ইলিয়াস গল্পের প্রশ্ন উত্তর নবম শ্রেণি বাংলা | নবম শ্রেনীর বাংলা প্রশ্ন উত্তর | Class 9th Bangla Iliyas Question and Answers (MCQ, SAQ, DAQ) - Psycho Principal

Fresh Topics

Friday, 4 April 2025

ইলিয়াস গল্পের প্রশ্ন উত্তর নবম শ্রেণি বাংলা | নবম শ্রেনীর বাংলা প্রশ্ন উত্তর | Class 9th Bangla Iliyas Question and Answers (MCQ, SAQ, DAQ)

 

ইলিয়াস
লিও তলস্তয়




👉(দাম গল্পের  প্রশ্ন উত্তর )


❐ ঠিক উত্তরটি বেছে নিয়ে লেখো:

1. 'ইলিয়াস' গল্পটির লেখক-

i. লিও তলস্তয়

ii. দস্তয়ভস্কি

iii. গোগোল

iv. তুর্গেনেভ

উত্তরঃ লিও তলস্তয়



2.  'ইলিয়াস' ছিল এক-

i. মঙ্গোলীয়

ii. কিরগিজ

iii. উজবেক

iv. বাস্কির

উত্তরঃ বাস্কির


3. 'ইলিয়াস নামে একজন বাস্কির বাস করত।'-ইলিয়াস বাস করত-

i. রাশিয়ায়

ii.উফা প্রদেশে

iii.মস্কোয়

iv. ব্রিটেনে

উত্তরঃ উফা প্রদেশে


4. 'যখন তার বাবা মারা গেল তখন সে না ধনী, না দরিদ্র।'-কার কথা বলা হয়েছে?

i.ইলিয়াস

ii. মোল্লা

iii. মহম্মদ শা

iv. শাম-শেমাগি

উত্তরঃ ইলিয়াস


5. বাবা মারা যাওয়ার সময় ইলিয়াসের সম্পত্তির পরিমাণ ছিল-

i. দুটো গোরু, পনেরোটা ভেড়া ও সাতটা ঘোটকী

ii. সাতটা ঘোটকী, একটা গোরু ও কুড়িটা ভেড়া

iii.দুটো গোরু, কুড়িটা ভেড়া, ছয়টি ঘোটকী

iv. সাতটা ঘোটকী, দুটো গোরু ও কুড়িটা ভেড়া

উত্তরঃ সাতটা ঘোটকী, দুটো গোরু ও কুড়িটা ভেড়া


6. 'এই তার যা কিছু বিষয়-সম্পত্তি।'-এখানে যার কথা বলা হয়েছে, সে হল-

i. ইলিয়াস

ii.  মহম্মদ শা

iii. শাম-শেমাগি

iv. অতিথি

উত্তরঃ ইলিয়াস


7. 'পঁয়ত্রিশ বছর পরিশ্রম করে সে প্রচুর সম্পত্তি করে ফেলল।'-ইলিয়াসের সম্পত্তি ছিল-

i.  সাতটা ঘোটকী দুটো গোরু আর কুড়িটা ভেড়া

ii. দুশো ঘোড়া, দেড়শো গোরু-মোষ, আর বারোশো ভেড়া

iii, একশো ঘোড়া, দুশো মোষ, পনেরোশো ভেড়া

iv. তিনটে ঘোটকী, পাঁচটা গোরু, হাজারটা ভেড়া

উত্তরঃ দুশো ঘোড়া, দেড়শো গোরু-মোষ, আর বারোশো ভেড়া


8. ---- বছর পরিশ্রম করে যে প্রচুর সম্পত্তি করে ফেলল।' (শূন্যস্থান পূরণ)

i. তিরিশ

ii. পঁয়ত্রিশ

iii.বত্রিশ

iv. ছত্রিশ

উত্তরঃ পঁয়ত্রিশ


9. ইলিয়াসের ভাড়াটে মজুরানিদের কাজ ছিল-

i. দুধ দোয়া

ii. কুমিস, মাখন ও পনির তৈরি করা

iii. দুধ দোয়া, কুমিস, মাখন ও পনির তৈরি করা

iv. গোরু, ঘোড়ার দেখাশোনা করা

উত্তরঃ দুধ দোয়া, কুমিস, মাখন ও পনির তৈরি করা



10. 'কুমিস' নামক পানীয়টি তৈরি হয়-

i. মোষের দুধ থেকে

ii. ঘোড়ার দুধ থেকে

iii. ভেড়ার দুধ থেকে

iv. গোরুর দুধ থেকে

 উত্তরঃ ঘোড়ার দুধ থেকে


11. 'পাশেপাশের সকলেই তাকে ঈর্ষা করে।'-ঈর্ষা করার কারণ-

i. ইলিয়াস প্রচুর সম্পত্তির মালিক

ii. ইলিয়াসের নামযশ প্রচুর

iii.ইলিয়াসের তখন খুব বোলবোলাও

iv. ইলিয়াস ভাগ্যবান পুরুষ

উত্তরঃ ইলিয়াসের তখন খুব বোলবোলাও


12. ইলিয়াসের বাড়িতে অনেক অতিথি এলে-

i. একটা ভেড়া মারা হত

ii. ঘোটকী মারা হত

iii. দুটো ভেড়া মারা হত

iv. এর কোনোটিই নয়

উত্তরঃ এর কোনোটিই নয়


13. ইলিয়াসের ছিল-

i. দুই ছেলে, এক মেয়ে

ii. দুই মেয়ে, দুই ছেলে

iii. এক ছেলে, এক মেয়ে

iv. তিন মেয়ে, এক ছেলে

উত্তরঃ দুই ছেলে, এক মেয়ে


14. 'কিন্তু বড়লোক হওয়ার পরে তারা আয়েশি হয়ে। উঠল।'-আয়েশি হয়ে উঠেছিল-

i. ইলিয়াসের ছেলেমেয়েরা

ii. অতিথিরা

iii.  মহম্মদ শা ও তার স্ত্রী

iv. ইলিয়াস ও তার স্ত্রী

উত্তরঃ ইলিয়াসের ছেলেমেয়েরা


15. 'তারপর ইলিয়াসের ----- পালে মড়ক লেগে অনেকগুলো মরে গেল।' (শূন্যস্থান পূরণ) 

i.  ঘোড়ার

ii.  ভেড়ার

iii. মোষের

iv. উটের

উত্তরঃ ভেড়ার


16.  'তার সব চাইতে ভালো ঘোড়াগুলো চুরি করে নিয়ে গেল।'-ঘোড়াগুলি চুরি করেছিল-

i. অতিথিরা

ii. ইলিয়াস

iii. ইলিয়াসের বিতাড়িত পুত্র

iv. কিরবিজরা

উত্তরঃ কিরবিজরা


17.  ইলিয়াস কম্বল, ঘোড়ার জিন, তাঁবু এবং গৃহপালিত পশুদের সঙ্গে আর যা বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছিল, তা হল-

i.  মাফলার

ii. চামড়ার জুতো

iii. পশমের কোট

iv. পশমের কালো কোট

 উত্তরঃ পশমের কোট


18. 'দুর্দশার একেবারে চরমে নেমে গেল।'-দুর্দশার চরমে নেমে গেল-

i.  ইলিয়াসের সত্তর বছর বয়সে

ii. যখন ঘরে আত্মীয় সমাগম হল

iii.  যখন গ্রীষ্মকাল

iv. অতিথির কথায়

 উত্তরঃ ইলিয়াসের সত্তর বছর বয়সে


19. 'সে একেবারে সর্বহারা হয়ে পড়ল।'-সর্বহারা হয়েছিল-

i.  আসল অবস্থা বুঝে ওঠবার আগেই

ii.  শরীরের জোর কমে গেলে

iii. বড়ো ছেলে মারা যাওয়ার পর

iv.  মেয়েটি মারা যাওয়ার পর

উত্তরঃ আসল অবস্থা বুঝে ওঠবার আগেই


20. 'সম্বলের মধ্যে রইল শুধু কাঁধে একটা বোঁচকা।'-বোঁচকায় ছিল-

i.  কম্বল, ঘোড়ার জিন, তাঁবু

ii. লোমের তৈরি কোট, টুপি, জুতো আর বুট

iii. চা, কুমিস, মাংস, শরবত

iv. অনেক মূল্যবান জিনিস

উত্তরঃ লোমের তৈরি কোট, টুপি, জুতো আর বুট


21. ইলিয়াসের বৃদ্ধা স্ত্রীর নাম ছিল-

i.  শাম-সোহাগি

ii. গিন্নি

iii. শাম-শেমাগি

iv. শাম-দেমাকি

 উত্তরঃ শাম-শেমাগি


22. ইলিয়াসের কথা ভেবে মহম্মদ শায়ের দুঃখের কারণ ছিল তার-

i.  সত্যনিষ্ঠা

ii.  ভালোবাসা

iii.  অতিথি-বাৎসল্য ও ভালোবাসা

iv.  কোনোটিই নয়

উত্তরঃ অতিথি-বাৎসল্য ও ভালোবাসা


23.  'ইলিয়াস, তুমি আমার বাড়ি এসে আমার সঙ্গে থাকো।'-এ কথা বলেছিল-

i.  শাম-শেমাগি

ii.  অতিথি

iii.  মোল্লা

iv. মহম্মদ শা

উত্তরঃ মহম্মদ শা


24. মহম্মদ শা-র বাড়িতে ইলিয়াসের কাজ ছিল-

i.  গরমে তরমুজের খেতে আর শীতে আলুর খেতে 

ii. গরমে ধানের খেতে আর শীতে গোরু-ঘোড়াদের খাওয়ানো

iii.  গরমে তরমুজের খেতে আর শীতে ভেড়া চরানো 

iv. গরমে তরমুজের খেতে আর শীতে গোরু-ঘোড়াদের খাওয়ানো

উত্তরঃ গরমে তরমুজের খেতে আর শীতে গোরু-ঘোড়াদের খাওয়ানো


25.  ইলিয়াসের স্ত্রী শাম-শেমাগি, মহম্মদ শায়ের বাড়ির-

i.  ঘোটকীদের দুধ দোয় 

ii.  মোষের দুধ দোয়

iii. গোরুর দুধ দোয়

iv. উটের দুধ দোয়

উত্তরঃ ঘোটকীদের দুধ দোয় 


26. 'এ ছাড়া যদি কখনও কিছু লাগে, বলবে তাও দেব।'-এ কথা বলেছিল-

i. ইলিয়াস

ii.  মোল্লা

iii. মহম্মদ শা

iv. অতিথি

উত্তরঃ মহম্মদ শা


27.  'ইলিয়াস প্রতিবেশীকে প্রতিবেশী ছিল-ধন্যবাদ দিল।'-ইলিয়াসের

i. মোল্লা

ii. অতিথিরা

iii. মহম্মদ শা

iv. শাম-শেমাগি

উত্তরঃ মহম্মদ শা


28. ইলিয়াস ও শাম-শেমাগি, মহম্মদ শায়ের বাড়িতে থাকত-

i.  অতিথির মতো

ii. ভাড়াটে মজুরের মতো

iii.  মনিবের মতো

iv.  ছেলে-মেয়ের মতো

উত্তরঃ ভাড়াটে মজুরের মতো


29. ভাড়াটে মজুরের মতো কাজ করতে ইলিয়াসের-

i.  প্রথমে ভালো লাগলেও, পরে কষ্ট হত

ii. খুব কষ্ট হত

iii.  প্রথমে কষ্ট হলেও পরে সয়ে গিয়েছিল

iv.  বেশ আনন্দই লাগত

উত্তরঃ প্রথমে ভালো লাগলেও, পরে কষ্ট হত


30. 'বুড়ো-বুড়িকে রেখে মহম্মদ শা-রও লাভ হল'-কারণ-

i.  সব কাজই তারা ভালোভাবে করতে পারত

ii. তারা নিজেরা একদিন মনিব ছিল

iii. তারা অলস নয়

iv.  তারা সাধ্যমতো কাজকর্ম করত

উত্তরঃ তারা অলস নয়


31. মহম্মদ শায়ের বাড়িতে ইলিয়াস-

i.  প্রচুর পরিশ্রম করত

ii.  শুয়ে-বসে কাটাত

iii. সাধ্য মতো কাজকর্ম করত

iv. ফাঁকি দিত

উত্তরঃ সাধ্য মতো কাজকর্ম করত


32.  'এই সম্পন্ন মানুষ দুটির দুরবস্থা দেখে মহম্মদ শার দুঃখ হত।'- সম্পন্ন মানুষ দুটি হল-

i.  অতিথি ও মোল্লা

ii. মহম্মদ শা ও তার স্ত্রী

iii. ইলিয়াস ও তার স্ত্রী

iv.  ইলিয়াসের দুই ছেলে

উত্তরঃ ইলিয়াস ও তার স্ত্রী


33.  'একদল আত্মীয় অনেক দূর থেকে এসে তার বাড়িতে অতিথি হল।'-আত্মীয় এসেছিল-

i.  মোল্লার কাছে

ii. ইলিয়াসের কাছে,

iii.  ইলিয়াসের মেয়ের কাছে

iv. মহম্মদ শা-র কাছে

উত্তরঃ মহম্মদ শা-র কাছে


34. তাকে দেখতে পেয়ে মহম্মদ শা অতিথিদের বলল-

i.  "আমি তাকে দেখিনি। কিন্তু ওর মধ্যে বিশেষ করে দেখবার কিছু আছে নাকি?"

ii. "যে বুড়ো মানুষটি চলে গেল তাকে আপনারা লক্ষ করেছেন কি?"

iii.  "এক সময় সে এ তল্লাটের সবচেয়ে ধনী ছিল।"

iv.  "লোকটিকে কখনও চোখে দেখিনি।"

উত্তরঃ "যে বুড়ো মানুষটি চলে গেল তাকে আপনারা লক্ষ করেছেন কি?"



❐ কমবেশি ১৫টি শব্দের মধ্যে উত্তর দাও :


1. 'ইলিয়াস' গল্পের রচয়িতা কে? তাঁর বিখ্যাত একটি গ্রন্থের নাম করো।

উত্তরঃবিখ্যাত রাশিয়ান লেখক লিও তলস্তয় 'ইলিয়াস' গল্পের রচয়িতা। তাঁর বিখ্যাত একটি গ্রন্থ হল 'ওয়ার অ্যান্ড পিস'।


2.  ইলিয়াস কে ছিল?

উত্তরঃ উফা প্রদেশে বসবাসকারী বাসকির জনগোষ্ঠীর একজন মানুষ ছিল ইলিয়াস।


3. ইলিয়াসের বাসস্থান কোথায় ছিল?

উত্তরঃ লিও তলস্তয় রচিত 'ইলিয়াস' গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র ইলিয়াসের বাসস্থান ছিল উফা প্রদেশে।


4. ইলিয়াসের বাবা কখন মারা গিয়েছিলেন?

উত্তরঃ লিও তলস্তয় রচিত 'ইলিয়াস' গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র ইলিয়াসের বিয়ের এক বছর পর তার বাবা মারা গিয়েছিলেন।


5.  বাবা মারা যাওয়ার সময় ইলিয়াসের সম্পত্তির পরিমাণ কী ছিল?

উত্তরঃ বাবা মারা যাওয়ার সময় ইলিয়াস সাতটা ঘোটকী, দুটো গোরু আর কুড়িটা ভেড়ার মালিক ছিল।


6.  ইলিয়াসের অবস্থার উন্নতি হয়েছিল কীভাবে?

উত্তরঃ কঠোর পরিশ্রম ও সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনার মাধ্যমে ইলিয়াস এবং শাম-শেমাগি ধীরে ধীরে তাদের অবস্থার উন্নতি ঘটিয়েছিল।


7.  কত বছর পরিশ্রম করে ইলিয়াস প্রচুর সম্পত্তি করেছিল?

উত্তরঃ পঁয়ত্রিশ বছর পরিশ্রম করে ইলিয়াস প্রচুর সম্পত্তি করেছিল।


8. পঁয়ত্রিশ বছর পরে ইলিয়াসের বিষয় সম্পত্তির পরিমাণ কী দাঁড়িয়েছিল?

উত্তরঃ পরিকল্পনা ও পরিশ্রমের জোরে ইলিয়াস শেষ পর্যন্ত দুশো ঘোড়া, দেড়শো গোরু-মোষ আর বারোশো ভেড়ার মালিক হয়েছিল।


9.  ইলিয়াসের ভাড়াটে মজুর ও মজুরানিদের কাজ কী ছিল?

উত্তরঃ ইলিয়াসের ভাড়াটে মজুরেরা গোরু-ঘোড়ার দেখাশোনা করত এবং মজুরানিরা দুধ দুইত কিংবা কুমিস, মাখন কিংবা পনির তৈরি করত।


10. 'কুমিস' কী?

উত্তরঃ ঘোটকীর দুধ থেকে তৈরি একধরনের পানীয় হল 'কুমিস'।


11. ইলিয়াসকে কারা, কেন ঈর্ষা করত?

উত্তরঃ প্রতিবেশীরা ইলিয়াসের ধন-সম্পদ এবং প্রভাব-প্রতিপত্তির কারণে তাকে ঈর্ষা করত।


12.  ইলিয়াস সম্পর্কে প্রতিবেশীদের কী প্রতিক্রিয়া ছিল?

উত্তরঃ প্রতিবেশীরা মনে করত ইলিয়াস অত্যন্ত সৌভাগ্যবান, তাই তাঁর কোনো অভাব নেই, এমনকি তাঁর মরবারও প্রয়োজন নেই।


13. ইলিয়াসের সঙ্গে দূরদূরান্ত থেকে কারা দেখা করতে আসত?

উত্তরঃ সচ্ছল-সম্ভ্রান্ত ইলিয়াসের সঙ্গে দূরদূরান্তের ধনী অতিথিরা দেখা করতে আসত।


14. অতিথিদের প্রতি ইলিয়াসের আচরণ কেমন ছিল?

উত্তরঃ ইলিয়াস কুমিস, চা, শরবত, মাংস প্রভৃতি ভোজ্য ও পানীয় দিয়ে অতিথিদের স্বাগত জানাত।


15. ইলিয়াসের কয়টি সন্তান ছিল?

উত্তরঃ লিও তলস্তয় রচিত 'ইলিয়াস' গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র ইলিয়াসের দুই ছেলে ও একটি মেয়ে ছিল।


16. দরিদ্র ইলিয়াসের ছেলেরা কী করত?

উত্তরঃ দরিদ্র ইলিয়াসের ছেলেরা পশুপালন ও গোরু-ভেড়া চরানোর কাজে তাকে সাহায্য করত।


17.  'কিন্তু বড়োলোক হওয়ার পরে তারা আয়েশি হয়ে উঠল।'-কারা, কেন আয়েশি হয়ে উঠল?

উত্তরঃ  ইলিয়াসের ছেলেরা বড়োলোক হওয়ার পর আয়েশি হয়ে উঠেছিল। কারণ তারা বাবার প্রাচুর্য দেখেছিল।


18.  ইলিয়াসের বড়ো ছেলের কী হয়েছিল?

উত্তরঃ ইলিয়াসের বড়ো ছেলে এক মারামারিতে জড়িয়ে পড়ে মারা যায়।


19.  ইলিয়াস ছোটো ছেলেকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিয়েছিল কেন?

উত্তরঃ ইলিয়াসের ছোটো ছেলে ঝগড়ুটে বউয়ের প্রভাবে বাবাকে অমান্য করতে শুরু করায় ইলিয়াস তাকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিয়েছিল।


20. ইলিয়াসের সম্পত্তিতে টান পড়ল কেন?

উত্তরঃ ইলিয়াস নিজের সম্পত্তি থেকে কিছু গোরু-ঘোড়া এবং একটি বাড়ি ছোটো ছেলেকে দেওয়ায় ইলিয়াসের সম্পত্তিতে 2/ টান পড়েছিল।


21. ইলিয়াসের অবস্থা খারাপ হয়েছিল কেন?

উত্তরঃ ছোটো ছেলেকে সম্পত্তির ভাগ দেওয়া, ভেড়ার মড়ক, দুর্ভিক্ষ এবং কিরবিজদের ঘোড়া চুরির ফলে ইলিয়াসের অবস্থা খারাপ হয়েছিল।


22.  মড়কের ফল কী হয়েছিল?

উত্তরঃ মড়কের ফলে ইলিয়াসের অনেক ভেড়া মারা গিয়েছিল।


23. মড়কের পরেই কী হয়েছিল?

উত্তরঃ মড়কের পরেই ভয়াবহ খাদ্যাভাব বা দুর্ভিক্ষ দেখা দিয়েছিল।


24. গোরু-মোষেদের মারা যাওয়ার কারণ কী?

উত্তরঃ দুর্ভিক্ষের কারণে খড় মজুত করার উপায় না থাকায় শীতে গোরু-মোষেরা না খেতে পেয়ে মারা গিয়েছিল।


25. কিরবিজ' কারা?

উত্তরঃ রাশিয়ার কিরগিজস্তানের উপজাতি শ্রেণির দুর্ধর্ষ দস্যুদলেরা হল কিরবিজ।


26.  কিরবিজেরা কী করেছিল?

উত্তরঃ কিরবিজেরা ইলিয়াসের সবচেয়ে ভালো ঘোড়াগুলি চুরি করে নিয়ে গিয়েছিল।


27.  ইলিয়াসের দুরবস্থা কখন চরমে নেমেছিল?

উত্তরঃ সত্তর বছর বয়সে ইলিয়াস আর্থিক ও শারীরিক ভাবে দুর্বল হয়ে পড়লে সর্বস্ব বিক্রি করে দুর্দশার চরমে পৌঁছোয়।


28. 'তাদের কাজ করে খেতে হত'-কাদের, কেন কাজ করে খেতে হত?

উত্তরঃ ইলিয়াস ও তাঁর স্ত্রীর অবস্থা একেবারে খারাপ হয়ে যাওয়ার জন্যেই তাদের কাজ করে খেতে হত।


29. ইলিয়াসের শেষ সম্বল কী ছিল?

উত্তরঃ ইলিয়াসের শেষ সম্বল ছিল লোমের তৈরি কোট-টুপি-জুতো আর বুট সমেত একটা বোঁচকা।


30.  ইলিয়াসের কাঁধের বোঁচকায় কী কী ছিল?

উত্তরঃ ইলিয়াসের কাঁধের বোঁচকায় ছিল লোমের তৈরি কোট, টুপি, জুতো আর বুট।


31.  ইলিয়াসের সঙ্গী কে ছিল?

উত্তরঃ ইলিয়াসের একমাত্র সঙ্গী ছিল বৃদ্ধা স্ত্রী শাম-শেমাগি।


32.  'তুমি আমার বাড়ি এসে আমার সঙ্গে থাকো'-কে, কাকে এ কথা বলেছে?

উত্তরঃ  ইলিয়াসের এক প্রতিবেশী মহম্মদ শা ইলিয়াসকে উদ্দেশ্য করে এ কথা বলেছে।


33. ইলিয়াসের ছেলেমেয়েদের শেষ পরিণতি কী হয়েছিল?

উত্তরঃ ইলিয়াসের একমাত্র মেয়ে এবং বড়ো ছেলে মারা গিয়েছিল। তার বিতাড়িত ছোটো ছেলে দেশত্যাগী হয়েছিল।


34. মহম্মদ শা-র ইলিয়াসকে দেখে দুঃখ হত-

উত্তরঃ সজ্জন, অতিথিবৎসল ও সম্পন্ন ইলিয়াসের কপর্দকশূন্য অবস্থা দেখে মহম্মদ শা-র দুঃখ হত।


35. মহম্মদ শা কে ছিল?

উত্তরঃ  মহম্মদ শা ছিল ইলিয়াসের এক সজ্জন প্রতিবেশী। কপর্দকশূন্য বৃদ্ধ ইলিয়াস ও তার স্ত্রীকে সে আশ্রয় দিয়েছিল।


36.  মহম্মদ শা ইলিয়াসকে কী বলেছিল?

উত্তরঃ মহম্মদ শা ইলিয়াস ও তার স্ত্রীকে কাজের বিনিময়ে খাওয়া-পরা সহ তার বাড়িতে এসে থাকতে বলেছিল।


37.  মহম্মদ শা-র বাড়িতে ইলিয়াস কী কাজ করত?

উত্তরঃ  মহম্মদ শা-র বাড়িতে ইলিয়াস গরমকালে তরমুজের খেতে কাজ করত এবং শীতকালে গোরু-ঘোড়াদের খাওয়াত।


38. মহম্মদ শা-র বাড়িতে শাম-শেমাগির কাজ কী ছিল?

উত্তরঃ মহম্মদ শা-র বাড়িতে শাম-শেমাগির কাজ ছিল ঘোটকীদের দুধ দোয়া এবং কুমিস তৈরি করা।


39.  মহম্মদ শা-র কীভাবে লাভ হয়েছিল?

উত্তরঃ ইলিয়াস ও শাম-শেমাগির সব কাজের অভিজ্ঞতা থাকায় এবং তারা অলস না হওয়ায় মহম্মদ শা তাদের কাজ নিয়ে লাভবানই হয়েছিল।


40. মহম্মদ শা-র বাড়িতে কারা অতিথি হয়ে এসেছিলেন?

উত্তরঃ অনেক দূর থেকে একদল আত্মীয় মহম্মদ শা-র বাড়িতে অতিথি হয়ে এসেছিলেন। তাঁদের মধ্যে একজন মোল্লাসাহেবও ছিলেন।


41.  'অতিথি সবিস্ময়ে জিভ দিয়ে চুক্-চুক্ শব্দ করল। এমন করার কারণ কী?

উত্তরঃ উফা প্রদেশের একদা সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি ইলিয়াসের ভাড়াটে মজুরে রূপান্তরিত হওয়ার কথা শুনে অতিথি এমন করেছিলেন।


42. অতিথি ইলিয়াসের সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিলেন কেন?

উত্তরঃ প্রাচুর্য ও অভাব-দুটোকেই ইলিয়াস গভীরভাবে দেখায় জীবন সম্পর্কে তার প্রতিক্রিয়া জানাতে অতিথি তার সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিলেন।


43.  মহম্মদ শা কেন ইলিয়াসকে 'বাবাই' বলে সম্বোধন করেছে?

উত্তরঃ  বাস্কিরদের ভাষায় 'বাবাই' শব্দের অর্থ দাদু। বৃদ্ধ ইলিয়াসকে সম্মান ও ভালোবাসা দেখিয়ে মহম্মদ শা এমন সম্বোধন করেছেন।


44.  মহিলাদের সম্পর্কে ইলিয়াসের মনোভাব কী ছিল? 

উত্তরঃ  যে-কোনো বিষয়ে মহিলাদের কপটতাহীন, সোজাসাপটা, সৎ ব্যক্তিসত্তার প্রতি গভীর বিশ্বাসের কথাই ইলিয়াস প্রকাশ করেছে।


45. 'বরং আমার স্ত্রীকে জিজ্ঞাসা করুন।'-কার স্ত্রীকে কে, কী জিজ্ঞাসা করবেন?

উত্তরঃ বৃদ্ধ ইলিয়াসের স্ত্রী শাম-শেমাগিকে অতিথি জিজ্ঞাসা করবেন, সর্বহারা হয়ে পরের বাড়িতে কাজ করে জীবনধারণে তারা সুখী হয়েছে কি না!


46.  'এই হল আমার মনের কথা'-উক্তিটি কার? তার মনের কথাটি কী?

উত্তরঃ উক্তির বস্তা বৃদ্ধ ইলিয়াসের স্ত্রী শাম-শেমাগির মতে, পঞ্চাশ বছর ধরে একত্রে বসবাস করে যখন তারা সর্বহারা তখনই সত্যিকারের সুখের সন্ধান পেয়েছে।


47.  'আর আমরা কিছুই চাই না।'-বলার অর্থ কী?

উত্তরঃ ধন-সম্পদের মায়া-মোহ ত্যাগ করে ইলিয়াস ও শাম-শেমাগি খুঁজে পেয়েছে শান্তি এবং ঈশ্বর-চিন্তার নিশ্চিন্ত অবকাশ। তাই তাদের আর কিছুর প্রয়োজন নেই।


48.  'অতিথিরা বিস্মিত।'-বিস্ময়ের কারণ কী?

উত্তরঃ ধনবান এক মানুষ ও তার স্ত্রী সর্বস্ব হারিয়ে জীবনে প্রকৃত সুখ খুঁজে পেয়েছে জেনে অতিথিরা বিস্মিত হয়েছিলেন।


49. দুশ্চিন্তারও অন্ত ছিল না।'- অতীতে কাদের দুশ্চিন্তার অন্ত ছিল না?

উত্তরঃ  অতীতে ইলিয়াস ও তার স্ত্রীর দুশ্চিন্তার অন্ত ছিল না।


50.  'অতিথিরা হেসে উঠল।'-অতিথিরা হেসে উঠল কেন?

উত্তরঃ  ইলিয়াস ও তার স্ত্রী প্রাচুর্যে থাকার সময় অসুখী থাকলেও নিঃস্ব হয়ে তারা প্রত্যাশিত সুখ পেয়েছে শুনে অতিথিরা হেসে ওঠে।


51.  'এটা তামাশা নয়।'- কার উক্তি?

উত্তরঃ   লিও-তলস্তয়ের 'ইলিয়াস' গল্পে অতিথিদের হাসির প্রত্যুত্তরে ইলিয়াস এই উক্তি করেছিল।


❐ কমবেশি ৬০ শব্দের মধ্যে উত্তর দাও :


1.  'তখন সে না ধনী, না দরিদ্র।'-কোন্ সময়ের কথা বলা হয়েছে? তখন তার প্রকৃত অবস্থা কেমন ছিল?

উত্তরঃ   ইলিয়াসের বিয়ের এক বছর পরেই তার বাবার মৃত্যু হয়। এখানে সেই সময়কার কথাই বলা হয়েছে।

ইলিয়াসের বাবা তাঁর সন্তানের জন্য বিশেষ বিষয়সম্পত্তি রেখে যেতে পারেননি। বাবার মৃত্যুর সময় ইলিয়াস সাতটা ঘোটকী, দুটি গোরু এবং কুড়িটা ভেড়ার মালিক ছিল। অর্থাৎ ইলিয়াসের অবস্থা ছিল অত্যন্ত সাধারণ ও ছাপোষা।


2. 'ফলে প্রতি বছরই তার অবস্থার উন্নতি হতে লাগল।'-কার উন্নতির কথা বলা হয়েছে? কীভাবে তার অবস্থার উন্নতি হয়েছিল লেখো। ১+২=৩

উত্তরঃ   লিও তলস্তয়ের লেখা 'ইলিয়াস' গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র ইলিয়াসের উন্নতির কথা বলা হয়েছে।

□ স্বল্প সচ্ছল ইলিয়াসের বিয়ের এক বছরের মধ্যে যখন তার বাবা মারা যান, তখন তাদের অবস্থা বিশেষ ভালো ছিল না। কিন্তু ইলিয়াস ও তার স্ত্রী কাজের প্রতি নিষ্ঠা ও একাগ্রতা রেখে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত প্রচুর পরিশ্রম করতে থাকে। এইভাবে মাত্র পঁয়ত্রিশ বছর প্রচুর পরিশ্রম করে ইলিয়াস তার অবস্থার উন্নতি করেছিল।


3.  'ইলিয়াসের তখন খুব বোলবোলাও।'-'বোলবোলাও বলতে কী বোঝানো হয়েছে? এর ফল কী হয়েছিল? ১+২=৩

উত্তরঃ  'বোলবোলাও' বলতে প্রতিপত্তি বোঝায়। এক্ষেত্রে ইলিয়াসের যশ-খ্যাতি বা নামডাক হওয়াকে বোঝানো হয়েছে। দীর্ঘ পঁয়ত্রিশ বছর পরিকল্পনা ও কঠোর পরিশ্রমে ইলিয়াস স্বল্প কিছু পশুর মালিক থেকে দুশো ঘোড়া, দেড়শো গোরু-মোষ এবং বারোশো ভেড়ার মালিক হয়। ইলিয়াসের বাড়িতে মজুরেরা এখন গোরু-মোষ দেখাশোনা করে আর মজুরানিরা দুধ দোয়, কুমিস, মাখন, পনির ইত্যাদি তৈরি করে। এভাবেই তার নাম ও প্রভাব-প্রতিপত্তি দূরদূরান্তে ছড়িয়ে পড়ে। প্রতিবেশীরা ঈর্ষান্বিত হয়।


4. 'পাশেপাশের সকলেই তাকে ঈর্ষা করে।'-কে, কাকে ঈর্ষা করে লেখো। ৩

উত্তরঃ  ইলিয়াসের প্রচুর সম্পত্তি দেখে আশেপাশের মানুষেরা তাকে ঈর্ষা করতে শুরু করেছিল। পঁয়ত্রিশ বছর সকাল থেকে রাত পর্যন্ত পরিশ্রম করে ইলিয়াস নিজের দুশো ঘোড়া, দেড়শো গোরু-মোষ আর বারোশো ভেড়া কিনেছিল। ভাড়াটে মজুরেরা তার গোরু-ঘোড়ার দেখাশোনা করত। মজুরানিরা ভেড়ার দুধ দোয়া, কুমিস, মাখন, পনির তৈরি করার কাজগুলি করত। ইলিয়াসের এই প্রভাব-প্রতিপত্তি দেখে আশেপাশের মানুষেরা সব ইলিয়াসকে ঈর্ষা করতে থাকে।


5.  'সকলকেই স্বাগত জানিয়ে সে তাদের ভোজ্য পানীয় দিয়ে সেবা করে।'-'সকলকেই' বলতে কাদের কথা বলা হয়েছে? ইলিয়াসের আতিথেয়তার স্বরূপ কী ছিল? ১+২ = ৩

উত্তরঃ  তলস্তয়ের 'ইলিয়াস' গল্পের উদ্ধৃতাংশে 'সকলকেই' বলতে সেইসব ধনী ও খ্যাতনামা ব্যক্তিদের বোঝানো হয়েছে, যারা ইলিয়াসের ধনসম্পদ বৃদ্ধির সাথে সাথে তার সঙ্গে বন্ধুত্ব করে নিয়মিত দেখা করতে আসতেন।

ইলিয়াস ছিল অতিথিবৎসল। তার বাড়িতে আসা যে-কোনো ব্যক্তির জন্যই ভোজ্য পানীয় চা, কুমিস, শরবত ও মাংসের ব্যবস্থা থাকত। এ ছাড়াও অতিথির সংখ্যা বিচার করে তাদের জন্য ভেড়া বা ঘোটকীর মাংসের ব্যবস্থা করা হত।


6. প্রথমাবস্থায় ইলিয়াসের সাংসারিক অবস্থা থেকে রূপান্তরের পিছনে তার 'ভাগ্যবান পুরুষ' অভিধা কতখানি প্রযোজ্য বলে তুমি মনে কর? ৩

উত্তরঃ  প্রথমাবস্থায় ইলিয়াসের সংসার সচ্ছল ছিল না। বিয়ের এক বছরের মধ্যে তারা বাবা মারা যায়। তখন তার গৃহপালিত পশুর সংখ্যা ছিল হাতে গোনা। ইলিয়াস তার স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে একাগ্রতা, পরিকল্পনা ও কঠোর পরিশ্রমের দ্বারা দীর্ঘ পঁয়ত্রিশ বছরে বিশাল ধনসম্পত্তির মালিক হয়ে ওঠে। সততা, শ্রম ও পরিকল্পনার জেরেই ইলিয়াসের এই বাড়বাড়ন্ত। 'ভাগ্যবান পুরুষ' বলে তাকে ছোটো করার এক অপচেষ্টা।


7. অবস্থাপন্ন ইলিয়াসের সাংসারিক অবস্থা কেমন ছিল? তা কোন্ পথে এগিয়ে চলল? ১ + ২ = ৩

উত্তরঃ   কঠোর পরিশ্রমের জোরে একটু একটু করে গড়ে তোলা ইলিয়াসের সংসারে কোনো কিছুরই অভাব না থাকা সত্ত্বেও ইলিয়াস ও শাম-শেমাগির মনে সুখ ছিল না।

ইলিয়াস প্রাচুর্যের চূড়ায় পৌঁছোলে বৈভব ও ঐশ্বর্য দেখে তার ছেলে দুটি কর্মবিমুখ হয়ে পড়ে। বড়োটি মারামারিতে প্রাণ হারায়। ঝগড়ুটে বউ এনে ছোটোটি সংসারে অশান্তি পাকায়। কন্যাটিরও মৃত্যু হয়। ছোটোটিকে সম্পত্তির ভাগ দিয়ে বিতাড়িত করে শেষ পর্যন্ত ইলিয়াস নিঃসঙ্গতা ও বিপর্যয়ের পথে এগিয়ে চলল।


8. 'ইলিয়াসের বাড়ি থেকে তাদের তাড়িয়ে দেওয়া হল।'-কাদের, কেন বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল? ৩

উত্তরঃ  ছোটো ছেলে ও তার বউকে ইলিয়াস বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিয়েছিল।

ইলিয়াস যখন গরিব ছিল, ছেলেরা তার সঙ্গে সঙ্গে কাজকর্ম করত, গোরু-ভেড়া চরাতে যেত। কিন্তু যতই তাদের অবস্থার উন্নতি হতে লাগল ততই ছেলেরা আরামপ্রিয় হয়ে উঠল। ছোটো ছেলে এমন একজনকে বিয়ে করল যে খুব ঝগড়ুটে। ইলিয়াসের কথা সে একেবারেই শুনত না। বাপের আদেশ অমান্য করতে শুরু করেছিল বলেই ইলিয়াস তাদের বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিয়েছিল।


9.  'সে একেবারে সর্বহারা হয়ে পড়ল।'-কে, কীভাবে সর্বহারা হয়ে পড়ল লেখো। ৩

উত্তরঃ  লিও তলস্তয়ের 'ইলিয়াস' গল্পে স্বয়ং ইলিয়াসের সর্বহারা হওয়ার কথা বলা হয়েছে।

পরিশ্রম ও একাগ্রতাকে সম্বল করে ইলিয়াস ঐশ্বর্যের শিখরে -আরোহণ করেছিল। কিন্তু ছোটোছেলেকে একটা বাড়ি ও কিছু সম্পত্তি দিয়ে বাড়ি ছাড়া করার পর পরই তার ভেড়ার পালে মড়ক লাগা, দুর্ভিক্ষজনিত কারণে শীতে গোরু-মোষ মারা যাওয়া, সর্বোপরি কিরবিজদের হাতে ইলিয়াসের সবচেয়ে ভালো ঘোড়াগুলি চুরি যাওয়াতে, তার সম্পত্তিহানির সাথে সাথে মনোবলও ভেঙে যায়। সে সর্বহারা হয়ে পড়ে।


10.  'বৃদ্ধ দম্পতিকে সাহায্য করবার তখন কেউ নেই।'-এমন কথা বলার কারণ কী? ৩

উত্তরঃ   ইলিয়াস, তার স্ত্রী-পুত্রকন্যা-সহ পরিশ্রম ও একাগ্রতার জোরে যখন ঐশ্বর্যশালী হয়ে ওঠে তখন তার চারপাশে ভিড় করেছিল আত্মীয়, বন্ধুবান্ধব ও অনেক নামকরা লোকজন। কিন্তু তার বড়ো ছেলে ও মেয়ের মৃত্যু, ছোটো ছেলেকে সম্পত্তির ভাগ দিয়ে বাড়িছাড়া করা, মড়ক, দুর্ভিক্ষ ও চুরির ফলে তার পশুর সংখ্যা হ্রাস পাওয়ায় সে নিঃস্ব হয়ে পড়লে ইলিয়াস দম্পতিকে সত্যিই সাহায্য করার কেউ ছিল না।


11. 'ইলিয়াস প্রতিবেশীকে ধন্যবাদ দিল।'-প্রতিবেশীটি কে? তাকে ধন্যবাদ দেওয়ার কারণ কী? ১+২=৩

উত্তরঃ  লিও তলস্তয়ের 'ইলিয়াস' গল্পে প্রতিবেশী বলতে এখানে মহম্মদ শা-র কথা বলা হয়েছে।

একদা সমৃদ্ধিশালী ইলিয়াস ও তার স্ত্রী শেষ বয়সে সর্বহারা, নিঃসঙ্গ হয়ে পড়ে। সেই সময় প্রতিবেশী মহম্মদ শা, সৎ ও অতিথিবৎসল ইলিয়াসের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়। মহম্মদ শা ইলিয়াস ও তার স্ত্রীর থাকা-খাওয়া ও অন্যান্য চাহিদাপূ রণের জন্য যে যে প্রস্তাব দিয়েছিল তাতে খুশি হয়ে ইলিয়াস তাকে কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানায়।


12.  'বুড়ো-বুড়িকে রেখে মহম্মদ শা-রও লাভহল।'- কীভাবে মহম্মদ শা-র লাভ হয়েছিল? ৩

উত্তরঃ  কপর্দকশূন্য বিপদগ্রস্ত ইলিয়াস দম্পতিকে মহম্মদ - শা আশ্রয় দেয়। তারা মহম্মদ শায়ের বাড়িতে ভাড়াটে মজুরের মতো থাকে, কাজকর্ম করে, জীবনধারণ করে। ক্রমশ প্রাথমিক কষ্ট কাটিয়ে উঠে, তাদের এই পরিশ্রম সয়ে যায়। ইলিয়াস ও শাম-শেমাগি কোনোদিনই অলস বা কর্মবিমুখ ছিল না। এ ছাড়া এক সময় দুজনে মনিব থাকায়, তারা সমস্ত কাজ ভালোভাবে করতেও জানত। তাই বুড়ো-বুড়ির আশ্রয়দাতা মহম্মদ শা নিজেও লাভবান হয়েছিল।


13. 'তবু এই সম্পন্ন মানুষ দুটির দুরবস্থা দেখে মহম্মদ শার দুঃখ হত।'-কোন্ দুটি মানুষের কথা বলা হয়েছে? তাদের সম্পন্ন বলার কারণ কী? ১+২=৩

উত্তরঃ   তলস্তয়ের 'ইলিয়াস' গল্প থেকে গৃহীত উদ্ধৃতাংশটিতে - যে দুটি মানুষের দুঃখে মহম্মদ শার দুঃখ হত, তারা হল ইলিয়াস ও তার স্ত্রী।

স্বল্প সচ্ছল ইলিয়াস পরিশ্রম ও একাগ্রতার জোরে প্রচুর ধনসম্পত্তি করে। তখন তার চারপাশে ছিল আত্মীয়-বন্ধুদের ভিড়। কিন্তু বয়সকালে নিঃস্ব ইলিয়াস ও তার স্ত্রীর পাশে কেউই ছিল না। তখন প্রতিবেশী মহম্মদ শা-র বাড়িতে ইলিয়াস দম্পতিকে। মজুরের কাজ করতে হয়। মহম্মদ শা তাদের যথার্থভাবে বুঝেছিলেন বলেই তাদের সম্পন্ন বলেছেন।


14.  'তাঁদের মধ্যে একজন ছিলেন মোল্লা।'-'মোল্লা' কে? তাঁদেরকে কীভাবে আপ্যায়িত করা হয়েছিল? ১+২=৩

উত্তরঃ  'ইলিয়াস' গল্পে মহম্মদ শায়ের বাড়িতে দূর থেকে আগত একদল অতিথির মধ্যে একজন ধর্মপ্রাণ মুসলমান মৌলবি ছিলেন, এখানে তাঁকেই 'মোল্লা' বলে সম্বোধন করা হয়েছে।

অতিথিদের আপ্যায়নের জন্য মহম্মদ শায়ের নির্দেশে ইলিয়াস প্রথমেই সুসিদ্ধ ও সুস্বাদু ভেড়ার মাংস পাঠিয়েছিল। এ ছাড়াও চা, কুমিস, মাখন প্রভৃতি ভোজ্য পানীয় তাঁদের সরবরাহ করা হয়েছিল। ইলিয়াসের তত্ত্বাবধানে লোভনীয় খাবার এবং আরামদায়ক পরিবেশে অতিথিরা অত্যন্ত সহৃদয়তার সঙ্গেই আপ্যায়িত হয়েছিলেন।


15.  'কিন্তু তার সুনাম ছড়িয়েছিল বহুদুর।'-বক্তা কে? 'সুনাম ছড়িয়েছিল বহুদূর' বলতে তিনি কী বুঝিয়েছেন? ১+২=৩

উত্তরঃ   উদ্বৃত্ত অংশটির বক্তা হলেন মহম্মদ শা-র বাড়িতে আগত জনৈক অতিথি।

মহম্মদ শা-র বাড়িতে আগত অভ্যাগতদের কাছ থেকে মহম্মদ শা জানতে চায় ইলিয়াসকে তাঁরা চেনেন কিনা। কেননা ইলিয়াস একসময় উফার সবচেয়ে ধনী ও অতিথিবৎসল ব্যক্তি ছিল। তখন উদ্ধৃত অংশটির বক্তা অতিথি জানায় ইলিয়াসকে তারা চোখে দেখেনি। তবে ধনী ও ভালো মানুষ হিসেবে তার সুনাম বহুদূর পর্যন্ত ছড়িয়েছিল।


16.  'জিভ দিয়ে চুক্ চুক্ শব্দ করল।'-কে করল? এমন প্রতিক্রিয়ার কারণ কী? ১+২=৩

উত্তরঃ  'ইলিয়াস' গল্পে মহম্মদ শা-র বাড়িতে এক ধর্মপ্রাণ মৌলবি-সহ যে অতিথি-অভ্যাগতদের দল এসেছিল, তাঁদের মধ্যে একজন এমন প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছিলেন।

উফা প্রদেশের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি ইলিয়াসের সুনামের সঙ্গে সকলেই পরিচিত ছিলেন। কিন্তু সজ্জন ও অতিথিবৎসল ইলিয়াস দম্পতি অবস্থার বিপাকে পড়ে আজ মহম্মদ শা-র বাড়িতে ভাড়াটে মজুরের কাজ করে। ভাগ্যের পরিহাস এবং • বৃদ্ধ দম্পতির দুর্দশার কথা শুনে উদ্দিষ্ট অতিথি আক্ষেপবাচক উক্ত প্রতিক্রিয়াটি দেখিয়েছিলেন।


❐ কমবেশি ১৫০ শব্দের মধ্যে উত্তর দাও :


1. 'ওর তো মরবারই দরকার নেই।'-কার মরবার দরকার নেই? তার সম্পর্কে এমন মনোভাবের কারণ কী? ১+৪ = ৫

উত্তরঃ  প্রখ্যাত রাশিয়ান লেখক লিও তলস্তয়ের 'ইলিয়াস' নামক গল্প থেকে উদ্ধৃত অংশটি গৃহীত। এক্ষেত্রে গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র ইলিয়াসের মরবার দরকার নেই বলে মনে করত প্রতিবেশীরা।

 রাশিয়ার উফা প্রদেশে বসবাসকারী ইলিয়াসের বিয়ের এক বছরের মধ্যে পিতৃবিয়োগ ঘটে। তখন তার বিষয়-সম্পত্তি বলতে ছিল সাতটা ঘোটকী, দুটো গোরু আর কুড়িটি ভেড়া। ইলিয়াস ও তার স্ত্রী সকাল থেকে রাত পর্যন্ত কাজ করে পরিশ্রম, নিষ্ঠা ও একাগ্রতার জোরে প্রত্যেক বছর উত্তরোত্তর তাদের অবস্থার উন্নতি ঘটাতে থাকে। এইভাবে পঁয়ত্রিশ বছরের পরিশ্রমে ইলিয়াস তার সম্পত্তি প্রচুর পরিমাণে বাড়িয়ে তোলে। তখন তার দুশো ঘোড়া, দেড়শো গোরু-মোষ, আর বারোশো ভেড়া। তার বাড়িতে তখন ভাড়াটে মজুররা গোরু-ঘোড়া দেখাশোনা করে এবং ভাড়াটে মজুরানি কুমিস, মাখন, পনির, ঘি ইত্যাদি তৈরি করে। মোটের উপর তখন তার বেশ প্রভাব-প্রতিপত্তি বাড়তে থাকে, যা প্রতিবেশীদের ঈর্ষার উদ্রেক করতে থাকে। তাই প্রতিবেশীদের কথায়, 'ইলিয়াস তো ভাগ্যবান পুরুষ; কোনো কিছুরই অভাব নেই; ওর তো মরবারই দরকার নেই”।


2. 'ইলিয়াসের সম্পত্তিতে টান পড়ল।-ইলিয়াসের সম্পত্তিতে টান পড়েছিল কেন? সম্পত্তিতে টান পড়লে ইলিয়াসের কী পরিণতি হয় সংক্ষেপে লেখো। ২+৩=৫

উত্তরঃ  মানুষের জীবনে সুঃখ-দুঃখ যে চক্রাকারে আবর্তিত হয়, এ কথা ইলিয়াসের ক্ষেত্রে সর্বৈব সত্য। ইলিয়াস শূন্য থেকে শুরু করে পঁয়ত্রিশ বছরের কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে সম্পদের শিখরে আরোহণ করে। তার প্রাচুর্য প্রতিবেশীদের মনে ঈর্ষা জাগায়। কিন্তু অশান্তির হাত থেকে বাঁচতে ছোটো ছেলেকে বাড়ি-সহ কিছু পশু দিয়ে দেওয়ার কারণে ইলিয়াসের সম্পত্তিতে টান পড়ে।  অর্থের টান পড়লে ইলিয়াস বাধ্য হয়ে তার পশমের কোট, ঘোড়ার, জিন, কম্বল, তাঁবু এবং সবশেষে গৃহপালিত পশুগুলিও বিক্রি করে দেয়। অবশেষে প্রতিবেশী ভালোমানুষ মহম্মদ শা নিঃস্ব ইলিয়াসের অবস্থা দেখে নিজের বাড়িতে ভাড়াটে মজুরের কাজের বিনিময়ে সম্মানজনকভাবে আশ্রয় দেয়। ইলিয়াস দম্পতিও নিজেদের সমস্ত শক্তি তাদের কাজে উজাড় করে দেয় ও বাকি সময়টা ঈশ্বরসাধনায় মগ্ন থাকে।


3. 'সে একেবারে সর্বহারা হয়ে পড়ল।'- কার কথা বলা হয়েছে? তার সর্বহারা হওয়ার কারণ কী? ২+৩= ৫

উত্তরঃ  লিও তলস্তয়ের লেখা 'ইলিয়াস' গল্পের উদ্ধৃতিটিতে গল্পের অন্যতম কেন্দ্রীয় চরিত্র ইলিয়াসের কথা বলা হয়েছে। 

 ইলিয়াসের অবস্থা প্রথম জীবনে খুব একটা সুখের ছিল না। প্রচুর পরিশ্রমের ফলেই তার জীবনে সাফল্য এসেছিল। কিন্তু বড়োলোক হওয়ার পরপরই তার ছেলেরা আয়েশি হয়ে পড়ল। বড়ো ছেলেটি মারামারি করে মারা গেল। ছোটো ছেলেটি কলহপরায়ণ বউ এনে বাপের আদেশ অমান্য করতে শুরু করল। ফলে ইলিয়াস একটা বাড়ি ও কিছু গোরু-ঘোড়া দিয়ে তাদের বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিল। এরপর থেকেই ইলিয়াসের অবস্থা খারাপ হতে শুরু করল। ফলে তার সম্পত্তিতে টান পড়ে। পরের বছরই তার ভেড়ার পালে মড়ক লেগে বেশ কিছু ভেড়া মারা যায়। এর কিছুদিন পরেই দুর্ভিক্ষে খড় না পেয়ে অনেকগুলো গোরু-মোষ মারা যায়। কিরবিজরা সবথেকে ভালো ঘোড়াগুলো চুরি করে নিয়ে যায়। অবস্থা যত খারাপ হতে থাকে ইলিয়াসের শরীরের জোরও কমে যেতে থাকে। ইলিয়াস নিজের পশমের কোট, কম্বল, ঘোড়ার জিন ও গৃহপালিত পশুগুলিকেও বিক্রি করে দিতে বাধ্য হয়। আর্থিক দুর্দশা চরম আকার ধারণ করে বলেই ইলিয়াস সর্বহারা হয়ে পড়েছিল।


4.  'বৃদ্ধ দম্পতিকে সাহায্য করবার তখন কেউ নেই।'-কোন সময়ের কথা বলা হয়েছে? তাদের সাহায্য করবার কেউ নেই কেন? ২+৩=৫

উত্তরঃ   লিও তলস্তয়ের লেখা 'ইলিয়াস' গল্পের অন্যতম। কেন্দ্রীয় চরিত্র ইলিয়াস যখন সত্তরোর্ধ্ব তখন সে সবদিক থেকে নিঃস্ব হয়ে পড়ে। বৃদ্ধা স্ত্রী ছাড়া তার পাশে আর কেউ থাকে না। এখানে সেই সময়ের কথা বলা হয়েছে।

 একাগ্রতা আর কর্মনিষ্ঠাকে পাথেয় করে দীর্ঘ পঁয়ত্রিশ বছর পথ চলার পর ইলিয়াস আর্থিক সচ্ছলতার শিখরে পৌঁছোয়। দুই ছেলে ও মেয়ের বিয়ে দিয়ে তাদের সংসারী করে তোলে। সেসময় ইলিয়াসের চারপাশে অনেক আত্মীয়বন্ধুর ভিড় ছিল। কিন্তু সময়ের ফেরে তার বড়ো ছেলে ও মেয়ে মারা যায়। ছোটোছেলের এক ঝগড়ুটে মেয়ের সাথে বিয়ে হয়। ফলে তার স্ত্রীকে নিয়ে বাড়িতে অশান্তি বাড়তে থাকায় ইলিয়াস সম্পত্তির কিছু অংশ দিয়ে তাকে স্ত্রী-সহ বাড়ি থেকে বের করে দেয়। এরপর মড়কে, দুর্ভিক্ষে ইলিয়াসের বেশ কিছু গবাদি পশু মারা যায়। কিরবিজ দস্যুরা ঘোড়াগুলো চুরি করে নেয়। ফলে ইলিয়াসের আর্থিক অবস্থা খারাপ হয়ে পড়ে। সত্তর বছর বয়সে এসে সে তার শেষ সম্বল পশমের কোট, কম্বল, ঘোড়ার জিন আর অবশিষ্ট পশুগুলোও বেচে দিয়ে কপর্দকশূন্য হয়ে পড়ে। নিঃস্ব ইলিয়াস ও তার স্ত্রীর পাশে সেদিন আর কেউ থাকে না।


5.  ইলিয়াসের অতিথিবৎসলতার কথা স্মরণ করে তার খুব দুঃখ হল।'-কার কথা বলা হয়েছে? গল্পে ইলিয়াসের অতিথিবৎসলতার কী পরিচয় পাওয়া যায়? ১+৪ = ৫

উত্তরঃ  তলস্তয়ের 'ইলিয়াস' গল্প থেকে গৃহীত উক্তিটিতে ইলিয়াসের প্রতিবেশী মহম্মদ শার কথা বলা হয়েছে।

 মধ্যবিত্ত অবস্থা থেকে শুরু করে টানা পঁয়ত্রিশ বছর কঠোর পরিশ্রমের ফলে ইলিয়াস সমৃদ্ধিশালী হয়ে ওঠে। বিত্তবান ও অতিথিবৎসল ইলিয়াসের নাম চারপাশে ছড়িয়ে পড়ে। বহু দূর-দূরান্ত থেকে ভালো ভালো লোক আসে তার কাছে। সেইসব অতিথিদের সঙ্গে অত্যন্ত ভালো ব্যবহার করে ইলিয়াস। সকলকেই সে স্বাগত জানায়। উপযুক্ত ভোজ্য বা পানীয় দিয়ে আপ্যায়ন করে। অতিথি যে সময়েই আসুক না কেন কুমিস, চা. শরবত, মাংস সব সময়ই তাদের আতিথ্যের জন্য মজুত থাকত। অতিথি এলেই ভেড়ার পাল থেকে একটা বা দুটো ভেড়া মারা হয়। অতিথি সংখ্যায় বেশি হলে ঘোটকীও মারা হয়। এতটাই অতিথিবৎসল ছিল ইলিয়াস। ফলে যে সমস্ত মানুষ অতিথি হয়ে কখনও ইলিয়াসের বাড়িতে আসেনি, তারাও অন্যান্য মানুষের মুখ থেকে শোনা গল্পে ইলিয়াসের নাম জানত।


6. 'বুড়ো-বুড়িকে রেখে মহম্মদ শারও লাভহল।'-'বুড়ো-বুড়ি' কে? তাদের রেখে মহম্মদ শা কীভাবে লাভবান হয়েছিল লেখো। ১+৪=৫

উত্তরঃ   তলস্তয়ের লেখা ইলিয়াস গল্পে 'বুড়ো-বুড়ি' বলতে এখানে ইলিয়াস ও তার স্ত্রীকে বোঝানো হয়েছে। ইলিয়াস ও তার স্ত্রীকে নিজের বাড়িতে রেখে মহম্মদ শা ভীষণভাবেই লাভবান হয়েছিল। ইলিয়াসের করুণ অবস্থা দেখে মহম্মদ শার খুব দুঃখ হয়েছিল। সে বলেছিল ইলিয়াস যেন তার স্ত্রীকে নিয়ে তার বাড়িতে এসে থাকে। বয়স ও ক্ষমতায় যদি কুলোয় তাহলে তারা তার তরমুজের খেতে কাজ করবে, শীতকালে গোরু-ঘোড়াগুলোকে খাওয়াবে। তার স্ত্রী ঘোটকীগুলোকে দোহন করে কুমিস, মাখন, পনির তৈরি করতে পারবে। দুজনের খাওয়া-পরার চিন্তা করতে হবে না। এমন একটি পরিস্থিতিতে মহম্মদ শা ইলিয়াস ও তার স্ত্রীকে নিজের বাড়িতে আশ্রয় দিয়েছিল। ইলিয়াস কিন্তু মহম্মদ শার বাড়িতে ভাড়াটে মজুরের মতোই থাকত। প্রথম জীবনে তারা যেমন কষ্ট করে প্রতিষ্ঠা পেয়েছিল তেমনই মহম্মদ শার জন্যও দুজনে একই পরিশ্রম করত। কষ্ট হলেও আস্তে আস্তে অভ্যাস হয়ে গিয়েছিল তাদের সব। ইলিয়াস ও তার স্ত্রী নিজেরা একসময় মনিব ছিল বলে সব কাজই তারা বুঝত। মহম্মদ শা-কে আলাদা করে কিছু ভাবতে হত না। এই কারণেই বুড়ো-বুড়িকে রেখে মহম্মদ শার লাভ হয়েছিল।


7.  'নাম ইলিয়াস। নামটা আপনারা হয়তো শুনে থাকবেন।- ইলিয়াস কে? তার সম্পর্কে যা জান লেখো। ১+৪=৫

উত্তরঃ  লিও তলস্তয়ের লেখা 'ইলিয়াস' গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র হল ইলিয়াস, যিনি ছিলেন রাশিয়ার পার্বত্য অঞ্চল উফা প্রদেশের বাস্কির উপজাতি সম্প্রদায়ের মানুষ।

 নিম্ন মধ্যবিত্ত ইলিয়াস পশুপালনকেই জীবিকা হিসেবে বেছে নিয়েছিল। তার বিয়ের একবছরের মধ্যে তার বাবা যখন মারা যায় তখন তার সম্পদ বলতে সাতটা ঘোটকী, দুটো গোরু আর কুড়িটি ভেড়া। ইলিয়াস ও তার স্ত্রীর চেষ্টায় প্রতি বছরই তাদের পশুপালনের উন্নতি হতে থাকে। এইভাবে ইলিয়াস যেমন তার সম্পদ প্রচুর পরিমাণে বাড়িয়ে তোলে, তেমনি পশুর সংখ্যাও বৃদ্ধি পায়। বৃদ্ধি পায় তার প্রভাব-প্রতিপত্তিও। ভাড়াটে মজুর ও মজুরানি তার পশুদের দেখাশোনা ও পশুজাত সামগ্রী উৎপাদনে সাহায্য করে। বহু লোকের সাথে তার পরিচয় গড়ে ওঠে। বাড়িতে অভ্যাগতদের ভিড় বাড়তে থাকে। কিন্তু ইলিয়াসের বড়োছেলের ও এক মেয়ের মৃত্যু ও ছোটোছেলেকে কিছু সম্পদ-সহ তাড়িয়ে দেওয়ার ফলে এবং দুর্ভিক্ষ, ভেড়ার পালে মড়ক, কিরবিজদের দ্বারা ভালো ঘোড়াগুলো চুরি হওয়া ইত্যাদি ঘটনাগুলো ইলিয়াসের সাম্রাজ্যের ভীত নড়িয়ে দেয়। এরপর শেষ সম্বলটুকু যা ছিল তা বেচে সস্ত্রীকে ইলিয়াস ভাড়াটে মজুর হিসেবে প্রতিবেশী মহম্মদ শার কাছে আশ্রয় পান। ইলিয়াস ও তার স্ত্রী তাকে সাধ্যমতো সাহায্য করে আর বাকি সময় ঈশ্বর সাধনা করে, যা সম্পদের প্রাচুর্যে এতদিন তারা ভুলেছিল।


8.  ভাগ্য যেন চাকার মতো ঘোরে।– উক্তিটি কে, কাকে উদ্দেশ্য করে করেছেন? বক্তার এমন মন্তব্যের কারণ ব্যাখ্যা করো। ১+৪ = ৫

উত্তরঃ লিও তলস্তয়ের লেখা 'ইলিয়াস' গল্প থেকে গৃহীত  উক্তিটি গল্পের অন্যতম পার্শ্বচরিত্র মহম্মদ শায়ের বাড়িতে আগত  জনৈক অতিথির। অতিথি মহম্মদ শা-কে উদ্দেশ্য করে কথাগুলি বলেছেন।  বক্তার এই উক্তি চিরন্তন। ইলিয়াসের ভাগ্যও চক্রাকারে  আবর্তিত হয়েছিল। এই বিড়ম্বিত ভাগ্যের প্রেক্ষিতে বস্তা উদ্ধৃত - উক্তিটি করেছেন। মহম্মদ শায়ের মুখে অতিথি শুনেছিলেন, কর্মের = প্রতি নিষ্ঠা ও একাগ্রতার জোরে ইলিয়াস প্রচুর সম্পত্তি করে। অর্থ -ও প্রভাব-প্রতিপত্তি বাড়ার সাথে সাথে তার বহু দেশ-বিদেশের মানুষের সাথে সম্পর্ক তৈরি হওয়ায় সহৃদয় ইলিয়াসের বাড়িতে - তাদের যাতায়াত বাড়ে। ইলিয়াস তাদের স্বাগত জানাত এবং - নানান ভোজ্য ও পানীয় সহকারে আপ্যায়িত করত। কিন্তু তার জীবনে কিছু দুর্ঘটনা ঘটে যাওয়ায় সে সর্বস্ব হারিয়ে একজন নিঃস্ব ব্যক্তিতে পরিণত হয়। পরবর্তীকালে ইলিয়াসের জীবন অতিবাহিত হয় প্রতিবেশী মহম্মদ শায়ের বাড়িতে ভাড়াটে মজুর হিসেবে। এই পরিস্থিতিকেই অতিথি ভাগ্যের চাকার সাথে তুলনা করেছেন। মানুষের জীবনে সৌভাগ্যবলে যেমন উত্থান ঘটে তেমনি আবার ট্র্যাজিক পতনও ঘটে। ইলিয়াসের সারাজীবনের ঘটনাধারা মহম্মদ শায়ের কাছে শুনে বক্তা নিজের উপলব্ধি থেকে এমন মন্তব্য করেছেন।


9. এসো- আমাদের সঙ্গে একটু কুমিস পান করবে।'-বক্তা কে? তিনি কাদের আসতে অনুরোধ করেছেন? বক্তার চরিত্রের কয়েকটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করো। ১ + ১ + ৩ = ৫

উত্তরঃ  উদ্ধৃত অংশটির বস্তা হলেন লিও তলস্তয়ের লেখা 'ইলিয়াস' গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র ইলিয়াসের সহৃদয় প্রতিবেশী মহম্মদ শা।

 ইলিয়াসের প্রতিবেশী মহম্মদ শা ইলিয়াস দম্পতিকে তাদের সাথে আড্ডায় যোগ দিতে ও কুমিস পান করতে অনুরোধ করে।  'ইলিয়াস' গল্পের অন্যতম পার্শ্বচরিত্র অর্থাৎ গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র ইলিয়াসের প্রতিবেশী ও অন্য অর্থে প্রভু হিসেবেও আমরা দেখতে পাই মহম্মদশা-কে। স্বল্প পরিসরে উপস্থিত থেকেও গল্পে মহম্মদ শা সহজেই পাঠকের মন জয় করে নিয়েছে। অবক্ষয়িত সমাজে মহম্মদ শা একজন দৃষ্টান্ত। সে এমন কিছু ধনী ছিল না; তবুও সর্বস্ব হারিয়ে ইলিয়াস দম্পতি যখন নিঃস্ব, তখন তাদের আশ্রয় দিয়েছে। সে একদিকে বৃদ্ধ দম্পতির প্রতি মর্যাদা দেখিয়েছে; আবার অন্যদিকে তাদের সাথে সুব্যবহার, একসাথে খাওয়া ইত্যাদির কথায় প্রভু-ভৃত্যের সীমারেখা সে মুছে দিয়েছে। এক কথায় অতিথিবৎসল, সহৃদয় মহম্মদ শায়ের মতো মনিব পেয়ে ইলিয়াস দম্পতি একটা নিশ্চিত নিরাপদ আশ্রয়ে বাকি জীবনটুকু কাটাতে পেরেছিলেন।


10. ইলিয়াস যা বলল সবই সত্য এবং পবিত্র গ্রন্থে লেখা আছে। এই উক্তির আলোকে ইলিয়াসের চরিত্র বিশ্লেষণ করো।

উত্তরঃ  লিও তলস্তয়ের 'ইলিয়াস' গল্পটি আগাগোড়া পাঠ করে দেখতে পাওয়া যায় ইলিয়াস চরিত্রের উত্থানপতন। এটাই স্বাভাবিক, এটাই চিরন্তন। কিন্তু এ গল্পের নায়ক একজন ব্যতিক্রমীর চেহারা নিয়েছে। ধ্বংসের মাঝে, অসহায়তার মাঝেও সে জীবনে নতুন করে বাঁচার স্বপ্ন দেখেছে এবং পাঠককেও দেখিয়েছে। আর এগুলি সম্ভব হয়েছে তার পরিশ্রমী ও কর্মনিষ্ঠ মনোভাব, অতিথিপরায়ণতা, কর্তব্যবোধ, আধ্যাত্মিক মানসিকতা ইত্যাদি সগুণের সমন্বয়ে। পরিশ্রমী ও নিষ্ঠাবান পৈতৃক সম্পত্তি খুব একটা ছিল না। প্রায় শূন্য হাতে নানান প্রতিকূলতার মধ্য শুরু করে শুধুমাত্র কর্মপ্রচেষ্টা ও একগ্রতার জোরে সে সম্পদের প্রাচুর্যতা দেখেছিল।

অতিথিবৎসল : অর্থ সমাগম হলে আত্মীয়-অনাত্মীয় অতিথির সংখ্যা বাড়তে থাকে। তাদের আনাগোনাকে সে মর্যাদার সাথে রক্ষা করেছে।

কর্তব্যপরায়ণ : সন্তানদের প্রতি যেমন কঠোর ছিল, তেমনি কর্তব্যবোধও ছিল। তাই ছোটো ছেলেকে বিতাড়িত করলেও তাকে সম্পদ থেকে বঞ্চিত করেনি।

ইতিবাচক দৃষ্টিসম্পন্ন : সব হারিয়েও সে ভেঙে পড়েনি কারণ কাজকে সে ছোটো ভাবেনি। তাই তো মালিক থেকে মজুর হওয়াতেও তার কোনো আক্ষেপ নেই।

আধ্যাত্মিক চেতনাসম্পন্ন: কঠিন সময়েও সে যেভাবে সত্য ও সুখকে উপলব্ধির কথা বলেছে, তাতে তার আধ্যাত্মিক চেতনা প্রসারিত হয়েছে, যা তার চরিত্রকে আরও উজ্জ্বল করে তুলেছে।

No comments:

Post a Comment