাস্টারমশাই সুকুমারদের বলতেন, যারা অঙ্ক পারে না তাদের জন্য স্বর্গের দরজাও বন্ধ থাকে। সুকুমাররাও ভাবতেন যে স্বর্গে গেলে যদি জটিল জ্যামিতিক সমাধান বা স্কোয়ার মেজারের অঙ্ক কষতে হয়, তবে তেমন স্বর্গে যাওয়ার চেয়ে তার কাছ থেকে দূরে থাকাই তাদের পক্ষে মঙ্গলজনক।
10. এইটুকুই আমার নগদ লাভ।- উদ্ধৃতাংশটির মর্মার্থ লেখো।
উত্তরঃ একটি পত্রিকার দাবি মেনে 'দাম' ছোটোগল্পের কথক সুকুমার ছেলেবেলার স্কুলের অঙ্কের মাস্টারমশাইকে নিয়ে একটি গল্প লিখেছিলেন। অঙ্ক এবং অঙ্কের চেয়েও ভয়াবহ মাস্টারমশাইয়ের কাছ থেকে ছাত্রজীবনে শাসন-পীড়ন এবং প্রহার ছাড়া সুকুমার কিছুই পাননি। আজ তাঁকে নিয়ে গল্প লিখে পত্রিকা কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে তিনি সম্মান-দক্ষিণা হিসাবে দশ টাকা পান। এই সামান্য টাকাকেই রসিকতা করে সুকুমার, মাস্টারমশাইয়ের কাছ থেকে পাওয়া সারাজীবনের একমাত্র নগদ লাভ বলে মনে করেছেন।
11. 'স্মৃতির দিকে তাকাবার অবসর পর্যন্ত মেলে না।-কার কথা বলা হয়েছে? স্মৃতির দিকে তাকাবার অবসর তাঁর নেই কেন? ১+২=৩
উত্তরঃ নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের লেখা 'দাম' গল্প থেকে প্রশ্নে উদ্ধৃত অংশে গল্পকথক সুকুমারের কথা বলা হয়েছে।
যে সময়ের কথা উক্তিটিতে বলা হয়েছে তখন সুকুমারের বয়স অনেক বেড়েছে। প্রথম জীবনে স্কুলের মাস্টারমশাইকে নিয়ে লেখা গল্পের কথাও আর তাঁর মনে নেই। বর্তমান জীবনের দাবি ও অন্যান্য ব্যস্ততা এখন খুব জোরালো হয়ে গেছে সুকুমারের কাছে। তাই ছেলেবেলার, বা প্রথম যৌবনের দিনগুলির দিকে তাকানোর অবসর সুকুমারের ছিল না।
12. এখানকার চড়ুই পাখিও সেখানে রাজহংসের সম্মান পায়।- বলতে বস্তা কী বুঝিয়েছেন? ৩
অথবা, 'আমাদের মতো নগণ্যের পক্ষে ততই সুখাবহ।'- 'নগণ্যের পক্ষে সুখাবহ' ঘটনাটি কী? ৩
উত্তরঃ 'দাম' গল্পের কথক সুকুমার বাংলাদেশের প্রত্যন্ত এক গ্রাম্য কলেজের বার্ষিক উৎসবে আতিথ্য গ্রহণের আমন্ত্রণ প্রসঙ্গে উক্ত মন্তব্যটি করেছেন। কথকের মতে, তাদের মতো নগণ্য ব্যক্তিদের আমন্ত্রণ শহর থেকে যত বেশি দূরে হবে ব্যাপারটা তত বেশি সুখাবহ হবে। কলকাতার স্বনামধন্য মানুষদের মাঝে কদর পাওয়ার চেয়ে গ্রামের মানুষদের কাছে পান্ডিত্য ও খ্যাতি জাহির করা যে স্বাভাবিক সেই ভাব ফুটিয়ে তুলতেই তাঁর এমন মন্তব্য।
13. 'আমি সুযোগটা ছাড়তে পারলুম না। -কোন্ সুযোগের কথা বলা হয়েছে? সুযোগটা তিনি ছাড়তে পারেননি কেন? ১+২ = ৩
উত্তরঃ নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের 'দাম' গল্পে কথক সুকুমারের * বাংলাদেশের প্রান্তীয় কলেজে অতিথি হয়ে যাবার সুযোগের কথা এখানে বলা হয়েছে।
সুকুমারের কাছে যখন বাংলাদেশের প্রান্তীয় কলেজে অতিথি হয়ে যাবার নিমন্ত্রণ এল তখন সেই সুযোগ তিনি ছাড়তে পারেননি। কারণ এইসব জায়গায় যাওয়ার সুবাদেই মেলে সম্মান-শ্রদ্ধা এবং রাজোচিত সংবর্ধনা। আতিথেয়তার উচ্ছ্বাস ও নিজের পান্ডিত্য জাহির করে বক্তৃতা দেবার লোভেই সুকুমার ওই সুযোগ হাতছাড়া করতে চাননি।
14. 'সভায় জাঁকিয়ে বক্তৃতা করা গেল।'-কে বক্তৃতা করেছিলেন? তাঁর বক্তৃতার বিষয় কী ছিল? ১+২=৩
উত্তরঃ নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের 'দাম' গল্প থেকে গৃহীত অংশে বাংলাদেশের প্রান্তীয় অঞ্চলের একটি কলেজের বার্ষিক উৎসবে গল্পকথক অধ্যাপক সুকুমার বক্তৃতা করেছিলেন।
সুকুমারের বক্তৃতায় রবীন্দ্রনাথ থেকে বারোটা উদ্ধৃতি এবং বার্নার্ড শ'র নামে চালিয়ে দেওয়া একটি ইংরেজি কোটেশন ছিল। এ ছাড়া জ্বালাময়ী বক্তৃতার শেষে ছিল দেশের তরুণ ছাত্রদের মানসিকভাবে জাগ্রত করবার আহ্বান।
15. 'এটাকেই এদিক ওদিক করে চালিয়ে দিই'-বক্তার এমন কথা বলার কারণ কী ছিল?
উত্তরঃ মফস্সলের কলেজে গিয়ে বক্তৃতা দেওয়ার সময় মধ্যমেধার সুকুমার রবীন্দ্রনাথ থেকে বারোটি এবং কার একটা ইংরেজি কোটেশন বার্নার্ড শ'র নামে চালিয়ে দিয়েও শেষে তরুণদের জাগ্রত হতে বলে সকলের মন জয় করে নেন। তা শুনে বৃদ্ধ প্রিন্সিপালও আবেগ-বিহ্বল হয়ে পড়েন। আসলে গল্পকথক রবীন্দ্র জন্মোৎসব থেকে বনমহোৎসব যে-কোনো উপলক্ষ্যে একটা বক্তৃতাই এদিক-ওদিক করে চালিয়ে দিতেন। এক্ষেত্রে কথকের স্বগতোক্তির মধ্যে আত্মসমালোচনার সুরটি স্পষ্ট।
16. বাইরে মাঠে দাঁড়িয়ে রয়েছেন।- কার কথা বলা হয়েছে। তিনি বাইরে দাঁড়িয়ে রয়েছেন কেন? ১ + ২ = ৩
উত্তরঃ এখানে সুকুমারের ছেলেবেলার অঙ্কের মাস্টারমশাইয়ের কথা বলা হয়েছে।
ছেলেবেলার সমগ্র স্কুলের বিভীষিকা অঙ্কের মাস্টারমশাই, বর্তমানে অবসর গ্রহণের পর বাংলাদেশের একটি প্রান্তীয় অঞ্চলে এসে বসবাস করতে শুরু করেন। ঘটনাচক্রে সেখানকার একটি কলেজেই তাঁর ছাত্র, বর্তমানে বাংলার অধ্যাপক ও লেখক সুকুমার বক্তৃতা দেবার জন্য এসেছিলেন। তাই সুকুমারের বক্তৃতা শুনে মাস্টারমশাই তাঁর সাক্ষাতের প্রত্যাশায়, কলেজের বাইরের মাঠে দাঁড়িয়ে ছিলেন।
❐ কমবেশি ১৫০ শব্দের মধ্যে উত্তর দাও:
1. 'স্কুলে কী বিভীষিকাই যে ছিলেন ভদ্রলোক। ভদ্রলোকটির চরিত্র সম্পর্কে যা জানো লেখো। ৫ অথবা, 'দাম' গল্প অবলম্বনে মাস্টারমশাইয়ের চরিত্রটি আলোচনা করো। ৫
উত্তরঃ নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের 'দাম' গল্পের অঙ্কের মাস্টারমশাইয়ের মধ্যে খুঁজে পাওয়া যায় চিরকালীন এক শিক্ষককে যিনি শুধুমাত্র ছাত্র মানুষ করার লক্ষ্যে অবিচল থেকে এগিয়ে গেছেন।
অঙ্কে দক্ষ : মাস্টারমশাইয়ের অঙ্কে দক্ষতা ছিল প্রশ্নাতীত। মনে হত তিনি যেন পৃথিবীর সব অঙ্কই জানেন। যে অঙ্ক নিয়ে ছাত্ররা ঘণ্টার পর ঘণ্টা পণ্ডশ্রম করত তা তিনি নিমেষেই করে দিতে পারতেন।
কর্তব্যে কঠোর : এই অঙ্কের মাস্টারমশাই ছিলেন কঠোর শাসক। ছাত্রদের দুর্বল জায়গায় আঘাত করে তাদের শিখনসামর্থ্যকে আরও উন্নত করে তোলাই ছিল তার লক্ষ্য। তার জন্য তিনি কখনও ভয় দেখিয়েছেন, কখনও বা মারতেও দ্বিধা করেননি।
উদারমনা : ছাত্র সুকুমারের সমালোচনামূলক লেখাকে তিনি সরল মনে গ্রহণ করেছেন। তাঁর মতে, তিনি ছাত্রদের শুধু শাসন আর পীড়নই করেছেন তবুও তারা মনে রেখেছে এটাই তাঁর কাছে বড়ো প্রাপ্তি।
সঠিক পদ্ধতি প্রয়োগে অক্ষম: মাস্টারমশাইয়ের সবচেয়ে যেটা অক্ষমতা ছিল তা হল শিখন পদ্ধতিতে। ভীতি প্রদর্শন করে বিষয়ের প্রতি অনুরাগ যে বাড়ানো যায় না এই সরল সত্য থেকে তিনি দূরে থেকেছেন।তবে গল্পের শেষে মাস্টারমশাইয়ের স্নেহ, মায়া, মমতার কাছে আমরা মাথা নত না করে পারি না।
2. 'ছবির মতো অঙ্কটা সাজিয়ে দিয়েছেন। -কার কথা বলা হয়েছে? বক্তার এমন মন্তব্যের কারণ কী?২+৩=৫
উত্তরঃ নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের 'দাম' গল্প থেকে গৃহীত উক্তিটিতে গল্পকথক সুকুমারের ছেলেবেলার স্কুলের অঙ্কের মাস্টারমশাইয়ের কথা বলা হয়েছে।
স্কুলের ছেলেরা যেসব জটিল অঙ্ক নিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাটিয়ে পণ্ডশ্রম করত, মাস্টারমশাইয়ের কাছে সেইসব অঙ্ক ছিল জলের মতো সহজ। তিনি শুধু একবার ওই অঙ্কগুলির দিকে তাকাতেন, তারপর এগিয়ে যেতেন ব্ল্যাকবোর্ডের দিকে। ব্ল্যাকবোর্ডে খসখস শব্দে ঝড়ের গতিতে তাঁর খড়ি এগিয়ে যেত। লিখতে লিখতে খড়ি ভেঙে গেলে তিনি বিরক্ত হয়ে ছেলেদের দিকে সেই ভাঙা খড়িগুলো ছুঁড়ে দিয়ে নতুন খড়ি তুলে নিয়ে আবার এগিয়ে যেতেন বোর্ডের দিকে। ছেলেরা দেখত, কেমন ত ছবির মতো অঙ্কটি তিনি বোর্ডে সাজিয়ে দিয়েছেন।
লেখকের এই কথাগুলি বলার বেশ সংগত কারণ ছিল। তিনি বুঝেছিলেন অঙ্কে মাস্টারমশাইয়ের দক্ষতা তুলনাহীন। তাঁর বুদ্ধিদীপ্ত চোখের ঝক্ককে দৃষ্টিতে অঙ্কের জটিল তত্ত্ব অনায়াসে মা সহজ হয়ে যেত। সেই পদ্ধতিটি মাস্টারমশাই এত অনায়াসে আয়ত্ত করেছিলেন যে ছেলেদের বোঝানোর সময় বোর্ডে কষে ফেলা অঙ্কটিকে ছবির মতোই সুন্দর লাগত। ছেলেরা ভাবত এমন জটিল অঙ্কের এতখানি সরলীকরণ কী করে সম্ভব হয় মাস্টারমশাইয়ের কাছে।
3. 'কাগজ কলম নিয়ে বসে গেলুম।'- কে, কেন কাগজ কলম নিয়ে বসে গিয়েছিলেন বিস্তারিতভাবে মা লেখো।
অথবা, 'লিখলুম তাঁকে নিয়েই।'-উদ্দিষ্ট ব্যক্তিকে নিয়ে বক্তা উভকী লিখেছিলেন আলোচনা করো। ৫
উত্তরঃ 'দাম' গল্পের কথক সুকুমার একটি পত্রিকার পক্ষ হৃদ থেকে গল্প লেখার ফরমাশ পেয়েছিলেন। লেখক হিসেবে সুকুমার ক্ষমত খুব সামান্য একজন মানুষ। কাজেই তাঁর লেখার যে কদর থাকতে পারে এটাই তিনি ভাবেননি। এ ছাড়া বিনয়বশত তিনি অনেকবারই বলেছিলেন, ছেলেবেলার তেমন কোনো স্মরণীয় আত ঘটনা তাঁর জীবনে নেই। তবু পত্রিকার কর্তৃপক্ষ সুকুমারকে ছাড়লেন না। বললেন সারস্বত সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তিরা তাঁদের পত্রিকাকে পাত্তাই দেননি। কাজেই তাঁকে লিখতে হবে। সুকুমার ভাবলেন ওঁরা নিজেরা ছাড়া আর বিশেষ কেউ এর পাঠক নয়। এটা একটা ঘরোয়া ব্যাপার, তাই নির্ভয়েই তিনি তাহলে লিখতে পারেন। নিছক প্রীতির সম্পর্কেই তিনি লেখা দিতে পারেন, পদমর্যাদা বাড়াবার জন্য নয়। কাজেই পত্রিকার গল্পের ফরমাশ মেটাতেই তাঁকে কাগজ-কলম নিয়ে বসতে হয়েছিল। কাগজ-কলম নিয়ে বসে সুকুমারের মনে এসেছিল ছেলেবেলার অঙ্কের মাস্টারমশাইয়ের কথা। তাঁর শাসন-পীড়ন ও ছেলেদের প্রতি কঠোর মনোভাবের কথা। গল্পে সেসবের বিস্তারিত বিবরণ দিয়ে বেশ একটু সদুপদেশও বর্ষণ করেছিলেন সুকুমার। বলেছিলেন, "অহেতুক তাড়না করে কাউকে শিক্ষা দেওয়া যায় না, গাধা পিটিয়ে ঘোড়া করতে গেলে গাধাটাই পণ্যত্ব পায়।" মাস্টারমশাই তাঁকে এত মেরেও অঙ্ক শেখাতে পারেননি। বরং তিনি যেটুকু শিখেছিলেন, তাও ভুলে গেছেন।
4. আমি সুযোগটা ছাড়তে পারলুম না।'-গল্পে উল্লিখিত 'আমি চরিত্রটি সম্পর্কে যা জানো লেখো। ৫
উত্তরঃ নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের 'দাম' গল্পের কথক হলেন সুকুমার।
অঙ্কে ভীতি: অঙ্কের প্রতি সুকুমারের ছিল ভীষণ ভীতি। অঙ্কে তাঁর দুর্বলতা ও মাস্টারমশাইয়ের মূর্তিমান বিভীষিকা তাকে দীর্ঘদিন তাড়া করে বেড়াত।
অধ্যাপনা ও সাহিত্যচর্চা: পরবর্তীকালে সুকুমার কলেজে বাংলা অধ্যাপনার সাথে সাথে লেখালেখিও করতেন। অঙ্কের মাস্টারমশাইকে নিয়ে তিনি একটি গল্প লেখেন।
আত্মসমালোচনা : সুকুমারের আত্মসমালোচনা গুণও প্রশংসার যোগ্য। মফস্সলে তিনি যে বক্তৃতা দিতেন তা যে আবেগসর্বস্ব ও অন্তঃসারশূন্য সে-কথা তিনি অকপটে স্বীকার করেছেন।
শ্রদ্ধাশীলতা: মাস্টারমশাইয়ের সম্পর্কে সমালোচনামূলক লেখা লিখলেও তিনি কিন্তু তাঁর প্রতি শ্রদ্ধাশীল ছিলেন। মাস্টারমশাইয়ের প্রতি আসলে তাঁর ভয়মিশ্রিত শ্রদ্ধা ছিল।
সংবেদনশীলতা: গল্পে যে গুণটি তার চরিত্রকে সবচেয়ে উজ্জ্বল করেছে তা হল তার সংবেদনশীলতা। বৃদ্ধ মাস্টারমশাইয়ের প্রশংসা, আশীর্বাদ, উদারতা, স্নেহ, মমতা ও ক্ষমার মতো মহৎ হৃদয়বৃত্তির সংস্পর্শে এসে সুকুমার আত্মগ্লানি ও অপরাধবোধে ক্ষতবিক্ষত হয়েছেন। যিনি স্নেহ ও মমতার আশ্চর্য গুণে নিন্দাকে শ্রদ্ধা ও বিরূপ সমালোচনাকে অমরত্ব হিসেবে ভাবেন, সেই রকম এক অতুলনীয় ঐশ্বর্যকে দশ টাকায় বিক্রি করে সুকুমারের আত্মদংশন তীব্রতর হয়ে ওঠে। গল্পের শেষে আমরা সুকুমারকে দোষে-গুণে মিশ্রিত এক পূর্ণাঙ্গ মানব চরিত্র রূপে পাই।
5. 'পাশে দাঁড়িয়ে থাকা ছেলেরা বিস্ময়ে চোখ কপালে তুলল।-ছেলেরা কার পাশে দাঁড়িয়েছিল? তাদের বিস্মিত হবার কারণ কী? প্রকৃত সত্যটি কী ছিল? ১+২+২=৫
উত্তরঃ বাংলাদেশের প্রান্তীয় একটি কলেজে বক্তৃতা দিতে এসেছিলেন গল্পকথক সুকুমার। বক্তৃতা শেষে বৃদ্ধ প্রিন্সিপালের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়ের সময় তাঁর পাশে এসে দাঁড়িয়েছিল কলেজের ছাত্ররা।
সুকুমারের বক্তৃতা শুনে সবাই যখন প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়ে উঠেছিল, তখন বিনয় প্রকাশ করে তিনি বলেছিলেন, শরীরটা তেমন ভালো না থাকায় সেদিন মনের মতো করে বলা হল না। এই কথা শোনার পরেই ছেলেরা বিস্ময়ে অভিভূত হয়ে পড়েছিল। তারা ভেবেছিল অসুস্থ শরীরেই সুকুমার তাঁর বক্তৃতায় যে পারদর্শিতা দেখিয়েছেন, শরীর ভালো থাকলে হয়তো প্রলয় হয়ে যেত। সুকুমারের শারীরিক অসুস্থতা জাহির এবং বক্তৃতায় মুগ্ধতাবোধ থেকেই ছাত্ররা বিস্ময় প্রকাশ করেছিল।
শারীরিক অসুস্থতাটি আসলে নিজের পান্ডিত্য জাহির করার একটি কৌশল। সুকুমার খুব ভালো করেই জানতেন রবীন্দ্র জন্মোৎসব থেকে বনমহোৎসব সর্বত্রই এই একটি বক্তব্যই তাঁর সম্বল। নিত্যনতুন স্বকীয় বক্তৃতা দেওয়ার মতো মৌলিকতাও তাঁর ছিল না। নিজের এই খামতি বুঝতে না দিয়ে, সুকুমার শারীরিক অসুস্থতাকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে নিজের সম্পর্কে ছাত্রদের কাছে আরও উচ্চ ধারণা গড়ে তোলার চেষ্টা করেছেন।
6. 'এ অভিজ্ঞতা আগেও হয়েছে।-কোন্ অভিজ্ঞতার কথা বলা হয়েছে? সত্যিকারের কোন্ অভিজ্ঞতা বক্তার হয়েছিল? ১+৪ = ৫
উত্তরঃ নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের 'দাম' গল্পের কথক সুকুমার এর আগেও বহু জায়গায় বক্তৃতা করেছেন এবং অভিনন্দিতও হয়েছেন। এখানে সেই অভিজ্ঞতার কথা বলা হয়েছে।
বাংলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের এক কলেজ থেকে আতিথ্য গ্রহণ করে বক্তৃতা দেবার ডাক এসেছিল সুকুমারের কাছে। তিনি বিনা পয়সায় ভ্রমণ ও আতিথেয়তার উয়তা লাভের লোভে রাজি হন এবং বেশ জাঁকিয়ে বক্তৃতাও দেন সেখানে। সমবেত দর্শকমণ্ডলীর সাথে সাথে বুড়ো প্রিন্সিপাল পর্যন্ত বক্তৃতা শুনে চমকে গিয়েছিলেন জিয়ে য়ের মহৎ বাধে পার্কে সেই বারের সুকুমার যখন উচ্ছ্বাস-প্রশংসায় ভেসে যাচ্ছেন তখনই তার কাছে খবর আসে এক বৃদ্ধ ব্যক্তি তার সাক্ষাৎপ্রার্থী। সুকুমার তার কাছে এসে বুঝতে পারেন তিনি হলেন তার ছোটোবেলার অঙ্কের মাস্টারমশাই, যাকে নিয়ে তিনি গল্প লিখেছেন। সুকুমারের লেখাটি তাঁর কাছে সযত্নে রক্ষিত ছিল। পুত্রসম ছাত্র যখন ভুল শুধরে - দেয় সেটা তার অধিকার এবং বিরুপ সমালোচনা তার অমরত্ব প্রাপ্তি বলে মাস্টারমশাই মনে করেন। স্নেহ-মায়া-মমতায় পরিপূর্ণ এমন ক্ষমাশীল মানুষ সুকুমার আগে কখনও দেখেননি। এহেন মাস্টারমশাইয়ের কঠোর আচরণের সম্পূর্ণ ভুল ব্যাখ্যা করেছিল সুকুমার। তাই লজ্জায়, আত্মগ্লানিতে ও অপরাধবোধে সুকুমার ক্ষতবিক্ষত হন।
7. 'কিছুই দিতে পারিনি, খালি শাসন করেছি, পীড়ন করেছি।'-উক্তিটি কার? কোন্ প্রসঙ্গে বক্তার এমন মন্তব্য লেখো। ১+৪ = ৫
উত্তরঃ উক্তিটি গল্পের কথক সুকুমারের অঙ্কের মাস্টারমশাইয়ের।
বাংলাদেশের একটি প্রান্তীয় কলেজে আমন্ত্রিত অধ্যাপকরূপে বক্তৃতা দিতে গিয়ে ঘটনাচক্রে কথকের সঙ্গে তাঁর ছেলেবেলার অঙ্কের মাস্টারমশাইয়ের দেখা হয়ে যায়। সন্ধের অন্ধকারে প্রৌঢ় সুকুমার বৃদ্ধ মাস্টারমশাইয়ের প্রকৃত স্বরুপটিকে আবিষ্কার করেন। যদিও মাস্টারমশাইয়ের সেই অতিপরিচিত গলার আওয়াজে কথক সুকুমারের বুকে হাড় হিম করা শিহরনের অনুভূতি জাগে, তবে তিনি ক্রমশ টের পান বয়সের ভার শুধু মাস্টারমশাইয়ের শরীরে নয়, মনেও ছাপ ফেলেছে। তাই যে মাস্টারমশাইয়ের বুদ্ধিদীপ্ত চোখে ঝকঝক করত শানিত দৃষ্টি, সেই মানুষটি আজ সুকুমারের অন্তঃসারশূন্য বক্তৃতার ফাঁপা ফানুসে অভিভূত হন। এরপরেই তিনি দেখেন তাঁকে সমালোচনায় বিদ্ধ করে লেখা গল্পটি মাস্টারমশাই সযত্নে আগলে রেখেছেন। কর্তব্যপরায়ণ, ছাত্রদরদি এবং সংবেদনশীল এই মানুষটি অনুশোচনার সুরে স্বীকার করেন শাস্তি ও শাসন ছাড়া তিনি তাঁর স্নেহের ছাত্রদের আর কিছুই দিতে পারেননি। কিন্তু তাঁর কর্মজীবনের ভুল শুধরে দেওয়াকেও মাস্টারমশাই সন্তানতুল্য ছাত্রদের অধিকার বলেই মনে করেছেন। কিন্তু ছাত্র সুকুমারের প্রতি এজন্য তিনি কোনো বিদ্বেষ পোষণ করেননি। স্নেহ-মমতা ও ক্ষমার অপার ঐশ্বর্য নিয়ে প্রাণভরে তাঁকে আশীর্বাদ করেছেন।
8. ছাত্র এবং শিক্ষকের মানবিক সম্পর্কের এক অসামান্য দলিল হিসেবে 'দাম' ছোটোগল্পের সার্থকতা বিচার করো।
উত্তর/ নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের 'দাম' গল্পের মূল উপজীব্য ছাত্র-শিক্ষকের এক মধুর সম্পর্ক। গল্পের কথক সুকুমার। ছোটোবেলায় তাঁর অঙ্কভীতি ছিল। তাঁদের অঙ্কের শিক্ষক ছিলেন বিভীষিকাময়। পুরুষমানুষ অঙ্ক পারে না এ কথা তিনি বিশ্বাস করতেন না। অঙ্ক না পারলে ভাগ্যে মার জুটত কিন্তু তাতে কান্না চলত না। তাঁর শাসন-পীড়ন এতটাই প্রবল ছিল যে মাস্টারমশাইয়ের অঙ্ক শেখানোর সমালোচনা করে কথক একটি গল্পও লেখেন। মাস্টারমশাই ছাত্রের সেই গল্প পড়ে অত্যন্ত যত্ন সহকারে সেটি রেখে দেন।
No comments:
Post a Comment